লকডাইনের টকছড়া
     শংকর দেবনাথ


এক
গিন্নি বলেন- সমস্তদিন
ঘরের ভেতর বসে-
ফোনের মাঝে মন ঢুকিয়ে
আছো তো বেশ খোশে।


চাল ফুরোল, ডাল ফুরোল-
চড়বে না আর হাঁড়ি,
ফাও কথা নয়, যাও বাজারে
বলছি তাড়াতাড়ি।


বলেবলেই ক্লান্ত আমি-
যাচ্ছে না তো কানে,
শুনছো এবার- বলেই গিন্নি
একটা মাইক আনে।


দুই
আপডেট চাই-   ডেথ কত তাই,
    এফেক্ট ক'জন হ'লো আর-
ক'জন কিওর -   জানবে সিওর
      দেশবাসি সব ফলোয়ার।


টেষ্ট কত হলো-   হোমরেস্ট গেল
     সবকিছু চাই পুরোটাই-
ধারাভাষ্যে হে          ভুল সন্দেহে
     প্রতিবাদে চড়া সুর ওঠায়।


ভাবি এইবেলা- করোনা কি খেলা?
      ম্যাচট্যাস নাকি ক্রিকেটের,
উৎসাহী সব              করে কলরব
      পাই নিতি দশদিকে টের।


ক'টা উইকেট -       হয়ে গেল ডেথ,
     লাফিয়ে বাড়ছে কত রান-
চারপাশে শুনি-      কত জ্ঞানীগুণী
      ভুরিভুরি নানা মত ওড়ান।


(করোনার আপ-   ডেটে বাড়ে চাপ
        বসে এ'বন্দিযাপনেই-
ভয়েই মরি রে -         যদিও শরীরে
      কোনোরূপ কাশি-তাপও নেই!)


তিন
সে ছিল একদিন আমাদের
লকডাউনের আগে,
আড্ডা ছিল চায়ের কাপে
কাব্য অনুরাগে।
গেল          কোথায় সে দিন?
গেল
কোথায় সে দিন তাক ধিনা ধিন
বন্ধু-স্বজন কোথায়-
লুকিয়ে আছে কোন অজানার
বন্দি নদী-সোঁতায়?
ঘরে           একলা আমি-
ঘরে
একলা আমি দিবস-যামি
রুদ্ধ হয়ে আছি,
এমনভাবে কেমন করে
স্বজনহারা বাঁচি?
কবে         আসবে সুদিন
কবে
আসবে সুদিন বাঁধনবিহীন
ভাসবো প্রাণের নীলে,
সুজন স্বজন বন্ধু শ'জন
হাসবো সবাই মিলে?
হাসবো        সবাই মিলে।


চার
লকডাউনে গ্রাম-টাউনে
তোমরা ধনী যারা,
সন্ধি করে বন্দিযাপন
করছো মজায় তারা।


কাজ না করেও রাজসেলারি
পাচ্ছো ঘরে বসে,
অঢেল টাকা ব্যাংকে রাখা
আনছো তুলে গো সে।


নানানরকম খানাপিনার
সঙ্গে আয়েস করে,
কাটাচ্ছো দিন ধিন ধাগে ধিন
অচিন্ত্য অন্তরে।


দিন আনি দিন- আমরা তো দীন
কাজ যদি না করি,
একটা টাকাও কেউ দেবে ফাও
যতই কেঁদে মরি?


কাজ হারিয়ে ভাঁজ কপালে
চিন্তা শুধু মনে,
শেষ হলো তা সঞ্চয়ও যা
ছিল ঘরের কোণে।


বাইরে গেলে নাই রে রেহাই
মারবে করোনা যে,
খাবার ছাড়াই মরবো আবার
থাকলে ঘরের মাঝে।


লকডাউনে শখ-আহ্লাদে
তোমরা আছো সুখে,
বন্দি ঘরে যাচ্ছি মরে
আমরা ধুকেধুকে।


পাঁচ
বাইরে যাবার নাই রে উপায়।
ঘরের ভেতর বসে-
দিন কেটে যায়। রাত কেটে যায়।
ভেবে ভেবেই গো সে।


লিখব ভাবি। পড়ব ভাবি।
গড়ব নতুন কিছু।
হয় না কিছুই। ভয়রা হাঁটে
মনের পিছুপিছু।


সন্ধি করেই বন্দিযাপন
কাঁপন বুকে ল'য়ে।
ছন্দহারা মন্দধারায়
চলছে সময় ব'য়ে।


ছয়
ভ্যান চালাত বাবা আমার
এবং ঝিয়ের কাজে-
মা বেরোত সেই সকালে।
ফিরত দু'জন সাঁঝে।


ইশকুল এবং পড়ার শেষে
আমরা দু'ভাই বোনে-
ক্ষণ কাটাতাম হেসেখেলেই
ভাবনাবিহীন মনে।


হঠাৎ দেশে আসল ভেসে
মারণ করোনা যে,
বাবা ও মা বন্দি ঘরে।
যায় না তো আর কাজে।


ইশকুলও নেই- নেই বিকেলে
সেই সে খেলাটুকু,
ঘরের ভেতর আটকে করে
বুকটা ধুকুপুকু।


কাজ নেই তাই বাবার পকেট
এক্কেবারে ফাঁকা-
কাজ ছাড়া কি দেয় বাবুরা
ঝিয়ের হাতে টাকা?


সঞ্চয় সব ফুরিয়ে গেল।
ভাবেন বাবা খালি-
জ্বলবে না আর উনুন। মায়ের
চোখেও জমে কালি।


হায় করোনা! কর করুণা-
এবার ক্ষ্যামা দে না,
সবার জীবন আগের মতন
ছন্দে ফিরুক চেনা।


সাত
আমজনতার ঘাম ঝরে যায়
সমস্তদিন খেটে,
তারপরে তার, পরিবারের
খাবার জোটে পেটে।


বাধ্য হয়েই অবাধ্য হয়
একটু সুযোগ পেলে,
বাইরে বেরোয় তাইরে সকল
ভয়-ভাবনা ফেলে।


নয় সচেতন হয়তো ওরা
নয়তো সে মাস্ক পরা,
হয় না সময়-অর্থ জোগান
স্যানিটাইজ করা।


ভাইরাসে তাই ধরছে ওদের
গোঁদের উপর ফোঁড়া,
কে নেয় খোঁজই মরছে রোজই
চিকিৎসাহীন ওরা।


তোমরা তো সব হোমরা-চোমরা
সাবধানে খুব থাকো,
শ'বার করো স্যানিটাইজ
মাস্কে ও' মুখ ঢাকো।


ভীড় এড়িয়ে ধীর পায়ে বেশ
বাইরেতে হও বেরও,
খুব সচেতন মন তোমাদের
কিন্তু এ কী গেরো?


সেই তোমাদের এইভাবে ক্যান
সর্দি-কাশি-জ্বরে-
ধুৎ বুঝিনা - কী জুৎ পেয়ে
ভূত করোনায় ধরে?


আট
হাজার রকম বাজার করে সে
রাজার মেজাজে ফিরছে যে,
বোদ্ধা মননে করোনাযোদ্ধা
খোদ এক মহাবীর সেজে।


হাসছে করোনা- যতই লড়ো না
সব আড়ালের বুক চিরে-
আমিও গোপন  কোপন ঘাতক
তোমার বাড়িতে ঢুকছি রে।


নয়
শখ জেগেছে লকডাউনে লিখব বসে ছড়া,
ছন্দগুলো মন্দ ভারি
দিচ্ছে আমার সঙ্গে আড়ি-
থাকছে দূরে দাঁড়িয়ে, আমায় দিচ্ছে না তো ধরা।


অন্ত্যমিলের যন্ত্রণাতে শব্দ কেবল খুঁজি,
ওরাও দূরে দাঁড়িয়ে আছে
আসছে না কেউ আমার কাছে-
ওদের মনেও সংক্রমণের ভয় ঢুকেছে বুঝি!


হককথা এই - লকডাউনে হচ্ছে না তাই লেখা,
জড়োসড়ো সবাই ভয়ে
বলছে - লেখার সময় নয় এ'-
বন্ধ ঘরে ছন্দহারা অগত্যা রই একা।


দশ
ঠেকেঠুকে দেখে করোনার থেকে
শেখা হলো কত কী কী!
অলস মাথায় ছড়ার খাতায়
ছন্দে সেসবই লিখি।


ব্যবসা করলে তরকারি ছাড়া
কোরো না অন্যকোনো,
চাকরি করলে সরকারি ছাড়া
করবে না কক্ষনও।


দোকান করলে ওষুধ কিংবা
মুদির দোকান করো,
প্রেম যদি করো পাশের বাড়ির
কাউকেই গিয়ে ধরো।


বাঁচার জন্য মুখোশ জরুরী-
ঈশ্বরে কেন ডাকা?
করোনা শেখালো একা থাকা ভালো
দূরেদূরে ফাঁকাফাঁকা।


এগারো
কিচ্ছু ভাল লাগছে না আর
কিচ্ছু ভাল লাগছে না,
মন খারাপের ক্ষণটা যেন
কোনোমতেই ভাগছে না।


চোখের রঙে সংগোপনে
স্বপ্ন-ছবি আঁকছে না।
রূপকথারা চুপ হলো কি?
অরূপলোকে ডাকছে না!


হৃদয়পুর আজ নিদয় বুঝি?
যাচ্ছে তাকে কই চেনা?
বুকের ভেতর সুখের ধারায়
উছল নদী বইছে না।


গন্ধ মেখে ছন্দরা আর
আগের মত আসছে না,
নৃত্য-তালে প্রাণের ডালে
ছড়ার ফুলও হাসছে না।


খুশহারা এই দুঃসময়ে
ধুস, কেন সুর জাগছে না!
কিচ্ছু ভাল লাগছে না আর
কিচ্ছু ভাল লাগছে না।


      
বারো
দু'হাজার কুড়ি- থুড়ি বিশ বিশ সাল,
যেই এলো- সেই শুরু হলো কী আকাল!
করোনায় হায় হায় ত্রাহিত্রাহি রব,
খিদে পেটে সিধে ঘরে কাজহীন সব।


একা রামে ভয়ে ঘামে এই চরাচর,
আমফান সাথে যেন সুগ্রীব দোসর।
ঘর ছিল- ঝড় দিল ভেঙেচুরে তাও,
জীবন এখন যেন হালভাঙা নাও।


বাকি আছে নাকি আরো লোটা নিয়ে ছোটা?
বন্যার জল আর ভূমিকম্পটা।
দু'হাজার কুড়ি- থুড়ি বিষ বিষ সাল,
ধ্বংসের হিসহিসে জীবন নাকাল।


তেরো
বন্ধু-স্বজন আছে যে ক'জন
মাঝেমাঝে তারা ফোনে-
জানতে চাইছে- কেমন রয়েছি
রুদ্ধ ঘরের কোণে।


বলি- ভাল আছি, কী যে বলো আঃছি!
মধ্যবিত্ত ঘরে-
খারাপ থাকা কি মানায় কখনো?
জানাই গর্বভরে।


নই তো চাকুরে। বাড়িবাড়ি ঘুরে
দিন-রাত্তির ধরে,
কালোয়-আলোয় কাটতো ভালই
টিউশন করে-টরে।


বাইরে করোনা পুলিশের হানা
এখন ঘরেই থাকি,
হোয়াটস আপ দেখি করি লেখালেখি
ফেসবুকে টুকিটাকি।


টিভি খুলি যেই- ভয় এসে সেই
আষ্টে-পৃষ্টে বাঁধে,
বিষবিষ মৌ ঢেলে মুখে বউ
গ্যাসে নয় আঁচে রাঁধে।


পাশবই দেখি, হতবাক- এ কী!
সঞ্চয় ছিল যা, তা-
তুলে তুলে প্রায় শেষ হলো হায়
ভেবেভেবে ঘোরে মাথা।


ত্রাণ নিয়ে সাথে ও' কারা পাড়াতে?
ডেকে বলে- দাদা, শোনো-
চাই নাকি কিছু? মাথা করি নীচু-
প্রয়োজন নেই কোনো?


করোনা কালেই জ্বর-টর নেই
নেই কাশি-হাঁচি-টাচি,
রাত্রি ও দিন কাজবাজহীন
ভালো আছি- ভালো আছি।


চোদ্দ
ভোরবেলা দোর খুলে
যদি শুনি ভাই,
করোনার ভয় আর নাই!


যদি দেখি দেশবাসি
হাসিহাসি মুখে,
পাশাপাশি হেঁটে চলে সুখে!


খুলে গেছে ইশকুল-
অফিস-আদালতও,
সবকিছু ঠিক আগেরই মত!


বাস-ট্রেন সশব্দে
ছুটে চলে ধীরে,
ছন্দে এসেছে সব ফিরে!


যদি দেখি মাস্কহীন
সেই চেনামুখ,
তবে হবে কী দারুণ সুখ!


পনেরো
-খোলো খোলো দ্বার,     রাখিয়ো না আর
        বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে।
***********************************
-খুলব না দ্বার                থাকিয়ো না আর
         বাহিরে ফালতু দাঁড়ায়ে।।
ভাল যদি চাও               যাও ফিরে দাও,      
        ত্বরা দুই চরণ বাড়ায়ে॥


           বাহিরে রয়েছে করোনারা  
            ধরিলে তোমাকে তারা,
জীবনের খেয়া               হয়ে যাবে দেয়া
           মৃত্যুসাগর পারায়ে॥
খুলব না দ্বার                থাকিও না আর
         বাহিরে ফালতু দাঁড়ায়ে।।
***********************************
★রবীন্দ্রসঙ্গীত অনুকরণে


ষোলো
থাকব আমি বদ্ধ ঘরে দেখব না আর জগৎটাকে,
কেমন করে ধুঁকছে মানুষ রোগজীবাণুর ঘূর্ণিপাকে!
           দেশ হতে দেশ-দেশান্তরে
           করোনা সদর্পে চরে,
তার সে বিষের সংক্রমণে মরছে মানুষ লাখেলাখে।
আতঙ্কে সব শবের মতন বইছে জীবনযন্ত্রণাকে।


থাকব এখন বদ্ধ খাঁচায় দেখব নাকো ভূবন ঘুরে,
কবি, তোমার কাব্যকথা বক্ষে বাজে আজ বেসুরে।
            এখন দুয়ার বন্ধ করে
            অপেক্ষাতেই থাকব গো রে
আসবে যখন সুদিন আবার হাসবে সবাই জগৎ জুড়ে,
বিশ্বভূবন দেখব তখন আপন হাতের মুঠোয় পুরে।


সতেরো
ক্ষণ ভাল নেই- মন ভাল নেই
শ্বাশুড়ি-মা'র মোটে,
বুকের ভেতর দুখের পাখি
খোঁচায় নখর-ঠোঁটে।


জষ্টিমাসে- ষষ্ঠী আসে
জামাই-মেয়ে আসে,
আনন্দে ঘর ছন্দে মুখর
গন্ধে-সুরে ভাসে।


এক করোনায় সুখ খেয়ে যায়
বুক করে দেয় ফাঁকা,
মস্তিবিহীন ষষ্ঠী-দিনে
স্বস্তিবিহীন থাকা।


এবার জামাই আসবে না তাই
শাশুড়ি-মা গো সে,
মেঘলা মনে ঘরের কোণে
একলা থাকেন বসে।


আঠারো
ফেসবুক লাইভে
শুধু তুমি পাইবে
এ যুগের রবি যারা- তাদেরই,
কবিতা ও গল্পে
তৃষ্ণার জল পেয়ে
যত খুশি নাও রস-স্বাদ এরই।


কমেন্ট ও লাইকে
আছে আর নাই কে
দেখে মনে ধরে না তো খুশি আর,
খোঁজ নেন হ'লো কি,
আজ নেট স্লো কি?
অণুক্ষণ র'ন খুবই হুঁশিয়ার।


ফেসবুক লাইভে
যত খুশি চাইবে
ঘরে বসে শোনো গো সে কবিতা,
সাথে বিনা টিকেতেে
দেখা যাবে ঠিক এতে
কবিদের জীবন্ত ছবিটা।


উনিশ
আমরা কয়টি পরাণী, ভয়টি
         জড়িয়ে ছোট্ট
             দু'হাতে-
গৃহমাঝে নয় আছি মনে হয়
         আদিমযুগের
            গুহাতে।


দুরুদুরু মনে প্রতি ক্ষণেক্ষণে
         হানা দেয় ভীতি-
            ভাব এসে-
বাইরে করোনা করে আনাগোনা
         বের হলে গিলে
            খাবে সে।


শুধু চারপাশে নীরবতা ভাসে
        নিবিয়ে উছল
          সুখ-আলো-
বন্ধু স্বজন যা ছিল ক'জন
       সকলে কোথায়
          লুকালো!


কিছুটা খাবার গুছিয়ে আবার
         আদিম মানুষ
            যেভাবে,
ফিরতো গুহায় সাবধানি পা'য়
       ফিরে আসি নিতি
            সেভাবে।


ভয়েভয়ে বাঁচি- মনে হয় আছি
       পাহাড়-গুহায়
          কী বনে!
পৃথিবী আবার ফিরে গেল তার
         নাকি সে আদিম
             জীবনে?


কুড়ি
হককথা কই - লকডাউনের
এই করোনা দিনে-
প্রাণের আলোয় নিচ্ছি ভালোই
বন্ধু সুজন চিনে।


মানুষগুলোই ফোটায় হুল ওই
নিঃশ্বাসে ভাইরাসই,
তাই নিজেকে মানুষ থেকে
দূরে রেখেই বাঁচি।


বন্ধু তো নয়- মানুষরা হয়
শত্রু মানুষদেরই,
ভালবেসেই কাছে এসেই
ছড়ায় সে বিষ ঢেরই।


সত্যিকারের বন্ধু প্রাণের
গাছগাছালি-নদী,
জীবন আছে ওদের কাছে
পাবে তা যাও যদি।


নেয় কেবলই কাছে টেনে
দেয় না দূরে ঠেলে,
ছড়ায় না বিষ জড়ায় বুকে
প্রাণের বায়ু ঢেলে।


হককথা এই -লকডাউনেই
মানুষ থেকে দূরে-
সত্যিকারের সে বন্ধুদের
মধ্যে বেড়াই ঘুরে।


একুশ
লকডাউনে লোকটা নাকি
যাচ্ছে সবার দোরে-
পাচ্ছে যাকে তাকেই শুধু
শুনাচ্ছে সে জোরে-
সব মানুষের হোক ভালো হোক
হোক ভাল হোক ওরে।


এই ছিল সে- নেই এখন আর
কোথায় গেল খুঁজে-
যায় না পাওয়া-পাগল হাওয়া
দাঁড়ায় না একটু যে-
ভালোর ভাষা আলোর আশা
জাগায় সে তবু যে।


স্নিগ্ধ মলয় বুলিয়ে গায়ে
ভুলিয়ে কালোর ভীতি-
দেবের আশিস ঝরিয়ে মাথায়
দেয় জড়িয়ে প্রীতি-
সে লোকটাকে চোখটা কেবল
স্বপ্নে দেখে নিতি।


বাইশ
স্বামিঃ  ঘেঁষছো কেন?
সরো না!
স্ত্রীঃ     ভয়টা কীসের?
করোনা!



তেইশ
মানবজাতির শত্রু দানব করোনা-
অদৃশ্য হানায় তার দেহ জর্জর।
সংক্রমণ অস্ত্র নিয়ে সংগোপনে ঘোরে-
সুযোগ পেলেই হানে শ্বাসরোধী শর।
বিপন্ন পৃথিবী আজ ত্রাসি ত্রাহি রবে-
মৃত্যুর মিছিলে কাঁদে অসহায় প্রাণ।
রক্ষঃকরোনার থেকে রক্ষা নাই বুঝি-
কেমনে এ শত্রু থেকে পাবে পরিত্রাণ।


মানুষের সশরীরী হে দেবতা-দেবী-
ভরসা তোমরা শুধু। অাসুরী শক্তিকে-
পরাভূত করে দিতে ব্রহ্মাস্ত্র ভ্যাক্সিন-
হাতে নিয়ে রণাঙ্গণে জাগো দিকেদিকে।
রক্তবীজ অসুরের বংশ করোনাকে
নাশ করে বাসযোগ্য করো পৃথিবীকে।