দীপিকা-কে খুঁজে পেয়েছি
আল আমিন চৌধুরী স্বপন  


কবি রানা ভূঁইয়া,
ঠিক তোমাকেই বলছি, তোমার দীপিকে খুঁজে পেয়েছি,কাশিয়াখালী বেড়ীবাঁধ'র ঠিক স্লুইস গেইটের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। দীপিকা এখন ঘুমটা দিয়ে থাকে, সে এখন আগের মত নাই-বললেই চলে, চেহারটা শুকিয়ে গেছে, দেখে যেন মনে হয় খুব কষ্টে আছে, আগের মত নেই দূরন্তপনা। মুছে গেছে তার হাসি-খুঁশির দিন। সেই কিশোরী এখন পড়ে আট পেরে শাড়ি।    


সহসা আমি কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, বললাম কেমন আছো দীপিকা!
দীপিকাঃ হেয়ালী করে কইলো, ভাল আছি, আপনি আবার কেডা গো ?
আমি বললাম, তুমি সেই কবি রানা ভূঁইয়ার দীপিকা নও ?
দীপিকাঃ হ্যা আমি ঠিক তাই,
কবিকে বলবেন, আমি আর সেই আমি নাই, আমি  স্রোতহীন  হারিয়ে যাওয়া নদী ইছামতির মতই শুকিয়ে গেছি। আমি এক মরা নদীর চারণ ভূমি, ঢেউ নাই স্বভাব কাটালে, এপার-ওপার ভাঙ্গনের স্বীকার। আমি আর ছলবলে জলে খেলা  করি না। আমার মীন চোখ আর জলের তল খুঁজে পায় না। আমার বুকের মধ্য খানে ঢেউ খেলা থেমে গেছে। আমি গতি হারা, দিশে হারা, ছন্নছাড়া পাড়গলি। ইছামতির গতি ফিরে আসলেই আমি ফিরে পাবো আমার নবীন।      


কৌতুহল করে আমি বললাম, অন্তত তোমার সেই মিষ্টি হাসিটা আমাকে একবার হেসে দেখাও !
দীপিকাঃ এই হাসি, আমার কবির জন্য রেখে দিয়েছি, কোনদিন দেখা হলে একমাত্র তাকেই দিবো। সে তো আমাকে কবিতার স্পর্শ মেমোরিতে ধারণ করে রেখেছে। আমি তাঁর অনু কাব্য দীপিকা। একান্ত শিকড়ের টানে বার বার ফিরি।  আমি স্মৃতির মায়াজালে দেখি বাঁতি ঘরের ছবি। আমি ধুয়ে-মুছে, ধুল-ঝেরে জল প্রপাতে নীজের ছবি দেখি। কবিতার আয়নায় আমি শুধু আমার কবিকে দেখি।


আমি বললাম, তোমাকে অনেক দিন যাবত খুঁচ্ছি, অচিন্ত বাবু স্যারের "প্রদীপটা আমাকে দাও" আমি একটু হলেও আলোকিত হই!


দীপিকাঃ দেখুন ভাই, আমাদের স্যার, যা দেবার দিয়ে গেছেন, এখন সে   অবসরে। আমার বাঁতি ঘরের সেই প্রদীপটা এখন আর আমার হাতে নেই, আশার  আলোতে আর আলো নেই। বিদ্যাদেবী স্বরসতী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, অচিন্ত বাবু স্যার বাঁতী ঘরের চারপাশে আমাকে আর খুঁজবে না। তাঁর হাতে চক-ডাস্টার আর উঠবে না, মনে রাখবেন, তাঁর হাতে-নাতে রেখে যাওয়া যত আলো কখনও নিববে না। ঐ হাত, হাত নয়, সৃষ্টিকর্তার অশ্বির্বাদ। যে টুকু পেয়েছি, তাই নিয়েই চলবো সুদীর্ঘ পথ।
কবিকে বলবেন, আমি আসবো নিশ্চয়ই আসবো, প্রানবন্ত উৎসবে অনেকগুলি চেনা হাতে রাখি বাঁধতে।