পর্ব - ০১


কত বড় তোমার এই দুনিয়া ॥
আমি তার যেদিকে তাকাই,
শোভা আর সৌরভ চৌদিকে দেখিতে পাই,
রঙ ও রুপের অরুপ বাহার তুমি ছাড়া দেখি আর কোথা কিছু নাই,
সারা দেহে অনুভব, মম চিত্ত ও সব চেতনায় রলেও তুমি নিরব, চোখ ঘুরালেই হারিয়ে যাই,
তুমিই আমার সব, সান্তনা শান্তি ও গৌারব, কিবা তোমার গোলাম হবার হর্ষ বড়াই,
কেন চক্ষু মেলে দেখেনা লোকে,
দেখে দেখেওতো দেখেছি ওরে কতজনে শেখে,
বিশ্বজোড়া তব খোলা পাঠশালে, তৃণদল দূর্বাঘাসে বৃক্ষপত্র ডালে, কত মানুষ মানুষ হয় তা দেখিয়া শুনিয়া ॥
আমার বাড়ীর পিছে নূয়ে পড়া ঐ আকাশটা মনেহয় যেন ছুয়েছে মাটি,
পুকুর ঘাটে নদীর পারে দাড়িয়ে দেখেছি আমি পায়ে পায়ে গিয়েছি কত দূর সামনে এগিয়ে হাটি,
ফসলের ক্ষেত দিগন্তজোড়া খোলা মাঠ,
সীমানাটা আজও তার পাইনি খুঁজে, বুঝেছি তা অবশেষে কত বিশাল ও বিরাট,
মাটিতে ও আকাশে,
আকাশের রঙে নীল জলেতে ভেসে,
বুঝিলাম কিছুই হয়নি দেখা ও শেখা, সাঁঝের বেলায় এসে,
না মেটা দেখিবার সাধ,
দিতে চাহে মোরে না পাওয়ার একটু বিষাদ,
কি দেখিলাম ওরে, দেশে বিদেশে মেঘের সীমানা ছেড়ে উড়ে উড়ে দেখেছি কত আমি ঘুরিয়া ॥
কত রঙ কত প্রাণ,
কত শোভা আর সৌরভ অফুরান,
কত রস আর মজাদার লক্ষ খাবার নেয়ামত ও দান,
অ আকাশ হলেও মনে তুই এত নিচু ছুটেও পিছু আজও কেউ পেলোনা তোর সন্ধান,
এ ভুবন তব সাজানো বাগান, রেখেছ এত ধন আকাশে জলে ও ভুতলে কার লাগি তুমি বুনিয়া ॥
আমি গেলে চলে গেলে মরে,
এ দুনিয়া ছেড়ে কি হবে জানিনা হেথা তারপরে,
যদি সব তার ভাগিদার যেমন ইচ্ছে যার অপচয় আর বিপথে ব্যয় করে,
হোক যাই তার কামাই পাপপুণ্য ওরে,
আগের মালিক তার মহাকাল আজীবন শুয়ে থেকে কবরে,
কি হবে পরিনাম প্রতিফল পরিনতি অতিব ভয়ংকর তার লাভক্ষতিটা হিসাব করে, কেন আগে তাই দেখি নাই গুনিয়া ॥
হিসাব করে এখন দেখি,
ষোলআনা যেন তার সকলই ফাঁকি,
দেখাশেখা বুঝাশোনা জানাচেনা সবই রলো বাকী,
জীবনের আর রয়েছে কয়দিন,
বালামের পাতা খুলে দেখি ভরা তাতে শুধু নানা ঋন,
তবে কি হবে, আর ঐ জোতজমিতে,
যেথা শুধু ভুল আর লোকসানের ঘের, মিথ্যা মন্দরাই দেখি জেতে,
আমার এমনই রাশি, হারিয়ে শেষে কষ্টে হাসি, ফসলের চেয়ে আগাছাই বেশী আমার ঐ ক্ষেতে,
ভাবি আমি এখন তবে, ভেবে আর তাতে কি হবে, গতর খাটিয়ে আর টাকা লাগিয়ে বেহাল দশার মাঝে হাল জুড়িয়া ॥


পর্ব - ০২


হয়নি দেখাশেখা চেনাজানা,
এ সফর বানিজ্য বেসাতি লাভক্ষতি নাকি দায়দেনা,
মহাজনের দাদনের ঘাটতি আর লোকসানের কেমন এই বেঁচাকেনা,
কি পেলো কিবা হারালো ভিনদেশে, বানিজ্য সফরে এসে এক মুসাফির কানা,
যাবে ফিরে শেষে, কি লয়ে সে আপন দেশে, শূন্য তার ঝোলাখানা কেমনে কি দিয়া পূরিয়া ॥
আমার এ মনপাখীটার ছিল কত সাধ বাসনা,
তোমার মর্জী হলোনা বলে, তা আর কভু ওরে পূরণ হলোনা,
এ জীবন মিথ্যে স্বপ্ন আশা ও ভালবাসার মায়াযাদুর সর্বনাশা এক মোহ ছলনা,
করিব অসহায় দীনজনে দান,
ভরিবে তাতে মম তৃষিত শূন্য পরাণ,  
পরোপকার সেবা যতন আর,
এ জগতে কেউ নাই ও কিছু নাই যার,
মনেতে লুকানো সেই অক্ষমতা ও দীনতার অপার কষ্টবেদনা,
ঝর্ণা ও সাগরনদীর ঢেউয়ের কলতান,
পাখীদের ঐ সুরে আমিও চিরকাল গাহিব তব গান,
তব অপার নেয়ামত দান হেরিব আমি আকাশে মাটিতে অথই জলের গহীন তলে ঘুরিয়া ঘুরিয়া ॥
বলো কি নেই তোমার কিবা আর তুমি কি পারনা,
কেউ নাই তব সম কিবা ভাগিদার, কারো কাছে তুমিতো কভু হারোনা,
তবে কি মিথ্যে হবে মোর সারা জীবনের সব বিশ্বাস ও যতকিছু জানা কিবা সব ধারনা,
এমনতো নয় ওরে তা কেমনে হয়, তোমার রয়েছে অংশীদার হয়ত হয়না যার সনে বনিবনা আর তাই বুঝি পেরে উঠনা,  
মোর ভাবনা পেরেশানি ও তাড়না,
আমি আর পারিনা, কত কষ্ট দেবে এবার আমায় ছাড়না,
মম ঔরস আর গর্ভের যারা, এ জগত ঘূর্নিপাকে যেন দিশাহারা, দয়া করে দাওনা তাদেরে আলো ও ভালোয় ভরিয়া ॥
আবু হকে বলে,
কি লাভ তবে মানুষ না হলে,  
দুদিনের এ জীবন চোখের পলকে যাবে চলে,
দেখেছি কতজন রয়েছে অধম এমন, যেন এখনও বোঁকার দলে,
যদিরে এমনই হয় হিসাবে পানার চেয়ে দেনা বেশী তবেতো ভাই সকলই বিফলে,  
ঐ ক্ষেতি কে করে যার, না হতে ফল ফুল যায় ঝড়িয়া,
খোলেনি আজও নয়ন, হয়নি সুবোধ সুজন সারাটা জীবন ওরে লেখিয়া পড়িয়া,
বড় বড় বই আর যেথা ভালো নেই,
পেরেশান রই তামাসা আর বিভোর মোহে কেনযে ডুবে সেই,
এসে দুদিনের তরে,
ভিনদেশে আজব এক সফরে,
আহারে সাতরঙ বাহারে সাজানো মায়ার মোহেতে পড়ে,
এত শ্রম আর জীবনের সবটুকু দম উজার করে, এক পাহাড় ধন আর শ্বেত পাথরের আলো ঝলমলে প্রাসাদ গড়িয়া ॥