ক্যানভাসের ঝুলিটা কাধে পিঠে লয়ে হায় ॥
সেই শুরুতে লন্ঠন লাঠি হাতে,
শুরু হতো কাজ কাক ডাকা প্রাতে,
চেনা অচেনা পথে শীত বর্ষায় একেবারে খালি পায় ॥
একখানা খাকি শার্ট দিয়ে গায়,
ঘূরে ঘূরে বাড়ী বাড়ী পাড়ায় পাড়ায়,
আসিত ঘূরিয়া ফিরিয়া ঘরে সারাদিন পার করে সন্ধায় ॥
তারপর কিনিল সাইকেল,
আসিলে থামিলে রেল, দিয়ে মহা হুইসেল,
তার মত কত শত লোকজন রয়েছে ডাকপিয়নের অপেক্ষায় ॥
দিনে দিনে বাড়িল তার কাজ,
কোথা হতে কি হলো পড়িল বিনা মেঘে বাজ,
জনতার ভির নেই আর আজ, আসে যায় থামে রেলগাড়ী বটতলায় ॥
ডাকপিয়নে আর,
সারা বছরেও কভূ একবার,
নেই তার চিঠি, টেলিগ্রাম ও মানিঅর্ডার,
বদলে গেছে দিন, দেখি তার বদন মলিন, কেন আর আসেনা আমার বাসায় ॥
মনে পড়ে সেই আগে যখন,
ঠায় দাড়িয়ে সে থাকত কিছুক্ষন,
সেই স্বৃতি আজও চোখে ভাসে, চুপচাপ জড়সড় সামান্য কিছু বখশিসের আশায় ॥
ঐ বুঝি চিঠি এলো লিখেছে প্রিয়জন,
সে আছে কেমন, বিরহ প্রবাসে কি কহে কি চাহে তার মন,
কত যাদুর পরশ ছিল মাখানো ঐ চিঠির বচন, কতনা তাতে সোহাগ মধুর শিহড়ণ,  
প্রতীক্ষার লগন, কত বড় ঐ দিনক্ষন,  যেন নাহি ফুরায়, বসে ডাকপিয়নের অপেক্ষায় ॥
আজ আর কেউ চিঠি লেখেনা,
উঁকি দিয়ে জানালায় বাহিরে দেখেনা,
যার ছবি মনের কোনায় দেয় দোলা দেয় হানা,
সকাল বিকাল রাত দুপুরে গোপনে মনে করেযে আনাগোনা,
বসে থাকে দাওয়ায়, আকূলতায় ঘূরে বেড়ায়, অন্তরের গহীন তলে নিঝুম আংগীনায় ॥
মানি র্অডার তো উঠে গেছে সেই কবে,
এখন আবার কেন চিঠি লেখাও ছেড়ে দিল সবে,
জানিনা তবে, লক্ষ ডাকপিয়নেরা এখন কেমনে চলে, কি করে কি খায় কিযে হবে তাদের উপায় ॥
সবারই কাছে, আছে তো ঢের কাগজ কলম,
কেউ তবু কেন লেখেনা চিঠি, চিঠিযে হতো মরম যাতনার মলম,
তবে নেই যেন সেই মন আর, আছে জনে জনে শত সংসয় দ্বিধা ভেদমত, হাতে নেই মানূষের ফুরসত একদম,
কোথা গেল টেলেক্স ও টেলিগ্রাম,
হারাল সওা পোষ্টর্কাড ইনভেলাপ ও খাম,
টাইপিষ্ট টাইপ করে লিখে দিত তাতে ঠিকানা ও নাম ধাম,
এসেছে যুগের কাল ধ্বস যেন সেই মহামারি,
কত ভাল মানূষ, হয়েছে যেন তামাসার ফানুস, এ যূগের সনে উঠেনা পারি,
মন্দের কাছে দেখি ভালরা যায় যাচ্ছে হারি, কিছু পন্যের বেচাকেনা আর কিছু লোকের পেশা ও জীবিকায় ॥