আব্দুল হান্নান  


সেদিন ছিল যৌবনের উন্মাদনা,বেকারত্বে থাকবোনা,
কিছু একটা করতেই হবে তা যতবড় কষ্টেরই হোক।
বেছে নিলাম একটা কঠিন জীবন,যেখানে কাগজের পাতায় আছে সহপাঠীদের প্রতি সহমর্মিতার কথা।
যাদের নির্দেশনায় লেখা আছে ভ্রাতৃত্ববোধের কথা,
তবে কেন আমি যাবনা সেখানে? ঘাম রক্ত করার জীবনে, কষ্টকে ভয় পাইনি,প্রতিটা কাজে অদম্য সাহসে সামনে এগিয়ে গেছি ।
জীবনবাজী নিয়ে যখন কাজে সফল হতাম
তখন সবার হাততালী আর প্রশংসা পেতাম।
নিজের ও ভালো লাগতো,সবার মাথার মুকুট যেন আমি।
দিন সপ্তাহ মাস বছর শরীরের উপর দিয়েই চলতে চলতে
চুল দাড়ী পাকা শুরু যৌবনের দিপ্ততা মনে হচ্ছে লোপ পাচ্ছে,
আগেরমত লাফালাফি আর যেন শরীরে কুলাইনা,
রক্তের তেজে কোমরের হাড় ভাংগাও টের পাইনি।
কিন্ত বয়সের ভার ছাড়লোনা,কোমর ব্যাথায় পা অবশ হয়ে গেল বিছানায় পড়ে গেলাম,দুদিন সবাই আহা করলো,
হলো কোমর অপারেশন হারালাম কর্মক্ষম।
এখন দেখি আমি প্রিয় লোকদের ও চোখের কাটা।
মানুষ সব হারানোর পরও বিশ্বাসের একটা জায়গা থাকে,
যার বলে সে দাড়িয়ে থাকে আমারও এরকম একটা জায়গা ছিল,
সহসা সেটাও আমার কাছ হতে হারিয়ে গেল।
আসমানের নীচে কর্ম জীবনে এখন আমি বড় অসহায়,
আমি একটা বোঝা।ষাড় গরুটা বৃদ্ধ হলে শেষমেশ
বিক্রি করলে কিছু টাকা অথবা যবাই দিলে কিছু মাংস দিয়ে যায়।
কিন্ত আমারতো সেটা দেবার মত শক্তিও নেই।
যারা আমার সফলতায় হাত তালি দিয়েছল,তারা যে ব্যবহার করে মনে হয় আমি তাদোর দুশমন।না আমি কারো দুশমন না,আমি এখন আর আগের মত কাজ করার শক্তি পাইনা,তার পরও ওরা আমাকে ছাড়েনি,আমার দিয়ে অনেক শক্ত অভিযান ওরা করিয়েছে,কোমরের কাটা হাড় অপারেশন শরীর নিয়ে জীবন বাজি রেখে পাহাড়,জংগল,খালে অভিযান করেছি শুধু মাত্র পেনশনটার জন্য।তার পরও ওদের একটু মায়া হয়নি,কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে বুড়িঘাটের পেট্রোল রেজিষ্টার,প্রমোশন নিতে পারতাম কিন্ত কারো চোখের বোঝা হয়ে থাকতে চাইনা,
তাই শেষ সিদ্ধান্ত সরে যাওয়াই উত্তম।আমার দেবার যা ছিল সবই দিয়েছি।
আপনজনদের জন্য শুধু নিঃশ্বাস টুকু নিয়ে যেতে চাই।