একখানা দুই চাঁকার গাড়ী ॥
একটা রশি টানা,
দুইটা চক্ষু আছে তবুও কানা,
এত বুঝে চিনেজানে মানেনা গুরুর মানা,
আজব কারবার, দায়ের আছাড়খানা তার গিয়াছে সীমানা ছাড়ি ॥
তেল ছাড়া চলে,
কোন সে রশদের বলে,
কত মিথ্যা কহে বিপথে চলে,
ছলেবলে কূটকৌশলে তলেতলে এ সফর বিফলে,
এক মুসাফির যাযাবর, একেবারে বেমালুম বেখবর, পাসফেলের পরীক্ষায় যায়যে হারি ॥
চেনা পথখানা,
হলো কেন তার অচেনা,
হারিয়ে ফেলেছে যেন আপনার ঠিকানা,
আঁধার রাতে এক একেলা কানা মন উড়ে বেড়ায় আছে ডানা,
চক্ষু বুজে পথ হারিয়ে খুঁজে অসহায় শুধু তার ঐ অসার দেহখানা কেমনে যাবে বাড়ী ॥
অঁচল অসার রথ,
দিগন্তহীন আঁধারে বিলীন পথ,
বিজন খোলামাঠ তারপরে খেয়াঘাট, হেরি যদি তাই তরীমাঝি ঘাটে নাই, তবে ভাই কেমনে সবাই দেবে পারি ॥
দিবসের শেষ ধূসর পড়ন্ত বেলা,
বিভূঁই দেশ ফেলে যে যার দারুন মজার খেলা,
এক বেচুইন কাফেলা,
অমৃত সরাব যদি পেতো এক পেয়ালা,
অচিন দেশে বানিজ্য সফরে এসে সাজানো রঙীন মেলা,
ঘন্টা বাজিল যখন, চঞ্চল আনমন পেরেশান চেয়ে দেখে সে একেলা,
খেয়েও ঢুস মানুষ হয়না মানুষ হয়ে রঙীন ফানুস ছুটছে বেহুষ ব্যাকূল আড়াআড়ি ॥
পিছুপিছু অদেখায়,
চলছে চুপিচুপি পায়পায়,
রেখেছে এক জালেতে জড়ায়,
হাসি হাসি মরন ফাঁসী গলেতে পরায়,
ঘিরে তারে হতে চারিধারে রেখেছে প্রহরায়,
পেলে ফরমান দেবে এক হেঁচকা টান শুধু সেই অপেক্ষায়,
বান্দা বিনা সূতায় বান্ধা যতই ধান্দা ও ফন্দি সারাক্ষন নজরবন্দি কি করে কই যায়,
এক আসামী কয়েদী অচেনা শত রাজপ্রহরী সব কাজ ছাড়ি করছে সে চৌকিদারী॥
দেনাপানার হিসাব হবে,
সব দান সব ধন কেড়ে লবে,
মালিক ও মহাজন অন্তরালে নিরবে,
বানিজ্য বসতি ছিল সুন্দর এ মর্ত্য ভবে,
কি ধন কে আহরণ হেথা করেছ তোমরা সবে,
না হতে নিলাম সকল, এ দেহটা অসার অঁচল, নিদানের সঞ্চয় সম্বল করো তাড়াতাড়ি ॥
অ ভাইজান,
আবু হকে যেন কারে সুধান,
হনহন শনশন স্ত্রস্ত বেগে কোথা যান,
একি নিত্য দেখি চঞ্চল ব্যাস্ত পেরেশান,
যাচ্ছি টাকা আনতে, করছি মহা সুখের সন্ধান,
আর একজন চুপচাপ গম্ভীর সারাক্ষন তার জবাবে জানান,
জানতে চাই, তাই তারে খুঁজে বেড়াই, মহারাজে গোলামের কাছে কি চান,
এ জীবনকাল এক অমূল্য ধন কত বড় নেয়ামত দান, দশা বেহাল টলমল বেসামাল তরীখান,
এ জগত জুড়ে দেখেছি ঘূরেঘূরে, পেতে এক পাহাড় ধন লয়ে সুখ আর ভোগবিনোদন, করছে সবে কাড়াকাড়ি ॥
কত কৌশল এ মাথায়,
বুদ্ধি অশুদ্ধি নিশিদিন ঘূরপাক খায়,
তাড়না পীড়ন যাতনা দেয় দিগন্তে তাড়ায়,
চোখের ঘূম কেড়ে নেয় মনের সুখ শূন্যে হারায়,
সব আছে তার কাছে ঢের, তবু কেন সে এত অসহায়,
নাই ভাবনায় কত দায় দুদিনের এ দুনিয়ায় লুকানো অদৃশ্যমান ঐ বোঝায় বিশাল ও ভারী ॥
এ দেহটার মরন,
এনে দেবে যে নতূন জীবন,
তা হয় যদি,
এক দিশেহারা কয়েদী,
বিজন তেপান্তর রয়েছে তারপর, কূল নেই যার এমন এক অপার নদী,
হাতপা মন ও মনন,
যতই মুক্ত স্বাধীন দেমাগ ও নয়ন,
রাজমোহর আঁকা চীর অটূট সে অদৃশ্য বাঁধন,
হবেনা কভূ তা ছিন্ন এমনই ঐ স্মৃতি চিহ্ন ফিরে তাকে যেতেই হবে বাড়ী যতই হোক সে চতুর ফেরারী ॥  
আর সব তার ধন,
কেড়ে লয় ঐ দাতা মহাজন,
সব ছাড়ি, সে এক ভিনদেশে গমন,
শূন্য হাতে গহীন আঁধার রাতে আজব সে ভ্রমন,
যত আপন অতি প্রিয় জন সবার সনে জবানে নয়নে হয় চীর জনমের আড়ি ॥