মুক্তির প্রার্থনা
কাব্য গ্রন্থঃ ঘুনপোকা


বিকেলের পৃথিবীটা হয়ে উঠেছে স্তব্ধ হিমশীতল
মনে হচ্ছে ছোট্ট জাহাজে চেপে বসে আছি মাঝ সমুদ্রে!
তুমি বসে আছো উদাসীন মনে
তোমার দৃষ্টি অতি গভীরে!
ভাবছি, এ দৃষ্টির উৎস কোথায়?
কী তার ঠিকানা?
তাহলে কি তুমি আমি দু'জনেই ভগ্ন ঠিকানাহীন সৈনিক?


জানো তো!
অনীহার অদৃশ্য অন্ধকার গুহা দেশ আন্তরিকতাহীন, উত্তাপহীন,
হিমশীতল মৃত্যুর মতই অবাঞ্চনীয়
নির্বুদ্ধিতার সামিল!
তুমি কি হতে চাও পদ্ম গন্ধী সেই বিষকণ্যা!


আমি কী একাই দোষী?
আর; তোমরা মেয়েরা নিছক আবেগের বসে
ভাবপ্রবণতা ঝোঁকে বিচরণ করো সুন্দর বাগানে,
তছনছ করে দাও সাজানো সব ডালি।


তোমাদের বদ্ধমূল ধারণা আমরা পুরুষ সমাজ
জঘৃণ্যভাবে অবিবেচক শাসক শ্রেণি!
ভালোবাসতে জানে না এত টুক?
সাধারণ সহানুভূতি রুচিবোধের অকল্পনীয় অভাব আমাদের!


ভাবতে পার! ঘৃণা কত গভীর, কত সূক্ষ্ম হতে পারে?
তপ্ত লোহায় ঠিক সময়ে ঘা দেওয়াটা তোমাদের স্বভাব নয় কী?
স্নায়বিক উত্তেজনায় অশান্ত হয়ে উঠেছিল তোমার মন
তবুও আমি দোষি?


প্রতিটি বিদ্যুৎ চমকানির সঙ্গে সঙ্গে
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়াটা বেশ স্বাভাবিক নয় কী?
এত অভিযোগ, অবিশ্বাস!
কী করে গড়বো আশার পৃথিবী?
আমার মনে হয়-
অভিযোগের মহা প্লাবনে আজই ধ্বংস হবে পৃথিবী।


ক্রমশই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছি আমি।
তোমার চেতনার উপরি পৃষ্ঠে
কোন ধারণাই দাড় করাতে পারছি না,
এ আমার ব্যর্থতা, দায় দেব না তোমায়।


শুধু ভুলে ভুলে, ভুলময় করে রেখেছি আমার এ ঘর
আজ বোধ হয়;
বিশ্ব জীবনে পার্থিব ক্ষয় যার যত বেশি
আত্তিক উন্নতি তার তত বেশি।


আর; যুক্তি বুদ্ধির নীরস জালে জর্জরিত হয়ে
প্রাণহীন বেঁচে থাকার চেয়ে প্রাণ হারানো ভালো।
আমাকে মুক্তি দাও, মুক্তি চাই।
মুক্তি দেবে নাকি?