ফাগুনের আগুন লেগেছে কৃষ্ণচূড়ায়,
ভালোবাসার রঙ্গ লেগেছে মনপাড়ায়।
উতলা হয়ে প্রেম সাগরের নোনা জলে,
ডুব দিয়েছে কৃষ্ণকলি লজ্জা ভুলে।
তিন দিন হলো কৃষ্ণকলি বাড়িতে নাই,
খবর আসে হাবুর সাথে পালিয়ে বেড়ায়।


ঘরের দুহিতা চলে গিয়েছে বহু দূরে,
অবাধ্য হয়ে, পরের সাথে চিরতরে।
কলঙ্ক যা হওয়ার হয়েছে ঘাটে ঘাটে,
পিতার দুঃখ আজ ঢাকবে কোন মলাটে!
আজকার দিনে কলঙ্ক তবুও যায় মিশে,
দুঃখ টুকু থেকে যায় জীবনেরও শেষে।


মাস নয় হয় কৃষ্ণকলি হারিয়ে আছে,
কেউ জানে না কেমনতর সুখে ভাসে।
জানে শুধু কৃষ্ণকলি, পাপের বোঝার ভার কত।
দেহের মাঝে নতুন দেহ, নড়ছে অবিরত।
হাবু কেবল ভালোবাসার ফাঁদ গড়েছে,
কলঙ্ক দিয়ে হঠাৎ রাতে সরে পড়েছে।



স্টেশনের বস্তিবাসী কৃষ্ণকলিরে খাবার দেয়,
পেটের মাঝে বাচ্চাটারও মাঝে মাঝে খবর নেয়।
হঠাৎ করে দ্বিপ্রহরে তীব্র করে ব্যথা উঠে,
বস্তিবাসী ছুটে এসে বাচ্চাটাকে খালাস করে।
কান্নার কোনো আওয়াজ নেই, নিস্তব্ধতা মুখে,
কৃষ্ণকলি হাসবে না-কি জননী হবার সুখে?


মৃত ছোটো বাচ্চাটার দেহ দাহ করে শেষ,
কৃষ্ণকলি ঘরে ফিরে, দেখতে এখন বেশ।
কৃষ্ণকলির কষ্ট ছিল মাত্র দশটি মাস,
কৃষ্ণকলির বাবার এখন কষ্টের মাঝে বাস।
আড়ায়-পাড়ায়, অলিতে-গলিতে কলঙ্কের খোটা,
কথার তীরে খসে পড়ে যেন হৃৎপিণ্ডের বোটা।


কৃষ্ণকলির চোখে এখন ভালো নাই কেহ,
সকল পুরুষ, সকল নারী পাপে ভরা দেহ।
কৃষ্ণকলি কলঙ্কিনী, শাচিনী, অবাধ্য রমনী,
গোপন পাপে সে হয়েছিল গর্ভধারিণী।
তার গোপন পাপের শত কলঙ্ক ডরে,
পাপ খোঁজে বেড়ায় সে সকলের তরে।


১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২; মাদারগঞ্জ।