পর্ব - ০১


জানতে হবে তা জানা দরকার, তুমি কার আর কেবা তোমার ॥
কেন এ জীবন, মাটির এ ভুবনে আসা,
এত ধনজন, ভোগবিলাস বিনোদন, যদিরে হবেই মরণ তবে কেন এত স্বপ্ন আশা,
যদি ভেদ না বুঝি, পথটা না পাই খুঁজি, ঐ অসীম সীমানাটা আর না দেখা হয় তার অরুপ বাহার ॥  
দুদিনের এত মোহ মায়া আর,
ঐ সোনার খনি ও একটা টাকার পাহাড়,
নেশার ঘোর ও যাদুর ভালোবাসার কি ছিল দরকার,
এত রণ, সহন ও বহন আর,
এত অনটন শত যাতনা ও কষ্টবেদন, যদিরে তা হয় রাজার ঋন এ ভরা ও এতই মূল্যহীন ও অসার ॥  
অ মনরে মন তোর বাড়ী কোথায়,
কোথা তর ঠিকানা আর উঠেছিস তুই কোন বাহনায়,
হবেকি সফর সফল যদি শুরুতেই যাত্রা আর যানবাহনে ভুল হয়ে যায়,
ঘাটে গিয়ে যদি দেখিস ভাই,
সবই হারিয়েছিস তুই, তরী মাঝি কিছু নাই,
কি কাজে লাগিবে আর, বিদ্যা ও ধন কিবা ক্ষমতার বাহাদুরি দুনিয়ার ॥
সারাটা দিনভর,
বিভোর ক্লান্ত ও ভীষণ কাতর,
তোমারে হারাতে চায় দারুণ ক্ষুধা ও পিপাসায়,
পেরেশানি ও তাড়না হয় শুধু পিছুটানা তখন হবে কি উপায়,
ভুলের ভিতর তবে করবি কি সন্ধাবেলায়, যখন হয় অনেক ভয় অন্ধকারে পথ হারাবার ॥  
যদি থাকিসরে ডুবে,
রঙের ভুরে ও বারোমজার খুবে,
যদি তোমার দোষে ক্ষিপ্ত রোশে বিধাতায়,
হাতপাগুলি বেধে ধরে যদিরে প্রশ্ন করে জানতে চায়,
কি কাজ ছিল দুনিয়ায়, ঐ দায়গুলি তোমার সব হয়েছে কি আদায়,
কি হবে আর করে তখন, মিথ্যে সব হবে যখন সকল দম্ভ ও বিত্তধন আহাজারি হাহাকার ॥  
কোন ভিটাতে তর বসত ঘর,
দেখনা ভেবে কেবা আপন আর কেবা ওরে পর,
নিরাপদ বুঝে থাকবি নাহয় মাথা গুজে উঠলে দূরন্ত দামাল ঝড়,
বৈরী হয়ে রাক্ষুসে নদী, ভিটাবাড়ী গ্রাস করে যদি, কি হবেরে দশা তখন তারপর,
মরণে সব হারানোর পর, শূন্য হাতে ঐ আঁধার রাতে যে সফর, ধনজন কি রবে আর ভাগে আমার ॥  
দয়াল বিধি হলে বাম,
সবকিছু বিনাদামে হঠাৎ হয়রে নিলাম,
ছোট্ট একটা মাটির ঘর,
যদিরে লাগে আগুন অন্ধকার সে ঘরের ভিতর,
তখন মনে রবে কিনা বাহির হবার কোন্ দিকেতে তার দুয়ার ॥
আছে কি নাই জানা,
তোর কাছে মহারাজার ঠিকানা,
কিবা অচিন দেশে সব হারিয়ে শেষে অনেক দূর ঐ সে শান্তিপুর যাওয়ার ॥


পর্ব - ০২


আছে তার অনেক পথ,
গাঁধার পিঠে কিবা ঐরাবত,
যাওয়ার উপায় নায়ে কিবা চড়ে রথ,
পংখীরাজ ঘোড়া নাই যার জোড়া দেখেনি জগত,
যাওয়া যায় হেটেও নাকি কেজানে কোনটা সঠিক ফাঁকি কোন মত,
লোক চক্ষু পৌছিতে চাঁদে কজনে জানে বিশ্বাস করে ও মানে সময়টা লাগে কত,
কেউ বলে আছে হাওয়াই গাড়ী দিতে পারে পলকে পারি কোটি বছর নাকি হয় নিমেষে পার ॥
এইতো ওরে মানব জীবন,
একদিন লয়ে মাথাভারী ঋন মানুষের হবে মরণ,
সেইতো শুধু মানুষ, যেজন বসে তার হিসাব কষে আর রাখে তা স্বরণ ।
মনিব আর গোলাম,
আপনার মান রাখিলে তার অনেক দাম,
তার চরণে পড়ে কজনে পূঁজা করে একটুখানি রাজার কাম,
কেমনে হবে খাস গোলাম রাজার তরে ওরে না যদি ঝড়ে একবিন্দু কারো ঘাম ।
এ বিশ্বভুবন রাজা ও প্রজার,
লেনদেন বেঁচাকেনা লাভক্ষতি জয়পরাজয় দেনাপানা আসাযাওয়া প্রাপ্তি ও হারাবার ॥  
মানুষের জীবন কতবড় নেয়ামত দান,
ধনজন সুখআরাম ভোগবিলাস ও বিনোদন অফুরান,
রাজ্যটা এক মহান রাজার,
হেথা বসত করে তার প্রজা বেশুমার, বিশ্বজোরা এক পরিবার সৃজন পালন ও মালিকানা যার ॥  
দেখতে কেমন সেই গাড়ী,
কেবা চালক কোন কারিগর করেছে তা তৈয়ারী,
কোথায় তার টিকেট পাওয়া যায়, কোন্ সে জন হবে তার সওয়ারী,
কোন সে সুজন গোলাম,
গোপনে তাই বুঝি তার এত দাম,
একবার ঐ মহাজন যার হয়েছে আপন, নাকি টাকা বিনা টিকেট কিনা আছে তার ॥
ভাংগা ঘর ছনের ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি,
সামান্য বাতাসে করে নড়বড়,
হয়ত পড়বে নূয়ে মাটিতে শুয়ে এলে দূরন্ত ঝড়,
গরমে কষ্ট হলেও কিছুটা কম ভাবনা হরদম শীতে থরথর কাঁপে এ দেহটার হাড় ॥


পর্ব - ০৩


ওরে অবুঝ কানা,
দেখবিরে তর হলে দেখাশেখা চেনাজানা,
ঐ ধনজন কিছুইযে নহে তর,
সকলই দুদিনের ধার আর সবাইযে পর,
কাছে দূরে ও ভিতরে বাহিরে হোক তা যতই সুন্দর,
কেমন ঝলমলে পসর, শত ভালোয় ভরভর যার অন্তহীন বহর ঐ রোশনীর বাহার ॥
যার নাই বেশী দায়ঋন,
সামনে তার দিন সোনালী রঙীন,
পেলে তার মন হলে সাধন রয়েছে বিশাল ছাড়,
এমন গোলামের লাগি, অনাহার নিদ্রাহীন দিবসরজনী জাগি মহাজন বসে আছে লয়ে তার মহান উপহার ॥
আশার হয়েছে মরন,
হতাশা করেছে সবকিছু হরণ,
শুধু অন্ধকার দেখিছে সামনে যেজন,
দিকহারা সংগীছাড়া পথহারা পথিক এমন,
ঘিরেছে যারে আপদ আর নিদানের বিশাল উঁচূ পাহাড় ।
কে দেবে তারে হাতছানি,
শোনাবে সে শান্তিসুখের মধুর বাণী,
আনিবে ধরে সাদরে জোড় করে আলোতে টানি,
যেথা মহারাজার চীর অবারিত সকল সহস্র দুয়ার,
সব ধন ও ক্ষমা রয়েছে অক্ষত জমা করুনার সে অদেখা মজুদাগার অসীম অপার ॥
কিছুই বলবোনা,
নাইরে কোন বাঁধন ও মানা,
চক্ষুওয়ালা ও সব চক্ষু খোলা কিবা জগতের যত কানা,
নিজের কাছে হলেও সবাই বড়, মনিবেরে যে গোলামের হয়নি আজও চেনাজানা ।
যেদিকে যাও যা খুশী করো সবাই স্বাধীন,
সহসাই পড়বে ধরা, রয়েছে সবই ঠিক করা, তোমার অজানা একদিন,
দেখবো পরে, যখন যাবে মরে, আসবে আমার ছোট্ট ঘরে, হিসাবের পানা ও মহাজনের দাদনের ঋন ।
দুদিকে দুখানা পথ,
অদেখা অচিন হাওয়াই গাড়ী ও ভাংগা রথ,
মনে পড়েকি রাজার সনে হয়েছিল কি অংগীকার কোন সে শপথ ।
অ মুসাফির,
কারো প্রাসাদ কারো পাতার কুটির,
যেবা হও তুমি বাদশা ফকির, রয়েছে খোলা দুই দনিয়ার তোমার আসা যাওয়ার দুখানা দুয়ার ॥