পর্ব - ০১


কার ক্ষতি, কিসের ক্ষতি কিবা কতটুকুইবা সে ক্ষতি ।
বলবো বিষয়টা খুলে,
যার মনে ধরে মন দিয়ে পড়ে, না রেখে শিকায় তুলে,
রাখবেন যতনে দেমাগে ভরে, জীবনের কাজে লাগাবেন না গিয়ে তা ভুলে ।
যদি তাতে যায় কারো চক্ষু খুলে,
মানুষেরা হয় আসল মানুষ, খুঁজে পায় অজানায় কোন সে গলদ তার মূলে,
সুজন পাঠক, যারা গহীনে ভাবেন না করে বকবক, দেখিবেন সময় পেলে গবেষণা করে হলে সুমতি ।  
শান্ত হয়ে বসে একটু পড়ূন,
অন্তরালের বুঁজে থাকা ঐ চক্ষুখানা খুলে ধরুন,
জীবনটারে ভালকরে জানুন,
যেথা রয়েছে যে বিধান ও কানুন,
সব অনুশাসনগুলি ওরে ভালভাবে মানুন ।
নিজেরে চিনে, মানুষ হতে মানবতা কিনে অন্যদেরে কাছে টানুন,  
নিভে যাবে ভাই, তাতে কোন ভুল নাই, জ্বলছে যেখানে যাই সব অদেখা আগুন,
এ ধারণা ভুল, যারা ভুল করে তারাইতো তার দেয় মাসুল, আপনি সবজানা পন্ডিত ও বিজ্ঞ অতি ।  
কাশীর মহিষী করুণা,
নারী হয়েও মরমে যার দীনজনে কোন মমতা ছিলনা,
সহসা একদা নদীতে তার স্নান করিবার জাগিল এ কোন আজব তাড়না,
শেষে দরিদ্র প্রজার জীর্ন কুটিরে জ্বেলে অনল, হয়েছিল যার শীত নিবারিবার হরষে মাতাল বাসনা ।
যৌবন রসে কৌতুক হরষে কেউ কেউ হয় বন্য
কত ধন হায় ওরে চলে যায় রাজমহিষীর এক প্রহরের প্রমোদের জন্য,
তাই সে ক্ষতি ছিল, রবি ঠাকুরের সামান্য ক্ষতি’র ঐ মহিষীর বয়ানে অতিশয় তুচ্ছ ও নগন্য ।
যে ক্ষতির কথা বলছি এখন আমি,
জানি জনভেদে সে বাণী হতেও পারে কারো কাছে মূল্যহীন কারো কাছে দামী,
কেজানে তা হতে কে বাঁচতে পারে, তা বিশ্বব্যাপী আনতে পারে ব্যাপক ও ভয়ংকর এক পরিনতি ।
অবাধ অবৈধ যৌনাচার,
পেলে বিয়ে না করে, সব মধু যা ছিল আগে শুধু কাছে বধূয়ার,
তাহলে বিয়ে করার তবে আর বলো কি দরকার,
বাড়তি মধুর পাওয়া, তাতেই খুশী - হলে অল্পকিছু উপহার,
নাই তেমন ব্যয়, নাই কোন ঝামেলা ও দায়, দুজনেরই লাভ, বিনোদন ও উপকার ।
হেন আচরণ হয়তোবা মেনে নেওয়া যেতে পারে শুধু তার,
হায় দীনতা ও অস্বচ্ছলতায়, বিয়ের বয়সটা যার নদীর ভাটায় বয়ে যাচ্ছে হয়ে পার,
অদেখা আসন্ন ধ্বস ও বিনাশ এ মহাবিশ্বটার,
অবক্ষয় মানবতা, সভ্যতা আর সুবিধান ও অনুশাসন লোকের তরে ছিল যত বিধাতার,
কল্যাণ ও মংগল অতিশয় আবশ্যক সৃষ্টির তরে ছিল যার,
বন্ধ হওয়া আলো ও ভালোর বীজতলা ও খামার, মানব প্রজনন, সকল সৃজন ও জগতের সব উন্নতি ।
এমএ পাশ, এখন চাকরী করে ও খায়,
দিনভর তার মাথার উপর দিয়ে কত খাটাখাটুনি, তাড়না ও পেরেশানি যায়,
তাকে ঘুমাতে যেতে বললে মায়,
এক শিক্ষিত মেয়ে বড়ই ক্লান্ত ও কাতর যে হতাশায়,
বললো-ঘুম আসেনা কেন মাগো, জানিনা সে কোন যাতনা কিবা দূর্ভাবনায় ।
ক্রমশঃ বদন যেন ভরছে মলিনতায়,
কালো দাগ পড়েছে তার ফর্সা মুখের দুচোখের কোঠায়,
ধীরেধীরে বিয়ের বয়সটা হায় তার ওরে, যাচ্ছে চলে কানেকানে কি যেন বলে অগোচরে অজানায়,
তবু কষ্ট ও হতাশার এক মলিন হাসির পরশ ছোয়ায়,
নিরবে বিনয়ে একদা নিভৃতে সে তার মাকে শুধায়, সত্য করে বলোনা মা আমার বয়স হলো কত ।


পর্ব - ০২


আর কতদিন বাকী,
কোন কারণে কিবা বিনা দোষেই নাকি,
ঐ ছাপটা বলোনা মা, কেমনে রুধিগো আমি তা কি দিয়ে ঢাকি ।
মধুর স্বপ্ন-আশাগুলি কতদিন আর বেধে রাখি,
জীবনটা কেন হলো আমার,
বুকেতে যেন এক হেন বিশাল পাষাণ ভার,
ধূসর মরু সাহারার দিনে চিকচিক আর রাতভর হাহাকার করা ফাঁকি,
আর কতদিন বাকী মাগো, হায় বেলা বয়ে যায় এবার জাগো, হতে আমি ঠিক তোমারই মত ।
আরশিতে দেখি দুচারখানা পাকাচুল আমার,
হলেম তবে আমি বলো, সে কোন নিয়তির শিকার,
আমার মাথায় কেন, নিষ্ঠর নিদানের এ বিশাল চাপ ও ভার,
রুপ যৌবন যেটুকু ছিল আমার, চাইছে বিদায় যেন নিরবে তা করে হাহাকার ।
কি লাভ বলো আর,
কবে তা দিয়ে হবেগো আমার,
বলো মা কি উপকার দিয়ে তোমাদের এই এত ধন ও টাকার পাহাড়,
কেন আমি আজও কুমারী রলেম, জানিনা কেনযে ওরে আমি হলেম এমনই ভাগ্যাহত ।
মা আমার বিয়ে হবে কবে,
বাচ্চা লয়ে ইস্কুলে যাবার ভাগ্যটাকি মোর আর কভু হবে,
দেখি স্বামীর হাত ধরে, শপিংমলে তারা বেড়ায় ঘুরে, আমোদে রত আমার যত বান্ধবীরা সবে ।
কেনযে এত মন্দ হলো কপালটা আমার,
হাতছানি দিয়ে যেন ডাকে,
কেনরে অচেনা কোন্ এক সুজন বন্ধু আমাকে,
সে কোন মজার তামাসায়, দেখি সে আবার আড়ালে লুকিয়ে থাকে,
কেন সে হায়, অসীম নীলিমায় হারিয়ে যায়, নাকি ইচ্ছে করেই খেলার ছলেই লুকায় বারবার ।
বয়সে পাকা ছেলেমেয়েদের হচ্ছেনা বিয়ে,
পড়ছে চুপিসারে কেন তারা আহারে, বুড়োর সারিতে গিয়ে,
সে সুযোগ নেইতো আর, বয়সটারে কারো কমাবার, লোকের চতুর চক্ষুগুলি ফাঁকি দিয়ে ।
আমারে গল্প শোনাও,
তাতে বলো কি সুখ মাগো তুমি পাও,
আমার কষ্টে আবার, আরেকটু ব্যথার প্রলেপ ভরাও,
সেতো মাগো যেন, আমার ভারী বোঝার উপর আরেকটা শাকের আঁটি ।
কেন মাগো বুঝনা,
তবু করো, তোমারে বারবার করিযে মানা,
মেদ ও ওজন বেড়ে যায়, মোর ভাবনা বাড়ায়, তুমি কি মা কানা,
ভেবেছ কি মা শেষে কি উপায় হবে কোথা মোর ঠিকানা,
তাইতো মা আমার, ভাল লাগেনা আর এত মজার খানা,
এত বিলাস মনেহয় ভুল, এখন আমার চক্ষুশূল গরম দুধে মধু ঢেলে দেওয়া ঐ সোনার বাটি ।
এ দেশের লক্ষ ঘরে,
মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবারে অনাদরে,
কোটি সুপাত্র - সোনার ছেলেরা বিয়ে না করে রয়েছে পড়ে ।
অল্প উপার্জনে সংসার চালান,
শুধু তারাইতো এ জগতে হিমশিম খান,
হালাল কামাই যার, সারা বছরই যেন তার পিছুটান,
বিয়ে করা হয়না, নেই বলে হাতে কোন নগদ টাকার যোগান,
তারা প্রত্যাশা করেন, তবে মোখ ফুটে কখনও কিছু কারো কাছে নাহি চান ।


পর্ব - ০৩


মেকি ভদ্রতা ও জাতের মুখোশধারী এ সমাজ,
সাদামাটা ও অনাড়ম্বর বিয়েতে শুধু ধনীদেরই দেখি যেন বেশী ভয় ও লাজ,
তারা কি তবে, তাদের ধনের জৌলুস সবারে দেখাতে চান,
সমতার কাঁধ, রাখিতে আবদার ও মিটাতে সব সাধ, আরও বাড়াতে মান-সম্মান ।
কেন তাদের অনীহায় ভরা প্রাণ,
করিতে ভদ্র, শিক্ষিত, সুজন ও মধ্যবিত্ত কোন পরিবারের কল্যাণ,
ওদিকে কন্যাদায়গ্রস্ত বাবামার নেই কোন আহসান,
বিয়ের প্রস্তাব না এলে, কোন সুপাত্র না পেলে কেমনে কারে তারা করিবে কন্যাদান ।
বিবাহ ব্যয় অতি সামান্য, সাশ্রয়ী অতিশয়,
মসজিদে, কাজীর দপ্তরে ও আদালতে এমন কত বিয়ে হয়,
মন্দিরে কিবা গীর্জায়, বর-কনে কিছু নাহি চায় কিবা পায় তারাকি ওরে সুখী নয়,
কেন সেদিকে ফিরে নাহি তাকান, যদিরে হতো ধনীদের দৃষ্টিভংগী ও মানষিকতা ঠিক মধ্যবিত্তের মত ।
বিনোদন সংগী নেই যাদের হায়,
এমন ভাল ছেলেমেয়েরা, বিয়ে করতেই চায়,
নিশ্চিত, ব্যক্তিগত অস্বচ্ছলতাটাই তাদের বড় অন্তরায়,
আছে পারিবারিক বাধা ও সামাজিক মান বাঁচানোরও কিছুটা অন্য দায় ।
বুঝিনা, কি দোষ কি ক্ষতি তাহলে,
হেন সাদামাটা ও অনাড়ম্বর বিয়ের রেওয়াজটা চালু হলে,
লাখো বিয়ে হয়ে যেতো অনায়াসে, প্রাণ পেতো যারা নিজ ঘরে কারাবাসে, আমার মন তাই বলে ।
দেশীয় লাল শাড়ী গায়েতে জড়ায়,
হাতে মেহেদী ও পাদুটি রাঙিয়ে আলতায়,  
সোনার নাকফুল যেন চকচক করে নাকে শোভা পায়,
লাল রেশমী চুড়ি হাতে, নাইলনের চুলের ফিতা ও ফুল দিয়ে খোঁপায়,
বর-বধূ করবে বরণ, হাসিমুখে দুজনারে দুজন, বেলীফুলের মালা গলেতে পরায়,
তবে স্বস্তি কিবা মুক্তি পেতো অসহায় যত কন্যাদায় বাবামায়,
সেইদিন আসিবে কবে, সব সাধারণ ঘরগুলি যবে, ভরপুর মুখরিত হবে ঐ সে খুশীর ছোয়ায় ।
আমার বিয়ের জন্য রেখেছ মা বিশ লাখ,
বিশহাজার টাকায়ও এদেশে কোটি বিয়ে হয়, তা শুনে মা তুমি হবেকি হকবাক,
থাক মা ওটা, বাবার ব্যাঙ্কে বা তোমার সিন্ধুকেই নিরাপদে আজীবন পড়ে থাক ।
যদি আমার বিয়েই না হয়,
আর ঐ টাকাটা অব্যবহৃত ঘরে পড়ে রয়,
শুনেছি বড় বড় কথা, দয়া করে ওসব আমাকে আর বলোনা,
তা শোনতে আমার মোটেও ভাল লাগেনা আর বরং উল্টো আমারে তা দেয় যাতনা ।
দিবে দামী শাড়ী আর দশভরি গহনা,
বিদেশী কার্পেট দিয়ে সুন্দর ফার্নিচার একসেট সাজিয়ে বাসাখানা,
তিন হাজার মেহমানের রাজকীয় খাবার, পার্টি সেন্টারে হবে এক জাঁকজমকের পরিবেশনা ।
তাই বলি শোন, না মেনে হার কিবা পরাজয়,
ঘটককে দাও ডেকে এনে ১/২/৩ লাখ, বলো তা কেনইবা নয়,
সে’ইতো সেনাপতি তোমাদের পছন্দের এ বিবাহের, যে পুরোধা খুঁজে ধরে এনেছে বিজয় ।
টাকার জন্য জীবনতো নয়, জীবনের জন্যই মা টাকা,
জৌলুস আর বিলাসে কি সুখ পাওয়া যায়, নাকি গোপন কষ্টগুলিরে তাই দিয়ে কভু যায়রে ঢাকা,
আর তা যদি না’ই হয়,
তুমি কি চাওনা, ঠেকাবে বড় বিপর্য্যয়,
যদি আমার পছন্দেই বিয়েটা হয়, তবে সেকি বেশী ভাল নয়,
তাতে কি লাভ-ক্ষতি কিবা আসে যায়, এত সময় বলো আছে কার, কিবা দরকার কেবা সেদিকে চেয়ে রয় ।


পর্ব - ০৪


এত বড় ঘর,
সুদর্শন রাজপুত বর,
বলোনা মা কিবা এত বেশী ধন,
ছোট্ট এ জীবনের লাগি সেকি খুউব প্রয়োজন ।
সেখানেও অজানায়,
শুনেছি তার গুণ, ঘটে কত গুপ্ত খুন হায়,
আহারে ঐ বাহারে, কত ঘর নিরবে ভেংগে যায়,
অজানায় কুড়ে কুড়ে, গোপনে চুপিসারে তা ওরে ঘুণে খায়,
বলোনা মা কেবা তার খবর পায়, কিবা রাখে কিবা ভাবে বলো তা কয়জন ।
বিয়ের পরে,
থেকেও প্রিয় স্বামীর ঘরে,
কিবা গরীব কিবা ধনী, নিয়তি যারে ঝাপটে ধরে,
কপাল কিবা কর্ম্ম দোষে আর নসিবের জের ও তার দুষ্ট ফেরে পড়ে,
মধুময় বধূরা অন্তরালে কতযে কষ্টে থাকে,
সতী ও সহ্যবতী যারা, সব দুঃক্ষ গোপনে তারা গোপনে নিরবে ঢাকে,
কেমনে রাত কাটে আর দিন যায়, কেঁদেকেঁদে জীবন কাটায় কত রুপবতী, রসবতী ও গুণবতী ।
আমায় নিয়ে মাগো কেন এত ভাবো,
ভাগ্যে মোর যা লিখা মা, তাইতো হবে সেইতো পাবো,
মাগো কিছু চাইনা আমি,
বিদ্যা ও ধন কিবা রুপও আমার কাছে নহে দামী,
একজন খাটি মানুষ ও আসল বন্ধু হয় যেন মা দোয়া করো আমার স্বামী ।
মোর হবু স্বামী, যে আমারে চায়,
ডাকো তারে কথা বলো, ব্যবসা কিবা বিনিয়োগে মন, থাকতেও পারে তার কোন দায়,
যদিরে সে তাতে রাজী হয়,
আমাদের দুজনার কোন উপঢৌকন বা উপহার নয়,
দোষ কি যদিরে তাতে, কাটছাট করে ব্যয় কমে যায়,
এক গুলিতে দুই শিকার, কোন ছেলে কিবা তার পরিবার যদিরে তাতে উঠে দাড়ায়,
তার কোন দাবী নাই, ভুল বুঝোনা নহে সে কিছু চায়,
ঘরে ও বাহিরে, সব সামলাবে সে ছোট করে, যেটুকু নাহলেই নয়, যদিরে নগদে সে পাঁচলাখ পায় ।
অকারণে টাকা না উড়িয়ে শূন্যে,
যেতে পারে ব্যয় করা, তা কারো জীবন গড়া কিবা কোন পরিবারের উন্নয়নে,
এমন যদি হতো, তবে হয়ে যেত লক্ষ বিয়ে,
চোখের সামনে ছেলেমেয়েদেরকে আর বুড়ো হবার সুযোগ না দিয়ে,
তারপর,
শুভ বিবাহের পর,
দুজনে মিলে ওরে, তিলেতিলে ধীরেধীরে, ভালবাসার রঙে মোরা সাজাবো ঘর,
যদি হয় দয়াময় বিধাতার সুমতি, তবে হয়তো শূন্য হতেই হবে একদিন সুখ সাফল্য ও উন্নতি ।
সে এক ভাগ্য বিড়ম্বনা,
বিয়ে না হওয়ার কষ্টটা আর সে দূর্ভাবনা,
মিথ্যে সান্তনা নাকি অলীক অসার কোন এক শাহী পরিকল্পনা,
তার কিছুই আমার নাই দরকার, মাগো আমি তার কিছুই চাইনা কোনদিন চাইবোওনা ।
গৃহস্থালীর সব ছোট-বড় যা কিছু দরকার,
ফ্রিজ, টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওভেন, ওয়াটার ফিল্টার, এসি ও ওয়াটার হিটার,
কেন মাগো তাদের কাছে যাওনা,
লয়ে তোমার ফরমায়েস আর সুন্দর একখানা বায়না,
দাওয়াত করে ঘরে এনে প্রীত করে চা-মিষ্টি পানে হাতে তুলে কেন তা দাওনা,
কত পেশাদার শিক্ষিত ও অভিজাত ঘটক আর ঘটকালী প্রতিষ্ঠান রয়েছে এদেশে অগনিত ।


পর্ব - ০৫


বলো সে কেমন জীবন,
তা জীবন নাকি জীবন নামের এক তামাসার প্রহসন,
বলোনা আর তা কেমন বিয়ে,
যদিরে হয়, সুখ-বিনোদন ও প্রভুর দান তার প্রতিনিধি নিজ সন্তান সব হারিয়ে ।
অসহায় বাবামায়,
নিরবে গোপনে তাই তারা কত কষ্ট পায়,
অকারণে যেন হায়, বিবেকের আদালতে আসামীর কাঠগড়ায় রয়েছে তারা দাড়িয়ে,
শেষে চুখের জলে ভেসে বলে মায়,
জানিনা আমি হায়, কি চাহে বিধাতায়, তা যেন এক অভাগী মাকে লয়ে লুকোচুরি খেলার মত ।
আমার বয়স হয়েছে সাঁইত্রিশ,
ইয়ে করে বিয়ে, করলাম না কেনযে ইশ,
কে বলো আর, আমায় করবে বিয়ে বয়সটা হলে চল্লিশ,
জীবনের লক্ষ্য স্বাদ খুঁজে পাবোনা হবে সবকিছু বিষাদ, কে দেবে শেষে সুখের হদিস ।
ঘাম ঝরঝর সারা দিনভর বিনামূল্যে খাটা,
তবে কি ওরে নহে, সবাইতো তাই কহে, মূল্যহীন এ সোনালী সুফলা জীবনটা,
নাইবা যদি হলেম বাবামা, তবে বিভুঁইয়ে বিফলে মরু দুস্তর এ সুদীর্ঘ পথটাইবা অনাহুত কেন হাটা ।
একাকি জীবনের এ কোন অভিমুখে চলা,
কি হবে ঠাই, কে হবে সংগী মোর দিনশেষে সন্ধাবেলা,
ঐ সে মধুর চাওয়া পাওয়ার,
দিনগুলি ওরে চুপিসারে একবার হয়ে গেলে পার,
বলবো কারে তা আর আহারে নাবলা আমার মনের লুকানো ঐ কষ্ট যত পীড়া দেয় কাঁটার মত ।
লোকে বলে বয়স হলেই কুড়ি,
এ দেশের মেয়েরা নাকি ওরে হয়ে যায়রে বুড়ি,
এ প্রবচন ও ধারণা, সত্য রুপেই রয়েছে মোদের এ দেশটা জুড়ি ।
ঘরে ঘরে মেয়েরা এখন বুড়া হয়ে যায়,
কে দায়ী তার লাগি, আর কে’ইবা নিবে তার অশনি দায়,
নারীর রুপ-যৌবন দুজনের জন্য,
সত্য বারতা নিশ্চয় তা, বিনোদন ও ভোগেরই পণ্য,
কেমনে করিবে কে তা অস্বীকার, দেখেছিতো আমি তা দুনিয়াটা ঘুরি,
যদিরে শেষে শেষ হয়ে যায়, এ দেহটার যত টক-ঝাল আর উঞ্চ নোনতা মধুর সুখেভরা শিহরণ সুড়সুড়ি ।
লোকে বলে হায়,
ঐ মেয়েটার ঘাটতি কোথায়,
ঘরে ঘরে তবু কেন তারা, আজ দেখি বুড়ো হয়ে যায়,
রুপ যৌবন বিদ্যা ও ধন, যা দেখি সবইতো তাদের সঠিক ওরে চোখের দেখায় ।
তবে কি ওরে,
সরষের ভূত রয়েছে তারই ভিতরে,
ঘাটতি রয়েছে তার বাবামার দরশন, মানষিকতা, উদ্যোগ ও চেষ্টায় ।
কোন চেষ্টা’ই যায়না বিফলতায়,
কায়ঃমনে চাহিলে, দেখেছি তা এ জীবনে সকলেই পায়,
করি সতর্ক ও বলি সাবধান, সুখ নেই তবে যাতনা আছে সে পাওয়ার তুলনায়,
তবে কেউ আগে কেউ পরে আর কেউ উত্তম ও কেউবা নিরস বা অধম এই যা তফাৎটা পাওয়ায়,  
ওরে কোনই হতাশা নহে, আবু হকে সত্য কহে, রহিতে হবে সুপথে সবরে চেষ্টা ও আশায় অটল ও অবিরত ।
ওরে ভাই হায়,
তাই যদি হয় তবে কি হবে উপায়,
দুদিনের এ জীবন,
পেলামনা ভাল মানুষ একজন,
কেন হলোনা ওরে সাজানো সংসার করে তা মনের মতন ।


পর্ব - ০৬


ভিনদেশে এক আজব সফর,
রয়েছে হেথা কতনা আপদ, নিদান ও ঝড়,
যদিও মনেহয় সবারে আপন, আসলে নয় এখানে সবাই তারা পর ।
কেউ কারো নয়,
শুধু গোজামিল আর অভিনয়,
তাই লয়ে বেঁচাকেনা, লাভক্ষতি ও জয়-পরাজয়,
অক্ষমতায় ক্লান্ত ও অসহায় বাবামায়, কেমনে ঘুচিব কেমনে মুছিব মনের সে ক্ষত ।
তার কি জবাব আছে,
চুপচাপ সে শুধু বসে ভাবছে,
কি বলবে লজ্জিত এক মায়, তার মেয়ের কাছে ।
জীবন নামের এ রেলগাড়ীটা ওরে,
চলছে থেমেথেমে একটু পরেপরে যেন যাচ্ছে ঘেমে বড়ই ধীরে,
হারিয়ে ফেলেছে বুঝি তার ফাড়িটা নাকি বল গিয়েছে পড়ে, কেমনে বলো যাবে তা নিজ গৃহে ফিরে,
কেউ উঠে কেউ নামে, কেউ আসে কেউ যায়,
কেউ পায়, কেউ পায়না কেউবা আবার তার টিকেট আর তল্পিতল্পা ও পার হবার গেট সবই হরায় ।
ছুটোছুটির এ খেলায়,
কারো কাটে হরষে ও মজায়,
কেউবা প্রশান্ত, কেউ ঘর্ম ক্লান্ত হতাশায়,
না পেলেও খুঁজে প্রান্ত আজও হয়নি ক্ষান্ত, অস্থীর অশান্ত নানা পেরেশানি ও তাড়নায় ।
ছোট্ট একটা সুখের নীড়ে,
সময় হলে ঠিকই তুমি পৌছে যাবেই ঐ তীরে,  
আশা আর নিরাশায়,
নানান কাজে কোন ফাঁকেযে দিনটা চলে যায়,
ভবের হাটের সবে খদ্দের, সহস্র রুপ আর বাহারি সাজের কোটি মানুষের ভীড়ে,
যার কেউ নাই কিছু নাই, এত বড় দুনিয়ায় নাইরে কোন ঠাই, তারাওতো হয়ে রয়না মর্মাহত ।
পয়ত্রিশ/চল্লিশ পার হয়ে যায়,
তবু কেন ছেলেরা আজ বিয়ে করতে নাহি চায়,
তবে কি বলে তাই, অনায়াসে অবাধে তারা যৌন সুখের বিনোদন সংগী পায় ।
নিরুত্তাপ ও নির্বিকার, ঠিক তেমনই তাদের বাবামায়,
ভাল আছে ও ভাল খায়, নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়, নেই ভাবনা নেই যেনরে কোন দায় ।
দেখেছি এমন অগনিত পরিবার,
মোখে ও সারাগায় সবখানে মাখানো রঙ, বুকেতে হাহাকার,
পাত্র সুদর্শন, আছে বিদ্যা, ধন, স্বচ্ছলতা ও উপার্জন কিছুতেই ঘাটতি নেই যার,
কি নেই ওরে তার,
তবে কি যৌবন তার মেনেছে হার,  
সে কিরে মিছে, নেই কোন প্রয়োজন এ দেহটার,  
নাকি নারীর প্রতি তার, টান পড়েছে ভক্তি, শ্রদ্ধা, আস্থা ও নির্ভরতার ।
বিদ্যা, রুপ ও জীবনের সকল বাহার,
ঘরে ও বাহিরে যা দেখিরে যেন কোথাও কমনি নেই কোনটার,
ভাল চাকুরী বা ব্যবসা সবইতো আছে শুধু আগ্রহ নেই, তাই বুঝিরে বিয়ের বয়সটা যাচ্ছে হয়ে পার ।
কি ভেদ কিবা রহস্য তার,
হলেও তা বুঝা অতি ভার,
তা ওরে একবার অবশ্যই জানা দরকার,
না হলে নিজেরে চেনাজানা আর, কানার জীবন হতেও পারে ছারখার, কালের ছোয়ায় যারা অভিশপ্ত ।
এ জীবনে না হলে বাবামা ও না পেলে সন্তান,
মূল্যহীন সমুদয় বিদ্যা ও ধন, যদিও তা হয় এক পাহাড় সমান,
সকলই বিফল আর ষোলআনা মিছে ও অনাদায় দায়েভরা তার এ জীবনখান ।


পর্ব - ০৭


ওরে মরণ আছে,  
চলছে পিছে পিছে অতি কাছে,
যারা বোকা ধনকুব আর যত পন্ডিত ও বড় বিদ্যান ।
বিয়ে না করে,
শুধু একটা ধনের পাহাড় গড়ে,
আর মাতাল হরষের বিভোর বিনোদনে পড়ে,
জানিনা তারা কি তবে মরিতে নহে চিরকাল শুধু এ ভবে বাঁচিতে চান,  
শুধু ধন আর ভোগ-বিনোদন নয়রে জীবন, যথাসময়ে বিয়ে না হলে তারাযে সকলই হারান ।
এতবড় দিন কাটে কিসে ব্যস্ত রই,
কেন তারা পড়েনা আকাশের চিরখোলা ঐ,
দুই জীবনের সকল সমস্যা আর মুক্ত অসীম জ্ঞানের বই ।
দিকহারা ও ভুলকরা যারা, কেমনে তাদের দোসর কিবা অন্ধ অনুসারী হই,
মনতো বারণ করে, কেমনে বলো তাদেরে, আমি বড় বলি আর সবার সেরা বলে মেনে লই,
ভাবেনা ও দেখেনা যারা ঐ দিনগুলি, সম্বল তার পুণ্যের শূন্য ঝোলাটা খুলি, যত বিগত ও অনাগত ।  
এ সফর ও এই জগত ঘর,
পাহাড় সমান, এক অদেখা রাজার দেনা মাথার উপর,
অনাদায় কত কাজ ও কত দায়,
দেখেছ কি খুঁজে, যা নিয়ে এসেছ করে মাথায়,
ভুলে গেছ কিরে রাজার সনে করা তোমার অলিখিত ঐ অংগীকার,
কেমনে প্রিয় দাস, না হলে সব পরীক্ষায় পাশ, অথই অচিন ঐ পাথার হবে পার ।
যেটুকু জানো কাছে টানো দিয়ে তাই, তব কাফেলায় করে আহবান,
মরণের আগে না হলে যার সমাপন, কেবা কেমনে পাবে ওরে ত্রাণ,
ঐশী আলোর সকল জীবের সকল ভালোর, জ্বেলে প্রদীপ না করিলে অকাতরে তা সবারে দান ।
দেহমনে প্রকাশে গোপনে নিজেরে করে সমর্পন,
তারে কিছু দান, ঝড়িয়ে ঘাম করে কিছু ভাল কাম, করুণার মোহতাজ হয়ে দিয়ে বিসর্জন,
আজীবন প্রাণপণ করে শুধু রণ,
সাঁতরে হয়ে অথই আঁধার দরিয়া পার তবেইতো হয় হবেযে সাধন ।
নাইবা থাকুক ধন তবুও তারাই সবার সেরা,
শুধুই নহে আপদে নিদানে, নেয়ামতে ও দানে তার করুণার চাদরে ঘেরা,
যারা রহে অবিরত সদা অনুগত, শুধুই ভার বহে আর বেশী সহে, কারে নাহি কহে গহীনে পূঁজায় রত ।
বাবার ঘরে একদা হায়,
যে মেয়েটি বিয়ে না হওয়ায়, ছিল অসহায়,
বিয়ের পরে বুঝিনা কেমন করে যেন সে এক লহমায়,
চুখে রঙ মুখে কথার হাতিয়ার, দম্ভ, দর্প ও অহংকার যেন মাটি লাগেনা পায়,
সমাজে দেখি সব পেয়ে শেষে তার, রুপ আচরণ আদর্শ ও স্বভাব যেন সব বদলে যায় ।
বিয়ের পরে দেখেছি সহস্র ঘরে,
কোন মিল নেই বাহিরে অন্তরে,
অনেক বধূ রমণীদের চলন ও বলনের রুপ বদলে বহুরুপ ধরে ।
সত্য নয় বা খাটি নয়,
যা বলে ও করে বারোআনা তার অভিনয়,
তার নিজের ঘরে,
মনেহয় যেন ইচ্ছে করে,
বাসার এক কোণে সে রহে পড়ে ।
ভিতরে ভিতরে,
অন্য এক নব জগতে যেন সে বিচরে,
গোপনে আপন মনে যেন কেউ না জানে হেন একটা আপন রাজ্য গড়ে ।


পর্ব - ০৮


একেবারে যেন সে আলাদা ভিন,
এই ঘরে যেন তার নেই কোন কাজ কিবা কোন দায়-ঋন,
ভাবটা এমন যেন হয়েছে রাজ্য জয়,
শুধু অধিপতি হতে বাকী একটু সময়,
তাই আর মোটেও নেই তার কোন লাজ ভয় ।
ছলাকলা যাই করা বলা, যেন সে কারো অধীন নয়,
লক্ষ্য তার, নতুন এ রাজ্যটার সিংহাসনটা করা জয়,
শাসিত নয় অধিকারি, তাই বুঝি তার সবার মাথার উপরে ঘুরাতে ছড়ি বড় ইচ্ছে হয়,
কেন চাহেনা বুঝি ভাল লাগেনা তাই পারেনা দেখাতে কারেও ভক্তি, শ্রদ্ধা, মান্যতা ও বিনয় ।
বুঝিনা সেকি জয় নাকি পরাজয়
বড় ঘরের মেয়ে কিবা বেশী বিদ্যান হলেই কি এমন হয়,
কাজে ও ব্যবহার আচরণে, গুণে নয়,
কথায় বড় হতে আর জিতে যেতেই তার খুব বেশী ইচ্ছে হয়,
ফুটে উঠে স্বার্থবাদীতা, হিংসা, ছোটলোকি ও শুধু তার লোভটারই পরিচয় ।
বিয়ের আগে কিবা পরে,
পুরুষ শাসিত ও নিয়ন্ত্রিত এ সংসারে,
বয়স, বল ও মেধায় ছোট বলেইতো নারীরা রণে হারে,
সন্ধি ও বশ্যতা বা আনুগত্যতায় দুজনেই জিতে যায় প্রেমের মাধুর্য্য বাড়ে ।
ঘোড়া ডিঙিয়ে খায় ঘাস,
দা থেকে তার লম্বা আছাড়, গুরু না মানিলে সর্বনাশ,
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে,
তেমনি হতে পারে ধ্বংসও হয় তারই দোষ ও ভুলের কারণে,
প্রতিহিংসায়, জেদ ও ক্রোধের প্রতিদন্দিতায় ঘটে কত অঘটন ঘাটেঘাটে তাই তারা হারে ।
কারো জীবনে আসে নষ্ট ও পথভ্রষ্ট পরকিয়া প্রেম,
সুখ-শান্তির ভাংগে সংসার নীড়, জীবন ধ্বংসের এক ভয়ংকর গুপ্ত সোনালী ফ্রেম,
নিত্য চুরি করে করে,
অদেখা আগুন যখন লাগে আপন ঘরে,
অতি লোভে তাতী নষ্ট, একদিন অতি চালাকের গলায় দড়ি পড়ে,
মরণ আছে বলে কি লোকে সংসার নাহি গড়ে,
তাই বলে কি ওরে এই ভয়ে এ সংসারে, বোকার জীবন অসার কেউ বুঝি আর বিয়ে নাহি করে ।
সংসারে এত অশান্তি ও অঘটন,
কেউ কেউ ভাবে বারোআনা হয় তার নারীর কারণ,
কারণ নহে ওরে তা অনটন,
আজ আছেতো কাল নেই, দিন বদলানো এ জীবন,
সুখ-দুঃখ আসে যায়, জীবনের এ প্রথাতো চিরন্তন,
চাই ওরে ভাই, যার কোন বিকল্প নাই, আরও বেশী ক্ষমা, উদারতা মহত্ব ও সহন ।
বহন বেশী যার,
সুখ, সাফল্য ও বিজয় সবই তার,
ক্রোধ বা তেজ, ঘারতেড়া এক বানরের লেজ, হিংসা ও জিঘাংসা নয় চাই এসবের প্রশমন,
নাহলে কোনদিন দূর হবেনা,
নিশ্চিত জানা প্রয়োজন তা বিশ্বাস করা ও মানা,
পিছে লেগে থাকে পিছুটান ও পরাজয়, জীবনের অশান্তি, অবক্ষয়, আপদ, নিদান ও দূর্গতি ।
হে বিশ্ব দলপতি,
সমাজপতি ও সেনাপতি,
যত উজির, নাজির, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি,
ধনবান, বিদ্যান ও মহারাজ্যের যত সহস্র শত কোটিপতি,
এমন সাধ্য আছে কার, এ মহাবিশ্বটার রুধিবে প্রভার দুয়ার, যতই হিংস্র মতি,
শেষে বুঝিলে কি লাভ হবে, কেমনে পোষাবে তোমাদের ক্ষতি,
এই বুঝি শেষ বারতা ও আখেরী সুযোগ চোখ খুলে দেখার ও হতে সবার তাতে সুমতি ।


পর্ব - ০৯


জুলুমের মসনদ হবেই খানখান,
না বুঝিলে না মানিলে কিবা লঙ্ঘিত হলে খোদার বিধান,  
না হলে সংস্কার ও সমাজে কায়েম সুবিচার, হতে পারে খোদার লানত তোমাদের প্রতি,
ওরে নাই কারো ছাড়, হলেও তার অনেক লম্বাহাত ক্ষমতার, নাই তার কোন বাঁচার উপায় কিবা গতি,
যদিরে খোদায় রোষে হয়ে যায় ক্ষিপ্ত ও উদ্ধত,
দুনিয়ার অরুপ সৃজন, যতনে খোদার সাজানো ভুবন, বিধান শাসন কভু হলে বিক্ষত কিবা ব্যাহত ।  
এমন কথা’ও শোনা যায়,
বিশ্ব নেতারা নাকি কায়ঃমনে সবায়,
বেড়েছে খাদ্য ও চিকিৎসার চাপ ও ঝুকি, তাই মানুষ কমাতে চায় ।
বসে আকাশে,
ক্রোধে অভিমানে খোদায় হাসে,
শুনে যেমনই হয় অবাক তেমনই কষ্টও পায়,
এত দুঃসাহস ও এমন ক্ষমতা কার, এক গ্রামের মানুষেরে একদিন খাওয়ায়,
যারা আমার কথা শোনে, কিছু দান ও ভাল কাজ করে আর আমার গুণ গায় ।
আমার সহস্র কোটি জনতার,
পোষ্য সবাই এক রাজার গোটাবিশ্ব এক পরিবার,
আমরণ তাদের সবারে লালন পালন ও তাদেরে খাওয়ানো সেতো শুধু আমারই দায় ।
বিশ্ব থেকে যেন মানুষ কমে যায়,
শুনেছি, স্বল্প মাত্রার এমন বিষাক্ত ঔষধ দিচ্ছে মিশায়,
তাই তারা অতি গোপনে, সকল খাবারের সনে, সারা পৃথিবীতে দিচ্ছে ছড়ায়,
বিশ্ব জুড়ে সব দরিদ্র দেশের নারী-পুরুষগুলি যেন তাদের প্রজনন সক্ষমতা ফেলে হারায়,
খোদায় কহে কেমনে বলো আমার সহে, আমার রাজ্যে আমার বিধান ও শাসন রদ করার সাহস দেখায় ।
লোকের কর্ম্মদোষে,
খোদার হৃদয় উঠে ফুসে চরম রোষে,
কি উপায় হবে শেষে, কোমল মরম প্রসন্ন চিত্ত বিধাতার যদিরে হয় চরম মর্মাহত ও ক্ষিপ্ত ।
যদি শত বছর পরে,
অগনিত মানুষ অকারণে পড়ে,
পথে ঘাটে হাট-বজারে গঞ্জে ও শহরে,
কে কারে দেখে বা ধরে, এমনি রয়েছে মরে,
ধনী কি গরীব সবে অসহায়, যে যার তার নিজের ঘরে,
সব বিজ্ঞান, সভ্যতা ও উন্নয়ন খোড়া হয়ে যেন গেছে গহীন খাদে পড়ে ।
সমাজপতিরা সবে বধীর ও অন্ধ,
স্কুল-কলেজ,মাদ্রাসা ও উপাসনালয়লি সব রয়েছে বন্ধ,
গা জুড়ানো বাতাস, পাখীর গান, গীত ও কবিতার ছন্দ,
থেমে গেছে ঝর্ণা ও নদীর কলতান, ফুলে নেই কেন যেন কোন গন্ধ ।
যত মূর্খ ও পাগলের দল,
হরষের ভোগে মত্ত রাজকোষ করে দখল,
কুকিল ময়না টিয়া ঘুঘু, জোনাকি ও ঝিঝিদের খুঁজে ক্লান্ত হই,
ভ্রমর, ফড়িং প্রজাপতি, তাদের হলো কোন মতি, তারা সবে দল বেধে গেলো কই ।
যত বিশ্ববিদ্যালয়,
দূর্নীতি, সন্ত্রাস ও অবক্ষয়,
প্রশাসন ও সোনার সিংহাসন করেছে জয়,
কেউ বলেনা ওরে এই ভয়,
শেষে যদি আর জান-মাল ও এ প্রাণটা না রক্ষা হয়,
সবাই হতে চায়যে অসৎ, ধনী হবার এটাই তড়িৎ সহজ পথ, তাই হয়ে গেছে ভারী মন্দ ।


পর্ব - ১০


সবাই নন্দঘোষ,
নিজে সাধু সেজে দেয় পরের দোষ,
প্রতিপক্ষ বা প্রতিবাদীর প্রতি কেমনে করিবে ক্ষতি হেন অকারণ রোষ বা আক্রোশ ।
যত ডাক্তার, তাদেরই হাহাকার,গিয়েছে কোথা পালায়,
হাসপাতালগুলি সব বন্ধ,বিনা ঔষধ ও বিনা চিকিৎসায়,
ক্ষমতাধর রাজারা সব যারা প্রজার দুশমন ও পর প্রাসাদ ফেলে পালিয়ে গিয়ে অন্তরালে আরামে ঘুমায় ।
এভাবে আর বলো কতদিন,
ঘার কুঁজো করা হয়ে গেছে তাদের মাথাভারী ঋন,
নিয়ম ও হিসাবের জেরে,
দেখি মৃত্যুটা গিয়েছে তিনগুণ বেড়ে,
সবলের লম্বাহাত, নিচ্ছে দূর্বলের সব কেড়ে,
বিশ্ব জনতার জন্মহার পড়ে সভ্য বিশ্বটার এক চক্রের ঘেরে ।
সাধারণ মানুষ কৌশলের সংগে আর না পেরে,
কমে গিয়ে একেবারে, নেমে এসেছে নয়ভাগের একের ভিতরে,
তাই খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ পড়েছে এক নিয়তির নিদান ও মহাদূর্ভাগ্যের ফেরে ।
একশত কোটি লোক মরে ছারখার,
যারা মানুষেরে করেছে শোষণ, জুলুম ও অত্যাচার,
কেজানে রাক্ষুসে সামাজ্যবাদী শ্রেষ্ঠ ঐ রাজারা কি মরণ থেকে পাবে ছাড় ।
আপদ ও ঝামেলা হতে অনেক দূরে,
ভিনদেশে বানানো তারা শাহী প্রাসাদ মহাশান্তিপুরে,
রাজ পরিবার ও ধনীরা সবাই সুখের শেষ নাই প্রমোদে বেড়ায় বিশ্বটা ঘুরে,
নিরীহ নিঃস্ব অসহায় মানুষেরা বলে, তবে তাহলে আমরা সকলে কোথায় যাবো এ দেশটা ছেড়ে ।
বড় বড় দেশগুলি সব ছোট হয়ে গেছে,
ক্ষুদ্র ও দরিদ্র কিছু দেশ, নাই চমকের শেষ, বড় হয়ে উপরে উঠে এসেছে,
ধনী দেশগুলির করুণ দশা হয়েছে দীন,
দম্ভ আর সুখ পড়েছে ঝড়ে, বেড়েছে তাদের মাথাভারী দায়-ঋন ।
যারা ছিল চির অসহায় ঐ মজলুম,
ছিলনা যাদের ঠাই, উদরে অন্ন ও চোখে কোন ঘুম,
আত্মার আহাজারি ও নিরব ফরিয়াদ যা চুপকরে বিধাতায় শুনেছে এতদিন,
যদি হয়, এখন আর নেই আগের সেই, সোনালী ও সবুজ বিশ্বটা হয়ে গেছে ভীষণ ধূসর ও মলিন ।
চারিদিকে শুধু লুন্ঠন রাহাজানি ও অবিচার,
বিশ্ব জুড়ে আর্ত, আহত, অশান্ত ও অসহায় মানুষের চিৎকার,
এমনওতো হতে পারে,
সভ্যতা গিয়ে ভিখ মাগিছে আহারে,
কাতরে বিনয়ে দাড়িয়ে জুলুম, অবিচার ও বর্বরতার দুয়ারে ।
ঐ অশনি সংকেত দিলেম পড়িয়ে,
বিশ্ব অতি সভ্যতার জটিল এক পেঁচে পড়ে গিয়ে,
ছেলেমেয়েদের অনেক বেশী বয়সে কিবা একেবারে না করা বিয়ে,
কি গেলাম বিশ্ব মানব ও বিধাতার জগতটারে দিয়ে,  
মাটির দেশে ছোট্ট এক সফরে এসে, কি হারিয়ে কি গেলাম শেষে সংগে করে নিয়ে ।
সে ক্ষতি শুধু আমার একার নয়,
কার তাতে হলো কি হলোনা বিশ্বাস, চেতনা ও ভয়,
সে হবে এ বিশ্ব জগত আর মানব জাতির এক অবক্ষয় ও মহাপরাজয়,  
কোণঠাসা অসহায়, প্রাণ যেন যায়যায়, বেঁচে থাকা আধমরা নিরীহ, সুজন ও ভাল মানুষেরা যত ।