(ছোটগল্পের আদলে রচিত একাট কবিতা)


পাঠালাম আমি বিবাহের পয়গাম ॥
বন্ধুরে আমার মনেমনে আছে,
সামনের চান্দে পাঠাবো তোমার বাবার কাছে,
যদি না পড়ে যাইগো আবার নতুন কোন ফান্দে, আমি তোমায় কথা দিলাম ॥
তোমার লাগি মনটা কান্দে,
মন চায় তোমায় লয়ে একটা সুখের ঘর বান্ধে,
না হোক তোমার বাবায় রাজা মোর হাছে তুমি রুপসী রাজকন্যা,
তুমি মোর হতভাগা জীবনের শীতবসন্ত বরষাফাগুন জোয়ারভাটা ও প্লাবনবন্যা,
তোলপাড় করে মন, ভেবে মরে সারাক্ষণ, নাজানি কখন আবার চড়াদামে হয়ে যায় সে নিলাম ॥
হোক কম ধন তাতেকি আছে বড় মন,
শুনেছি মন দেখেই নাকি ধন দান করেন মহাজন,
বন্ধুরে তুইযে আমার আপনার চেয়েও আপন অতি প্রিয়জন,
শুয়ে শূন্য বিছানায় ঘুম আসেনা হায় তন্দ্রায়ও তোমারে দেখিযে স্বপন,
তোমাকে হারাবার ভয় হায়,
পৌষের গহীন রাইতে যখন আমারে পায়,
ঐ দূর্ভাবনায় আর হতাশায় আমার সারা গায় বন্ধুরে দেয়যে চিকন ঘাম ॥
হয়ত কোন আরব্য বণিক,
চিনিবে রতন আর দিবে তার মূল্য সঠিক,
ভবের হাটে চলছে লাভক্ষতির ঐ বেঁচাকেনার হিড়িক,
তাবেদার অগনন, বাঈজী বাদী ও বিবিগনের গহনা চিকচিক,
পাবে ষোলআনা মন যথা মূল্যায়ন আদর কদর ও যতন তারচে অধিক,
হারালে তোরে কি হবে মোর উপায় বন্ধুরে, কি করিবে শেষে ঐ দিকহারা পথিক,
কোথা পাবো তা আমি, জানি কিনিতে রতন হয় দামী মূল্য তার এক লাখ দেরহাম ॥
আমি এক গরীবের ছেলে,
বুঝি তাই জীবনের হিসাবখানা নাহি মেলে,
কি করিব বন্ধুরে শেষে আমি তোরে আর নাহি পেলে,
মন বলে বিজনে নিরুদ্দেশে পালিয়ে যাই বানিজ্য বসতি ফেলে,
কেমনে কবে আমার সে কপাল হবে যোগাবো আর শোধিব আমি তোর মোহরের দাম ॥
সুখে দুঃখে আমরন,
এক ঘরে বান্ধা দুটি আন্ধা জীবন,
বিনিসূতার মায়া যাদুয় বান্ধা ঐ সে বশীকরণ,
অ বন্ধুরে মোর জানের জান,
মোর মন ও জীবনের দামে চাই তোর মন ও ঐ চোখদুখান,
তাই এ মোর পীরিতির বড়াই জনমের তরে এ বুকের ভিতরে বন্দি করে আমি তরে কিনিলাম ॥
বেঁচে আছি আশায় ও বিশ্বাসে,
যদিরে তোর ভাইয়েরা তেড়ে আসে,
মোর বাড়ীঘর লাঠির আঘাতে নাশে,
লাঠিয়াল বাহিনী লই দেয় পাকা ধানে মই আমার চাষে,
আমি যাইগো হারি আর না পারি বাসনা মোর লয়গো কাড়ি ছাই পড়ে স্বপ্ন বিলাসে,
বসন্ত মোর জীবনে যদি না আসে,
আর কোনক্ষণে শুধু ফাগুনের আগুন ঝড়ে মোর ভূবনে বারোমাসে,
কভূ আসে এমন দিন মোর চারিধার গোধূলী মলিন হারিয়ে যায় দূর অজানায় মম অন্তরের সাম ॥
দক্ষিন পাড়ার,
বাবু প্রশান্ত কুমার,
আমার স্কুল জীবনের স্যার,
বহিতে ভার তিনজন বেয়ারা বাহক আর,
সমঝদার দুজন সহচরও সংগে দিলাম তার,
দিয়ে দশ বিড়া পান ও এক কেজি চিকন সুপাড়ী,
বিখ্যাত চমচম কিতে আনা হতে পোড়াবাড়ী
নিমকিও দিলাম মচমচে গরম আর বগুড়ার দধি দশ হাড়ি,
অ বন্ধুরে তোমার বাবামার চরনে আমার রহিল অনন্ত ভক্তি ও সালাম ॥
হৃদয়ের তামার পাতে রয়েছে লেখা,
জীবনের ঐ প্রথম আলাপন ও প্রথম সে দেখা,
যদি কভূ দেখি তুমি নাই তবে আমি কেমনে বলো বাঁচিব একা,
বিধির চরনে মিনতি প্রনাম না হয় যেন সে কভূ দূষমন করে ক্ষতি না যেন বাম,
কেমনে মুছিব বলো ঐ সে কষ্টগুলো কেমনে ভুলিব আমি শত স্মৃতিভরা তব ঐ মধুর নাম ॥
সরমে সে যায় মরে,
বুঝি বুঝিতে নারে কি করে,
কখনো একেবারে জড়সড় হয়ে পড়ে,
জনম ভরে আপন ভুবনে ঘরে ও বাহিরে ভিতরে,
তবুও আমি তরে বাসিব ভালো যতই হয় হোক কলংক বদনাম, নাহয় যায় যাক কমে মোর দাম ॥
ভেবোনা সহসা তোমার আমার বিয়েটা হবে,
মেনে লবে বাবামা সব দোষ করিবে ক্ষমা সে হরষের ভাগ পাবে স্বজন ও পড়শী সবে,
হবে এক পরিচয় নেই ভয় করছি শপথ এক ঘরেতে বসত সুখেদুঃখে একমত একই ঠিকানা ও ধাম ॥