ভূমিকা - এটি জীবন থেকে নেওয়া অর্থাৎ তৃতীয় নয়নে দেখা একটি জীবন দরশন মূলক কবিতা । বিচিত্র রঙে সাজানো এ বিশ্ব জগত এবং জীবনের এক অসীম অপার শাশ্বত ও সার্বজনীন রুপ এর কলম-চিত্র যা হয়তোবা সকলের দৃষ্টিতে একই রকম না’ও হতে পারে । হয়তো কারো কাছে তা তেমন ভালো না’ও লাগতে পারে, আবার কারো কাছে লাগতেও পারে দারুণ চমৎকার । তাই তা যাচাইয়ের সুযোগটা না হারিয়ে একবার পড়ুন । আর আপনার তৃতীয় চোখে ভালকরে একবার দেখুন এ বৈচিত্রময় জীবনটাকে ।
ওরে ভাই কাব্যের পরিসর বা আকার দেখেই ক্লান্ত হয়ে যাবেন না যেন । কাগজে-কলমে অংকিত বৈচিত্রময় জীবনের পাঁচমিশালী গল্প-চিত্র একটু বড়তো হবেই । পঞ্চরসের জীবনের গল্পের স্বাদ পেতে হলে একটু সময়তো দিতেই হবে । আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন যে, কতজনে প্রতিদিনই পূরো খবরের কাগজটাই পড়ে ফেলেন । আবার কতজনে নিবিষ্ট মনে পড়তে থাকেন বড় বড় উপন্যাস, মহাকাব্যগ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক সৃজন ও ইতিহাস এবং আকাশবাণীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ জীবন-বিধান মহাপবিত্র কোরআন । এ পঠনতো নহে নিছক বিনোদন বরং সহস্র তথ্য লাভ, সত্য আবিস্কার ও এমন কিছু মূল্যবান শিক্ষণ যা করে সকলের তরে অমৃত সুধা বিতরণ ।  
জীবনে দেখা, জানা ও শেখার কোন শেষ নেই যারা এটুকু বুঝেন এবং আরও কিছু দেখতে, জানতে ও শিখতে চান শুধু তারাই পড়েন । যারা এমন আপনি কি তাদের দলে নেই । আপনি কি এমনটা ভাবেন যে, আপনি বিদ্যান, সুবিজ্ঞ ও বিচক্ষণ আর আপনার দেখা, শেখা ও জানাটাও হয়ে গেছে সমাপন । চিরন্তন সত্য বচন ও জীবনের কোন লেখাই আবর্জনা নয়, বরং রাস্তায় পড়ে থাকা ধূলি-কাদা মাখানো ছিন্ন কাগজের টুকরায় যা লেখা আছে হতে পারে তা’ও এমন শ্রেষ্ঠ কোন বাণী ও পাঠ যা দিনের আলোয় পাথেয় আর পথ হারানো অন্ধকার রাতের ধ্রুবতারা ।  
যাদের সময়ের বড়ই অভাব এবং যাদের ধর্য্যের অনেক দীনতা রয়েছে বলেই পড়তে চাননা বা পড়তে পারেননা তারাই হতভাগ্য বঞ্চিতদের অন্যতম এবং তাদের অর্জন কিবা প্রাপ্তিতেও রয়েছে অ - নে - ক শূন্যতা বা ঘাটতি । আমরা কেউ পড়ি কিবা না’ই পড়ি তথা কিছু জ্ঞান লাভ ও পুণ্য সঞ্চয় করি আর নাইবা করি একদিন আমাদের জীবন সময়টাতো ফুরোবেই । তখন কি আমরা কিছু জ্ঞান অর্জন, কিছু ভালকাজ করা ও পুণ্য হাছেলের জন্য চাইলেই বা চাইলেও পুনঃরায় আবার দুনিয়ার জীবনে ফিরে আসতে পারবো । আলো ও ভালোয় ভরা কোনকিছু পঠন বা লিখন দুটোই শ্রেষ্ঠ কাজ । কোন ভালকে যারা মন্দ ভাবেন হোক তা কোন ক্ষুদ্র মনন, বচন বা কাজ এবং অরুপ কোন পঠন, গবেষণ, লিখন ও সৃজনকে আবর্জনা ভেবে অবজ্ঞা বা অবমূল্যায়ন করেন, আপন অজান্তে তারাই আসলে হয়ে রয়েছেন এ জগতের আবর্জনা অথবা ঐ স্তুপে বেঁচে থাকা কোন হীন জীব ।
একবার আমার বড় কবিতা পাঠ করেই দেখুননা - হয়তো কখনও তা মনেই হবেনা বিরক্তিকর বা সময়ের অপচয় । বরং তারপর কি হলো, লেখকের আর কি বক্তব্য এলো কিবা আরও কি জানার বাকী রয়ে গেলো ঠিক এমনই অনেককিছু জানা এবং আপনার মনের অনেক প্রশ্ন ও তার জবাব খুঁজে পাওয়ার একটা প্রবল অন্বেষায় হয়তো আপনাকে টেনে নিয়ে যেতেও পারে তার প্রান্ত অবধি । কিছু পেতে হলে ভাই কিছু দিতেই হয় - এ প্রথাতো চিরন্তন বিনিময় ।
অনেক সময় দিয়ে লেখক যা লিখেছেন তাতে একটু সময় দিয়ে হয়ত আপনি পেতেও পারেন এমন কিছু মূল্যবান পাঠ যা নহে বিজন বিরান তৃণহীন মাঠ বরং যেথা ছড়ানো এমন কিছু সোনালী ফসল-বাণী যা হয়ত রাখবে ধরে কেউ যেন না যায় কর্দমাক্ত ড্রেনে কিবা গভীর কুয়ায় পড়ে, অধিকন্তু আলো ও ভালোয় তাদের আনবে টানি । একবার তা পরখ করতে গিয়ে নাহয় একটু ঠকলেনই তাতে কিইবা এমন আসে যায় । ক্ষুদ্র এক টুকরো রতনের আশায় কতজনে ইতো বিশাল ছাইয়ের টাল ঘাটে আর তা উড়িয়ে দেখে । আপনিও নাহয় কৌতুহল বশতঃ কিবা অনুসন্ধিৎসু হয়েই সেই প্রত্যাশায়ই দুচারটা ছাইয়ের টাল একটু ঘেটে দেখলেন ।  


পর্ব - ০১


ক্ষুদ্র কীট,
দেখতে কালো,
আসলে সে খুবই ভালো,
আকারে যদিও অনেকটা পিপড়ার মত,
নড়াচড়া না করলে হয়তো তা কালজিরা বলেই মনে হতো ।
কিবা বড় কোন একটা উকুনের সমান,
তবুও নিরবে গোপনে প্রাণভরে গাহে সে ঐ মনিবের গান,
কিছু নাহি চাহে, ভাবে সেইতো অনেক যা করেছে দয়া করে প্রভু তারে দান,
তাদের নেই কোন বাড়ীঘর,
কেজানে কেমনে সামলে জীবনের ঝড়,
পিপড়ার মত দ্রুতবেগে ছুটেনা, গতিটা অতিশয় মন্থর,
নহে কারো লাগি ভয়ংকর বা ক্ষতিকর,
অজানা রহস্যময় এ জগত কত বড় কতনা সুন্দর,
নিশ্চয় হবে ওরে, এ মহাসৃষ্টির তরে কিছুনা কিছু তাহা কল্যাণকর,
অ ভাই কেড়ি পোকা,
তুইকি দুষ্টলোকের মত দিতে পারিস ধোকা,
নাকি ভাল মানুষের মতই একেবারে কোনঠাসা ও হদ্দ বোকা,
আছেকিনারে তাদের জানা,
দিনভর সারাবেলা এ কাফেলা সফল হয়েছে কিনা,
নাকি শুধুই খেটে গেলো, হিসাব না করে কি পেলো, তারা কোন মূল্য বিনা বৃথা এ সফর ।
গুটি গুটি পায়ে হেটে চলে,
স্রষ্টার অপার করুণা ও মহিমার বলে,
শান্ত ও নীরিহ,
মনিবের সে আজ্ঞাবহ,
জ্বালাতনে ভরায়না কোন গৃহ,
যতক্ষণ আছে বল ধকল ও যাতনা সহ,
কারো কোন অনিষ্ট করেনা,
শুধু আড়ালে পালিয়ে থাকার বাসনা,
উকুনের মত তারা কারো মাথার রক্ত চুষে খায়না,
পিপড়ার মত সামাণ্য আঘাত পেলেই সংগে সংগে কামড়েও দেয়না ।
চলার পথে আঘাত পেলেও সয়,
ঘটিল কি ঘটন চুপকরে তা কিছুক্ষণ, ঠায় দাড়িয়ে রয়,
তারা ভাবে ও বুঝার চেষ্টা করে, কি করিতে হবে এখন তারে করিতে তাই জয়,
নহে সে প্রতিবাদী হয়,
কভু সে উগ্র কিবা মারমুখীও নয়,
ভাল বলেই কি হায় মায়া পড়ে যায় কিছু তারে দিতে ইচ্ছে হয়,
তাদের এমনই ধন্য জীবন, সবাই সবার আপন, আপদে নিদানেও যেন কেউ নহে কারো পর ।
তারা জন্ম লাভ করে,
মোখ বন্ধ এমন চালের বস্তার ভিতরে,
যেথা নেই কোন আলো বাতাস আর,
নিশ্চয় ভিতরে তার, গহীন, অথই ও ঘন অন্ধকার,
ওখানেই বেড়ে উঠা ও বসবাস তার, ভিন্ন আর কোন ঠাই নাহি যার,
ভাবি বসে বিধাতার,
কোটি সৃজনের রহস্য, ভেদ ও বাহার,
তবে কি উপায় তার, শুনেছি ঐ চালই নাকি তাদের ওরে একমাত্র মজার খাবার ।
ঐ বসতি ভেংগে যায় যখন,
কি করে কি খায় কেমনেইবা তারা বাঁচে তখন,
তবেকি তারা মরুভুমির উটের মতন,
পানি পানেরও তাদের বুঝি কভু হয়নারে প্রয়োজন,
যদিও অতিশয় ছোট্ট তাদের জীবন,
আমলে নিও ওরে সকলে ভাই তা রাখিও স্বরণ,
পারলে কিছু দিও, তোমা হতে তারে ক্ষুদ্র বন্টন,
কভু নয় অর্থহীন,
যদিরে হয় তা মানুষের দায়-ঋন,
তুচ্ছ নগন্য কিবা মূল্যহীন, নহে মহারাজার ঐ সৃজন,
হলেও এত অসহায়, কেউ নাহি ভাবে কারো কথা নহে ফিরে চায়, কত করুণ তাদের মরণ ।


পর্ব - ০২


সন্ত্রাসী করোনার অজানা নিদান শংকায়,
কি করি, তিন মাস চলে যায় মোদের এক বস্তায়,
তবু ছেলেমেয়েরা এসে তিনজনে তিন বস্তা চাল কিনে দিয়ে যায় ।
কদিন আগে একটা বস্তা খুলে দেখি,
হায় হায় এখন কি উপায়, হয়েছে বেহাল দশা একি,
গিন্নী বলে আমাকে, বলোনা কি করি,
এক কেজি চালে হবে কমকরে দুতিন শত কেড়ি,
বললাম শোন, যদিগো তাদেরে তোমার মারতে মন নাহি চায়,
রান্না করার ২/৩ ঘন্টা আগে চালটা মেপে নিয়ে ডালায় ছড়িয়ে দিয়ে রেখে এসো বারান্দায় ।
হয়তো এ সামাণ্য কাজে তুমি অনেক পুণ্য পাবে,
দেখিবে ওরা আর কেহ নাই, যেদিকে চোখ যায় যে যার মত নিশ্চয় চলেই যাবে,
আলো বাতাসের এই খোলা পরিবেশে হায়,
বুঝিবা ওরে তারা হয়তোবা কিছুটা অসহায় ও নিরুপায়,
চাল ছাড়া আর তাদের বিকল্প খাবার, কেজানে কি আছে যা তারা খায় ।
তারা না বাঁচিলেইবা হায়,
এ জগত ও জীবকুলের কি আসে যায়,
তবু এ বিষয়টা কেন, জানিনা আমারে অযথা একটু ভাবায়,
দেখেছি আমি ঐ তরিকায়,
মেঝেতে পাতানো আমার বালিশে ও বিছানায়,
মহাবিপদে পড়া, হিজরত করা ও ক্ষুধায় আধমরা আসলেই বুঝি পথ নাহি পায়,
ছিন্নমূল ও বসতি হতে বিতাড়িত কিবা স্বেচ্ছা নির্বাসিত কেড়িগুলিরে প্রায়ই ওরে দেখতে পাওয়া যায় ।
দেখেছি তারা ঘুরে বেড়ায়,
মেঝেতে ও দেয়ালে গোসলখানায়,
হয়তোবা কোন নতুন খাবার ও বসতির আশায়,
তবে কি কেউকেউ তারা এখন শুধু পানি পান করেই বাঁচিতে চায়,
সেতো শুধু নাহয় একশত হবে,
মাথায় এখন এমন প্রশ্ন জাগে, ঐ বাকীরা তবে,
আমার নিজ নয়নে দেখা, ছিল যেই হাজার হাজার পোকা, কোথায় তারা গেলো সবে ।
মনে কৌতুহল জাগিল,
তারা বাঁচিল কিনা কিবা কেমনে বাঁচিল,
কেড়িগুলি সব এখন কোথায় কেমন আছে,
জানতে মোর ইচ্ছে করে, তবে জানবো গিয়ে তা কার কাছে,
বারান্দায় বৃষ্টির পানি এসে পড়ে, প্রতিদিন জল ঢালা হয় টবগুলির ঐ ফুল গাছে,
হয়তোবা পান করে সেই পানি,
বিধাতার অতিথিরা ঐ লাজুক ও অভিমানি,  
আনাচে কানাচে লুকিয়ে থেকে হয়তোবা তারা ভালই আছে, ছিলেম আমি এই ধারণায় ।
তার কিছুদিন পর,
আমি এক দুঃক্ষজনক পেলাম খবর,
গিন্নী ডাকিল মোরে,
এই এদিকে আসো দেখে যাওনা ওরে,
দেখিলাম হায়,
বারান্দায় টবের গহীন চিপায়,
কি আশায় কেজানে কেনরে জটলা পাকায়,
তিন/চার হাজার কেড়িপোকা,
হায় কোন মমতায় যেন হয়ে থোকা থোকা,
গলাগলি ধরে একেবারে যেন জড়াজড়ি করে, কেমনে কেন পড়ে আছে মরে তারা এক জায়গায় ।


পর্ব - ০৩


আমি ভাবনায় পড়িলাম,
তবে একটু ভেবেই আমি তাই বুঝিলাম,
মরণ কত করুণ ও অসহায় আর এ জীবনেরযে কত দাম,
কেন তারা কেমন করে,
জড়ো হয়েছিল সবে ওরে ঐ সে আসরে,
নিশ্চয় তাদের যোগাযোগ ও আপ্রাণ চেষ্টা ছিল বাঁচিবার তরে,
সবে মিলে বসে এক মজলিশে আলোচনায়,
ভেবে দেখা কি করা যায়, আছে কিনা বাঁচার আর কোন উপায়, ঐ দরবার ছিল হয়তোবা সে আশায় ।
তোদের মাঝে একে অপরে,
আজিকে জানতে পেরে ও বুঝতে পেরে ওরে,
কত প্রেম, মায়ামমতা ও সহযোগিতা ছিল তোদের ঐ ক্ষুদ্র অন্তরে,
হায় সেকথা ভেবে, যদিও কষ্ট পাই আমি অনুভবে, বুক ভরে যায় বিগলিত ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় ।
আগে জানলে বলতাম তোদেরে,
বলিশ তোদের খোদারে গিয়ে বিনয়ে মিনতি ভরে,
কেন সুবাসনাগুলি মোর, না দেখে তার করুণার ভোর, আজও গুমরে কেঁদে মরে ।
মানুষ করে দেয় যেন,
সবইতো পলকে পারে জানিনা তবে করেনা কেন,
সুখ শান্তিতে ভরে অসহায় মানুষের তরে, মানুষ নামের এ জগতের সব অমানুষগুলিরে ।
আকাশে রঙের ফানুস উড়াই,
যারা বুক ফুলিয়ে বজ্রকন্ঠে করে শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই,
দেখি আসলে আজওতো তারা ওরে মানুষই হয় নাই, এমন অসংখ্য প্রমাণ দেখিতে পাই ।
অসহায় জনে কাঁদেনা প্রাণ,
তারা তবে কেমনে কবে ওরে হবে মুসলমান,
যার নাই সততা করুণা মহত্ব উদারতা ও দীনজনে কোন দান কিবা অবদান,
মুসলমান হতে হলে ভাই, আগেতো সবার মানুষ হওয়া চাই, সেতো বিধাতারই ফরমান ও বিধান,
লভেনি মনুষত্ব কিবা মানবতা নাই, নাকি লভেও তাই ওরে মোহ ও ভোগেতে তারা সবে ফেলেছে হারাই ।
তার অদেখা চরণে পড়ে,
কত চেয়েছি মসজিদে গিয়ে সিজদা করে,
যেজন লুকিয়ে রয়েছে ওরে ও চুপিসারে বাস করে মম অন্তরে,
সামনে পিছনে উপরে নীচে চারপাশের সবকিছুতে, আর বানানো তারই ছোট্ট মাটির ঘরে ।
তবু মোরে দেয় নাই,
বারবার আমার দুটি হাত দিয়েছে ফিরাই,
বুঝি গুনার ঝুলিটা আমার হায়, কানায় কানায় হয়েছে বোঝাই,
নাকি জানিতে চাহে বিধাতায়,
পাশ করে কিনা অধম গোলাম তার পরীক্ষায়,
পায় কি না পায় বারবার যেন শুধু চায়, যখন তখন তার দরবারে ছুটে যাই,
দিয়েছে ঐটুকু ধন, যেটুকু ছিল অতি প্রয়োজন, যেন কোনমতে বেঁচে থাকি আঁকড়ে ধরে তাই ।
জীবন কেটেছে কষ্ট করে,
তাই দিয়ে ওরে কায়ক্লেশে খেয়ে-পরে,
যদি হয়রে এমন শত নাই আপন ঘরে,
কি দেবো ওরে তবে আমি কেমনে ওরে, যদি না রহে আর কিছু পড়ে পরের তরে ।
যদিরে আমি লুটেপুটে খাই,
কেজানে কি ভেবে খোদায়, জানিনা আমি তাই,
কথা ও কাজে কোন মিল নাই, মন্দে ভরা তবু কেমনে করে ভালোর বড়াই ।
কোটি মানুষের খাবার ও ধন,
একা’ই আমি একজন যদিরে তা করি লুন্ঠন,
ভাগ্যবান ও ক্ষমতাবান যত ঐ রাজা ও তার মন্ত্রীগণের মতন ।
মিথ্যা বলে, প্রতারণা করে ও দেখায় প্রলোভন,
তাদের ভিতরে বাহিরে দুই, কথায় ও কাজে মিল নাই এমন,
অনেক কিছুই শুধু অভিনয়, যতই হোক ভাল তাদের বদন, বসন ও বচন,
তাদের মন ও মনন গোপনে অশোভন ও মন্দ কালো, আসলে নহে তারা মানুষই সুজন ।  


পর্ব - ০৪


জীবন আমার সাজিয়ে মুড়ে,
সুবাসনাগুলি যেথা নিত্য হামেশা গোপনে যায় পুড়ে,
তবু ছাই হয়না,
কভু মোরে ছেড়েও যায়না,
ঘুরেঘুরে, অগুলি এসে জমা হয় যেন ঐ একই ভুরে ।
তাতে মোখ ঢাকিলে ওরে,
পা দুখানা মোর রহেযে উদোম পড়ে,
দয়া করে দান করেছিল বিধাতায় মোরে পরম আদরে,
কেনরে এমন ভাই, কি ভেদ বুঝিনা তাই, এমন একখানা আজব রঙমাখা চাদরে ।
বৈশাখে যা হাতে পাই,
অঘ্রানে এসে দেখি যেন আর নাহি তাই,
রিমঝিম ঘন বরিষন বর্ষায়, একটু মায়ায় রাখে জড়াই,
কখনও নাগালে, পিছনে চলে যায় আমি দুপা আগালে, কখনও দেখি নাই,  
করে দিও মোরে ত্রাণ, হে প্রভু চিরমহান, যত মোর সব গুনাহ আর অনাদায় হতে শত দায় ।
হয়তো মোর জীবন জুড়ে সহস্র গুনাহ,
তাই কিরে ভাই, তোমাদের খোদায় আমার কথা শোনেনা,
সকাতরে যতই চাই চুপ করে শুধু শোনে, দিবে কি দিবেনা তাও সে বলেনা,
চাহিতেও কভু করেনা মানা,
বুঝেছি ভাল লাগে তার চাহিলে বারবার যাচিলে করুণা,  
নিজে খায়না যে খোদায়,
কুল মাখলুক বিশ্বজোরা তার বিশাল পরিবার বারে খায়ায়,
এত ধন, মানিক-রতন অসীম অপার,
যার জানি আমি তার, হয়না নিজের কোন নাহি দরকার,
এ দেওয়া না দেওয়া কিবা পাওয়া না পাওয়া পরীক্ষা তার, যার ভেদ বুঝা ভার,  
অঢেল আছে, নিশ্চিত জানি তার কাছে, হয়তো এমনই তার খেয়াল তবু দিবেনা ।
হোক ওরে তাই,
আর শুধু এইটুকুই আমি চাই,
নাই মোর কোন কষ্ট, অভিমান কিবা অভিযোগ নাই,
যদি হয়, কম পায় কম খায় ও কম দায়,
তবে তাই ভালো, অটুকু দিও মনিব যাহা তব মনে চায়,
শুধু তা যেন সহে, বিড়বিড় করে নাহি কিছু কহে, মোর মনে ও দেহটায় ।
আমি তাতেই রাজি প্রভু তাতেই রাজি,
হতে চাইনা দেওয়ান কিবা পক্ষপাতি বিচারক কাজী,
জুলুমবাজি রাজ্যের মহাবীর পাহলোয়ান, কোন সেনাপতি, বানিজ্যপতি কিবা গাজী ।
কতজনে ডুবে আছে হে প্রভু তব করুণায়,
জানিনা পেয়েছে তারা কোন ভাগ্যে, পুণ্যে বা যোগ্যতায়,
একজনেরে সহস্র লোকের ধন, দিয়েছ ঢেলে ডালাভরে যেন তা পড়ে যায়,
আসলে এত ধন, এক জীবনে নাই প্রয়োজন, তাইতো হরষে উড়ায় তবুও দেখি তারা না চেয়ে আরও পায় ।
হোক তাই হে রাব্বানা,
তুমি দয়া ভরে দিও মাফ করে মোর সব গুনাহ,
শুধু লিখে রেখো দরবারে তোমার পেশ করা আমার, অপূরণ সবগুলি নেক বাসনা ।
ঘরে ও বাহিরে মোর সব দায়,
যারা অসহায় দিশাহারা, কিছু আশা করে ও চায় অব্যক্ত ভাষায়,
আমার পুণ্য বাসনাগুলি,
না যায় কভু যেন তার পথ ও লক্ষ্যটা ভুলি,
অগুলি আমিও রাখিলাম, ওরে যার নাই কোন দাম, তবুও মরমের শিকায় তুলি ।
তব ভরসায় আমি সে আশায়,
যদিরে সেগুলি, কভু ওরে তব করুণা পায়,
ঝুলিটার মোখ খুলি,
তার আপনার একাকি চলার পথটা খুঁজে পায়,
মরণের পরে ঐ পরপারে, দীনতার ভারে অসীম অন্ধকারে, কভু না যায়রে আপন ঠিকানাটা হারায় ।


পর্ব - ০৫


হে মহাজন, শুধু নিজের তরে চাইনিতো ধন,
ধনের পাহাড় আছে নাই মন, এ সমাজে আছে এমন কোটি ধনীজন,
দানের পুণ্য সাধনে ধন্য হতে কাতর মন,
একটি নয়, ধন ও মন তথা সাধ ও সাধ্য এ দুটোরইযে হয় প্রয়োজন,
আকাশে থাকা, মহারাজার সাজিয়ে রাখা, খাস গোলামের ঐ রাজ কুটুমবাড়ীটা করিতে সাধন ।
কেড়ি পোকা নয়,
মানুষই শুধু হবেযে ওরে নিশ্চয়,
দেনাপানার খুলে খতিয়ান ও করে সব পুণ্য-গুনার ওজন ।
জগতের যত ধনীগণ,
কে কিভাবে ঐ ধন করেছে উপার্জন,
এ নহে মোর মিথ্যা বচন,
কোরআনের বাণী, কেউ মানি বা না মানি, সত্য চিরন্তন,
শুধু তাই নয়, কে কার ধন কোন পথে করেছে ব্যয়, খোদার লাগি কতটুকু বিসর্জন ।
হলে মানুষের মরণ,
কারো পড়ে কি না পড়ে স্বরণ,
কড়ায় গন্ডায়, জায় জায় হিসাব লবেন যখন,
জীবন মরণ ও ধনজনের মালিক দাতা পালক ও বিশ্ব মহাজন ।
পন্ডিত, বিদ্যান ও যত ক্ষমতাবান,
আমার দানের অপব্যবহারকারী, ধরাকে করিলে সরা জ্ঞান,
মাটির মানুষের পাষাণ পরাণ,
অহংকারে ছিলে হয়ে ভারী, মাটির দুনিয়ায় কি তব অবদান ।
যত বিত্তশালী ও শক্তিশালী,
দেখলেনা জগতটারে তীক্ষ্ণ আলোর দীপটা জ্বালি,  
তবে কি এত ধনজন ভোগবিনোদন প্রাসাদ বাড়ী-ঘর ও এ জীবন সফর বৃথা খালিখালি,
একবারও ভুলে সময় নাহি পান,
দেখতে খুলে আপনার পাপ-পুণ্যের ঐ ঝুলিখান,
কি ক্ষতি খোদার, ওরে অবিশ্বাসীগণ,
ওরে শুধু তারাই জিতে, যত বিশ্বাসী ও অনুগত মানুষজন,
হয়েও সেরা হলেনা মহান, চোখ থেকেও তিনখান, অন্ধের মত কাটালে জীবন,
পেলেনা খুঁজে আহারে, তোমার চলার পথের ধারে, পড়ে থাকা ছাইয়ের টালের ঐ মানিক-রতন ।
তাদের মাথায় ও ঘারে ছিলযে বেশী দায়,
শুধু ধনীরাই তখন, শুনেছি বলেন বিজ্ঞ মাওলানাগণ, হবেন অধিক নাজেহাল অস্থীর, পেরেশান ও অসহায় ।  
ওরে মন কে করেছে সৃজন,
ঐ কেড়ি পোকা আর যারা সৃষ্টির সেরা ঐ মানুষগণ,
সারা মাখলুকের যদি হয় একই মালিক ও একজনই শুধু মনিব মহাজন,
সৃজন মরণ সবইতো তার, করিছে বিশ্বজোড়া যার দায়ভার এক পরিবার করা লালন পালন ।
এক নগন্য লেখক ও তার এই তুচ্ছ বিরচন,
ধন্য পাঠক, তারাইতো শ্রেষ্ঠ সাধক, হয় সর্ব সাধন যারা বিচক্ষণ,
একবার খুলে গেছে যার তৃতীয় নয়ন, ঐ দরশনে বিধাতারে ভালকরে চিনেছে সেজন,
মানুষের সনে হয় পরিচয় সাফল্য ও বিজয়, যে নাহি হারে ধরে রাখিতে পারে স্রষ্টার সনে ঐ সে বাঁধন,
মানুষ কেন নয়, বাকহীন ঐ ক্ষুদ্র কেড়ি পোকায়,
প্রাণ হয়ে অতি কাছে, নিরাকারে এ দেহটাতে মিশে আছে, দিনের আলোয় ও আঁধার রাতে তারে দিব্য দেখিতে পায় ।