পর্ব -০১


জগতের যত সুবোধ সুজন,
বিদ্যান, বিত্তশালী ও ক্ষমতাধরগণ,
এ বিষয়ে একবার ভেবে দেখিও, কথাগুলো সব রাখিও স্বরণ ॥
আসলে ভাই,
মরণ বলে কিছু নাই,
তবু তাই মরণ ওরে তাই মরণ,
আসা ও যাওয়ার পেলেই ছাড় আর ঐ অদেখা সমন,
মোহ ভালবাসা পাওয়া না পাওয়া ও আশা নিরাশার এ মানব জীবন,
বিধির চক্র ঘেরে, মাটির দুনিয়া ছেড়ে, শেষে আকাশের এক অচেনা দেশে ভ্রমণ,
লোকের মোখে যা শুনি আর তারা যারে কয় মরণ, সেইতো মরন ওরে সেইতো মরণ ॥
নিরুদ্দেশে লোকান্তরে,
অচিন দেশে নব এক ভিন সফরে,
দেহ থেকে যার দান ঐ প্রাণটা যখন নিবে কেড়ে,
চক্ষু বুজে নিথর অসাড় দেহটা লয়ে সটান শুয়ে অচেতন ॥
যদিরে আসামী দেখে ফেলে,
আর সব পথঘাট ও অনুভবের কথাগুলি দেয় সবারে বলে,
ফাঁস হয়ে যাবে রাজার, হয়ত অনেক তথ্য, ভেদ ও আস্তানার খবর যা আজও গোপন ॥
যারা জানার তারাতো ফেলেছে জেনে,
অদেখা রশিটা আমার কষে ধরে রেখেছে দুহাতে টেনে,
বোধ বিবেক অনুভূতি মেধা ও মনন সদা জাগ্রত ও সচেতন, আমিতো তাদেরে লয়েছি মেনে,
মরণের আগে পার্থিব জীবনেই তারা লভেছে তৃতীয় নয়ন আর সেই কবেই সব করেছে দরশন ॥  
তার সব নেয়ামত দান,
এ দেহটার ভিতরে রাখা লুকানো অদৃশ্যমান,
একাই দুরন্ত প্রবল একটা সতেজ সবল সত্যবাদী ও চির অমর প্রাণ,
দাতা ও মহাজন, ইচ্ছে তার হবে যখন, না দিয়ে সমন তার সবকিছু আবার করিবেন হরণ ॥
আছো কি হেন কোন বিদ্যান,
পন্ডিত ঠিক আছে সম্বিত ও ধনের পাহাড় ধনবান,
বাদশাহ্ রাজা উজির সেনাপতি মহাবীর কোন্ সে জন,
লক্ষ কোটিপতি সওদাগর মহাজন বলতে পারো ওরে কে আছো এমন,
কে সে ক্ষমতাবান,
বিধাতারে আবার দিবেনা তার প্রাণ,
কবে তোমার জীবনের হবে অবসান, কার কোথায় কখন হবেরে মন ও কারেইবা কয় মরণ ॥


পর্ব -০২


বিধাতার এক অফুরান,
এ জীবন সব ধনজন পরম করুনার দান,
এইতো বিধান তার ইশারায় একদিন হয় ও হবে অবসান,
মাটির দুনিয়ায় মাথায় লয়ে কিছু কাজ ও দায়, সবে আসে আর যায় মানুষের দুদিনের এ জীবন ॥
মাটির দেহের ভিতর আত্মার বাস,
কত সতেজ চতুর সবল মাতনের হর্ষ ও উল্লাস,
খাঁচাটা ফেলে ঐ পাখীটা উড়ে গেলে সে হয়যে লাশ,
সব ঠুস সব বিনাশ, এত ধনজন ও ভোগবিনোদন যত আয়েশ ও বিলাস,
হঠাৎ সবকিছু শেষ, পলকে অদেখায় অচিন ঐ পাখীটা নিরুদ্দেশ না বলে করলে পলায়ন ॥
মরণ কারে বলে,
সময়ে অসময়ে বা বিফলে,
কষ্ট পায় হঠাৎ স্বজন কারো কভু মরণ হলে,
ভেসে চুখের জলে নিরবে সরবে সকলে করে রোদন যত আপন প্রিয়জন ॥
জলে ডুবে আগুনে পুড়ে,
দেশে কিবা বিভূঁই বিদেশে অজানায় অনেক দূরে,
বিমান কিবা আরও কত বাহনের দূর্ঘটনায়,
আছে হেন কত মরণ এ ভুবনের কেউ তা জানতে নাহি পায়,
মরদেহ কই, আহা হয়েছে কি তার নাওন কাফন, পায়না জানাজা ও দাফন ॥
অগনিত কত মরণ আসে,
সাগর জলে গহীন বনে ভুতলে ও আকাশে,
কেউ দেখার বলার,
বলো সে সাধ্য আছে কার,
কারো জানা কিবা গণা নেই তার,
শেষ কথাটি কিবা তার আরজি শোনার,
করিতে কোন ত্রাণ কিবা সামাণ্য সেবা উপকার,
আছে রাজার কাছে জাহানের সকল জীবের মংগল কল্যাণ আর,
সব ঘটনার সব খতিয়ান ও তার ছবি ও বচন সহ সব স্মৃতি করা সংরক্ষণ ॥
এমনি হায়,
কত দেনা ও ঋন দায়,
রয়ে যায় অনাদায় জানা কিবা অজানায়,
কত আর্ত ফরিয়াদ,
বুকের কষ্ট কিবা আরজি আকুতি বিষাদ,
হয়েছে ক্ষতি কতজনার,
নিরীহ অসহায় জন জুলুমের শিকার,
পায়নি হক হয়েছে ঠক কিবা পাওনা তার কত পাওনাদার,
পাবে পাওনা পাবে পুরস্কার বয়েছে ভার হয়েছে হার তবু ছিল যাদের অপার সহন ॥


পর্ব -০৩


যদি নাহি ক্ষমা করে,
হলেও লক্ষ কোটি বছর পরে,
ঐ আখেরাতে মহারাজার আদালতে রোজ হাশরে,
মহাধিপতি বিশ্ববিচারপতি সব অপরাধীদের হাতেপায়ে বেড়ি দিয়ে আনিবেন ধরে,
পাবে নায্য বিচার নায্য হক পাওনা সঠিক সব মজলুম ওয়ারিশ কিবা পাওনাদারগণ ॥
হোক বা নাহোক নালিশ,
না যদি হয়ে থাকে দুনিয়ায় মালিশ,
বাদী বিবাদী ঐ দুজনার,
মাটির জমিনে দেনা ও পাওনাদার,
সেইতো সঠিক, জীবনে যেমনই হোক মরণে কেউ নহে কার,
সবকিছু আর সবাই হবে তোমার পর, যাই বলো আর গাড়ীবাড়ী-ঘর, বিবি বাচ্চা ও বিত্তধন ॥  
যদিও হয়নি কোন মামলা দায়ের,
তাতে কি হয়েছে স্বাক্ষী প্রমাণতো ঐ দপ্তরে রয়েছে ঢের,
মহারাজার মহাআদালত হক্কের হাকিম কানায় কানা পূরো ষোলআনা এক সের,
তার সব জানা, ছোটবড় সব অপরাধী আসামীর চারিধারে রয়েছে ঘিরে মহারাজার গুপ্তসেনার নজরদারীর ঘের,
দেওয়া আছে সব ঘাটে সবার কাছে, সাধ্য কি ফাঁক ফোকড়ে কৌশলে বাঁচে, এড়িয়ে তার সমন ॥
বাদশার বাদশাহ্ ঐ মহাপাকজাত,
পূত ও নিখুঁত সত্য সঠিক নেই যার কোন পক্ষপাত,
মহা রাজদরবার,
বাদী হয়ে তার করিবেন বিচার,
বিশ্বাসীগণ তা জানে ও মানে করে স্বীকার,
অপরাধী আর অবিশ্বাসীগণ মরনণর পরে রোজ হাশরে সে রায় ও পাওনা তার সব বকেয়া সাজা করিবে গ্রহন ॥
কর্ম্মফলের পাওনা যার যা শাস্তি পুরস্কার,
হয়নি পাওয়া যার এমন অনেক সঠিক আকুতি চাওয়ার,
সবরে পাশ করা আর, দুনিয়ার প্রতিযোগীতার দৌড়ে যাদের হয়েছিল হার,
রয়েছে অন্তরে রাজ দপ্তরে জমা নাবলা আক্ষেপ কষ্ট অভিযোগ ক্ষোভ ও নালিশের সমাহার,
ধন্য হয়ে লভে ক্ষমা হবে সমাধান হবে সব অবসান হবে মনিবের খাস গোলামের সব আরজি আকুতি পূরণ ॥  


পর্ব -০৪


পূণ্য কিবা গুনাহ্ এক পাহাড়,
শাস্তি পূরস্কার যাইবা যেটুকু পাওনা হোক যার,
গোলাম তার পেতে পারে বিশেষ ক্ষমার ছাড় হোক সে যতই গুনাহগার,
হলেও নেককার,
না’ও সে পেতে পারে পার,
রয়েছে খোদার ওরে সে ক্ষমতা ও অধিকার,
হয়ে ক্ষিপ্ত উদার ইচ্ছে হয় যার, পুণ্য গুনাহ্ বাড়িয়ে কিবা কমিয়ে দেবার, ঐ সে রাজন এমনই একজন ॥
এ সত্য যেমনই নির্মম ও ভয়ংকর,
জয় পরাজয় বিশ্বাস আশা ভরসা ও নির্ভরতার উপর,
তার অসীম অপার করুনার দরিয়ায় যদি একবার জাগে ঢেউ উঠে ঝড়,
হবে যখন এ ভূবন ও সবকিছু তার মিছে ও শুভংকর আর সবাই একেবারে অচেনা পর,
পুলিশ উকিল আদালত ও হাকিম আর যাবেনা কেনা,
টাকার বলে কিবা নানা বুদ্ধি ও ছলে কৌশলে বিত্ত ও প্রভাবশালীরা ছাড়া ও পাবেনা,
চলে যারা গায়ের জোড়ে,
বিদ্যা অর্থ ও ক্ষমতার লম্বা হাতের তোড়ে,
আবু হকে বলে এমনি দুনিয়া চলে, ধর্ম্মের কথা কভূ শোনেনা চোরে,
পাড়ার সরদার ওয়ার্ড কমিশনার থেকে প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রী মিনিষ্টার তারাও বাধা খোদার ডোরে,
যদিও মনেহয় ছাড়া, ভূলে গেছে তারা দিতেই হবে কৈফিয়ত ধন উপার্জন ও ব্যয়ের হিসাব যেতে হবেই গোরে,
আকাশের মালিক ঐ রাজার ইশারায়,
পলকে সবকিছু হয়ে যায় সব লোকের অজানায়,
যেথা নাই কোন কারচুপি অন্যায়, ন্যায়ের ঠাই ও লালন তারই দায়, দিনে কি রাতে দুনিয়ায় ও আখেরাতে সব সাধন ॥
মরনের এ সওগাত ও পয়গাম,
মহারাজার লাগি এক অধম প্রজার একবিন্দু ঘাম,
প্রভূর কাছেও আছে তার অপার ঐ খাস গোলামের কদর ও দাম,
আমার কোন দোষ নাই, সেতো তোমাদেরই কামাই জান্নাত ও জাহান্নাম,
যারা জানে ও মানে সত্যমিথ্যা ন্যায়অন্যায় পাপপূণ্য সুদঘুষ সরলগরল হলাল ও হারাম,
কভূ বৃথা যাবেনা সামান্য দান একটুখানি গুনগান একটি ভালো কথা আলোয় ভরা একটু ভালো কাম,
প্রজারে ডেকে রাজায় বলে ওরে আয়, আমার কথা বিশ্বাস হলে চাহিলে মন বাড়িয়ে দুহাত এ পয়গাম ও সওগাত করো গ্রহন ॥