পর্ব - ০১


একজন, অতি সাধারণ মানুষ আমি ।
কহে ভাল কথা ও করে ভাল কাম,
আবু হকে বলে দামী হলে রয়েছে তার কাছে ভাল দাম,
নাহলে এ জীবন আসলে,
এ সফর, ক্ষেতি চাষ ও বানিজ্য বসতি সকলই বিনাশ ও ষোলআনা বিফলে ।
খোদার যতনে সাজানো এ দুনিয়াটার,
শ্রেষ্ঠ সৃজন মানুষ হয়েছে কেউ বেঈমান কেউবা জানোয়ার,
কত রঙ, কত নেয়ামত ও কত বাহার,
কোন দোষ নাই ওরে দয়াময় বিধাতার,
জুলুম ও অবিচার, আপন কথায় ও কাজেই আজিকে সবাই দামী হয়েও হয়েছে বড়ই কমদামী ।
নিত্য হামেশা, ঐ একই ভাবনা হয়,
সহস্র সব পরীক্ষায় করে পাশ করবো কেমনে কবে সনদ জয়,
অল্প বিদ্যা ও সামাণ্য ধন,
কোনমতে সরল পথে বেঁচে থাকার মতন,
হয়না দীনজনে কিছু দান কিবা করা কোন সেবা উপকার অসহায় কারো তেমন ।
ওরে সাধ্য আমার কি,
জানি তার যতই বাহার সকলই ফাকি,
যদিও আমার ঘরে তার অনেক প্রয়োজন,
কেমনে আমি তা বলোনা কোথা হতে করবো আহরণ ।
ঘরনী বলে তুমি পারোনা, তবে কেমনে তা অন্য লোকের সাধন হয়,
এ দেহটার রুপ ও জীবনের জৌলুসটা শোভন, কিবা কোন ক্ষমতার আসনও নয়,
কি জবাব আমি তারে দেই,
যে জবাব আছে আমার কাছে তাতে সে খুশী নেই,
ভেবে ভেবে শেষে আর, পাইনা খুঁজে কোন জানালা দুয়ার, মাথাটা আমার যায়যে ঘামি ।
আছে কি নাই বাড়ী-গাড়ী,
মৌ মৌ সৌরভ ও পোষাকের ঝকমকে সাজ বাহারি,
চলন বলন কর্ম্ম ও আচরণ হওয়া চাই সেরা,
আলো ও ভালোয় ভরা, তার করুণা ও রহমতের সোনালী সবুজ চাদরে ঘেরা ।
জীবন ও মরণ, দুই দুনিয়া একই খোদার,
এ জগতের যত শ্রেষ্ঠ ধনী ও তাদের ঐ ধনের পাহাড়,
সেতো মালিকানা নহে, শুধু সবে অল্প কিছুদিনের এক ইজারাদার,
ইতিহাস বলে, ধ্বস আছে দুরন্ত প্রতাপ ও ক্ষমতার,
বোকার ধোকা খাওয়া ও কানার ভুল ধারণা, জগতের কেউইতো ওরে নহে মালিক তার ।
মানুষের এ দেহ-প্রাণ,
যত ধন-জন শত নেয়ামত ও দান অফুরান,
সৌদী বাদশাহ, বৃটিশ রাজারানী ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হোক যে যতই ক্ষমতাবান,
সেযে এক মিথ্যে মোহ ও একেবারেই মূল্যহীন,
দাতা মহারাজার কাছে, তাদেরও আছে মস্তবড় এক মাথাভারী ঋন,
বিধাতার যখন ইচ্ছে হয় কিবা যদি তিনি চান,
পলকে সব কেড়ে নিয়ে যান, অদেখা ঐ রশিটা ধরে দিয়ে আচমকা এক হেঁচকা টান,
দুনিয়ার যত অবিশ্বাসীগণে,
একক স্রষ্টা ও একমাত্র তার মহান দাতার সনে,
জানিনা তারা কোন দুঃসাহসে কেমনে করিছে চুক্তিভংগ ও তামাসা-রংগ বেঈমানি ও নিমক হারামী ।
হোক বা নাহোক জীবন ভোগ-বিনোদন ভরা,
যেমনই কাটুক দিন, রাতগুলি যেন হয় ঐশী আলোয় ঝলমল করা,
আকাশের ঐ ঝিল-বাগানের মহারাজার কুটুম বাড়ীটা যদিরে না হয় আমার আপন কাজের মূল্যে গড়া ।


পর্ব - ০২


আসলে ঐ প্রাসাদখানা,
ক্ষুদ্র দানের বিশাল প্রতিদান কিবা বিনাদামে কেনা,
কভু যেতে হবেনা ছেড়ে, কেউ কোনদিন নেবেনা কেড়ে, চিরস্থায়ী সে মালিকানা,
এক মহান রাজার হয়েছে যে নগন্য অধম গোলাম,
একটাইতো কাম, মানা আদেশ-নিষেধ, হালাল ও হারাম শুধু তার মহিমা গাওয়া ও করা গোলামী ।
সেতো ওরে তার রাজী ও খুশীটা চাওয়া,
সে এক অসীম অপার জমা, তার করুণা ও ক্ষমা জীবনের পরম পাওয়া,  
এ জীবন যদিরে হয় মূল্যহীন,
কেমনে শোধিব হলে, লয়ে মাথাভারী রাজার ঋন,  
কেমনে হবে সাধন, মরণের সে জীবন ওরে পাবো আমি,
অগণিত ফুল-ফল পাখী ও হুরদের সনে,
হরষের মহাসুখ ও ভোগ-বিলাস বিনোদনের সে আয়োজনে,  
সকলই যাবে বিফলে, তা হতে না পারিলে, মহান দাতা ও মালিক স্রষ্টার কাছে সেরা ও দামী ।  
ধরে রাখা হাতে ডোরখানা,
আমার ইচ্ছাতে কিছুইতো হয়না বা যায় আসেনা,
বাতাসে ভাসেনা মেঘ না হলে তা, কভু তার হাতের খেলনা,
না পেলে তার মনিবের করুণা,
মানুষ একেবারে তুচ্ছ নগন্য, অধম ও ফেলনা,
মানুষ হওয়া এক পরম পাওয়া, হয়েছি মানুষ সেতো ধারণা,
মানুষ হতে চাই, হয়েছি বলে করি’ও বড়াই, আসলে তা সত্য কিনা সেতো হলোনা জানা,
মেঘেতে চড়ে বসে, আকাশে ভেসে ভেসে উড়িনি হয়েতো কভু এক রঙের ফানুস,
কে জানে হায়, কি লুকানো বিশ্বাস ও ধারণায়, অজানায় আবার আমি হয়ে রইনিতো কোন অপরাধী আসামী ।
মেহনত করে ভাই,
দিন শেষে আমি যেটুকু পাই,
যাই হোক সেতো নিশ্চিত মোর হালাল কামাই,
আমি ভার বই ও ঠেলাগাড়ী চালাই,
রোজতো ওরে আমি, পেটভরে দুধমাছ ও ডালভাত খাই,
তাই বাজারের বেগ লয়ে হাতে, শেষ বিকেলে কিবা সন্ধারাতেই ঘরে ফিরে যাই,
নিজেরে ভাবছি, আমি একজন ভাল মানুষ, কেজানে আসলে সত্যটা কি, কতটা দামী কিবা কমদামী ।  
দিন আনি দিন খাই,
লাভ-ক্ষতি সঞ্চয় ও সম্বল কিছু নাই,
এ জীবন ধনজন ও যেটুকু যা আছে মোর কাছে তাই,
ভাবছি মোর নাই কোন দায়-ঋন,
তাই কিরে আমি হয়েছি পুলকিত রয়েছি ভাবনাহীন,
কেজানে ভাই, করছি আমি কিসের বলে, সফলে না বিফলে সে কোন বড়াই,
কেন ভুলে যাওয়া, সবকিছু মোর ধারেতে পাওয়া পলকে নিমেষে হারিয়ে যাওয়া যেন এক হেন  নিলামি ।
কত অভিনয় করি,
জোর করে হাসিটা মোখে রাখি ধরি,
সবারে ঐ একই কথা বলি,
শুধু তোমারই বলে, ঐ তালেতালে গোজামিলে যাই চলি ।
খুব ভাল আছি ভাই,
কতজনেরইতো ওরে হতে পারে তাই,
কারেও বলিতে চাহিনা, বুঝিতে দেইনা তাইতো বুঝি সরমে লুকাই,
গোপনে মরমে, কত ভাবনা ও যাতনা উঠে চরমে, ঘরেতে মোর আহারে কতকিছু নাই,
টানটান পেরেশান, বলা যায়না কামনা শুধু আরও কিছু ধন আর সুখটাই,
মম এ দেহটার সপ্ত বাসনার পঞ্চ পরাণ, রহে মোহতাজ সারাক্ষণ এক অদেখা প্রভুর করুণা কামি ।


পর্ব - ০৩


দাতার চরণে পড়ে,
সিজদা করে মসজিদে ও ঘরে,
দেখা অদেখায়, সেতো জানিতেই পায় কি বাহিরে,
এমনই মোর যেথা সদা এঁটে রাখা দ্বোর, ঐ সে বিচরে তার গহীন ভিতরে ।
শেষে আমি সব ভুলে যাই,
শত নাই বলে ওরে, যেথা কোন কষ্ট বিষাদ নাই,
মনেতে বড় প্রশান্তি আর, সুখ সান্তনা ও ভরসার, একখানা শীতল ঠাই খুঁজে পাই,
যেতে হেথা পারেনা কেহ,
এমনই ঐ মাটির খাঁচার নিখুঁত গাঁথুনির দেহ,
নেই কোন যার জানালা দুয়ার,
তবু আহা তার কতযে বাহাদুরি ও কতনা বাহার,
জানা নেই কবে, তবে হঠাৎ কখনও হবেইতো হবে তার ষোলআনা সবটুকু ছারখার,
যদিও রয়েছে তা ভরে আর চলছে এখনও তার করুণার বলেতে ঐ অদেখা রাজার,
মম এ দেহটার সপ্ত বাসনার পঞ্চ পরাণ, সদা মোহতাজ ও পেরেশান তার প্রভুর করুণা কামি ।
আমি প্রসন্ন বদনে প্রতিদিন,
কত বড় কথা, কেমন সে পাওয়া, নাই কোন দায়ঋন,
আমার সকল পাওয়ার,
আর এইযে সুখে বেঁচে থাকাটার,
এক খোদার এ মহারাজ্যটার নগন্য এক প্রজা হয়ে,
বিশ্বাস ও ভরসা আর, তার শত স্বপ্ন আশার একখানা ছোট বাসা বানিয়ে,
সত্য বলি ও তার পথে চলি আর, শুধু আমি তারই গুণ গাই,
সবকিছু যার আমি তার গোলাম হয়ে মনে সুখ পাই,
বিনয়ি হয়ে, শত মহান দান-অবদান শিরে ও বুকেতে লয়ে, সদাই তারে খুঁজে বেড়াই ।
কেনরে তুমি সংগে থেকে,
হে প্রভু মোর, আমার চক্ষু দুটি নাকি নিজেরে তুমি রেখেছ ঢেকে,
তোমারে আমি দেখিতে নাহি পাই,
কেমন গোলাম ও মনিব ভাবছি সদাই আমি তাই,
দুটি চোখ থেকেও, বারবার খুঁজেও আহা, কেনরে আমি ফেলেছি হারাই,
চরণে পড়ি তবুও পূজা করি, তোমার অপার করুণার গুন গাহি আর অসীম ক্ষমতার বড়াই ।
হয়েছে ও রয়েছে সবকিছু মোর কম কম,
তাই বলে, যখন লোকে অবজ্ঞা ভরে হেয় করে ও দেয় সরম,
মোখ উঁচিয়ে তব ঐ দরবার পানে,
হে মহারাজন তাকিয়ে তখন শাহী আসন ও তারই শানে,
আহত পরাণে আমার, আমি যেন বারবার পাই ফিরে আবার শক্তি সাহস ও বড় করে দম.
তুমি যদি হও বন্ধু পরম, কেবা দুশমন কিসের যম, কে বলে আমি তুচ্ছ নগন্য অধম ও কমদামী ।
সবাইতো বান্দা হয়ে আসে,
পড়ে লোভ মোহের ঘের ও মিথ্যা মন্দের সর্বনাশে,
কেউ নাঁচে গায়, খায় ও ফালায় এক বিভোর নেশার ঘোর বেসামাল উল্লাসে,
কত মানুষ হতাশায়, সীমাহীন কষ্টে দিন যায়, কারোবা অজানায় কতনা আপদে নিদানে ও উপবাসে ।
কেউ পড়ে অচিন বিষম ফাঁদে,
নিশি দিনভর, হয়ে কাতর বিষম বিষাদে গোপনে কাঁদে,
চোখে নেই একফোটা জল,
বুকেতে যার বিশ্বাস রয়েছে অটল,
তারেযে চালায় বিধাতার অবিচল ভরসা ও বল,
বিদ্যান ধনবান ক্ষমতাবান ও তার লম্বাহাত বা অনেক বড় সেই দল,
ছোট-বড় মন্দ-ভাল সকল চলন বলন মনন ও কাজের পাবে সবে নায্য সঠিক প্রতিদান ও ফলাফল ।


পর্ব - ০৪


কারচুপি প্রতারণা ছল-বল ও কুট-কৌশল,
হবে সবই বিফল, শুধু মহারাজার সমন ও পরোয়ানাটাই হবে সফল,
সব তুচ্ছ বিফল, যত বাহাদুরি, বড়াই ও বল,
মরণ হয়ে আজরাইল এসে, হঠাৎ ভিসার মেয়াদ শেষে, চুলধরে টেনে শেষে বলবে ওরে নিমেষে চল,  
কেন ভুলে যাওয়া, সবকিছুইতো মোর ধারেতে পাওয়া পলকে নিমেষে হারিয়ে যাওয়া হেন নিলামি ।
কারো নিদহীন কাটে কত রাত,
রোগ-বালাই আপদ ও নিদানের সনে হামেশা হয় দন্দ-সংঘাত,
দুদিনের জীবনের এ দুনিয়ায়,
সবাই খালি হাতে আসে, পরে কত ধনজন পায় বা কামায়,
কোন সে যাদুর নেশায়, সব ভুলে যায় ও গেছে হায়, যত অংগীকার ও তার শত দায়,
তা কত ভালবাসে, তবু শেষে কোন হুতাশে, ধনজন সব ফেলে আবার তেমন খালিহাতেই চলে যায় ।
কেন এই আসা আর যাওয়া,
কেন কেউ ঢের পায় ও কারো মোটেও না পাওয়া,
ওরে কার তা জানা আছে,
কে রাজি ও সক্ষম তার জবাব দিতে রাজার কাছে,
প্রভুর কাছে গোলামের আবার কিসের দাম,
হ্যা তা’ও আছে, হতে পারলে মহারাজার প্রিয় গোলাম,
প্রমাণ আছে, মনিবের লাগি গোলাম ঝড়িয়েছে কবে কয়ফোটা ঘাম,
যার সংগে রয়, দুঃখসুখের কথা কয়,
সময়ে দরদী হয়, ভার-বোঝা তার সকলই বয়,
এমন খাটি দাস, আসল মানুষ ও সংগের সাম,
লোকের কাছে যার নাই কোন অভিযোগ নালিশ কলংক ও বদনাম,
ছেড়ে আমার আমার, আরও ধন ও আরও সুখ-আরাম,
করছে যেজন রাজার খুশীর কারণ, দীনজনে সামান্য দান ও কিছু ভাল কাম,
কেউবা খোদার কুটুম হয়ে, কেউবা আবার তার দেনার বোঝা মাথায় লয়ে, হয়ে গুনাহগার অপরাধী আসামী ।
মনেহয় হয়েছি আমি ধন্য,
তার করুণার অদেখা অপার দানের জন্য,
না হলেম যদি মানুষ সেরা, কিবা তেমন দামী কোন পণ্য,
জানিনা কোন কাতারে প্রভু ফেলেছে আমারে, কিবা করেছে আহারে কোন দলেতে গণ্য ।
নাই মোর কোন বাড়ীঘর,
কিবা তার বাহির ওরে, কিবা ভিতর,
আমিযে এক অচেনা ভিনদেশী মুসাফির যাযাবর ।
হতে চেয়েও সবার আপন,
পারিনি, করেছি কত আমি আজীবন প্রাণপণ রণ,
করেও পূরো বিশ্বাস, মেনেও বিধান বারোমাস, হতে পারিনি তার প্রিয়ভাজন,
কেন মোর ভাগ্যটা ছিলযে এমন,
খুঁজে পাইনি দোষগুলি মোর কিবা ঐ বিড়ম্বনার কারণ,
তেজে ক্ষুধা ও তেষ্টা, করেও শতবার চেষ্টা, কেন আমি পাইনিতো তবু কারো মন ।
এসেছে কত ঢেউ, ঢেউয়ের পর,
আপদ ও নিদানের অবিরত শত ঝাপটা দামাল ঝড়,
কথায় ও কাজে লোকের মিল নাই, বুঝিবা তাই এক নহে দুই বাহির ও ভিতর,
পাইনিতো সে ভালবাসা যা ছিল আমার পাবার অধিকার ও আশা, রয়ে গেছি যেন আমি হয়ে তাদের সবার পর ।


পর্ব - ০৫


কাউকে কিছু না বলে,
কত সে কষ্টের অতীত পিছনে ফেলে,
দূর্গম বনানীর অচেনা পথ, প্রাণপণে দলে-পিষে পদতলে,  
সাঁতরে সাঁতরে ছিলনা বল, ক্লান্তিতে বড়ই কাতরে শতদল দুহাতে দুপাশে ঠেলে,
স্বেচ্ছায় অনেক দূরেদূরে থেকে, যেন নিজেরে আড়ালে ঢেকে, গিয়ে কোন এক বিজন বনে চলে ।
কেউ যদি কভু তা শুনতেেই চায়,
সুদীর্ঘ এক সকরুণ গল্প সেকি সবারে বলা যায়,
মিনতি করে মোর দুহাতে ধরে, বসিয়ে আটকে রাখে সে আমায়,
বলবো আমি তা উজার করে খুলে সব,
শুধু কষ্টই নয়, হবে একটু সুখেরও ভাগাভাগি বিনিময় হরষের যত অনুভব,
শোনব দিয়ে মন খুলে শ্রবণের বাতায়ন,হলে চারপাশ বিজন ও শান্ত নিরব,
প্রসন্ন মনটা কখনও যদি আমারে বলে তবে তাহলে, সে সময়টা কভু ওরে হাতে পেলে আমি ।
হে মোর প্রভু তোমার,
লুকিয়ে রাখা ধন রতন ও নেয়ামত ভান্ডার,
জানি আমি তার, চিরকাল রহিবে আছে খোলা তব ঐ ভাঁড়ারের দুয়ার ।
তার এমনই শান,
আর মালিক তার এত বড় ও এতই মহান,
যতই বিলিয়ে দেয় করে দান, কভু তা হয়নারে হবেনা উনা কিবা উজার ।
ভেদ বুঝিনা আমি, বলো তার সাধ্য কি আমার,
কারো হায় উপচে গড়িয়ে পড়ে যায়, কারো দেখি নাইনাই তাই সে হাহাকার ।
বলো কে আছে আর, এমন সাধ্যইবা কার,
ঝুড়ি ভরে নিজে সে নিবে, আর অন্যকেও বিলিয়ে দিবে, সে ক্ষমতা বা অধিকার ।
আমি চাইনিতো ধনের পাহাড়,
বড় সাধ ছিলযে মনে,
দুহাতে দান করিব আমি দীনজনে,
সে সাধ হয়নিতো পূরণ, আমিযে নিজেই দীন ধনে,
ভুখারে পেটভরে দেবোযে আহার,
চারপাশে যাদের বারোমাস অদেখা নিদানের ঘের, করিব এমন জনের সেবা ও উপকার ।
তবু তারা এ জগতে,
বেঁচে আছে যেন ওরে কোনমতে,
দুঃখের অথই পাথার,
নাহি ফুরায় যেন হওয়া যায়নারে পার,
তব ধন-রতন অসীম অপার, বলো তা রেখেছ লাগি কার,
তবু কেনরে এমন, এত বড় তব এ ভুবন, যেন কেউ নাই আর কিছু নাই তার ।
পুণ্য বাসনা আমার, এ জীবনে বুঝি প্রাণ পেলোনা আর, তোমার প্রিয় দাস কেমনে বলো তবে হবো আমি ।
আমার আপন হৃদয় ভুবন,
রলেও বুকের ভিতরে একেবারে শূন্য ও বিজন,
ভীষণ নিঝুম, অন্তহীন সে প্রান্তর,
থেকে থেকে উঠে হেথা ঝড়, চারপাশ করে দেয়া ধুলায় ধূসর,
আপনার মাঝে একাকি আমিযে হই এমন,
শুধুই নিজেরে ঢাকি ও চু্উপ করে লুকিয়ে থাকি, নিরবে নিঝুমে গুমরে কাঁদে মনটা যখন ।


পর্ব - ০৬


ঘরে ও এসে বাহিরে,
দুচোখ ঘুরিয়ে যতই আমি চাহিরে,
মম নয়ন ও মন কোন সে বেদনে রয়েছে ভরে রেখেছে ঘিরে,
দেখি আমি বড় একা সখি স্বজন ও সখা কেহই মোর নাহিরে,
কি হবে দিয়ে বড় মন,
বদলে গেছে দিন, ওরে আজিকে এখন,
বড়ই আকাল ও নিদান, যেন অচেনা সব চেনাজানা মানুষগণ,
যুগের এমনই হাল, হয়েছে কঠিন চেনা কে বন্ধু আপন কেবা পর ও কেবা অমানুষ দুশমন ।
মনের যেন কোন দাম নেই,
নিয়তির ফেরে কিরে হয়েছি আজ আমি সেই,
বাড়ী-গাড়ী সোনাদানা ও শাড়ী, শুধু সে আলোচন,
লোকে দেখিতে চায় কতটা চমকায়, রয়েছে কার কত বেশী ধন,
কথায় কাজে হয়, মানুষের প্রকৃত পরিচয়, ঘৃন্য ভয়ংকর আচরণ,
দেখেছি আমি এমন, আছে বলেইতো অঢেল ধন, এ সমাজের মানুষগুলি সব জাত-কুলে হয়যে বড় ও নামি ।
একজন বুড়ো বাবায়,
যার নাই কোনই উপার্জন কিবা আয়,
তবু কেন মনটা আনচান, নাইতো কোন তার পিছুটান কিবা দায়,
কেউতো তার কাছে আর, কোনকিছু নাহি চায়,
সে বরং কিছু নগদেও হাতে পায়,
কেনরে তবু তারে, মাঝেমাঝে বড়ই অস্থীর ও পেরেশান দেখায়,
সকলের কাছ থেকে যেন একটু দূরে,
গহীন সুদূরে, অসীম নীল আকাশে একাকি বেড়ায় ঘুরে,
বসে ঘরের এক বিজন কোণায়,
কোন্ ভাবনার ভুরে, জানিনা সে কেনরে, চুপচাপ থাকিতে চায়,
ঐ অপরাধ ও অপবাদ তীক্ষ্ণ খোঁচা তার ক্ষত ঘায়,
বুঝিরে সে তার, অক্ষমতার কথাই যেনরে শুধু সহস্রবার শুনিতে পায়,
তার কোন কাজ নাই,
ঘরে বসে লেখাপড়া করা ছাড়া তাই,
হেয় ও আঘাত করার ছলে,
ঐ একই কথা জোর গলে মন্দ করে বলে,
জানিনা কি ছাই শুধু সে লেখে আর লেখে,
ডাকিলে শোনেনা কিছুই বলেনা নাহি কভু সে ফিরে দেখে,  
ঘরের কোন কাজ করেনা, ধরেনা পড়েনা মরেনা নাই মাথাব্যথা টেনশন, এমনই সে একজন শুধু খায় আর ঘুমায় ।
এ সুখে তবে আর কি সে চায়,
সবইতো আছে তার কাছে, সবইতো যেন ঢের পায়,
এ দুটি নয়ন, মন ও দেহটারও আছে কিছু প্রয়োজন, তবে কি ওরে তাই যা অদেখায় ।
কে করিবে তা অস্বীকার ও কে নিবে তার দায়,
এক ক্ষুদ্র সীমানার সীমাবদ্ধতায়, ছটফট করে প্রাণ কোন তাড়নায়,
নাহলে কেন রহে সারাক্ষণ, এমনই মনেহয় মনমরা একজন, যেন সে বড়ই একা ও অসহায় ।
অদৃশ্য ও আজব একখানা,
মায়া ও শাসনের জালেতে ঘেরা ঐ জীবনখানা,
আশা আর হতাশার সারাবেলা, সেকি দূরে ঠেলা নাকি ওরে কাছে টানা,  
উঠতে বসতে ধরতে বলতে চলতে ও কিছু করতে কতযে তার বাধা ও নিষেধ কিবা মানা ।
আপন ঘরে যেন সে এক গৃহবন্দি,
অবস্থার শিকার নাকি হার মানা, নিয়তির সনে গোপনে করা অজানা সন্ধি,
হয়ে রয়েছে পড়ে বড়ই কোণঠাসা,
তবু আহত আধমরা আশাগুলি কেন ছেড়ে যায়না তার এ বুকের বাসা,  
মন বলে ওরে হয়নি সফল মম এ ভ্রমণ,
কোন দান কিবা সৃজন বাসনাগুলি, গিয়ে তার আপনার পথ ভুলি করিছে গহীনে ক্রন্দন ।


পর্ব - ০৭


হিসাব করে সে বিজনে বসে যখন,
মনেহয় বুঝি পরাজয়, আঁধারে ঘিরিছে আলোময় এ ভুবন,
এই কি তবে ওরে সেই সময়, যা হবে শোভন বুঝি তার যখন আঁধার গোপনে করা পলায়ন,
পেলে নিমন্ত্রণ বুঝিবে বুঝি তার হয়েছে সাধন, সব ফেলে চুপিচুপি যাবে চলে যদিরে রাজার হাতছানি পায় ।
সুখ সুখ করে কাঁদে মন,
পাবো কই মনের মত মানুষ একজন,
যার আছে মাটির মন, হবে প্রেম ও হবে অন্য মিলন,
কেজানে আছে কিনা, কোথা পাবো খুঁজে এমন কোন একটা দ্বীপবন,
যেতে হেথা স্বেচ্ছা নির্বাসনে পেতে এক নবজীবন, যেথা গোপনে কেবলই চাহে আর বলে মন ।
সে আবার কেমন জীবন,
শুধু ধন আর বিভোর তার অসীম ভোগ-বিনোদন,
যেথা ওরে নাহি, শুধু হরষে নাঁচি আর গাহি তেমনি বাঁচি, হয় কি ধন্য দুজীবন শূন্য হেথা পুণ্যময় কোন সৃজন ।
ঠিক আদম ও হাওয়ার মতন,
নাই কোন পর, যারা হয় ছদ্দবেশী দুশমন,
ভিতরে বাহিরে দুই, শুধু অভিনয়ে হয়কিরে জীবন,
চাহিনা, নাহিরে তার কোন প্রয়োজন যারা এমন মিথ্যে আপন ।
কখনও কি মাবাবা হতে পারে, তাই স্বার্থের কাছে সবাই হারে, যতই করুকনা কেন চাচাচাচী ও মামামামী ।
অতিশয় সুন্দর,
যে জীবন স্বাধীন ও স্বনির্ভর,
সকল চাওয়া কি নাপাওয়া ও অনটনের ঝড়,
হয় হোক তাই, কোন লোকালয় নাই, কিবা বাড়ীঘর এমন এক ধুসর বালুচর ।
পিতৃহীন কত সন্তান শূন্যতা ও বিষন্নতায়,
সংগীকে হারায়, মর্মাহত সহস্র শত বধূ মাতা ও কন্যায়,
কেউকেউ পথ হারায় কালিমার প্রতারণায়,
কতযে ভয়, নহে পূরো মধুময়, তবুওতো যেন তারা কিছুটা সুখ পায় ।
শাসন দমন ও নিয়ন্ত্রণ,
সকল কথায় কাজে কত বাধা ও বারণ,
অশনি ঘন্টা বাজে, মরেও নানা লাজে দুষ্টমন চাহে সাধন,
মন বসেনা ভাল কাজে, অকারণ সারাক্ষণ করে জ্বালাতন,
মেনে নিতে চাহেনাতো আর, দুঃসহ এ ভার যেন ভাল লাগেনা তার, ছিড়িতে চাহে এবার সব বাধন ।
অনুশাসন দিয়ে বিসর্জন,
সে বাধন টুটে বেসামাল হয় কতজন,  
অবলীলায়, চায় বলেই বুঝি পায়, উড়াল উড়াল মন,
হয় হোক জীবনের বড়কিছু বরবাদ, তবু দুধের স্বাদ তারা ঘোলেতেই মিটায় ।
বিধবা ও তালাক হওয়া যত ভাল রমণী, ধড়ফড় ধমনী রাতভর ঘুমভাংগা তাড়নায় শুধু তড়পায় ।
আমি একজন,
ভাগে মোর পড়ে শুধু তিন বা চারজন,
কারো নেই ধন ও কারোবা রয়েছে নানা ঢের অনটন,
শত সাধ অন্ধকারে মরে যায়, বুঝি তাই হয়নারে শুভ সৃজন কিবা সাধন,
হাতেপায় অদেখায়, তা খোলা নাহি যায়, বিধানের সে বাধন কারো লাগি ছেড়া হয় বড়ই দায় ।
এ কালের পরিবার ও সমাজ,
অনেকেই ভাল চোখে দেখেনা রয়েছে এমন কত ভাল কাজ,
চোখেমোখে অযথা লেপে দেয় কত কুৎসা কলংক অপবাদ বদনাম ও লাজ,
কত শুভ সৃজনের সুস্বপন পথ হারিয়েছে আজ,
মোখ থুবরে পথের ধুলাতে লুটায়, হতাশার হাহাকারে কিবা শেষে অন্ধকারে মিশে হারায় ।


পর্ব - ০৮


তবে কি আমি সেই,
তবু চায় মন, কিছু করি ও কিছু দেই,
সাধ আছে যার কাছে দায়বোধ, তবে সাধ্যটা তার কেনরে কিছু নেই ।
যার যা নেই কিবা প্রয়োজন,
যদিরে হতে পারতেম ওরে আমি কভু এমন,
পেতাম যদিরে আমি অঢেল ধনেভরা তেমন একখানা জীবন ।
হতেম কারো বাবা, কারো ভাই,
তার বিনিময় প্রতিদান কিছু নাহি কভু ওরে আমি চাই,
আর কিছু মোর নেই চাওয়া,
একটু শ্রদ্ধা ভক্তি ও বিনয় তাই হবে মোর পরম পাওয়া,
যদিরে শুধু আমি, এক হাড়ি দধি আর দুই কেজি মিষ্টি খেতে পাই ।
যদিরে কারো বন্ধু, এ জগতে যার যাহা নাই,
কারেও যদিরে সুখ দিতে নাইবা পারি আমি,
হতে পারি যেন অতি কষ্টে থাকা কোন অভাগী নারীর দুঃক্ষটার ভাগ নেবার মতন প্রিয়তম স্বামী ।
হে প্রভু, অসীম পুণ্যে ভরা,
করুণা ও মানবতায়, উঠুক ভরে তোমার বসুন্ধরা,
দীনজনে যদি হয় কিছু দান আর মনভরে আমার পরের সেবা ও উপকার করা,
তোমার মাটিতে, আপন হাতে দিনে ও রাতে, আলো ও ভালোর বিশাল একখানা বীজতলা গড়া ।
খাটি মানিক রতন যায় ভাবা,
ঠিক যেন সে, হয়েছে এমনই সাত জনের বাবা,
তবু ব্যর্থ অযোগ্য ও পরাজিত, সারাক্ষণ এমনই ক্ষুরধার নিন্দার থাবা,
এই বয়সে জীবনের চরম ভাটিতে এসে, কেউ যদি বলে শেষে, এখনও তুমি রয়ে গেছ হাবা ।
দুইজন ডাক্তার,
একজন হলো ইঞ্জিনিয়ার,
আর তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টার,
একজন পড়ছে, নিরবে লড়ছে জীবনটা গড়তে হবে তার,
শুনেছি নাকি তার ঐ বাসনা বাঁকী, মস্তবড় এক আইনবিদ ও বিচারক হবার ।
চারিদিকে কত কান্নার রোল,
জুলুমকারী হরষের দোলনায় বসে খাচ্ছে আরামের দোল,
কোন খুটার বলে দেয় প্রতিবাদীর মাথায় বারি ও ঢালে নিরীহের মাথায় পঁচা ডিমের ঘোল ।  
আদালতে দাড়িয়ে,
দর্পে পরকে হারিয়ে সবদিক ছাড়িয়ে,
দক্ষ কারিগর, তুলে কথার বুলির ঝড়, মিথ্যাকে সত্য আর,
আমি চাইনা, করছি মানা ও কায়ঃমনে সে কামনা,
না যেন এমন হয় সাধ্য ও স্পর্ধা কারো, সত্যটাকে ফেলে বিপাকে মিথ্যা বানাবার ।
কভু ওরে না যেন হয়,
ভালোর বিপর্য্যয় কিবা মিথ্যা আর মন্দটার জয়,
সেতো হবে, বলো তা তবে কে মেনে লবে, মানব জাতি ও মানবতারই অবক্ষয়,
কভু না হয় যেন সত্যের অপলাপ,
মজলুমের আর না শুনি কভু হাহাকার ও অস্ফট করুণ বিলাপ,
অন্যায় ও অবিচার করে, করিবে সমাজ, দেশ, বিশ্বসভ্যতা ও তার উন্নয়নটাকে ছারখার ।


পর্ব - ০৯


অপরাধী বুকটান করে চলে,
অনেক লাঠিয়াল চামচা চাটুকার রয়েছে তার দলে,
গল্পটা ওরে কোন রাজার দেশ,
ভ্রমমাণ আদালতে কেমনে পারে, লাগে এক নিমেষ,
বড় বড় আদালতগুলি যুগযুগ কেন পারেনা ও হারে, হয়না মামলা শেষ,
সরকার কেন বাদী হয়না, পুলিশে মামলা লয়না, তবে শেষ হবে কবে মজলুমের ক্লেশ,
কেউ বলে কালো কেউ বলে সাদা, দেশের টাকায় নানাদেশে বাড়ী করে ও বেড়ায় ঘুরে তারা বেশ ।
কেন বিচার চাহিতে হবে রাজার কাছে,
মহা আদালতে যাবার সাধ্য, সুযোগ ও সাহস বলো কজনার আছে,
চলছে দূর্নীতি ও আত্মসাৎ, যে যার ইচ্ছেমত করছে লুটপাট পূরিয়ে ও মিটিয়ে নিয়ে খায়েস ।
রাজা উজির সেনাপতি ও কাজী সবাই হয়েছে দর্শক নিরব,
চলবে কতদিন জুলুম নিপীড়ন অত্যাচার নির্যাতন ও খুনের এ অবাধ মহোৎসব,  
রাজ্য জুড়ে বেসামাল ধর্ষণের পড়েছে ধুম,
সহিতে নাহি পারে আর্তনাদের হাহাকারে নিরুপায় অসহায় সহস্র ঐ মজলুম,
অর্থহীন ও অক্ষম তারাইতো সবখানে হারে, বিদ্যা ও ধন থেকেও হয়রে গুম,
কানে গুজে তুলো আর নাকে দিয়ে তেল শাসকেরা সবাই বিভোর সুখের অসাড় ঘুম ।
কষ্টের ভাবনা ও তাড়নায় নিদহীন,
নিরব অপেক্ষায় আরশের পানে তাকায় সকলে গুণিছে দিন,
বুকেতে পাষাণ ভার, জায়গা নাই তা কহিবার, কবে এ দুঃসহ যাতনার হবে শেষ,  
বলছে সুজনের মন সে বুঝিরে ধ্বংসের মাতন, যে হারে পক্ষপাত, অবিচার ও অনাচারের ঘটেছে উম্মেষ ।
কেজানে কেমনে কবে ঐ দুঃক্ষ দূর্দশার হবে শেষ,
নাই কেনরে মরণের ভয় আর, তার পাপ-পুণ্যের হিসাবটার যদি হয় পরাজয় সে ভাবনার একটুখানি রেশ,
সামনে আসিছে, ওরে একদিন,
বড়ই নির্মম সব অপরাধ ও অপরাধীর যম, ভয়ংকর ও কঠিন,
মাফ নাই, শোধিতেই হবে রাজার, প্রজার কাছে তার সব ঋন,
এটা ঐ খোদ খোদার শাহী দরবার, যেথা দুনিয়ার যত রাজার হবে সাজা ও বিচারকেরও হবে কঠিন বিচার ।
লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতা আর,
জনদরদী ও দেশপ্রেমিক তারাই শ্রেষ্ঠ সবার,
নিরব দর্শক, অকারণ বকবক, অতিশয় মহৎ ও উদার,
কার বন্ধু ও দোসর, করছে শিষ্টের দমন, দুষ্টের পালন ও অপরাধীদেরই উপকার ।
বুঝি প্রজারা তারে রাজা বলেই করেনা স্বীকার,
কেজানে নাকি বিধান ও কানুন মানেনারে তার,
রাজায় চোখে দেখেনা ও কানেও শোনেনা, তবে তার বচন চমৎকার,
সাংবাদিক, একটা বাহিনী সঠিক ও বড় আদালত না থাকিলে তবে কি দেশটা হয়ে যেত ছারখার ।
চারিদিকে জুলুম অন্যায় ও অবিচার,  
সিংহাসনে বসে হরষে ও আয়েশে রাজা মহাশয় নির্বিকার,
আহা বিচারের আশে, আকাশে বাতাসে ভাসে অসহায় মজলুমের আহাজারি ও হাহাকার ।
সাত সাগর ও তেরো নদী দিয়ে পারি,
ছাড়া পেয়ে আবারও তাড়া খেয়ে, গিয়েছিলাম মাসীর বাড়ী,
ভেবেছিলাম রয়ে যাবো দূর গোপন নির্বাসনে, কভু আর এ জীবনে আসবোনা ছাড়ি,
দেখে কষ্ট পেলাম ও হতবাক হলাম,
নষ্ট ও দুষ্ট লোকের এলাকায় কত বেশী ক্ষমতা ও দাম,
এ কেমন ত্রাস ও অবিচারের সমাজ,
নাই ভক্তি শ্রদ্ধা বিনয়, কোন মান্যতা ও ভয়, ভাল কথা আছে তবে নেই ভাল কাজ ।


পর্ব - ১০


শতকরা বিশজন, সন্ত্রাসীর দল,
প্রকাশ্য দিবালোকে সহস্র জনসমক্ষে করছে কতল,
তারা কেমনে হয় এত হিংস্র, ভয়ংকর, অকুতোভয়, দূরন্ত ও প্রবল,
নিশ্চিত খুটার বল,
নাই দুষ্টের দমনের সুশাসনের কবল,
অকপটে অনায়াসে যখন তখন ইচ্ছে যাকে যেমন মারছে ছোবল ।
তাদের কত লম্বা হাত, বড়াই ও বাহাদুরি,
হামেশা করছে যারা দস্যুপনা, খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি ও চুরি,
ন্যায় ও সত্য হয়ে পড়েছে যেন একেবারে খোড়া ও অঁচল,
নিরীহ ভাল মানুষেরা, শত আপদে ও নিদানে ঘেরা, কত অসহায়, কোণঠাসা ও দূর্বল ।
অখ্যাত নাম না জানা রয়েছে হেন কত সুজন,
সমাজ দেশ ও জাতিকে নিয়ে ভাবে সারাক্ষণ,
প্রতিবাদ করে প্রতিরোধ গড়ে কতজনে হয়ে পড়ে তাদের দুশমন,
দামী হয়েও নগন্য অধম ও কমদামী,
কন্ঠ থেকেও কত বাকহীন, বিনা অপরাধে হয়ে যায় আসামী,
ভাবে গোপনে নিরবে,
অদেখা তার এ দায়-ঋন শোধ হবে কবে,
আমি কি সেইজন, ঘরে ও বাহিরে বিন্দুতে বাধাপড়া অসীমে বিচরণ, আর ভেবে ভেবে যার মাথাটা যায় ঘামী ।    
বাড়ীঘর সোনাদানা নেই, হয়নি বলে তার,
এক ঘরনী, ঘর নামক তার রাজ্যটার অঘোষিত রাণী সাহেবার,
গালভরা অভিযোগ আক্ষেপ আর,
তাই এখন সুখ তার ঐ দাঁতের বিষ আর দূর্ব্যবহার,
চেঁচামেচি চিৎকার, তার বলার ঐ কিছু না পাওয়ার বুকভরা অসন্তোষ ও হাহাকার ।
অতিশয় জেদি বদমেজাজি আর অভিমানি,
নিঃস্ব আমি, কোন সঞ্চয় সম্বল নেইকো আমার, তা নাহি জানি,
কোথা হতে তার, ঐ চাওয়াগুলি কবে আমি বলো আর কেমনে তারে দেবো আনি ।
শুনেছি বোবার নাকি শত্রু নাই,
এই মন্ত্রে আর ঐ বিশ্বাসে মোখ বুজে সব সহি তাই,
পায়নিতো সে, একথা সত্যযে আমি পারিনি,
আজীবন প্রাণ পণ প্রতিটি ক্ষণ করেছি রণ, তাই ওরে ভাই আমি হারিনি,
তাইতো আহা হাবা ঐ বাবা বেচারার,
শুনিতে হয় এখনও তার বউয়ের কথার অনেক অত্যাচার,
আজও জীবন কাটিছে তার আসামীর মতন নুয়ে আর সয়ে নানান অপবাদ ধিক্কার কষ্ট ও গ্লানী ।
বিবিসাব তার ক্ষোভের বিষোদগার,
সাহেবের সকল দোষ-ত্রুটি আর ভুলগুলি ও ব্যর্থতার,
একই কথা বলে বলে বারবার, করেছে ছেলেমেয়েদের মন খারাপ ও কান ভার ।
বিতর্কে কভু হলে বিফল,
আর না পেরে শেষে ফেলে সে চুখের জল,
অনেক বেশী তার বল,
ছেলেমেয়েদের সনে তাই বেধে হয় বড় একদল,  
পেয়ে মোরে একা ও দূর্বল,
অতিশয় রোশে যেন নাগিনীর মত ফোঁসে মারিতে চাহিত ছোবল ।
কাতর এ মন বলে তাই,
এখন একটা ওরে অন্য জীবন চাই,
খুঁজে ফিরে, ঠিক এমন একজন বন্ধু কোথা পাই,
এই বুঝি বন্ধুর প্রতিদান অবদান, এমন মানুষ কিরে এ জগতে নাই ।


পর্ব - ১১


অকারণ শুধ অভিযোগ অভিমান,
অযথা দেয় পীড়ন, করে জ্বালাতন ও রাখে পেরেশান,
যেথা না চেয়ে পাওয়া যাবে একবিন্দু ভালবাসা আর সামাণ্য একটুখানি সম্মান,
এক অসহায় বাবা বলে জীবনের গল্পটা তার, এসব ভাল লাগে বলো কত আর ।
চুপচাপ তা লয়ে মানি,
ছিল তার একখানা পুরাতন চিটচিটে ঘানি,
দেখে নাই কেহ তা, ক্লান্ত এ দেহটা কেমনে সে চলেছে টানি টানি ।
নিরাপদ শান্তির ঠাই,
আমি যেথা রহি একা, আর কেহ নাই,
সদা পাতানোই থাকে,
ঘুমাতে যাই যখন তা আমারে ডাকে,
দিবসের সব যাতনার অনলে ঢেলে দিয়ে এক কলসী পানি ।
ঘুম এনে দেয় পরম শান্তি একটুখানি,
করে উপষম মুছে দিয়ে মাথার সবটুকু ক্লান্তি ও পেরেশানি,
আর যত কষ্ট ও গ্লানী আমার, অতিশয় প্রিয় সাদামাটা ও সাধারণ ঐ মাটির বিছানাখানি ।
কেউ দেখেনা যার সুখ-দুঃক্ষ হাসি,
কোণার ছোট্ট ঘরের, এক নিরীহ নিঝুম যাযাবর পরবাসি,
আজও দিন কাটে যার, কেউ ধারেনা কারো ধার যেন নহে কার, ঐ বিবিসাহেবার অযোগ্য স্বামী ।
যাই হোক এ জীবনের প্রাপ্তি বা ঘাটতি আমার,
বলে দুঃক্ষ নেই, কোন অভিযোগ কষ্ট অভিমান কিবা আক্ষেপ তার,
বরং ছিল এখনও আছে আমার,
কাছে দাতা বিধাতার অনেক পাওয়ার, প্রশান্তি সাফল্য তৃপ্তি ও শুকরিয়া অপার ।
তবু আশা করিতে তার ও পাঠাতে আরজিখানা,
কিবা চাহিতে কিছু খোদার কাছে নাইতো মানা,
আকাশের কাছাকাছি, চিলেকোঠার ঐ ঘরখানা,
বাতাসের খেলা কানামাছি, সারাক্ষণ দোল খাওয়া যাদুর এক দোলনা ।
সবাই ও সবকিছু পর, মিথ্যে হওয়া জীবনের সব ধারণা,
না হতে আঁখি দুটি চিরবন্ধ ও কপালটা চরম মন্দ, অসাড় ও নিথর এ দেহখানা,
যদিরে হতো আমার থাকার ঘর, হওয়া যেত আপন থেকে পর, সারা বছর দিবস রাতির নিঝুম প্রহর, ঠিকানা ।
ঐ খোলা গহীন গগনের তলে,
উর্ধে যেথা কোটি তারকা মিটমিট করে জ্বলে,
যদিরে পেতাম, এমন একখানা বিশাল বড় আংগিনা,
চিরকাল সারাটা বছর,
অবিরত পড়ছে ঝড়ে মাটির দুনিয়ার উপর,
শত বাহারি তার রুপের মেলা,
মহাবিশ্বটার এক মহারাজার ক্ষমতার খেলা,
কুয়াশার খেলা ও মেঘ বৃষ্টি বাদল ঝড়, বিজলীর চমকে দেয়া ডাকে কড়কড়, আমার দেখিবার বড় বাসনা ।
কি বাহারি রঙেতে নানান,
সাজানো ফুল ও ফলের বিশাল একটা বাগান,
চোখ ভরানো ও মন জুড়ানো অতিশয় মধুর সেই ঘ্রাণ,
ঐ শোভা ও সৌরভে এ দেহটা হয়তো আবার পেতো ফিরে রাঙা প্রাণ,
পাখীরা এসে দার মধু ও ফল খেতো আর, শোনাতো আমারে নানান শুরে গাওয়া বিধাতার গুণগান ।
সে চাওয়া কভু আমি একটু পেতাম যদি,
হতো সেইতো আমার পরম পাওয়ার সাত সাগর ও তেরো নদী,
কিছু সুবচন পঠন ও লিখন,
ওরে চোখ নেই যার তা দেখিবার হেথা বিতরণ,  
স্রষ্টা ও তার সৃষ্টির অরুপ অপার বাহার আজও ওরে দেখেনি যেজন,
যে যাই বলে আজ, ওরে ভাই তাই মোর কাজ, ঐ গবেষণে যদিরে মিলে তার কিছুটা দরশন ।


পর্ব - ১২


এই বিশ্ব ধরণীটার,
ষোলআনা সবকিছুর মালিকানা যার,
জগত জোরা তার পরিবার, লালন পালনের রশদ ভান্ডার,
দানের মালিক করুণার আধার, সবটুকু দায় আর একক ক্ষমতা অধিকার ও এখতিয়ার,
জীবনে মরণে দামী, তার খাস গোলাম ও অতিথি হতে আমি, সদা ঐ বিধাতার করুণাকামী ।
কোন দোষ ছিলনা আমার,
নহে তা মোর মহান পালক প্রভু বিধাতার,
হয়তো তখন আমার তরে ছিলনা মনটা দাতার প্রসন্ন ও উদার ।
তুমিতো সকলই জানো,
সাধ্য কি গোলাম তোমার হয় গুনাহগার, যদিরে তার ঘার ধরে টানো,
কি আছে কি নাই, কি আমি কেন চাই, আলো ও ভালোতে কেনইবা মোরে নাহি আনো ।
তুমি কি বলবে মোরে ভিন্ন কথা, হে মোর অন্তর্যামী,
তুমি কি পারোনা আর, কি নাই প্রভুগো তোমার, তোমার ঐ সব বারতা জানিতো আমি ।
আমারে কেবলই ভাবায়,
ঐ দায়গুলি মোর যা আজও অনাদায়,
মোর মনিবের ইচ্ছাটা কি, জানিনা কিবা সে মোর কাছে চায় ।
দীনতা ও অক্ষমতার,
যত মোর স্বপ্ন আশা আর সাধ বাসনার,
কবে হবে অবসান, পাবো আমি ত্রাণ হবোযে পার,
তা বুকেতে মম, যেন চেপে আছে সম, হয়ে এক পাষাণ পাহাড় ভার,
আমি নিরবে বসে, মাঝেমাঝে ঐ হিসাবটা কষে, মিলাতে পারিনা যখন মাথাটা আমার যায়যে ঘামী ।
ঐ মানুষ আমি হতে চাই,
বানাও সবারে যা প্রয়োজন দিয়ে তাই,
ধন্য ও সেরা হয়েছে, হয়েও মাটির তৈয়ার,
সেতো তব করুণার উপহার, আগুনের জ্বিন ও ফেরেস্তার ।
হে প্রভু যাদের জীবন সংগী নাই,
চলছে ওরে যে জীবন,
শুকনাতে থাকা কইমাছের মতন,
তাদের তরে প্রভু আমি একটুখানি জল চাই ।
কারো সুখ একবিন্দু নাই, কারোবা তা পড়িছে গড়াই,
সব থেকেও ঢের ওরে, রয়েছে যাদের যেন নাই নাই,
আরও পাবার তরে ভিতরে ভিতরে, মনের গলাটা ভীষণ শুকাই,
বাহিরে রঙ মাখানো ভিতরে মলিন, করিছে এমনই সুখের অভিনয় ও বড়াই ।
তাদের তরে এমন একটা আশ্রম বানাই,
মোর মন চায় যাদের রংগ করার সংগী ঘরে নাই,  
সবার প্রিয় একটা ”ঘটকবাড়ী” ও ”বিয়েবাড়ী” হবে তাই,
ভাটির টানে কমেছে হায়াত ও বেড়েছে বয়স, এখনও তবু বিয়ে হয় নাই ।
আকাশের আলো ও ভালোটার,
খোদার জমিনে বিশাল একটা বীজতলা গড়ার,
অযতনে অবহেলায়,
কে তার জবাব দিবে, কে নিবে তার দায়.
যদিরে অনাবাদী এ রাজার রাজ্যে, শেষে তার প্রজা কমে যায়,
কোথাও বিরান কোথাও খিল পড়ে রয়েছে হায়, কে তার খবর রাখে পায়, কত পতিত সুফলা জমি ।
অসহায় এমন যত, সব আছে শুধু সুখ নাই,
কুমারী, বিধবা ও হয়েছে যাদের তালাক তাদেরে দিতে ঠাই,
তাদেরে সবারে বিয়ে দেবার পরে, যে যার মত শেষে তারা চলে যাবে সবাই ।
এখন আমিই শুধু আমার দলে,
এক এক করে, যে যার মত ওরে সবাই গেছে চলে,
ওরে আর কেহ বাকী নাই,
ঐ সে পরম সুখের বিজন বিষন্নতায় ভাই,
আমিও যখন যাবো, মহাশূন্যের ঐ বিশালে হারাই,
হয়তো সব হারিয়েও অনেক পাবো সম্বল মোর শুধু ঐ আশাটাই,
জানিনা কবে তা হবে কি না হবে, কেমনে হবে না যদি আমি তার সংগী পাই দরদী ও মরমী ।
কোন গুণ নাই বা ছিলনা যার,
শত ভুল আর নানা দোষেভরা জীবনটা আমার,
এই হলেম ওরে বাহিরে অন্তরে, আমার চোখে আমার ঘরের আমি,
জানিনা কেমন লোকের চোখে, যে যাই বলুক কি মূল্য তার, দামী কিবা কমদামী জানেন অন্তর্যামী ।