*****************


একটা অনাথ দাঁড়িয়ে আছে-
মনের জ্বালায়, তিমির গুহায়
ক্ষুধার ক্ষোভে, তীব্র রোদে
তেষ্টা লাগে চৈত্রপুরে।
এখান ওখান, কতখানে
ভ্যাপসা মুখে ঝাপসা রোগে
শুকে কাতর মলিন দেহে
গন্ধ কেমন বনেলা এক দুর্গন্ধে।
ভদ্রবেশী, উচ্চহসি লেবাস ছেলে,
অনাথেরে বলছে ক্ষ্যাপে,
যা, যা, করে, থাক না দূরে
তাড়ানোর এক ফন্দি এঁটে
হলদে মরিছ যাচ্ছে ভেটে।
হাটছে গ্রামে হাটছে ঘরে
দেখছ সমাজ নগর জুড়ে,
উড়ছে একা গগণ পুরে-
উদাস ভুবন।
অন্তপুরের কঠিন জ্বালা-
জ্বলছে শুধু, দেখছে বিঁধু।
সেই অনাথের নাইকো চাওয়া
কানাকড়ি পয়সা পাওয়া
দে-রে, দে-রে বলছে অনাথ,
চোখের জেলে
বুকের মাঝে
বেঁচেথাকার শেষ সম্বলে।
দে, ফিরিয়ে স্বদেশ আমার
রক্ত সাগর লাশের আগর,
লাখো লাখো শহীদ বীরের
স্বাধীন বাঙলা সভ্য বিবেক।
মারিস না আর!
একটু ও না
আর আমারে।
লুটিস না আর, চুষিস না আর
চুষবি ক বল?
অনাথেরে!
পড়ছে চোখের জল ধারা
চুপি চুপি হঠাৎ কাঁদে,
লাথি খেয়ে, গুতু খেয়ে
কঠিন ধমক যাচ্ছে খেয়ে।
ঘুরছে অনাথ পথে পথে,
পতাকাটার দিকে চেয়ে।
এক পা থেকে হাজার পায়ে
ধুলো কাদা, বালি সাদা
চিড়ে পোশাক,
ধর্ষনেরী রক্তমাখা
হাজার কোটি, শোকের দাগে।
ঘুরছ অনাথ একটি আশায়-
অন্ন নয়, বস্ত্র নয়,
ক্ষোভের তাড়ায়
ভালবাসার শান্তিলয়ের
স্বপ্নাঙ্গনে স্বপ্ন পাওয়ায়।
হু-হু করে কাঁদছে স্বদেশ
অনাথের নাম বাংলাদেশ!
(কবিতাটি সুগন্ধী তোমার জন্য কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত)