( এ কবিতাটি তৃতীয় নয়নে দেখা সহস্র রঙ আর রুপের অযুত ডানামেলা বিচিত্র এ পার্থিব জীবনের কলমে আঁকা এক বিশদ চিত্র-গল্প )


আজিকে নতূন করে,
আবার শোনাব তাদের সবারে,
যারা দেখেনি, হতে ইচ্ছে করে যেন পারে,
নাহি যা কভূ বিফল হয়, সেই অকূতোভয় গল্প, এক জীবন বাজির পণ ॥
বীর বাঙালীর,
পাটরশি ও বাঁশের তীর,
অধিক তীক্ষ্ন  ছিল তা চেয়েও অসির,
বর্শা বল্লম রামদা ছুড়ি লাঠি কারো হস্ত ছিলনা খালি,
যে যা পেরেছে তাই ছুড়ে মেরেছে হৃদয়ের যত ক্ষোভ ও ঘৃনা উজার করে ঢালি,
পায়ের জুতো কেউবা থুথু লাথি ঘূষি কিল, আস্তাকুড়ের আবর্জনা ঢিল, ইষ্টক প্রস্তর কিবা বালি,
বীর বাঙালী,  সবটুকু সাহস শক্তি ও বুদ্ধি সবে মিলি করে চালাচালি, এক অসাধ্য বিজয় করেছে সাধন ॥
এ বিজয়,
অবাক বিস্ময়,
জানিল সারা বিশ্বময়,
তা মোদের চীর অহংকার,
ভাষা ও আবাসভূমির নায্য অধিকার,
নিশ্চিত মরন জেনে, তবুও কঠিন আঘাত হেনে, ছিনিয়ে এনেছে এই বাংলার জনগন ॥
করেছি যে মহাবিজয়,
সে গৌরব গাঁথা জানিতেই হয়,
জানোকি ভাই, আসলে বিজয় কারে কয়,
এমন এক মহা অর্জন যা যখন তখন অনায়াসে হবার নয়,
কথা মিথ্যে নয়, হয়েছে দূর্লভ, অনন্য অসম্ভব এক মহাগৌরব সে বিজয় অসাধারণ ॥
লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণ,
দামালের দল, ছুটে গিয়ে সবে করেছে দান,
কিশোর, তরুণ, যূবক, প্রৌঢ় পুরুষ ও নারী ঘর সংসার ছাড়ি অকাতরে দিয়েছে জীবন ॥
ষোলই ডিসেম্বর,
চীর অম্লান চীর ভাস্বর,
স্মৃতিতে রবে জনম জনম ভর,
মনে পড়ে এই দিনে মনে পড়ে সারা বছর,
ফেলে ছেড়ে স্ত্রী সন্তান ও সম্পদ, সবকিছু আর সবারে করে পর,
একতার বলে, রক্তের ঢলে মোরা গড়েছি সাগর,
দুঃসময়ে সবাই সবার আপন মোরা যেন এক দেহ একই অন্তর,
যদি জাগাতে পারি, তবে তা কেন ছাড়ি, জনতার মাঝে দূরন্ত দামাল ঝড়,
উনিশ শত একাত্তর,
সে ভয়াল দিনগুলি ফেলে আসা বহুদূর,
আপদ ও নিদানে ভরা বড় কষ্টে গড়া বিষাদের স্মৃতিতে ভরপূর,
মায়ের ভাষা ও এ মাতৃভূমিটারে ভালবেসে, উচ্ছাসে গোগ্রাসে করেছি মোরা এ স্বাধীনতা অর্জন ॥
চীর অক্ষয় হোক এ বিজয় দিবস,
জয়ের নেশায় প্রমত্ত, এমন এক জাতি বিশ্বে শ্রেষ্ঠ সরস,
দিবসের আমোদ চরস, স্বপনে সে ভয়াল স্মৃতি হাতপা করে অবশ,
যত শত্রু দূষমন, কেউ হয়েছে নিধন কেউ বন্দি কেউবা হলো করজোরে বশ,
হয়েছে যার জগতজোড়া, নহে অক্ষম খোড়া, এক দূরন্ত বিজয়ী ঘোড়া, সুনাম সুখ্যাতি ও যশ,
শুধু আমরাই নয়, এ বিজয়মেলা গোটা বিশ্বময়, বারবার প্রতি বছরই তা সসম্মানে হয় যথা আয়োজনে করা স্মরণ ॥
যত তরুণ যূবক সাংবাদিক,
সাজ সাজ রণসাজ করিল উত্তাল চারিদিক,
বৃটিসের ঐ দেশভাগ, সেদিন হয়নি তা ছিলনা ঠিক,
লাখো নিরস্ত্র সেনা আমলা বুদ্ধিজীবি সবাই হয়েছিল সৈনিক,
সেই পঞ্চাশে,
এক ঘরে বৈষম্যের বসবাসে,
কেউ হলো জমিদার কেউ পরিনত দাসে,
ধীরেধীরে ধরিল ঘূনে, ভালবাসা, আশা ও বিশ্বাসে,
এক শিশুদেশ না কাটিতে তার শৈশবের রেশ, ভরিল বঞ্চনা ও বিভেদের বিষে,
হলোনা জানা, কেমনে কবে গোপনে হয়ে গেলো বীজ বোনা, প্রতিবাদ আর বিরোধিতার
উর্বর চাষে,
গজাল কঁচি সবুজ চারা,
অতী দ্রুত তার লাল হয়ে উঠে বাড়া,
বুঝিল সবে, আর কোন পথ খোলা নাই দন্দ বিবাদ ছাড়া,
সংগঠন সংগ্রাম, শেষে বুঝিলাম, একতার জাগড়ন আর কৌশল ছাড়া যাবেনা পারা,
আপোষের আর সুযোগ ও সময় নাই,
আর নহে ছাড়, এবার বাধা দিলে বাধবেই লড়াই,
অবশেষে, বঞ্চিত ভিখেরীর মত তবে বীরের বেশে, হলো জনতার ক্ষিপ্ত জাগড়ন ॥
তারপর এলো শোকের একুশে ফেব্রুয়ারী,
বুকের আশা, মায়ের মোখের ভাষা, আমরাই শুধু গড়তে পারি,
সব হারাই, প্রাণে মরে যাই, দুঃক্ষ নাই, তবুও চাই যেন কভূ এ রণে না হারি,
ভাইয়ের বুকে গুলি, উড়েছে কত মাথার খুলি, আপন বুকের ছেদ সেকি মুছে যায় এত তাড়াতাড়ি,
ছাব্বিশে মার্চ, এলো স্বাধীনতার ডাক, হৈচৈ মহা আলোড়ন মাতাল ঘূর্নিপাক, উঠলো দাবী কবে যাবি এদেশ ছাড়ি,
এলো ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের তেজী ছাত্রদের এগার দফা,
তারপর ছিলনা যার কোন বিকল্প আর, মাথা উঁচূ করে দাড়ালো ছয় দফা,
বুঝিল সবে, এ লড়াইয়ে জিততেই হবে, আলোচনায় হবেনা তার কোন রফা,
ভাগ্যের ফের, আসবে এবার তার ভয়ংকর জের, নাহলে তোদের সবার হবে মরন ॥
লাখো শহীদ আত্বার,
বানিয়েছি মোরা পরম শ্রদ্ধার শহীদ স্মৃতির মিনার,
গড়েছি বিজয় স্বরনী,
আগামীর চেতনার তরণী,
আমরা পেরেছি আর কেউ পারেনি,
আমার ভালবাসার সে এক সুন্দর ধরনী,
প্রিয় এদেশ, তুমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ,
এর আকাশ বাতাস মাটি ও প্রকৃতির নেই রুপ ও গুনের শেষ,
প্রতিবেশী বন্ধু পিতা কিবা ভাই, বেঈমান অপরাধী দূষমন কারো ক্ষমা নাই, করে দেয় ন্বিঃশেষ সুযোগের এক নিমেষ,
হাজার সালাম ও লাখো ফুলের মালায় দিয়েছি অযুত দাম, করেছিনু যাদের এমনই বরণ ॥
তারপর জনতাই হলো সিপাহী প্রহরী,
বৈরী দস্যু এসে আর কত করে যাবে শান্তির ঘরে ডাকাতি চুরি,
তার পবিত্র ভূখন্ড আর ভূমিটার,
করিব হেফাজত, হয়ে তার আমানতদার,
নাহলে কেমন জিম্মাদার, যে করেনা রক্ষা তার অংগীকার,
পারিবনা কেন তবে করিতে উচ্ছেদ,
কি কারন, দূর্নীতিটার শির পদতল করে ভেদ,  
মোটে অল্প কদিন পরে,
ভূলে গেছি আমরা কেমন করে,
সত্য সঠিক ও ন্যায়ের একটাই পথ একটাই পথ একটাই রথ করেছি শপথ বিধাতা আর দেশ মাতৃকার ছুয়ে চরণ ॥
পরিশেষে আসুন ভাই,
একটু বসে হিসাব কষে দেখি তাই,
৪৮ বছরে কি পেয়েছি আর কি আজও নাহি পাই,
অনেক বিজয়ের মাঝেও ভেবে কষ্ট পাই, ভয়ংকর দূর্নীতিটা কেন আজও মোদেরে ছেড়ে যায় নাই,
চাইনা সোনার দুধের বাটি, চাই একটা নিরেট খাটি, সুস্থ্য সবল প্রশাসন ॥