সেই আমাদের ছোট্ট বেলায় ॥
অনেক প্রিয় আর অতি আপন হয়ে,
নাওয়া খাওয়া ও ঘূম এ কাজ ও দায়গুলি সব মাথায় লয়ে,
সারাক্ষণ পরম আপনজন সংগী হয়ে ছিল মোদের বাবামায় ॥
স্নেহের ডাক শোনতে না পাওয়া,
উল্টো চলা বা ডানে বললে বায়ে যাওয়া,
যাহা নাই কিবা চায়না দিতে তাহাই বেশী চাওয়া,
বাবারে মারে আদর করে ডেকে বলে মায় ওরে নাইতে খাইতে ঘূমাতে আয় ॥
অকারন চিৎকার কান্না,
অমূলক কত শত বায়না,
কে শোনে কার বারন মানা,
তবু কত আদর নানান মজার খানা,
কেটেছে সারাদিন দৌড় ছুট লম্ফ জম্ফ খেলা আর দারুন মজার কত খেলায় ॥
কাটতো সে সময়,
গা ছমছম করা অজানা মধুর ভয়,
মায়েরে ঝাপটে ধরে সাহসে বুকটা কত বড় হয়,
কতনা শংকা শিহরণ আর ভাবনায়, মায়ের মোখে গল্প শোনায়, কোলে বসে ও শুয়ে তার বিছানায় ॥  
সূর্যি মামা ঐ ডুবছে পাটে,
মজার খেলায় দলেবলে ছোট্ট সে ঐ উঠোন মাঠে,
জোড় করে মায় যাদু যেতে নাহি চায় টেনেহেঁচড়ে ধরে নিয়ে যেত পুকুর ঘাটে,
ধুয়ে দিতো সোহাগ ছোয়ায় সাবান মেখে ভিজা গামছায় সারাদিনের ধূলোবালি যা লেগেছিল গায় ॥
বয়সে একটু বড় কিবা কিছু কম,
ছেলে কিবা মেয়ে কেউ নহে পর অতি প্রিয়তম,
গরীব ধনী কালো সুন্দর ছিলনা এই ভেদাভেদ উত্তম কিবা অধম,
কোনদিন ঝগড়া কিবা হাতাহাতি হলে,
একটু পরে সবই ভূলে ধরতাম হাতে গিয়ে নাহয় জড়িয়ে গলে,
সারাদিন সারাবেলা হাসি গল্প খেলা পূবের ঘর কিবা পাশের বাড়ী থাকতাম সবে একই পাড়ায় ॥
ধীরে ধীরে সবার বয়স বাড়ে,
দেহের উঠতি গড়ন নতুন বসন সীমা ছাড়ে,
একদিন হই অন্তরীন, সীমার মাঝে বিধি ও বিধানের সীমানা গাড়ে,
হয়েছে কখন বিছানা বদল,
এখন বাবার সনে বেশী থাকা বেশী চলাচল,
ভেংগেছে খেলার সাথীদের দল ছিটকে দূরে পড়েছে সকল,
কেজানে কিসের টানে কোন সন্ধানে কে কোন নয়া অভিযানে কোন সে যাদুর মায়ায় ॥
ছানাগুলি আর নয়রে কানা,
এখন যেন শোনেনা আর কারো মানা,
বুঝি ঘরটা কিবা উঠান আর নয়রে তার বিচরণ সীমানা,  
মায়েরে ফেলে দূরে চলে যায়,
মায় আছে কি নাই বারবার ফিরে ফিরে চায়,
দূর হতে বারবার মায়েরে দেখে মনে বল ও বুকে কত সুখ পায়,
অসীম দূরে দেখতে ঘূরে মন চায় আরও জানার ঐ বাসনা তাই বুঝি ছুটছে সবায়,
যখন তারা হাটতে শিখে উড়তে পারে, ছুটে বেড়ায় দিকেদিকে ঐ পিপাসায় কি আছে কোথায় ॥
কত বড় এই দুনিয়াখানা,
কোন লক্ষ্য নেই, নেই জানা তার ঠিকানা,
কতকিছু জানিতে চাহে মন,
এই মন আর মগজে ভরা কত প্রশ্ন পুলক আর শিহরণ,
অন্তহীন পথ অসীম প্রান্তর অথই অতল সাগর কত বড় আসমান বিশাল এই দুনিয়ায় ॥
শৈশব কৈশোর তারুণ্য,
হালচাল একেবারে অচেনা অন্য,
দূরন্ত দামাল চালচলন কিছুটা যেন বন্য,
হাকডাক নালিশ কত ক্ষত অভিযোগের কিছু চিহ্ন,
তুচ্ছ নগন্য নয় ঘরে বাহিরে কেউকেউ পায়যে ভয় হেন ভিন্ন,
বেড়ে যায় দায়ঋন, এমন স্বাধীন ঘর ছেড়ে শহরে বিশাল পরিসরে স্কুল কলেজ ভার্সিটির আংগীনায় ॥
নৌকা না পাই যদি,
সাঁতরে পার হবো ঐ বিশাল নদী,
মোটে তিনমাইল পথ ঐ মহরত কাশীপুরের মেলা,
না পেলে রথ দৌড়ে যাবো চলে যেতে আসতে ঢের যেটুকু আছে বেলা,
আমিতো সবই জানি সবই বুঝি সবই পারি,
যখন সবই চিনি তবে কেন থাকবো বসে পিছে পড়ে যাবো হারি,
নাই পিছুটান দায়ঋন,
ভয় ভাবনায় কভূ সে হয়না মলিন,
দামাল হয় হৃদয় কোন সে হাতছানি রঙীন পরম পাওয়ার ফাগুনের আগুন ছোয়ায় ॥
এলো যৌবন,
বুঝিনা তার কি কারণ,
হলেম আমি একঘরে যেন বন,
আমার বসত এখন কাচারী ঘর শূণ্য বিজন,
সদা ব্যাস্ত যে যার মত ঘূরছে অবিরত একসাথে আর বসে নাহি খায়,
তারপর বদলে সময় তার চারপাশ বদলায়,
এমন সময় আসে মাকে আর আগের মত নাহি ভালবাসে তবু সে রহে প্রতীক্ষায়,
সেই রাতের বেলায় কখনও নয় কখনও ফিরে,
মিশে যায় কোন সে পাওয়ায় কোন কাফেলায় নিজেরে হারায় কোন মানুষের ভিরে,
নতুন মধুর পাওয়ায় জীবনটা যেন যায় ভরে কানায় কানায় কোন সে নব স্বাধীনতায় ॥
কিসের আবার আলোচনা মতামত,
বাঁকা সোজা নয়রে বোঝা অসমতল ও বন্ধুর পথ,
কিসের আবার মন্দভালো সাদাকালো আঁধার আলো সৎঅসৎ,
কেন এত দন্দ বাধা গোলক ধা ধা বিধি বিধান নতুন বলা নতুন চলা নতুন করায় ॥
মন কতকিছু পেতে চায় করতে বলে,
কে আছে কে নাই তাতে ভাবনা কি ভাই আমার দলে,
মগ্ন মনন করে ধাওয়া,
সেইতো আমার পরম পাওয়া,
তার অপার রঙ বাহারে ডুবিয়ে নাওয়া,
ঐ অসীমে সোনালী ঝিলের গহীন তলে হারিয়ে যাওয়া,
আছে তৃতীয় নয়ন মুক্ত মনের দুখানা ডানা সুদূর বিচরণ গভীর সাধন নহে অন্তরায় ॥
নতুন কিছু শেখা জানা,
নতুন দেখা নতুন পড়া বদলে দেওয়া ধারনা,
কত অজানা অমূল্য বাণী ও পাঠ,
খোলা তেপান্তর ঘূর্নিপাকের ধূলিঝড় দিগন্তহীন মাঠ,
জানিবে ভর্তী হলে, আর যদিরে দীক্ষা মেলে, মানুষ হবে তাহলে পাঠ করে আজব ঐ পাঠশালায় ॥
ব্যাবসা যখন আছে লাভক্ষতির ভয়,
আছে হারজিত দেনাপানা ও জয় পরাজয়,
সে কি আবার Ñ কি তার ভেদ পরিচয় তা কেমনে হয়,
আবু হকে ডেকে বলে, ওরে নিশ্চয় আমার কথা মিথ্যে নয়,  
কেমনে তাদের হবে জানা,
চোখ থেকেও এ ভূবনে যারা রলো কানা,
অরুপ রোশনীটার পেতে খুঁজে দুয়ার কেউকি কভূ করে মানা,
জীবন গেলো যাদের হায়, যারা মজে ঘোরে ও ধাধায়, শুধু ভোগের রোগে আর চাওয়া পাওয়ায় ॥
ক্ষেপে আছে মহাজন,
কেন সাজানো হলোনা কানন,
ফুলে ফলে তরু শোভায় এ ভূবন,
সুদ আসলে সে পেতে চায় তার দাদন,
যে করে সৃজন দিলো এ জীবন ও এত ধনজন,
দমের মালিক আর না দিলে তোমারে ধার একটি ক্ষন ওরে মন কি হবে তখন উপায় ॥
খেলাপী ঋন খোর,
সবাই রয়েছে মত্ত বিভোর,
অপরাধী আসামী বিবেকের চোর,
লয়ে নাঁচগান ভোগবিনোদন পেলোনা সন্ধান হলোনা ভোর,
কেমনে পসিবে ঐ সে আলো যেথা সকল ভালো বন্ধ ঘরের জানালা দ্বোর,
এমনই ভোলা মন কাটিল জীবন তবু হলোনা সাধন গেলোনা তার অলীক নেশার ঘোর,
অনাদায় পড়ে আছে কার কাছে কত দায়ঋন,
ঐ বোঝা মাথায় লয়ে দেনাদার আসামী হয়ে নিত্য যার কাটে দিন,
কত বেলা আর আছে বাকী কোনটা আসল কোনটা ফাঁকী তা ভেবে কেন মন তার হয়না মলিন,
রঙীন মেলায় রঙের পসরায় জীবন কেটে যায় অজানায় অবহেলায় ॥
ডাকছে কবর,
কেন এত গাফেল বেখবর,
কেমনে হায় তারে করলো পর,  
যে দিলো এ জীবন এত সুখ সুন্দর,
ভূলেও নিলোনা খবর দেখলোনা একবারও খুলে কি লেখা আছে দাতার ঐ হিসাবের খাতায় ॥
কখনযে আসে কার মরন,
জানা নাই কারো তার দিন তারিখ স্থান ক্ষন,
বাপের আগে পুত চলে যায় দাদার আগে নাতি এইতো বিধান ওরে এটাই জীবন,
ওরে মন, হও মানুষ হও মুসলমান চাই সাধনার সাধন নাহলে কেমনে শোধিবে ঋন এড়াবে দায় ॥
সিন্ধুকে স্বর্ন বোঝাই,
লাভক্ষতি ও দেনাপানার হিসাব নাই,
রাখা আছে ব্যাঙ্কভরা টাকা,
আসলে তার সঞ্চয় সম্বল ফাঁকা,
এ ভূবন এ জীবন রঙমাখা ছবি আঁকা,
অবুঝ পাষান তার চক্ষু দুইখান রয়েছে ঢাকা তার একখানা রঙীন চশমায় ॥
দেখলোনা ঐ নয়ন খুলি,
ডানকাধে থাকা তার শূণ্য ঝুলি,
কাজ ভালো নয় তবে সুন্দর তার বচন বুলি,
বাম কাঁধের বোঝাটা ভারী, বইছে অধম বোঁকা কুলি,
ছুটোছুটি করছে সবায় হাতে লয়ে রঙতুলি মাখিতে রঙ তার আপনার সারা গায় ॥
এখন যে ভাই বুড়াকাল,
শুধু ছড়িটা সম্বল, নাই তলোয়ার ঢাল,  
লোকে বলে,
তিনকাল নাকি গেছে চলে,
এখনও সজাগ ও সচেতন না হলে,
কি হবে উপায় করবে কি তবে তারা সকলে,
পরকাল বেখবর দাদনের মহাজন হয়েছে পর কালের ঢলে,
বেহাল দুনিয়ার কতনা বিলাস বাহার ধন ও ভোগবিনোদন রয়েছে তার দখলে,
ভাংগা তরী কখন কেমনে গড়ি ঐতো রবি অস্তাচলে ওরে তুমি কি ঐ বিভোর পাগলের দলে,
ঐ অথই অকূলে নাইকো যার বৈঠা হাল,
যার দশা বড়ই বেহাল তার কেন ভাই রাঙা পাল কে দেবে নিদানে সামাল,
কে নেবে দায় করিবে পার যখন কেউ নহে কার এমন হাহাকার কি হবে উপায় দূরন্ত দামাল ঈশান বায় ॥