পর্ব - ০১


ভাবে ক্ষুধিত মন, এমন একজন বন্ধু কোথায় পাই ॥
শুধু এইটুকু বাণী ও  বারতা,
ভক্তি ভজন তার একত্ববাদে আস্থা ও নির্ভরতা,
সীমার মাঝে মন্দভালো যেকোন কাজে দিয়ে স্বাধীনতা,
সৃজন মরণ লালন পালন জীবনের যা প্রয়োজন ঐ সবকিছু দাতা,
সব কথায় কাজে অন্তরে বাহিরে মূল্য নহে নয় বিনিময় একটুখানি কৃতজ্ঞতা,
দমে দমে ঋনের বোঝা যাবে কমে, অসীম দানের ক্ষুদ্র প্রতিদান চায় শুধু এই পূঁজোটাই ॥
সদা সংগে রবে,
মোর সুখে পুলকিত দুঃখে দরদী হবে,
সারা অংগে প্রাপ্তি ও ভংগে বেদনে রংগে সপ্ত ভবে,
মম ভারটুকু স্বেচ্ছায় তার আপনার কাঁধে আপনিই সে তুলে লবে,
রাজ্য কিবা রাজত্ব নয় নহে মালিকানা, নেয়ামত কুদরত সবখানা ভোগ আর দরশন হবে নসিবে,
সকল সৃষ্টি ও দান পেলো প্রাণ হলো মহান তারই হাতে তাই সে আমাতে দুজনার জাতে কোন তফাৎ নাই ॥
এতকিছু এত মজা যার আছে,
বেশীর ঢল সাতরঙ ফল ধরেনি বলেকি তার গাছে,
কেন এত শূন্যতা কোন সে দীনতা ও হতাশার হাহাকার তার কাছে,
মাটিতে করে বাস ছুতে সে চায় সে আকাশ, শেষ নেই তার চাওয়ার চড়েও একটা উঁচূ গাছে,
বন্ধু হতে হলে তার,
এমন মহৎ উদার ও নাই যার,
কোন আক্ষেপ আফসোস লোভ ক্ষোভ অভিমান অভিযোগ, এ সবইতো মনের রোগ ধুয়ে-মুছে প্রসন্ন তুষ্টি চাই ॥
সে শুধু একজন,
বুঝিবে মোর এ মন,
সব কষ্ট ব্যথা হর্ষ ও বেদন,
হবে মনের মানুষ সে অতি প্রিয়জন,
এমনই একজন রবে আশেপাশে সারাক্ষণ,
দ্বীতিয় নেই, একক সেই নেই যার বিকল্প প্রয়োজন,
ক্ষুধা পেলে বিষন্ন হলে করবে তার আয়োজন সব ব্যথার প্রসমন,
নিদানে আপদে পড়ব যখন ফাঁদে কিবা গহীন খাদে হাত ধরে টেনে যে তুলবে তরাই ॥
ঠিক নাকের ডগায়,
চোখের দেখার সীমানায়,
মোর সামনে পিছে ডানে ও বায়,
ছায়া নহে যাদু নহে সোহাগ মমতার কায়ায়,
দুজনে দুজনার দায় তবুও একে অপরকেই শুধু চায়,
প্রতিটি লোমের গোড়ায় পা হতে মাথা এই মোর সারাটা গায়,
নিতে ও দিতে সব স্বপ্ন আশায়, দেমাগে ধমনীতে সকল শিরা উপশিরায়,
যার সম আর কেহ নাই হয় যেন তাই,
মাথার ছায়ার ছাতা নেই কোন ভয় হেন নিরাপদ আশ্রয় ও ঠাই,
সোহাগ ভরে হাতদুটি ধরে, ভিতরে বাহিরে মনের ঘরে বসত করে, সোনার শিকল মম মরমের চরণে জড়াই ॥


পর্ব - ০২


চুপচাপ গম্ভীর নয়,
সে যেন এমনই উচ্ছল ও মুখরা হয়,
তার না মানা বশ কিবা হার তবু যেন দূরে ঠেলে নয়,
কাছে রাখে নাম ধরে ডাকে কাছেই থাকে কিবা বারবার সে কাছে টেনে লয়,
দাড়িয়ে বসে শূন্যে জলে মাটিতে চষে, দুজনে মিলে নিমেষে না হলে তিলেতিলে সব ঘাট জয়,
অদেখায় লুকিয়ে নহে,
সবকিছু সহে অনুভবে বহে,
ভুল হলে দেয় শুধরে আবার কহে,
মোর সারা দেহমন ঐ পরশে হয় যেন রহে,
এমন বাহারি আবেশ, যে রুপ মাধুরীর নেই কোন শেষ, দুখানা নয়ন রেখো অনন্ত জীবন এমনই ভরাই ॥  
এক মনোহর যাদুকর,
আমার প্রিয় ছোট্ট পাতার ঘর,
জোছনার রুপালী আলোয় ভরপূর সুন্দর,
সবুজ পাতায় বুলানো ও মন ভূলানো সে বায়ু ঝরঝর,
যখন বলব আমি সে হবে মোর শ্রোতা,
আমার সকল অজানা সুখ ও দুঃখের বারতা,
স্মৃতি মুছে যায়না, সে এক অক্ষয় আয়না এমনই খাতা,
খুলে যাবে আপনি সে দুয়ার,
শোভিত সুরভিত উপহার এমন শত অমোঘ পাওয়ার,
শুধু মধুর গান শোনাবে আর,
ঝর্নার মত বান ছড়াবে আশা ও ভালোবাসার,
যে সুধা মিটাবে সকল ক্ষুধা, মুছে সব ঋন কভূ কোনদিন হবেনা মলিন আর যাবেনা ফুরাই ॥
তোমার যত রঙ সব মেখে মম সপ্ত অংগে,
চেতনে অচেতনে জাগরণে বিভোর সুখের নিদ্রা ভংগে,
তব রোশনীর ঝিলে আমারে ডুবিয়ে দিলে নাইবো আমি রসে রংগে,
প্রলয়ংকর মহা ঝড় যখন বহিবে,
করজোড় মোর এই নিবেদন, সদা তুমি মোর সাথে রহিবে,
মম পরান যাচে,
তুমি মোরে নতুন ছাঁচে,
যেমন হলে হরষে তব হৃদয় নাঁচে,
তুমিনা মহাজগতে সবার বড়,
হে বিশাল হে বিরাট, তুমিনা একক এক মহাবড় লাট তুমি তাই কর,
তব পূন্য পরশে,
ভালোর চেয়ে ভালো ঐ সরসে,
যেমন ইচ্ছে তোমার আমিতো মেনেছি হার বসে তব আরশে,
শান্তি সুখের মহাবিজয়, অবিনশ্বর চিরঅক্ষয় যশে তুমি যেমন চাহো মোরে তেমনই লওনা গড়াই ॥


পর্ব - ০৩


আমিযে শুধু তার,
পরম প্রিয় বন্ধু সে হবে আমার,
নেই কিছুই চাওয়ার, কোন হতাশা কিবা হাহাকার,
হয়েছে প্রসমন সব বেদনার ও পূরণ যত মোর সব আকূল বাসনার,
দেখি তার নেই জানালা দুয়ার,
রাজাপ্রজা নয়, তেজে ব্যবধান ও ভয় হারাবার,
বলো কেমনে হতে পারি আর, কেমন হয় হলে দুজনেই দুজনার,
আবু হকে বলে বন্ধু হলে, সব সাধ্য ও সম্বল যার সে ইতো করিবে দূর্বল ও অক্ষমের উপকার,
দাও মনিব মোরে সেই কাম, করে যেন বেড়ে যায় দাম, এক অধম গোলাম হতে পারে মেহমান তার,
আমি যেন করিতে পারি,
সব হারিয়ে ও এসে সবকিছু ছাড়ি,
যা ঠকেছি আর যেন ওরে কভু আমি নাহি ঠকি বা হারি,
তুমি যদি লহো সেই দায়ভার, পরম সুখে পরম পাওয়ার দানে সবার শ্রেষ্ঠ হবার বাহাদুরি ও বড়াই ॥
আমার সকল কষ্টগুলি,
আমি শুধু তারেইতো বলব খুলি,
যদি হয় ঐ রোশনীতে মিলন বিজয় খুশীতে সব ভুলি,
হতে চাইনা কোটিপতি,
ওরে তাতে যা হবে হোক আমার গতি,
কিসের আবার মন্দভালো কি ইবা মোর লাভক্ষতি,
আমার সকল পাওয়ায় নাওয়া খাওয়ায় হোক বিশ্বপতির যা সুমতি,
কেন হবো অসীম দায়ের বোঝা মাথায় লয়ে বাদশা গাজী,
তোমার সকল চাওয়ায় সকল কাজে, আমিতো সদাই ছিলাম আছি এখনও রাজি,
সদ্য ফোটা সুরভিত কুসুম গুচ্ছ,
নহে মোর ভাবনা আমি কি নগন্য তুচ্ছ নাকি শাহী ময়ূরপুচ্ছ,
পেয়েছিতো সবই তার,
যা ওরে জানি শুধু দুদিনের ধার,
কোন অমত আমার নাই কিবা কিছুই চাওয়ার নাহি যদিগো পাই আর আমি হতে পারি তাই ॥
রয়েছি আমি তীরভাংগা অকূল সাগরের কিনারে বসি,
কোথা যাবো কেমনে পথ খুঁজে পাবো তুমি ধরে না নিলে মোরে আসি,
লোকে বলে মোরে বোঁকা ও পাগল তবু দুহাতে কষি আমি ধরে বসে আছি তব ঐ অদেখা রশি,
সাধ্য কি মোর বলো খুলিব রুদ্ধ দ্বোর, কিছু করি, ভাংগি-গড়ি বাঁচি কিবা মরি সেতো তোমারই ইচ্ছে খুশী,
যদি এমন হতো আমি যেতাম জিতে, আমারে নিতে মাটির এ ধরনীতে, তারকা একটা আচমকা পড়তো খসি,
ওটাই আমার যানবাহন, ঠিকানা ও আবাসন, কাটাব নতুন জীবন তোমার ঐ আলো ও ভালোটার বীজতলা ও খামার চষি,
তুমি রেখেছ মোরে এমনই ঘিরে,
বলো সোহাগ ও দরদের ঐ ছড়িয়ে জড়ানো জালটা ছিড়ে,
যদিও রয়েছি বেহালে,
না ও পেলে তারে ছুতে নাগালে,
জানিনা আমি শূূন্যে পাতালে মাটিতে না ডালে,
জানা নাই ঠিকানা কোন পথঘাট চেনা তবুও নেই ভাবনা, তুমি আপদে নিদানের পানাহ বিশ্বাসে ভরসা পাই ॥


পর্ব - ০৪


কেনযে মনটা আমারে বলে,
বিভোর বলয়ে একাকার হয়ে সে চলে,
না হয়ে কভূ জুদা,
এ কোন দারুণ বাসনা ক্ষুধা,
যত লোভ মোহ ক্রোধ ক্ষোভ রোশ,
এবার ধূয়েমুছে সব মন্দভুল আর অপরাধ দোষ,
ঢেকে লুকিয়ে রেখে অপ্রাপ্তি অতৃপ্তিগুলোরে পরিয়ে সুখের মুখোশ,
তব পূঁজা অর্চনা, তুমি করোনা মানা কোন অর্ঘ্য বিনা যোগায় যেনরে ঢের জোশ,
অনেক দিয়েছি মাসুল,
আর নয় কুহেলিকাতে মশগুল,
আলো আর ভালোতে সব শূন্যতা পূরাই,
আমি ধন্য হবো জড়িয়ে রবো বিশালে বিন্দু হারাই,
তব রোশনীর অপার ঝিলে ও ঐ অসীম নীলে খেলেও গিলে যেন পাই,
আমি তব করুণার ঢল দূর্বলের বল দুরন্ত প্রবল আমার সকল আহত ক্ষুধা ও পিয়াস দিও জুড়াই ॥
হে প্রভূ আমারে ধন্য করো,
সে আলোর সবটুকু ভালো করে দিয়ে জড়ো,
অধম নগন্য এই আমি,
হতে পারি যেন আরও অনেক প্রিয় ও দামী,
প্রান্তহীন বিশাল সে মাঠ,
দিতে পারি ছড়াই তব চীরসত্য বাণী ও পাঠ,
ঐ কাজে সেই ক্ষণে আমারে তুমি যেওনা ছাড়ি,
আমি যেন কায়ঃমনে তাই করিতে পারি আর মিথ্যা ও মন্দে না যাই কভূ হারি,
জানি আমি তা জানি,
নিত্য সে বিসর্জন ও কোরবাণী,
আমারে জোড় করে ধরে নিতে চাহিবে আঁধারে টানি,
হোক তাতে মোর জয় পরাজয় যাই,
ঝেড়ে সব গ্লানী, তবু হয় সাধন পাই তব মন হে মালিক সাঁই,
তুমিতো আমার ভরসা বল ও বড়াই সব রণে সদাই যেন আজীবন আমি তোমারে পাশে পাই ॥
মন কত কথা বলে,
বুঝি আমারে ভরাতে চায় কাদাজলে,
হে প্রভু আমিতো যাইনি তবু, ভেসে বানের ঢলে,
এ দুটি নয়ন কি যেন শুধু সারাক্ষণ খুঁজে বেড়ায় নানান ছলে,
আবার কোন বাহানায়, সবকিছু সে লুকাতে চায়, সেকি লুকানো যায় দেহটার তলে,
আহা কথায় ও কাজে,
সদা মরি আমি ভয়ে ও লাজে,
কি বলবো আহারে,
সাঁঝের পরে যখন ঘন আঁধারে,
শেষে আমি তাহারে, পৌছালে গিয়ে ঐ পারে,
ভিতরে বাহিরে যার কোন মিল নাই,
শূন্য হাতে একাকি আঁধার রাতে ঘরে ফিরে যাই,
কেমনে করিব আর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হবার আমার গালভরা বড়াই,
ওরে সব ফেলেছে দেখে,
শুনেছি জায় জায় রেখেছে তার খাতায় লেখে,
সারা জীবনের ছোট-বড় সকল মন্দ কাজের একটা ভিডিও করে রেখে,  
যখন দেখাবে সবারে,
মিথ্যার কাছে যেন সত্য না হারে,
সব মোর আমলগুলি, দেয় যদি সামনে ঢেলে ঝোলাটা খুলি, আমি তখন কেমনে কোথায় তা রাখিব লুকাই ॥