পর্ব - ০১


হে ঈশ্বর, হে আল্লাহ - তুমিই ইলাহ তুমিযে আমার রব ॥
সবার পা হতে মাথা,
চরণ তলের মাটি মাথার উপরে ছাতা,
তব ভাইবোন স্বামীস্ত্রী পুত্রকন্যা ও মাতাপিতা,
তোমার এ দেহখানা আর,
বাড়ীগাড়ী ধনজন সোনাদানা ক্ষমতার,
মোহভরা জীবনের অলংকার ঐ আসনখানা সোনার, যা কিছু বলো তোমার,
যার কেউ নাই কিবা কিছু নাই,
দুঃক্ষ বেদনা আপদ ও নিদানের আশ্রয় ও ঠাই,
সেযে এ সমাজের বিলাস বিনোদন সুখময় ভোগ এক মনের রোগ বাড়তি বিড়ম্বনা যোগ অহমিকা দম্ভ ও গরব ॥
আবু হকে কহে,
আসলে তার কিছুইতো তোমার নহে,
এ বিধান ওরে বিধাতার,
তুমি তার একজন সাধারণ ইজারাদার,
জীবনে তোমার ওরে শুধুই তার ভোগদখলের অধিকার,
বাড়ীগাড়ী ধনজন সোনাদানা টাকাকড়ি বিত্তবেসাত যার এখতিয়ার,
মরণে কিছু নেওয়া যাবেনা আর তুমি শুধু মালিক ও ভাগিদার কৃত তোমার ঐ পুণ্য গুনাহটার,
এ বিশ্বজগত আর,
তারমাঝে যা কিছু বলো তোমার,
সব মানুষের জীবনের সবকিছুরই একক মালিকানা আল্লার, তারই এ জগতের ষোলআনা সব ॥
এ জীবন ও মরণ,
যে চুক্তির কথা নাই স্বরন,
লালন পালন দিলে কত ধন জন,
বোধ বিবেক চেতনা অনূভব ও অনূধাবন,
অন্তরালে দেখা জানা ও শেখার তীক্ষ্ন তৃতীয় নয়ন,
যা পেলে জাগ্রত হয় দরশন ও সব সাধনার সফল সাধন,
পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও রিপুর সুদূর প্রসারিত নাসিকা ও যাদুর শ্রবণ,
বাহুতে বল বাসনা প্রবল পাদুটি সচল ও তার সকল কর্ম্ম ও করণ,
তব গুনাবলী সকল জীবের চেয়ে সীমায় বাধা এক বিশেষ আলাদা ধরণ,
বুড়োকাল দুঃক্ষ বেদনা বেহাল যখন আর নাই কোন কাজ নাই কোন উপার্জন,
করুণা অফুরান,
আপদে নিদানে যে ত্রাণ,
মুস্কিলে আহসান ও অর্জিত সব মানসম্মান,
সুখশান্তি বল ও কান্তি সকলই তব লাগি দুদিনের নেয়ামত দান,
কখনও দয়ার সাগর পরম বন্ধু আপন কখনও অচেনা পর ভেংগে দাও ঘর হও নির্মম পাষাণ,
জানি তাতে প্রভু তব কোন দোষ কিবা লাভ নাই,
সেতো সকলই গোলামের পুণ্য-গুনাহের পাওনা কর্ম্মেই যা হয়েছে কামাই,
দহন পীড়ন অনটন ও বেদন নিরব রোদন অঢেল সুখের পালা বিলাস বিনোদন আর যত বিত্ত বৈভব ॥


পর্ব - ০২


এ জীবন অল্প পাওয়ায় শুধু অল্প কিছুদিন,
তবু অদেখায় রয়েছে সবার অনেক দায় অনেক বোঝা ও মাথাভারী ঋন,
এ সংসার ও এই বাড়ী ঘর,
আকাশ মর্ত বায়ু জল কত স্বচ্ছ পরিমল সুন্দর,
মনেহয় সবই আমার আসলে, তা নহে আবু হকে বলে সবকিছু আর সবাই তোমার পর,
দুদিনের এই মোহমায়া কার উপহার,
কোথাও জল আর জল রেখেছে করে তল, নেই তার যেন কোন পার,
কোথাও সহস্র বছর ধরে সারি সারি দিগন্তজোড়া সাজানো বরফের পাহাড়,
কোথাও একফোটা জল নেই, আছে তার লাগি জনমনে অষ্ফুট বুকফাটা হাহাকার,
শত শত মেঘের ভেলারা করছে অবিরত ভাংগাগড়ার খেলা বলো কে করেছে তা তৈয়ার,
আগুনের ফুলকি ছড়াই আকাশ ফাটা গর্জন,
গভীর সাগর তলে পানিতেও আগুন জ্বলে দাউদাউ হনহন,
কোথাও বালুচরে বায়ু বহে পিঠে করে দাবানল কোথাও শীতল বরিষন,
সুনামীর ঢেউ জল ভয়ংকর বড়বড় ইমারত শহর ও বন্দর করে তল নিমেষে যখন,
সবকিছু ইশারায় যার হয় সাধন, তখনও দেখি সে আপনি রয় কেমন, শান্ত মৌন গম্ভীর ও নিবর ॥
কত তার নেয়ামত দান,
জীবের দেহে দিয়ে প্রাণ,
যেমন ইচ্ছে তারে নাঁচান,
কত শোভা সৌরভ রঙ অফুরান,
অথই জলে কারেও বারবার ডুবান ভাসান,
দিয়ে কঠিন কাজ ও ঝড় তুফান যাচাই করিতে চান,
চুবিয়ে মারেন সবই পারেন, ফের টেনে তুলে তারে বাঁচান,
আপন হাতে গড়েন যখন ইচ্ছে করেন ভেংগেচূরে তা আবার খানখান,
বিশ্বজোড়া তার এ বিশাল ব্যাপক সৃজন নিধন করিতে রাজ্যটারে শাসন নিয়ন্ত্রন নহে সে এতটুকু পেরেশান,
সাত সাগর, সাত জমিন ও সাত আসমান,
সব জয় পরাজয় লাভ ক্ষতি ও মান সম্মান,
দুঃক্ষ কষ্ট পেরেশানি তাড়না উপষম ও আহসান,
সাগর নদীর জলে নেইতো নূপুর তার পায়ে কিবা গলে,
তবু ফেপে ফুলে দুলেদুলে কেমনে সে অবিরত এত বড়বড় ঢেউ তুলে,
কূল কূল এ কলতান সুরে সুরে কে যেন শোনায় গান কোথায় সে লুকিয়ে আড়ালে বসে করে এমন মধুর কলরব ॥


পর্ব - ০৩


মন যা বলে মনেমনে,
তার গহীনে একাকি অতি গোপনে,
নাবলা ঐ কথাগুলি সব কেমনে সে শোনে জানে,
জীবনে মরণে বেধে রাখে সবারে তার অপার সে করুণার দানে,
কেউ পায় কেউ পায়না কেউবা আবার হারায় এর মাঝে সকলে ভেসেভেসে যায় আর আসে সে বানে,
এক সাজানো রঙীন বাগান,
সব ফেলে মালী তার একদা নিরবে চলে যান,
যখন লোভ মোহ স্বপ্ন বাসনা আশা ও প্রয়োজন তার সকলই হারান,
সব শেষ নিরুদ্দেশ ন্বিঃস্ব কাঙালের বেশ অদেখা তার সূতা ধরে যদি সে ইচ্ছে করে মারে টান,
তারে ডাকিলে শোনে তবে দেয়না জবাব কিবা সাড়া কয়না কখনও কথা,
এ জগত জুড়ে ছড়ানো তার দিগন্তহীন মাঠ যত প্রয়োজন সহস্র জীবন পাঠ শত বাণী ও বারতা,
চুপ করে সব দেখে শোনে আর সয়,
তাই বলে সে ওরে অক্ষম নির্মম নির্বোধ অবিবেচক নয়,
কখনও বন্ধু সুহৃদ দরদী দয়াল যদিও কখনওবা সে বৈরী অচেনা দুষমন হয়,
যদিও কভু সে কথা নাহি কয়,
সবকিছু দেয় আপদে নিদানে সংগী হয় পাশে রয়,
এ জগতের মালিক বিশ্ব প্রভূ সে অসীম দয়াময় তার পরিচয়,
পবিত্রতা বিসর্জন নিরবতা আকুল ও কাতর মন চাই তারে করিতে জয়,
একাই মনিব সে নহে শুধু আরশে বসে তার বিচরণ ও অবস্থান সারাটা দুনিয়াময়,
রয়েছে আশা ও ভয় এমন বিশ্বাসী যে হৃদয়,
সবকিছু জেনে বশ্যতা মেনে যেজন হয়েছে কিবা তার প্রিয়ভাজন হয়,
যাকে তার পছন্দ হয় সেযে নিরবে গোপনে শুধু তার সনে কথা কয়, যদিও মনেহয় সদা রয় সে নিঝুম ও নিরব ॥
কোটি জীবের কোটি ভাষায়,
কেউ যেন কভু তা বুঝিতে না পায়,
না হতে পরিচয় জয় পরাজয় ফেল কিবা পাশ,
আপন হাতে বানানো খাঁচায় নিরাকারে চুপচাপ তার নিবাস,
এক ঘরে হলে বসবাস কেমন সে রাজা আর কেমনইবা হয় তার দাস,
কে গোলাম কেবা রাজা,
কে পাবে পুরস্কার আর কারইবা হবে সাজা,
জানা ও পাওয়া হবে তোমারও সব, যদি করো গবেষণ গহীনে নিরব ছেড়ে ভোগ বিনোদন বিত্তধন বিলাস ও বৈভব ॥


পর্ব - ০৪


নিমেষে সব পারে,
কারো সে ধার না ধারে,
যায়না কখনও সে কারো দ্বারে,
বানায় বাদশা ফকির যখন ইচ্ছে হয় যারে,
সম কেহ নাই কোন দন্দ লড়াই কারো কাছে সে নাহি হারে,
দেয় ঢেলে বেশী পেলে কারোকারো পাখনা মেলে শেষে তা আবার কাড়ে,
কাউকে ঝাপটে ধরে আবার যারে ইচ্ছে তার সে ই জানে ভালো কেনইবা তাকে ছাড়ে,
অনন্য সে বিশ্বাস ভয় ও মান্যতা,
আকূতি ও ভরসা হয় যদি সমুদয় খাটি নির্ভরতা,
সেযে এক কৃতঞ্জ সন্তুষ্ট আত্বার,
খুলেছে যার মনের সবকটি জানালা দুয়ার,
সেইতো জীবনের সফলতা আর নন্দিত ঐ উপহার,
যেথা হয় আলো ও ভালোর চাষ বারোমাস এমনই এক খামার,
নিত্য গজায় অফুরান চারাগাছ আর সাতরঙ ফুল ও বারোমজার ফল ধরে তার,
আর কিছু নয় আলোকিত সে বলয়, পরম প্রাপ্তি ও জাগরণ এমন দিগন্তে বিচরণ জাগ্রত সচেতন অনূভব ॥  
রব মানে প্রভূ,
ডাকে সাড়া দেয়না যদিও কভূ,
পাওনা তার পূঁজার মূল্যবাণ অর্ঘ্যটা চাই তবু,
নাহোক দেখা কিবা কথোপকথন তব জীবনের সব প্রয়োজন মিটিয়ে দিচ্ছেতো ঐ প্রভূ,
কেউ তার অঞ্জাতে কিবা অগোচরে নয়,
নিরাকারে সে ভিতরে বাহিরে আকাশে মাটিতে জলে বিরাজমান বিশ্বময়,
হরেক সহস্র ফল,
শীতল ও মিঠা পানীয় জল,
নানা রঙ নানা স্বাদের রসেভরা টলমল,
কত নেয়ামত দান,
মাটিতে আকাশে জলে বিরাজমান,
কোন চাল চূলো নেই এমন যত লক্ষকোটি প্রাণ,
তবু বিধাতায় আহার যোগায় বাঁচাইছে অগনিত তার জ্বিন ইনসান,
কোথা হতে আসে হায় না চেয়ে সব পায় অনায়াসে সবে পেটভরে খায় হয়ে তার পোষ্য কিবা মেহমান,
তার সৃষ্টির শতকোটি প্রাণ,
নাম না জানা সবার ভিন্ন ভিন্ন খাবার উপাদান,
একের খাদ্য অপরের অচেনা বিশ্বজুড়ে ছড়ানো খাদ্য কণা শষ্য দানা গম ধান ভূট্টা তিল তিষি সরিষা ও যব ॥


পর্ব - ০৫


কে তুমি আর,
বলো রব কে তোমার,
এ জীবন ধনজন ও তুমি কার,
কোথা হতে ওরে কি কাজ লয়ে কেনযে আসা এ দুনিয়ায়,
আছে কি জানা কি হবে মরণের পর তারপর কবে তুমি যাবে কোথায়,
কি তোমার দেনাপানা আর রয়েছে আজও অনাদায় মহাজনের কোন সে দাদনের দায়,
বলো কি করবে সেদিন তখন
পড়ে বুঝে দেখে শোনে শিখে ও জেনে লওনা মন,
একাকি শূণ্য হাতে গহীন এক আঁধার রাতে যখন এক ভিনদেশে করবে গমন,
শেষে যদি তব ওরে এমন মনে হয়,
তুমি বড় অসহায় আর হয়েছে আসলে তোমারই পরাজয়,
কত স্বর্গ রয়েছে রাজার এ বিশ্ব ভবে,
নাহলে কেনরে তব নব সফরের সে দেশটা নির্মম অগ্নিময় কারাগার হবে,
অসীম কষ্ট ও যাতনাময় অচেনা ও আজব, রাখিও জানায় রাজার ইচ্ছায় মন্দ ভালো সকলই সম্ভব ॥
আর আবু হকে বলে,
দুনিয়ার জীবন তোমার পূণ্যময় হলে,
যাদের চিন্তা বচন ও কর্ম্ম হবে ঐ ভালো মানুষের দলে,
যারা সদা সত্য বলে জুলুম অবিচারে যায়না টলে সুখেদুঃখে আপদে নিদানে সুপথে চলে,
ঠিক নহে তা, যদিও প্রভূ তার গোলামের সনে কয়না কথা ও দেয়না দেখা,
তবুও গোলাম তার জীবনে মরণে বাধা এক করুণার বন্ধনে কখনও হয়না অসহায় রয়না একা,
এইতো অবাক বিস্ময়,
চীরদিন আজীবন সারা বিশ্ব জগতময়,
যেমনি লবন ঐ মহাসাগর জলে একাকার হয়ে মিশে রয়,
সারাদেহ নয়ন ও মন পা হতে মাথায় শিরা উপশিরায় প্রবাহিত হয়,
প্রতি জনে একই সনে প্রতি ক্ষণে বিধাতা তার সকল বান্দার হৃৎপিন্ডে লেগে রয়,
নিপুণ কৌশল অপরাজিত বল বিধাতার নিরাকার সৃষ্টির মাঝে তার অদৃশ্য সত্তার নেই মরণ সে চীর অক্ষয়,
মানুষের রুহ কিবা প্রাণ,
অমর সচল সব বুদ্ধি ও শক্তি-বল যার অবদান,
আসলে তাহা কি দেখতে কেমন তার আকার তৈরী দিয়ে কোন সে উপাদান,
বিঞ্জানী ও বিঞ্জান তা দেহটার ভিতর কোথায় অবস্থান আজও পায়নি তার কোন সন্ধান,
কেজানে ঐ যন্ত্রটার দেহের ভিতরে আসা যাওয়ার পথঘাট ও যান,
বানালো কোন কারিগর কোথা তার কারখানা ও ঐ দপ্তর আর কত বড় সে কতযে মহান,
কেমনে অদৃশ্যমান হাওয়াই ঐ যন্ত্রখানাতে মহাকাল রক্ষিত রয় সারাজীবনের ছবি কথোপকথন ও স্মৃতিগুলি সব ॥


পর্ব - ০৬


কত নগন্য অধম গোলাম,
শত মিথ্যা মন্দ কলংক বদনাম,
কেমনে চাহে তারা আবার শ্রেষ্ঠ হবার দাম,
সুদ মদ ঘুষ সব তারা খায়,
পরের অনিষ্ঠ চায়, কি মজা পায়, তা করে বেড়ায়,
তাস জুয়া খেলে সময় পেলেই পতিতার কাছে চলে যায়,
মাটির মানুষ মাটিতে বসবাস পাখনা মেলে সে আকাশে উড়তে চায়,
ছদ্দবেশী মুখোশধারী,
তারাই চিহ্নিত জঘন্য কালোবাজারী,
অকপটে বিদেশে যায় সেখানেও তারা করেছে বাড়ী গাড়ী,
শত কিবা হাজার কোটি টাকার মালিক তারা কেমনে হলো রাতারাতি এত তাড়াতাড়ি,
প্রকাশ্য চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজী,  
সকল জুলুম অন্যায় ও অবিচারের তারাই কাজী,
কেউই তার ধারেনা ধার একাজে কে কি বলে কিবা কে নয় রাজী,
কেমন সরস কপাল কালো টাকায় গড়েছে পাহাড় এ সমাজের আপনি সরদার হয়েছে গাজী,
তবু তাদের কেন এত বাহাদুরী,
আসলে নষ্ট পাজী করে সন্ত্রাসী ও কত ডাকাতি চুরি,
উঁচূ গলে বুকটান করে বলে দেখাও তাহলে কে আছে তাদের জুড়ি,
শত চামচা চাটুকার ছুটে আসে তার দিলে ইশারা কিবা হাতের মোটে একখানা তুড়ি,
দেশে রাজা উজির ভাই যেন দেখার কেউ নাই কেমনে হলো রাজকুমার কোথা হতে এসে উড়ি,
কেমনে কোনকামে নামে বেনামে তারা এত সম্পদ ধন করিল আহরণ বাড়ীগাড়ী সোনাদানা ভুরিভুরি,
তাদেরই অনেক লম্বা হাত,
তারাই বড় বড় নেতা সম্ভ্রান্ত ও উঁচূ জাত,
ছোট পরিবারের অশিক্ষিত বখাটে সন্তান,
লোকে বলে চাঁদাবাজ হাইজেকার পেশাদার খুনী ভয়ংকর মস্তান,
সব কলংক ও অতীত রেখে রঙীন কাপড়ে ঢেকে আজ চাই তার সবার সেরা হবার সম্মান,
কতনা জনসেবা ও সমাজ কল্যাণ,
দেখাতে মহত্ব ও উদারতা করে লোক দেখানো কত দান,  
হয়তো একদিন ভূলে যাবে সবে যা লোকের কাছে ও রাজ দরবারে লেখা আছে তার সব কাজের খতিয়ান,
আর অল্প সময় বাকী,
অনেক মাটি দেবে এসে তার এ দেহটা ঢাকি,
তাদের কেনরে চক্ষু নাই,
এত মন্দ তবু কেমনে তারা করে বাহাদুরী ও বড়াই,
তারা কি আসলে ভাবে অবুঝ ও অন্ধ এ সমাজের সবাই,  
ঢেকে রাখা যায়না কলংক ও দূর্নাম ঐ দূর্গন্ধ যায় বাতাসে ছড়াই,
বুঝি তারা বিবেক ছাড়া হয়েছে মাতাল পাগল ও দিশেহারা দেখেনা তাই,
রাজ সিপাহীরা ওরে ঘিরে ধরে তাদেরে রেখেছে বন্দি করে লয়ে বিধাতার আসন্ন বেরহমত আর আসমানী গজব ॥


পর্ব - ০৭


ভেবোনা নিজেকে তুমি সব জানা পন্ডিত,
দেখিবে হলে তোমার চৈতন্য উদয় ফিরে পেলে কভু সম্বিত,
আপন কর্ম্মদোষে পড়ে রাজরোশে হিত না হয়ে তোমার আসলে হয়েছে কত বিপরীত,
আছে কি তা স্বরণ একদিন হবে মরণ সবল সচেতন এ দেহটা পড়ে রবে মাটিতে হয়ে সটান অসাড় ও চিৎ,
বইটা কই খুঁজে হাতে লয়ে পড়,
অজানাকে জানতে ও শিখতে এখনই ওরে পড়তে শুরু কর,
তাহলেই তুমি আসল মানুষ হবে, সুজন বলবে সবে না ও যদি হও বিত্তধনে অনেক বড়,
ছাড়া আর কিছুনা সে এক মোহ তাড়না,
হবে জানা দুনিয়ার এ জীবনটা কেমন এক মুসাফিরখানা,
তার শুরু ও শেষটার, আসা ও যাওয়ার মধ্যখানে টাঙানো একটা রঙীন সামিয়ানা,
আর সারা জাহানের রাজত্ব যার এ বিশ্বটা ঐ গুরু রাজার সবার তরে সদা খোলা আদর্শ এক উম্মুক্ত মকতব ॥
একটা উপায় আছে রাজার শাস্তি হতে বাঁচাতে গাত্র,
যদিরে বলো সেকথা তোমার জানা ছিলনা তা্ই ছিলে কানা জেনেছ তা এইমাত্র,
যাদের অঢেল আছে কিবা কেউ নাই কিছু নাই কোনমতে বেঁচে আছে প্রাণ সবাইযে তার ছাত্র,
ধনবান ক্ষমতাবান পন্ডিত ও বিদ্যান যার বুদ্ধি আছে হায় কে হতে চায় মহারাজার রোশ ও ক্ষোভের পাত্র,
বড়কে জানো ও মানো বড়,
সঠিক সময়ে সবে ঠিক কাজটি কর,
যদি বিশ্বাস হয় তাহলে আমার কথাগুলি এখনই ধর,
নাহলে যত মহাপন্ডিত বিদ্যান বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান সবে কুমরণি মর,
জগতের যত জ্বিন-ইনসান সবে শিক্ষানবিস শিষ্য তার,
প্রতিনিধি তাই থাকা-খাওয়া সবার সবকিছু ফ্রি শুধু একটু কাজের দায়ভার,
বিধির মহিমা প্রচার আর আলো ও ভালোটায় সাজাতে হবে মাটিতে তার এ বিশ্বজগত সংসার,
এক প্রভু ও গোলাম,
দুজনেই দুজনার হয়ে অতি প্রিয় সাম,
নাম পরিচয় বিদ্যা কিবা বিত্ত নহে যার বেশী ভালো কাম,
মনিবের কাছে শুধু তারই আছে বন্ধুর তুল্য মান আদর কদর সমাদর ও দাম,
আবু হকে কহে এ জীবনটা নহে রঙ মাখানো এক রংগশালার ভোগ বিনোদন কিবা উল্লাস নাঁচন উৎসব ॥


পর্ব - ০৮


আঁধার টুটেছে,
কাননে শত ফুল ঐ ফুটেছে,
অলিরা সব গুনগুন গুঞ্জনে খুশিতে জুটেছে,
রবির উদয় ঝেটে আঁধারের ভয় এনেছে এক সোনালী প্রভাত,
ঐ শোভা তাজা মধু আর মৌ মৌ তার সৌরভে চারপাশ করেছে বিভোর মাত,
সব দেখে মুখরিত এই মোর দুনয়ন,
বহিছে শীতল কোমল স্বচ্ছ পরিমল হাল্কা সমীরণ,
বাসনার আলোড়ন কেবলই কাতর করে মম তবু যেন তৃষিত হৃদয় মন,
দেখিতে বড় সাধ হয়, ঘুরেঘুরে গোটা এ বিশ্বময়, অদেখা অজানা সবটুকু ঐ তার সাজানো ভুবন,
যদি পেতাম পার,
না করে আপোষ না মেনে হার,
যেতে পারতাম ধরে ঐ আকাশটার খোলা পথ খোলা দুয়ার ছেড়ে দিয়ে সব মিথ্যা ও মন্দের উৎপাত জ্বালাতন ও উপদ্রব ॥
যদি আমি পেতাম তার,
নিমন্ত্রণ কিবা অনুমতি পত্র ছাড়,
মম মোহিত হিয়া রহিয়া রহিয়া শুধু বারবার,
চাহে দেখিতে স্রষ্টার সহস্র রুপ আর বেশুমার তার ঐ সৃজন বাহার,
সেই আশে সেই লোভে মম চিত্ত,
এক অধম ভৃত্য করে হরষে নৃত্য চাহে পঞ্চ সুরে গাহে তার অপার করুণা আর মহিমা ও গৌরব ॥
মোর মন কেন কেবলই চায়,
ঘন সবুজের বিশাল একটা কানন সাজায়,
আর ফাঁকে ফাঁকে সব বাঁকে তার যেন ঝিল বয়ে যায়,
করবো নিমন্ত্রণ জগতের সব পাখীদের যেন এসে আর না ফিরে যায়,
জোছনা নেই যে সন্ধায়, জোনাকিরা এসে যেন হেথায় মিটমিট প্রদীপ জ্বালায়,
যে বাতি জ্বলে আকাশের ঐ কোটি তারকায়,
আলো নেই তেমন ভালো, তবু গহীন রাতের অন্ধকারে হায়,
পথহারা সব যাযাবর পথিক ও দিকহারা নাবিকদেরে সঠিক পথে টেনে নিয়ে যায়,
প্রজাপতি আর ফড়িং,
হরষে দিনভর নাঁচন করে তিড়িং বিড়িং,
কখনও ক্লান্ত হলে,
কিবা পিপাসা পেলে ও মন চাহিলে,
ঘাসফুলে বসে একটু জিরায়,
তাদের ঐ সাত রঙ ছবি আঁকা পাখনায়,
কে দেখেছ আর বলো কে দেখনি ঝলমল অবনি, সহস্র রেশমী রঙমাখা ওরনায় ঢেকে রাখা রোশনী মাখা ঐ অবয়ব ॥  


পর্ব - ০৯


আজও দেখিসনি যারা ছুটে আয়,
সবকিছু কেন সাজানো যেন একই ডালায়,
বিধাতার রুপ যেন ছোট্ট এ দুনিয়ায় উপচে পড়ে যায়,
ঝিঝির দল, যেন হয়েছে পাগল মুগ্ধ হয়ে সে শোভায়,
না হয় ক্লান্ত না করে ক্ষান্ত, কে তারে হায় বুঝায় ও মানায় কি থামায়,
দিনভর রাতভর কখনও চড়া আবার কখনওবা মিঠে কড়া সুরে ঐ বাঁশরী বাজায়,  
মম বিজন নিঝুম আংগীনায় ঐ অফুরান সাতরঙ ফুল আর মজাদার সব রসময় রাঙা ফলের মেলায়,
মনোহর স্বপ্নীল ঐ আবহে,
সুরভিত তার হাজার নেয়ামতের সমারোহে,
বসে মহাকাল আমি রচিব গাহিব ঐ গান,
তা শুনিয়া যেন কানায় কানায় ভরে যায় বিধাতার প্রাণ,
যদিও শেষে ক্লান্তিতে হায়,
মোর বিভোর পঞ্চ পরাণ ঘুমিয়ে যায়,
হিয়া মোর মন ভরিয়া যেন আজীবন মহাকাল দখিতে ও শুনিতে পায় পাখীদের ঐ মধুর কাকলি কুজন ও কলরব ॥
সব নাফরমান ওরে সাবধান,
সে তোমার মনিব মূল্যবান মেহমান,
তুচ্ছ ক্ষুদ্র নগন্য জীব যেথা আছে প্রাণ,
জানিও ওরে, খোদ খোদাযে হেথা বর্তমান,
করুণার প্রতিদান শুধু করুণা তাই সে এত মহান,
করো তারে ভক্তি শ্রদ্ধা বিনয় আদর কদর সেবা ও সম্মান,
প্রাণেতে ভগবান, তাই না হয় যেন তার কোন কষ্ট কিবা অযতন অপমান,
শুদ্ধ হোক জগতের যত লোক দেহমন, শুধু নহে বলন চলন নয়ন ও মনন, সাফ হোক সব গোমরাহ কলব ॥
কার হলোনা বিশ্বাস,
কে ডুবে ভুলে আজীবন বারমাস,
কে করিল কিবা কে করিল না তা পঠন,
হলোনা কার পাঠগুলো তার আজও সমাপন,
চিন্তা চেতনার রুদ্ধ দশদিক হলোনা কার উম্মোচন,
হলোনা কার আহা ঐ তীক্ষ্ণ আলোটার আধ্যাত্বিক সুধা অর্জন,
হলোনা দার্শনিক হলোনা সাধন, পেলোনা সে সঠিক পথের দিক দরশন,
যেথা হতে আসে যারা লভে তারা বিজয়ের উল্লাসে ভাসে ধন্য অমৃত সে অনন্ত জীবন,
হোক বা নাহোক সব দায়গুলি পালন,
বিভোর মন রাখিও স্বরণ, মরণ নামের সহসা আসিছে সমন জারি হওয়া সে এক অমোঘ রাজ তলব ॥