পর্ব - ০১


একটু দিও মোরে একটু দিও,
বিনিময়ে তারচেয়ে অনেক বেশীই নিও,
যেটুকু আমার, ওগো সবটুকু তার তুমিই নিও নাহয় ॥
ওগো প্রিয়,
তুমি তা জানিও,
আজীবন এ বচন স্বরণ রাখিও,
অনেক বেশীর চেয়ে একটু পাওয়া বেশী ভালো, তাতেই খুশী থাকিও,
কোনকিছু যদি হয়, পরিমানে অতি বেশী জানিও, তবে তা কখনও ভাল নয় ॥
লোভ মোহ আশা,
এমনকি মধুর ভালবাসা,
ক্রোধ আক্ষেপ ক্ষোভ হতাশা,
এক কোণে চড়ই পাখীর ছোট্ট বাসা,
একটুখানি ঠাই সেইতো অনেক মধুর ও খাসা,
প্রাসাদের আলো ঝলমল,
নাঁচগান আর মদ্যপানের বিনোদন ঢল,
সর্বনাশা কোন সে মহল, জুলুমবাজের দল বেশী ক্ষমতা ও বল, অনড় অটল ভাল নহে নিশ্চয় ॥
বেশী আরাম অলসতা বেশী কাজ,
বেশী আউলা বেশী বাউলা বেশী রঙ ও বেশী সাজ,
বেশী মুখরতা বেশী নিরবতা বিষন্নতা জড়তা ও বেশী লাজ,
বেশী নির্ভরতা বেশী বিশ্বাস,
বেশী উপবাস, বেশী হর্ষ বা উল্লাস,
নিঝুম বিজনে বীরহ বেদনে একাকি বেশী বসবাস,
বেশী কান্না বেশী হাসি, বেশী শীত গ্রীস্ম কিবা বর্ষন হয় যদি বারমাস,
বেশী ভোগবিলাস, বেশী আত্ববিশ্বাস কোনটাই ভাল নয় বেশী সাহস কিবা বেশী ভয় ॥
হয়তো বেশী আস্থা,
খুলে দিতেও পারে নব রাস্তা,
হওয়া বেশী মহৎ মহান ও উদার,
এনে দিতেও পারে বোঝা আরও অনেক বেশী ভার,
দিলেই নাহয় একটুখানি ছাড়, কি হবে শেষে যদি তা সে চাহে বারবার,
যার নেই বিত্তধন জানি কেউ ভালবাসেনা তারে,
তবে জেনে রাখুন সবে, সেইজন কোনদিন ওরে নাহি হারে,
যেজন এসে ফিরে যায় শূন্য হাতে একটু কিছুর আশায় তোমার দ্বারে,
অবশেষে সে ই জেতে অনেক পায়, যে বেশী সহে ও রহে আর বেশী ভার বয় ॥


পর্ব - ০২


সবকিছু যার দেখি কমকম,
মনেহয় নিয়তি যেন তার হয়েছে যম,
দুঃক্ষ কষ্ট জুলুম ও সব অপমান হয়ে যায় হজম,
চক্ষু মেলে তাকিয়ে দেখো বাহিরে,
আহা তারা কত কষ্ট পায় রোদ বৃষ্টি ও ঝড়ে,
কোথা যায়, মন চায় তবু থাকিতে পারেনা শান্তিতে ঘরে,
যে ঘর বানালো আপন হাতে দিনে ও রাতে এত কষ্ট ও যতন করে,
পারেনা যায় ছেড়ে, শেষে একদিন আহা মরে হঠাৎ ডাল ভেংগে মাটিতে পড়ে,
এতযে সয়, তবু হতাশায় দিশেহারা নাহি হয়, ওরে সেতো নয়, জীব ও জীবনের কোন ব্যর্থতা বা পরাজয় ॥
বেশী মধু চিনি গুড় ও মিষ্টি,
রেখো নাক কান খোলা চারিদিকে সজাগ দৃষ্টি,
কেজানে জীবনে আবার কোন আঘাত হানে, আনে কোন অনাসৃষ্টি,
থাকিতে ভালো ওরে ভাই, চাই সে আলো যার কোন বিকল্প নাই, অল্প হলেও তাই বিধাতার করুণার বৃষ্টি,
বেশী টক বেশী তেল বেশী মসল্লা ও নূন-ঝাল,
বেশী দুধ ডিম মাংস ঘি হতে পারে আঁতে ঘা পাকস্থলীর জন্য কাল,
নহে বেশী আরাম, চাই একটু পরিশ্রম দেমাগ ও দেহটার ঘাম, নাহলে তার দশা হতেও পারে চরম বেহাল,
বেশী ভোগবিলাস বিনোদন বেশী ব্যয় এনে দিতে পারে ভয়ংকর দুঃসময়, তাই নহে অপচয় চাই সামাণ্য সঞ্চয় ॥
বেশী টাকা বেশী ধন বেশী সুখ,
করে দিতে পারে জীবন দূর্বিসহ ভীষন ভারি এই বুক,
বেশী ভোজন,
হতেও পারে মরণ,
কিবা কোন অসুস্থ্যতার কারণ,
যতই তা হোক বা নাহোক মজাদার তেমন,
বেশী কথাবলা হতে পারে বর্শার বিষময় ফলা আসলে নেই যার কোন প্রয়োজন,
বেশী শয়ন বেশী ঘুম,
বিভোর নেশার ঘোর ভোগের ধুম,
আলস্য বাড়ায় আরও বেশী চায়, সে ও এক কাল রোগ,
কর্ম্মবিমুখ হয়, ঘরে বসে রয় সৃজনের উদ্যম হারায় প্রাপ্তি নয় ক্ষয়েরই বেশী যোগ,
নাহলে হয়ত আপদ, এমনই অধিক ভাল ও অধিক নিরাপদ, সাফল্য আর যদি সবকিছু তার পরিমিত পরিমানে হয় ॥


পর্ব - ০৩


ওরে হামেশা ও হরদম,
সবকিছু যার যেটুকু প্রয়োজন তারচেয়ে হয় কম,
যদিও হেরি দশা তার বড়ই বেহাল,
কভু নহে সে ত্রস্ত ব্যস্ত হয়না পেরেশান ও নাজেহাল,
তবু আফসোস করে কিবা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেনা কভু এইতো আমার কপাল,
যদিও হাতে নেই জলন্ত মশাল,
নহে দুধভাত, নিত্য পাতে পড়ে শাক-ডাল,
দেখিনি শূন্যে ঘুরতে, তার নায়ে উড়তে কখনও রাঙা পাল,
এ জীবন রণে বিশাল সে রণাংগনে, চলার পথের প্রদীপ কোন হাতিয়ার ও ঢাল,
কিছু দরশন আর,
সদা গবেষণ ও বহন সে ভার,
ঐ অমোঘ শক্তি তার, প্রতিকুল সব সহিবার,
না পেয়ে রথ, থামেনি তবু হেটেহেটে দীর্ঘ পথ লভেছে সম্ভার,
ওরে পরাজয় নহে, আবু হকে কহে, দিয়েছে তারে এক অনন্য জীবন আর,
সহস্র রাত্রী জাগি, এনেছে তার লাগি, মহারাজার কাছ থেকে মাগি, অপার সাফল্য বিজয় ॥
ভেবে দেখা দরকার,
কি আমি চাই ও কি নাই আমার,
তা বেশী নাকি সামান্য একটু,
সবাই যেন হয় মননে ও দরশনে বিচক্ষণ পটু,
যত সব দুঃক্ষ আর কষ্টগুলি,
একটু সুখের ছোয়ায় দিনের শেষে যায়রে ভূলি,
হাসি খুশীর দোলনায় দুলে কষ্ট বেদনা ভূলে বারমাস বসবাস,
জিয়নে মরণে দুই দুনিয়ার দুই জীবনে সবঘাটে সবখানে পার ও সব পরীক্ষায় পাস,
সে পাওয়ায় ভরে যায় পঞ্চপরাণ, আদরের খাস মেহমান হয় মহারাজার দাস লভে সহজে সবে এমনই বিজয় ॥
কেন সবে মোরা এত বেশী চাই,
ওরে মন, বেশীতে তো সুখ নাই,
আমি আর হবোনা তেমন কভূ চাইবনা তাই,
ধন ও সুখের মোহ আর নয়,
এবার ঐ নাই নাই ক্ষুধাটারে যেমন করেই হয় করবোই জয়,
যদি আমি একটু পাই তাতেই যেন এই মোর দেহমনটা, ছড়ায় তৃপ্তি ও সুখের ছটা আজীবন ভরপূর তাতে হয়ে রয়  ॥


পর্ব - ০৪


কেউ তা পায় বা না পায়,
কোন কমতি নেই সে কৌশল ও চেষ্টায়,
যদিও সবাই চায় বেশী বেশী,
বেশী বিদ্যা বেশী ধন ও ভোগবিনোদন বেশীবেশী,
যার আছে লম্বা হাত, ক্ষমতার আসন ও বেশী শক্ত সবল পেশী,
নানান খাবার ও ফল বস্ত্র ও প্রসাধন, হওয়া চাই অসাধারন সবকিছু দামী ও বিদেশী,
এমনতো নয় অন্যকিছু,
সদা লেগে আছি কেনযে আমি তার পিছু,
নতশিরে কায়ঃমনে পড়ে তার চরণে জীবনে ও মরণে আমি চাইব যদিরে দাতায় দয়াময় ঐ বিধাতায় রাজি হয় ॥
হে বিশ্ব প্রভু হে মহারাজ,
আমি নহে বেশী ধন ও বেশী সুখের মোহতাজ,
ঐ অল্প দূরে হয় যদি,
কুলকুল বয়ে যায় পাহাড়ী ঝর্না-নদী,
আমার ঐ ঝিলের জল,
ঠিক যেন এক স্বচ্ছ ফটিক ও পরিমল,
দিনে দখিনা বায় আর রাতে যখন নামে জোছনার ঢল,
করে তা চিকচিক ঝিকমিক অবিরল টলমল ও ছলছল,
একটু ভিন একটু দূর,
তোমার আলোর পরম ভালোর ঐ সে যাদুর মহা শান্তিপুর,
অসীম ও অচিন, তবে তাদেরই সহজ ভ্রমণ পথ নেই যাদের ঋন, আলাদা যেন হয় হতে সব সাধারণ লোকালয় ॥
মধুর মিতালী করে গোপনে,
বন্দি হয়ে প্রেমে সন্ধির ফ্রেমে এই দেহমনে,
ফুলপাখী গাছগাছালী নানা ফল মৌমাছি ও মাছেদের সনে,
কিছু মাটি কিছু জল, এমন সুফলা সফল, এক নিঝুম ঘন সবুজ গহীন বনে,
শোভা ও সৌরভের ঐ অতলে ডুবে অঠাই,
ঐ মহাসুখের খুবে আমি না যদি রহি মজে ও না হারিয়ে যাই,
ধন্য রাজার পুণ্য দেশে, অধম নগন্য গোলামের বেশে, নাহলে কেমনে আমি শেষে করিব শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই,  
এক পরিবার ও একটাই ঘর,
সবাই সবার হয় আপন ও কেউ নহে কারো পর,
যুগযুগ মহাকাল জনমভর,
আত্বীয়তার ঐ সে মধুর মজলিস ও আসর,
মনেহয় যেন কোন বিশ্বমাতার,
স্নেহ মায়া মমতার জগত জোরা এক আঁচল পাতা আর,
এক মহান পিতার ছড়ানো বিশাল ছাতার মত ঐ সে শান্তিসুখে দুনিয়ার বুকে চিরকাল টিকে রয় ॥


পর্ব - ০৫


লক্ষ রুপের প্রজাপতি ও ফড়িং,
গায়ে মেখে সাতরঙ খুশীতে নাঁচন করে তিড়িং বিড়িং,
জোনাকিরা তুচ্ছ আলোর ক্ষুদ্র প্রদীপ জ্বেলে হায়,
ঝোপের ধারে ছুটোছুটি করে আর, নাজানি আহারে কি শুধুই খুঁজে বেড়ায়,
ঝিঝিরা আপন মনে দলবেধে বাজায় বাঁশী,
আপন আপন কথা ও সুরে শত পাখীরা ঘুরেঘুরে গান শোনায়, ডাল হতে উড়ে যায় আর আসি,
অন্তরালে অখুশী ও অতৃপ্ত যে হৃদয়,
নাই বলে তার সবকিছু বেশীবেশী ব্যথিত হয় ও বিষন্ন রয়,
যাদের সনে হয়েছে তোমার গোপনে ঢের চেনাজানা আর সঠিক ও আসল পরিচয়,
তাহলে তা কেন তবে তোমার আমার নয়, নেই হাহাকার তাদের জগত যদি হয় ওরে এতটা খুশীর ও আনন্দময় ॥
যদি মনে ধরে হে মহাজন,
যাদের কেউ নাই কিছু নাই, বড়ই অসহায় এমন,
মোর খোলা দুয়ার সদা নিমন্ত্রণ, করিবে তারা সবে নিত্য এসে ভোজন,
কোন বাধা নাই আমি তাই করিতে চাই, আজীবন হেন অতিথি সেবা যেন হেথা হয় সাধন ও উদযাপন,
মাটির দুনিয়ায় যার মন ওরে চায় যখন,
সবে যেন চিরকাল তা খুঁজে পায়, খুশীমনে আসে যায় আর পেটভরে খায় যত আর্ত পিড়ীত ও দুঃখীজন,
তব করুণা ভরে,
হেথা তুমি ওরে দিও মোরে গড়ে,
শীতল ও ছায়াঘেরা, পরম শান্তির এমন এক ডেরা মোর কুটিরখানা যেন এমনই হয় আর রহে তা চির অক্ষয় ॥
উনা ভাতে দুনা বল,
অতি ভাতে নাকি হয় রসাতল,
খালি পেটে খেও সবে কিছুটা জল,
ভরাপেটে পেলে সামাণ্য মিঠাই বা ফল,
যেথা কোন সাড়া নেই বায়ুটাও পরিমল,
না পেলে কোন সংগী ওরে ভাই তুই নাহয় একাই চল,
নিরবতা ও গবেষণা এনে দিতে পারে কোন নব বারতা, বিজনের ভাবনা সফল,
যাদের এ সমাজে কেউ নাই কিছু নাই আর সবাই পর,
করে গবেষণ হয়ত পাবে তার দরশন, চলো শুরু করি মন এখনই আত্মার ঐ সফর,
সোনাযে খাটি করা হয় আগুনে পোড়ানোর পর,
বিসর্জন মনন ও দরশন, হয়ে মনের গহীনে এই তিনের যাদুকর,
কথন ভোজন ও নিদ্রা যাপন যদিরে হয় একটু কম তা নহে তেমন ক্ষতিকর,
ওরে বিনা দামে কিনা সে রতন, হোক যত মন্দ লোক অসাধারণ এ জীবন চলা সুন্দর,
এসো তাদেরে দিই, মিথ্যে নয় সে এক মহাসাধন ও বিশাল জয়,
রয়েছে তোমার হাতে বেঁচে যাওয়া ঐ সামাণ্য যেটুকু খাবার, অল্প টাকা ও কম ঘুমানোর ঐ একটু সময় ॥
বিবেকের শক্ত হাল,
তিমির রাতে জ্বালিয়ে দীপ্ত মশাল,
অনুভবে চেতনায় বড় প্রয়োজন হয় ও হবে যেই ঢাল,
তৃতীয় নয়ন, মন ও মননের মুক্ত দরশনের ছোট্ট নাও অসীম দিগন্তে উড়াল,
তড়িৎ জবাব চাই যখন হবে সওয়াল,
ঘাটে ঘাটে হবে চেক, কি আছে কার সংগের মালামাল,
সংগে তখন কেহ আর না ই রয়,
সেই ভয়ে সাহসী হয়ে সওয়ারী কেউ যদি না ও হয়,
মহা করুণাময় ঐ প্রভূ মনিব যদি কারো দরদী সংগী হয় তবে ওরে তার আর কিসের ভয়,
হোক অতি কম কিবা যতই বেশী তোমার সুখ ও ধন,
সবাই শূন্য হবে ও এমনি করেই যাবে সবে, যখন সবকিছু কেড়ে লবে মরণ,  
আসলে মরণ বলে কিছু নেই ওরে মন,
সেতো আর এক সফর, ঝড়ের পর ভিন্ন জগত ও নতুন জীবন,
আগে পূর্ব জীবনের ভাল-মন্দের পাপ-পুণ্যের হিসাব ও ওজন,
দেখে খতিয়ান ও স্বাক্ষী প্রমাণ দেনাপানার বকেয়া হিসাব লবেন মহাজন,
আসা যাওয়ার সে এক নিপুণ খেলা, এভবের মেলায় চলছে তা সারাবেলা সারাক্ষণ,
সৃজনের এ ঘূর্নি চাল,
দয়াময় মহারাজার করুণার হাল,
এ জীবন সব নেয়ামত ও ধন, যার দান বা দাদন,
করে সৃজন করিছেন লালন পালন,
কোন লাভে, কি আশায় কেজানে ছিল তার কি প্রয়োজন,
হবে ঐ সব প্রশ্নের জবাব পাওয়া হলে গহীনে গবেষণ খুলিবে তৃতীয় নয়ন,
হবে অনেক জানা,
কেউ আর রবেনা অবুঝ কানা,
পাবে তার দরশন হবে মানুষ দুনিয়ার যত নামের মানুষগণ, সেইতো আসল সাফল্য বিজয় ॥