...
আমি শিক্ষিত জানোয়ার না,
আমি এক গাঁয়ের কৃষক
এম এ পাশ করেছি তাতে কী
তবুও আমি কৃষক
আমার বাপ কৃষক দাদা কৃষক
চৌদ্ধগোষ্টি কৃষক
আমি জন্মের পর থেকেই জেনেছি
মাছে ভাতে বাঙ্গালি।
এই বৈশাখি তো আমার
সোনালী ধান আর চকচকা রোদের ঘামে
তৃষ্ণার জল পিয়ে
হিয়ে ভরা পান্থা পেঁয়াজ কাঁচামরিছে
আমার লাল সবুজের হাসি
কি করে কেড়ে নাও উপহাসে তোমরা।
আমি ও আমার হাওর
সারা বছরের মাছ ভাতের যোগান দেই
টাটকা চাল টাটকা মাছে
তোমাদের উদর ভরাই
আজ আমার ও খাবার নাই
হাল চাষের বলদের ও ঠাঁই নাই
বলো কি করে গাবো বৈশাখি গান
আমি যে মরা উঠান।
আমার দূর্দিনে তোমাদের হাসি
দেখেছি চোখের শোকময় আকাশ
মেপেছি আলপথ জলের প্রতিশোধ
আর বিবস্র মানবের পশুত্বের বিভীষিকা।
আমার মনেতে দহন জ্বালা
তোমরা বাজাও ঢোল
কে দিয়েছে নবান্ন গান
কে ফোটালো ফুল।
এই কি আমার ঘামের মূল্য প্রতিদানের ধারা
নাচো গাও ফুর্তি করো
বাড়ুক সর্বহারা।
কোথাও দেখিনি গাইছো বসে আমাদেরি জন্য
পড়োনি কাফন হওনি দাফন
তাই কি মানুষ পণ্য।
আমার বুকেতে বাস করে কিছু রাক্ষস খাক্ষস
রাগব বোয়াল
হা করা চোয়ালে গ্রাস করেছে আমার হাসি
আনন্দ
নিরানন্দের চৈত্রে আমাকে নিয়ে
এই উপহাস আর কত কাল
কত দিন এই হাহাকার
হে শিক্ষিত পাউবোর সহ আরো রাগব জানোয়ার।
কার আনন্দ কে করো ভাই কিসের উল্লাসে
কি শিখেছো কি পেয়েছো নগ্ন উচ্ছ্বাসে।
জাগো জাগো কৃষক!
জাগো সমস্বরে ,
জল যার মাছ তার
মাটি যার ঘাস তার ।
২ বৈশাখ ১৪২৪
দুধবহর, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ।