দেওয়াল ঘড়িতে এখন :
ঠিক চারটে সাঁইত্রিশ!
এ সময়ের কোনো মানে নেই।
রোজকার এই ভোর ভোর,
আরেকটা দিন চড়ুই এর মৃদু আলাপনে শুরু।
হালদার বাড়ির ছাদ, ক্রমে দৃশ্যমান।
শুকনো শ্যাওলার রোদ পোড়া পাঁচিলে,
ধীরে ফুটছে, রোজকার জীবনের ধারাবাহিকতা।


সারা রাত শেষে,
তুমি এখন ঠিক আর জেগে নেই,
অতন্দ্র প্রহরীর মতো ঠায় বসে জানালায়।
আজ কারো চাওয়ায় আর নেই তুমি।
সময়কে সাথে নিয়ে মিশে গেছ, অসময়ের সাথে।


মগজে হাতড়ানো স্মৃতির খোলসে,
কেলাসিত ব্যথার অপুষ্ট অবয়ব,
রোজ মরে গেছে তোমার একটু করে।  
ঝরে যাওয়া আশীর্বাদহীন তুলসী গাছ,
চেয়ে আছে, এই সময়ের সাক্ষী হয়ে।


বেলা গড়িয়ে চলে।
কোথাও উনুনে রুটি শেঁকার গন্ধে
ভেসে আসে মায়া, এক হারানো জগৎ এর আহ্বান।
সঙ্গীতহীন, নিঃসঙ্গ দুপুরে পাড়ায় পাড়ায়
হেঁকে যায় ফেরিওয়ালা:
"ভাঙা হারমোনিয়াম বিক্রি-ই-ই-ইঁ-ইঁ ?
ভাঙা হারমোনিয়াম!"


একটু পরেই বিকেল হবে।
পাড়া জেগে উঠবে,
গোস্বামীদের ভাড়া দেওয়া নাচের ইস্কুলে ঘুঁঙুরের শব্দে।
হালদার বাড়ির ছাদের পাঁচিলে, পোড়া শ্যাওলার রঙ হবে গাঢ়।
আমোঘ ঐ ঘড়িটাতে আবার সময় হবে:
ঠিক চারটে সাঁইত্রিশ!


আরো একটু পরে মোড়ের মাথার ঘাড় গোঁজা ল্যাম্পপোস্টটা
চোখে চশমা পরে নিয়ে জ্বলবে।
এ এক ভীষন বেলা।
এ সময়ের কোনো শেষ নেই।