ভূমিকা - এটি জীবন থেকে নেওয়া অর্থাৎ তৃতীয় নয়নে দেখা একটি জীবন দরশন মূলক কবিতা । বিচিত্র রঙে সাজানো এ বিশ্ব জগত এবং জীবনের এক অসীম অপার শাশ্বত ও সার্বজনীন রুপ এর কলম-চিত্র যা হয়তোবা সকলের দৃষ্টিতে একই রকম না’ও হতে পারে । হয়তো কারো কাছে তা তেমন ভালো না’ও লাগতে পারে, আবার কারো কাছে লাগতেও পারে দারুণ চমৎকার, তাই তা যাচাইয়ের সুযোগটা না হারাতে হলে একবার পড়ুন ।
ওরে ভাই কাব্যের পরিসর বা আকার দেখেই ক্লান্ত হয়ে যাবেন না যেন । কাগজে-কলমে অংকিত বৈচিত্রময় জীবনের পাঁচমিশালী গল্প-চিত্র একটু বড়তো হবেই । পঞ্চরসের জীবনের গল্পের স্বাদ পেতে হলে একটু সময়তো দিতেই হবে । একবার আমার বড় কবিতা পাঠ করেই দেখুননা - হয়তো কখনও তা মনেই হবেনা বিরক্তিকর বা সময়ের অপচয় । বরং তারপর কি হলো, লেখকের আর কি বক্তব্য এলো কিবা আরও কি জানার বাকী রয়ে গেলো ঠিক এমনই একটা প্রবল জানার অন্বেষায় হয়তো আপনাকে টেনে নিয়ে যেতেও পারে তার প্রান্ত অবধি । কিছু পেতে হলে ভাই কিছু দিতেই হয় - এ প্রথাতো চিরন্তন বিনিময় ।
অনেক সময় দিয়ে লেখক যা লিখেছেন তাতে একটু সময় দিয়ে হয়ত আপনি পেতেও পারেন এমন কিছু মূল্যবান পাঠ যা নহে বিজন বিরান তৃণহীন মাঠ বরং যেথা ছড়ানো এমন কিছু সোনালী বাণী যা হয়ত রাখবে ধরে কেউ যেন না যায় কর্দমাক্ত ড্রেনে কিবা গভীর কুয়ায় পড়ে, অধিকন্তু আলো ও ভালোয় তাদের আনবে টানি । একবার তা পরখ করতে গিয়ে নাহয় একটু ঠকলেনই তাতে কিইবা এমন আসে যায় । ক্ষুদ্র এক টুকরো রতনের আশায় কতজনে ইতো বিশাল ছাইয়ের টাল ঘাটে আর তা উড়িয়ে দেখে । আপনিও নাহয় কৌতুহল বশতঃ কিবা অনুসন্ধিৎসু হয়েই সেই প্রত্যাশায়ই দুচারটা ছাইয়ের টাল একটু ঘেটে দেখলেন ।      


পর্ব – ০১


কে সে জন, ওরে কে সে জন ॥
দিলে ভাল করে তার পরিচয়,
আমার এমন একটা ধারণাও হয়,
হয়তো তারে খুঁজতে বের হবে নিশ্চয়,
শত স্বজন ও পাড়া মহল্লার চেনা-অচেনা লোকজন ॥
তাই আপনাদের লাগি,
সারাদিন খেটে আমি রাতভর জাগি,
নিত্য যাদের হয় ভোর,
অজানা রহস্যময় বিষয়গুলোর খুলিতে বন্ধ দ্বোর,
নতুন জানার, হে মোর শ্রদ্ধাভাজন কৌতুহলি প্রিয় পাঠকগণ ॥
ঢাকনা তুলি,
দিচ্ছি আমি তা এখুনি খুলি,
জড়ো করে মজার মজার যত সব তথ্য উপাত্তগুলি,
আমার তৃতীয় নয়ন, করে অন্বেষণ যাহা করেছে আবিস্কার ও আহরণ ॥
লয়ে কালের চক্রবাক,
মুক্ত হয়ে, হতে যুগের মহাঘূর্নিপাক,
জানুক ও শিখুক লোকে, কারে বলে ভাই আখলাক,
কেউ কেউ হয়তো কষ্ট পাবেন, কারো চোখে ও দেমাগে লাগবে তাক ।
কেউবা আবার হবেন বিস্ময়ে হতবাক,
তাই একবার ভাবি কি হবে আর ওসব বলে, কিছুই বলবোনা থাক,
কে যেন আমারে বলে, জীবনের শত রঙ আর মানুষের সহস্র রুপের ছবি নিরবে বসে তুই আঁক ।
মন বলছে না,
আমি করছি মানা, তুমি দমে যাবেনা,
বলে যাও যেটুকু সত্য তোমার হয়েছে দেখাশেখা ও চেনাজানা,
মনেরেখো সে তোমার দায়, যেনো কেউ না হারায় সবে ভাগ পায়, জীবনের ঐ সুধাখানা,
জানতে হবেনা, তাদেরকেতো জানাতেই হবে যাদের চোখ ফুটেনি আর রয়েছে যারা এখনও কানা ।
অবিরাম লিখে যাও,
যদিরে মাটিতে ঠাই নাহি পাও,
লিখে লিখে ঐ বারতা, মহাশূন্যে হাত বাড়াও,
তোমার পান্ডলিপির ছিন্ন পাতাগুলি ছিড়ে অসীম আকাশে উড়িয়ে দাও,
আর তুমি যা জেনেছ কোটি মানুষেরে তাই জানাও, ওরে মানুষ কারে কয় ও কেমনে লভিতে হয় শ্রেষ্ঠ জীবন ॥
তীক্ষ্ণ প্রখর ও সচেতন,
বোধ ও বিবেকের হবে জাগরণ,
হয়তো ফুটিবে কোটি জনের তৃতীয় নয়ন,
পাবে বলন, চলন, বোধ, বিবেক, অনুভব ও চেতন,
নামের মানুষগুলি হবে আসল মানুষ কবে লভে ঐ সে দরশন,
মনন ও গবেষণ আর তাদেরে সঠিক ঐ পথ দেখাবার তীক্ষ্ণ আলোকন ।
এ গল্পের মুখ্য চরিত্র - বিশিষ্ট ভদ্রলোক একজন,
এসেছে একই পরিবার - তার নিজের এবং মা, বোন, স্ত্রী ও সন্তানগণের জীবন,  
বৈশিষ্ট্যগুলি তার করিতে বর্ণন, আমি তাই তোমাদের লাগি ভাই জীবনের এ গল্পখানি করেছি বিরচন ॥  


পর্ব – ০২


মাথা নিচূঁ করে গুটি গুটি পায়ে চলা,
ঘরে ও বাহিরে ছোট স্বরে নিচূঁ গলায় কথা বলা,
মাঝেমাঝে মনেহয়, মিছরির ছুরি যেন তীক্ষ্ণ এক বর্শার ফলা,
বিশিষ্ট ঐ ভদ্রলোক আনত চোখ, ফর্সা গাত্র বরণ ও দেখতেও ছিল সে সুদর্শন ॥
নহে উগ্র পাজী,
ছিল স্বভাব গম্ভীর, প্রশান্ত ও নামাজী,
সস্ত্রীক নয় যদিও একাকি হজ্ব করেছেন তবুওতো তিনি হাজী,
বলা যায় ভূঁইয়া কিবা গাজী, একদা পরে হয়েছিল তার অনেক সম্পদ ও বিত্তধন ॥
বাবা ছিলনা বলে,
এতিম শিশু পুত্রটির জীবন যায়নি বিফলে,
দেখেছি নিজের চোখে, সবর ও নামাজের কতযে গুণ,
চাল আছেতো নেই ডাল, তেল থাকলেও ঐ ঘরে থাকতোনা নূন,
মনে নেই তার, ঐ সে স্মৃতিগুলি অতি বেদনার, কবে হয়েছিল আহা বাবার মরণ ॥    
রুপসী ও অল্প বয়সী,
বিধবা মা তার ছিল এক মহিয়সী,
মাটি চাপা দিয়ে তার সব সখ ও রুপ-যৌবন,
সে ছিল এক কঠিন রণ, জীবন যাপন করে ঐ আগুন নির্বাপণ ।
বেচারির জীবনে আসে ছন্দপতন,
কোলেতে কন্যা ও পিঠে তার শিশু পুত্রটি ছিল যখন,
দুটি শিশু চেপে ধরে তার পোড়া বুকে, সুনাম ও পরম শান্তি-সুখে জীবন করেছে অতিবাহন ॥  
তার গ্রামের ফসলী জমিন,
তা যেন এক থেকে বেড়ে গিয়ে হয়েছিল তিন,
শেষ হয়েছিল অবশেষে একদিন, বদলে গেছে সেই কষ্টের দিন,
সেতো অন্য কথা, জানিনা বকেয়া রয়ে গিয়েছিল কিনা তার লোকের ও খোদার ঋন,
কেজানে মা, বৌ নাকি সন্তানের ভাগ্যে তার ঐ ধূসর জীবন হয়েছিল সোনালী ও ঝলমলে রঙীন,
শুনেছি গাঁয়ের বাড়ীতে, শহর ও উপশহরে ৫/৭ খানা বাড়ী ও প্লট হয়েছে কেনা, রয়েছে তার এখন ॥    
ছিল দুই হাতের কামাই,
ঘুষ বা হারামের কোন বাছ-বিচার নাই,
সহজে পাই সারা বছর পাকিস্তানী সেরা বাসমতি চালের ভাত খাই,
বদলে গেছে এ সমাজের হাল কেউ দেখেনা আজকাল, এ সম্পদ-ধন কোথা হতে কেমনে এলো তাই,
ঐ টাকা কালো কিবা সাদা, এত ভেদ খুঁজে তার লাভ কিরে দাদা, ছিল তার মেলা আয়-উপার্জন ॥
কবে হবে বোকার বোধন,
জীবন নহে শুধু ভোগ-বিলাস ও বিনোদন,
ঐ জন, যারা শোনতে পাবে প্রদীপের ঐ অস্ফট ক্রন্দন,
চিরকাল আলো বিলাবার সাধটা তার হয় যেন পূরণ, যাচে সে অনন্য অক্ষয় এক নব জীবন অন্য ধরণ ॥  
চলনে বলনে ভোজনে সে ছিল সুপরিমিত,
এক মানুষের হতে পারে এতরুপ, কিছু তার জানা কিছু অজ্ঞাত অপরিচিত,  
শত ইমতেহান পাশ-ফেল হলে অবসান, কত শাস্তি-পুরস্কার নেয়ামত-দান, কেউ আমন্ত্রিত কেউবা তিরস্কৃত ।
সেতো এক সুচতুর প্রবঞ্চন,
তার করুণার মোহতাজ ও বিশ্বাসীগণ,
হয় কেমনে এমন প্রলুব্ধ করার মতন সহাস্য সুমিষ্ট বচন,
কেমনে হয় এমন, কুৎসা নিন্দা সমালোচনায় পরের হক-মান, মনোবল করা ক্ষুন্ন বা হরণ,
লোকের চোখে ছিল তার এমনই ধন্য জীবন, অনন্য একজন সুফী, সাধক, দার্শনিক ও সুজন ॥


পর্ব – ০৩


ঘরে মেজাজটা তার যেন ছিল রহিত আগুন,
সব কাজগুলি তার কথামত ঠিক তখনই না হওয়ার দরুণ,
মূলা নয় রসুনও নহে, তার বাগানে সদা সে লাগাতো ঢেরশ ও বেগুন,
এমন খিটখিটে ও বদমেজাজী, হতো ক্ষিপ্ত পান থেকে তার খসলে কভু একটুখানি চুন ।
ছিল তার ঠিক এমন,
একটা মানষিকতা, বাসনা ও মন,
চাই অনেক বিত্তধন ও অনেক সন্তান তার প্রয়োজন,
বড় মানুষ হওয়া নয়, বিশ্বজুড়ে যেন তারা করে বসবাস ও বিশ্বময় হয় ভ্রমণ ।
কতটা সঠিক আপনি তা একটু ভাবুন,
কোন পথে ওরে করিছ গমন, যাবার আগে একটু থামুন,
একবার তার খবর লই, ভাল করে জানি, অন্য এক কাফেলায় যাই আসুন,
বিধাতার প্রাণ, কোন্ নেয়ামত-দান, কবে অবহেলে অজানায় করেছ কোন অপচয় কিবা খুন,
একজন অতিশয় ক্লান্ত, বিরক্ত, রাগী ও ক্ষিপ্ত সেনাপতির স্বভাব আচরণ ছিল যেন তার ঠিক তেমন ॥  
চাচাদের তদারকিতে,
হয়েছে ঠিকমত স্কুলে ও কলেজে যেতে,
মামাদের যতন ও আদরে,
এক এতিম বালক দাড়িয়েছিল নিজ পায়, ঠিকঠাক লেখাপড়া করে,
অবশেষে একদিন, করেছিল চমকিত সব মোখগুলি মলিন, বিকম ডিগ্রীটা সে করে লয়ে অর্জন ॥  
হয়ে যায় তার চাকুরী,
যেনতেন নয়, একেবারে খাটি সরকারী,  
মাইনে ভালো, তার উপর আবার শুনেছি ছিল নাকি তার ঢের উপুরি,
অ পুত, কি ছিল মায়ের মনের আশা আর, সব করে তা তচনচ ছারখার, তুই ওরে করলি কি এখন ॥  
তেমন ধন নেই, দেখে বুনেদী ঘর,
কি হয়েছে তাতে, মিলেছে জাতে, আগে দিয়েছে বোনের বিয়ে পাত্র ছিল শিক্ষিত দোজবর,
বাবার পুরাতন টিনের ঘর,
মেরামত করে ও রঙ মেখে তার উপর,
চৌচালা চৌকাঠ, চারখানা রুম ছিল তার ভিতর,
অনেক পরে, নিজেই নিজের বিয়ে সে করেছিল তারপর,
এখানেই হবে, হয়তো সাজাবে সবে তার জীবনের কল্পনার স্বপ্ন বাসর,
ছেলে বৌকে মায় করেনি হরষে বরণ, বুঝিবা নতুন বউয়ে তাই কভু ছুয়েও দেখেনি তার শাশুড়ির চরণ ॥
পুতের শ্বশুর বাড়ী থেকে ঐ মা ও ছেলে,
গোপন কষ্টে মা বিড়বিড় করে আর নিরবে শুধু চোখের পানি ফেলে,
ভাবছে বুঝি মনেমনে, শোনাবে কথা দেখাবে মজা ঐ ঘটক বেটারে একবার সে তারে নাগালে পেলে ।
বুঝি ভরেনি তেমন কারোই মন,
পায়নি বলে হায় তেমন কোনই উপহার বা উপঢৌকন,
প্রায়ই আফসোস করে বলে কেমন ওবাড়ীর লোকজন, কেন করেনি যথা সমাদর, আদর, কদর ও যতন ॥
বউ এমএ পাশ,
হায় হায় হলো একি সর্বনাশ,
করবোনা কিরে আর মোরা কোন ক্ষেতি চাষ-বাস,
দা’য়ের চেয়ে আছাড় লম্বা হলে, শেষে তুইকি তবে হবি ওরে তোর বউয়ের দাস ।
কালো বউ ওরে,
কেমন করে তুলে আনলি ঘরে,
ঘরে ঘরে সারা দেশে ওরে এত মাইয়া থুই,
কেন একবার এসে সেগুলি দেখলিনারে চোখ মেলে তুই,
কোন্ যাদুতে গেছিসরে ফেসে, নাহলে কেন জেনেবুঝে শেষে, ভাংলিরে পুত তুই অভাগী এ মায়ের মন ॥


পর্ব – ০৪


সব মায়েদের সারা বুকজুড়ে ঐ একই চির,
শুনেছি তাদের নাকি নাই বাড়ীঘর, সে কষ্টের আবেগে তাই তারা চির অধীর,
বুড়ো মা ভাবে, তবে এ সংসারটা কার, যেথা জনম কাটিল আমার সেকি ওরে পুতের নাকি স্বামীর ।
শাশুড়ি করে প্যানপ্যান ঘ্যানঘ্যান বিড়বিড়,
বউ কোন কাজ জানেনা ও কাজ করেনা, সবে চায় একটা শান্তি-সুখের নীড়,
বলো শুনতে কার ভালো লাগে আর নিত্য দিনভর এত নিন্দা ও বিব্রতকর ঐ একই কথার তীর ।
মোটে তিনজনের সংসারে,
বউ-শাশুড়ি কেন একে অপরের রহিল পর আহারে,
তবু হায়, দিন কেটে যায় যেন নানা অভিনয় আর গোজামিল বাহারে,
নিরব এক বাজ পড়েছে যেন কখন এসে কেন, সুখ-শান্তি ও সরল ঐ ভালবাসার ঘারে,
কেউ কারো যেন পায়নি মন, ভুলেও দেখেনি খুলে কভু সোহাগ, সহানুভুতি ও ভক্তি-শ্রদ্ধার নয়ন ॥  
শুরু হলো বউয়ের চাকুরী,
প্রথমে স্কুলে ও পরে কলেজের মাস্টারি,
পারছিলনা যেন আর সহিতে তার ঐ বুড়ো শাশুড়ি বেচারি,
আহা না পারে কহিতে কারে, না পারে চলে যেতে বাপের বাড়ীতে এ সংসার ছাড়ি,
এ বুড়োকালে তবেকি ওরে যাবে সে হারি, এত পেরেশানি ও তাড়না কত আর বলো যায়রে সহন ॥
দুঃসহ তিরিশটি বছর,
বিজন ও বিরস এই বাড়ীঘর,
কেউ ছিলনা বন্ধু আপন যেন সবে পর,
একা একাই যেন ঐ পথ চলা,
তার ঐ কষ্টগুলি তাই কারেও বুঝি আর হয়নি বলা ।
এ কেমন কপাল,
ভালকরে দেখা হলোনা যেন আর সুখ-ভাল,
সারাদিন বেচুইন, ছোটছোট নাতি-নাতনীদের ঝামেলায় নাজেহাল,
বোঝাই ঠেলাগাড়ীটা চলেনা যেন আর একপা, না দিলে তারে অতি জোরে ঠেলা, এই বুঝি হাল,
ভালো লাগেনারে মন, এই খেলা নহে আর একবেলা সহন, আজীবন শুধু দুঃসহ ঐ ভার বহন ॥
ছেলে বউ থাকে শহরে,
গ্রামের বাড়ীতে মা শুধু একাই রয়েছে পড়ে,
হে খোদা, কি দোষ করেছি আমি কেন মোরে রেখেছ বন্দি করে,
ছটফট করে মাঝেমাঝে কভু সে গেলে শহরে,
কোথাও নেই মাটি কোথায় হাটি, যেন তা ওরে আলো ও বাতাস হীন, তাদের ঐ ছোট্ট দালান ঘরে ।
পুত ও বৌয়ের অধীন,
রয়েছে জানিনা আর কত মোর বকেয়া ঋন,
আগে ছিলাম স্বামীর অধীন তবু হয়নিতো মনে কভু পরাধীন,
বলো কবে তা শোধ হবে আর, পাবো আমি দেখা তার ঐ সে সোনালী দিন ।
বলো আমার ছুটি হবে কখন,
বুড়োকালে জীবনটা হয়ে পড়ে নিঃস্ব ও ক্লান্ত যখন,
ঝামেলাহীন নাহি কোন কাম বাকী কয়দিন, এমন একটু আরাম চাহে এবার মন,
বড়ই দূর্বিসহ ও কঠিন, সংগীহীন ও মলিন যদিও বলে কেহ আর কিছুক্ষণ, তবে কি তা হবে ওরে সমীচীন ॥  
বসে বসে শুধু কান্দে,
দু/তিন বেলা খায় আর একবেলা রান্ধে,
ভাসুর পুতের বৌয়েরা এসে খবর নেয় কেমন আছে অভাগী চান্দে,
এক বুড়ো মা কিবা শাশুড়ি বুড়ি ছটফট করিছে যেন এক অসহায় বগী পড়ে বিষম ফান্দে ।


পর্ব - ০৫


আহা কি করে কই যায়,
সরমে মরে, ঝি এর বাড়ী যেতে কি বলো কারো মন চায়,
মাঝেমাঝে আবেগে হারায়, দরদী হয়ে যে তারে দেখিতে যায়, তারেই শুধায় কেন আমার হয়নারে মরণ ॥
ওরে সুখ কারে কয়,
তা দেখতে কেমন, ওরে কি তার পরিচয়,
আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়, কেউ সে বচন মেনে নাহি লয়,
শুনেছি লোকে কয়, সুখ পাখী ও সোনার হরিণ সেতো ওরে কল্পিত গল্প ছাড়া সত্য কিছু নয় ।
আবু হকে কয়,
সে কথা ওরে মিথ্যে নয়,
ভাগ্যটারেযে সবে মেনে নিতেই হয়,
যার নাই মন, একটা তৃতীয় নয়ন ও বেশী সহন ওরে নিশ্চয়,
জীবনে তার হতেও পারে পরম হার, আসিতে চরম ভরাডুবি ও পরাজয়,
কারো কাছে সুখ মানে–বেশী ধন, রঙমাখা এক জীবন যেথা ঢের ভোগ-বিলাস, হরষ ও বিনোদন ।
কারো কাছে পেটভরে ডালভাত,
একটু হরষের ধুম ও রাতভর আরামের এক লম্বা ঘুমের রাত,
হোকনা মোটা কাপড়,
সোহাগ ও আদরের ঠাই ছোট্ট ঐ সে কুড়েঘর,
আপদ, নিদান ও বাদল-ঝড়,
আজীবন রাতভর, লুকিয়ে থাকা বাহুর বাধনে ঐ সে বুকের ভিতর ।
যেটুকু জরুরী প্রয়োজন শুধু তাই,
কেউ বলে তাতে দোষ নাই,
আমিতো তার বেশী কখনওযে নাহি চাই,
হোক এমন একটা জীবন, সাদামাটা ও অতি সাধারণ যাই,
সুখ মানেতো নানা ঘটন অঘটন তা যখন যেমন,
আজীবন শুধু সহন আর সহন, গাধার মতন ভার বহন আর দায় পালন তা ওরে যার কাছে যেমন ॥  
কখনও সময় পেলে,
তার তিন মেয়ে ও চার ছেলে,
সবাই সুবিদ্যান ও দিয়েছে ধন খোদায় ঢেলে,
একবার এসে বেড়ায়ে দেখে যে’ও, কখনও ওরে গেরামে এলে ।
একে একে সবে গেছে চলে, অনেক দূরে তারা উড়ছে আকাশে তাদেরে ফেলে,
আরও বিদ্যা নাকি ধনের লাগি, ঘুরছে ভুবন সবে নিশীথ জাগি, মনোরম অগনিত পাখনা মেলে,
কেজানে কখন কার, হঠাৎ হবে আবার, একেবারে শূন্য হয়ে অসাড় নিথর দেহটা লয়ে সটান মাটিতে শয়ন ॥  
না দিয়ে কিছু ও না নিয়ে সেবার দায়,
সবাই দেখছি যেন ফাঁকি দিয়ে ও মিথ্যা বলে কেনযে শুধুই নিতে চায়,
কেউ কেউ যেন এমন অঘোষিত প্রতিযোগিতায়,
এইতো সময় হয়তোবা শেষ সুযোগ, আর যদি তা সে নাহি পায়,
কেজানি আগে চলে যায় ও বেশী নেয় আর, কেজানি হায় পিছে থেকে শেষে ঠকে যায়,
নানা ছলে কৌশলে একটুখানি সুযোগ পেলে পুত্রকন্যাগণ, যে যার মতন আপন ভুবনে সবে ব্যস্ত সারাক্ষণ ॥  
তারা মানুষ হয়েছে কিনা,
প্রকৃত সে খবর আজও কারো হয়নি জানা,
কতযে অপবাদ আর কলংকের কথা আহারে যায় শোনা,
শুনে মন ভেংগে যায় আর ঐ কালিমার বিষন্নতায় মলিন হয় বদনখানা,
ফুটেনি বুঝি কারোই তৃতীয় নয়ন, কেন এমন দেখছি তাই যেন সবাই আজও রয়েছে কানা ।


পর্ব - ০৬


কেউ ডাক্তার,
কেউবা হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার,
উচ্চ ডিগ্রী ও বেশী টাকাতো মাপকাঠি নহে মানুষ হবার ।
যেথা শুধু আমি ও আমি আর আমার,
স্বজন কিবা প্রতিবেশী ও পর হয়েছে বলো কার কবে কোন উপকার,
কেউ বেরিষ্টার, কেজানে তাতে ঐ বাবামার হয়েছে ঠক নাকি জিত কিবা কতটুকুইবা হার ।
বলো কোন্ বাবামায়,
খুশী মনে আহা তা মেনে লবে হায়,
না মেনেইবা যাবে কোথায়, বুড়োকালে বাবামায় যে বড় অসহায়, সুসন্তান পায় এ জগতে কয়জন ॥      
অতি ফিটফাট সাজ,
কেউ প্রতারক কেউবা ধোকাবাজ,
বিশ্বাসযোগ্য নয়, মনেহয় যেন তারা ঠিক এমনই স্বার্থবাজ,
যতই থাক কষ্টে পড়ে কেউতো নহে ওরে, তাদের ঐ ধন কিবা বিলাস বিনোদন ও সুখের মোহতাজ ।
স্বজনেরা সবে শুধু দেখিতে শুনিতে চায়,
সাফল্য ও সুনাম, যখন তার উল্টো ঘটে দেখে-শুনে তারা কষ্ট পায়,  
কত কলংক বদনাম বিবেকের দেয় ঘাম, বাতাসে উড়ে এসে জড়িয়ে গায় যবে বিব্রত করিতে চায়,
জানা নেই কে করে কি কাজ, বহু বছর ধরে রয়েছে পড়ে, সেই কবেযে তারা করেছে বিদেশ গমন ॥  
আজ তাদের বাবা নাই,
আগেও শুনেছি আজও আবার দেখছি তাই,
ছেলেমেয়েদের কারো বাসায়ই যেন নাই, কেন তাদের মায়ের ঠাই ।
বাবার দশাও অনেকটা যেন ছিল তাই,
হয়তো নিরবে প্রখর অনুভবে সেও সয়েছে সব চুপচাপ ঐ একই কষ্ট পাই,
কর্মেই যদি হয় প্রাপ্তি ও মন্দ-ভালোর ফলাফল,
তবেতো শূন্য হবারই কথা ঐ মায়ের, দুনিয়াতে তার ছিল যত ঠাইগুলি সকল ।
শুধু তার একটি ছেলে,
আজীবন যে ছিল বাবামার সবচে বেশী অনাদর ও অবহেলে,
দেখিতাম মেপে তার গুণ ও মান, কথায় ও কাজে কত অবদান একখানি তার মাপনী পেলে,
কম লেখাপড়া, তবে অনেক বড় মন ও মনন, সামনে এগিয়ে যেন সে তাদের সবারে ঠেলে পিছনে ফেলে ।
পেয়েছে যেন সম্মান ও শান্তির ঠাই,
আজ উঠেছে গিয়ে ঐ মা দূর বিদেশে তার বাসাতেই যাই,
বিস্মিত হই, আমি নিজেই বুঝিনা বিধাতার ভেদ, কেমনে বলো তা লোকেরে বুঝাই,
খোদার সব শাস্তি পুরস্কার কিবা নেয়ামত ও দানগুলি তার, জীবনে মরণে বিলি-বণ্টনের ঐ মহা আয়োজন ॥  
চারপাশে যত ভন্ড ডাক্তার ও দূর্নীতিবাজ,
তাদেরই শুনি জয় জয়কার গড়েছে যেন তারা বিলাসের এক রঙীন সমাজ,
যাদের নেই তেমন,
বিদ্যা ও ধন কিবা সামাজিক আসন,
অসহায় সব জনসাধারণ ও ঐ নিরুপায় রুগীগণই বেশী কষ্ট পায়, প্রাণ যেন যায় যায় তাদের মাথায়ই পড়ে বাজ ।
বলবো কারে আর,
বলো হায় দোষইবা দেবো কার,
যত ভাওতাবাজ, প্রতারক ও ঠকবাজ যেন আজ তারাই রাজ,
বিচারকের হবে বিচার, নাই ছাড় রাজারও হবে সাজা নাইবা হলোরে আজ,
বিস্ময়ে সবাই হতবাক, একি রাজায়ও যেন দেখি তাদের মাথায়ই পরায় সোনার তাজ,
নাই কিরে মরণের ভয়, তারা কেন এমন হয়, দেখিনা স্বজনের কিবা লোকসমাজের কোন চক্ষুলাজ ।


পর্ব - ০৭


বলো কে নিবে তার দায়,
রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট আর প্রজা কষ্ট পায়,
জুলুম আর অবিচারে, দেখি নাক অবধি একেবারে ডুবে গেছে হায়,
নাই কোন অভিযোগ, প্রতিবাদ ও আপীল ওরে কিছুই যাবেনারে বলা,
মোড়লে করে বিচার ও দেয় রায়, খুনীর সাজা-একশত টাকা জরিমানা আর পঞ্চাশখানা বটখিরি ও কানমলা ।
কানার হাতে কে দিয়েছে কেমনে উঠেছে কুড়াল,
অসৎ অযোগ্য লোক নেতা ও শাসক ক্ষমতার আসনে বহাল,
সেইতো অনেক ওরে, রাক্ষুসে রাজার দেশে এখনওযে আছে ঘরে নূনতেল চালডাল ।
এইতো রাজ্যের হাল, কেমনে পার হবো এ ধাপ,
সাত খুন কিবা সব অপরাধ যেথা যবে অবলীলায় হয়ে যায় মাপ,
ওরে কি হবে দশা তবে কাল, এ ভাবনায় করে অসহায় সকল প্রজায় বিলাপ,
সে নহে কিরে প্রজার উপর আপদ ও নিদানের ঝড়, নাখোশ খোদার ক্রুব্ধ ক্ষিপ্ত এক অভিশাপ ।
অপরাধী পায়না সাজা, দুষ্টের দমন নয়,
কে দেবে ঠাই অসহায় শিষ্টের পালন করবে কে, রাজা যদি এমন হয়,
ইতিহাস দেয় প্রমাণ ও তাই বলে,
লোকের কথায় কি আসে যায়, রাজার ইচ্ছায় রাজ্য চলে,
কি আসে যায় বলো তাতে, কারো তা মনোপূতঃ কিবা বিশ্বাস হলে বা না হলে ।
তলাহীন ঝুড়ি, ভিতরে ডাকাতি চুরি, মোখে অভিনয় বাহাদুরি, তারচেয়ে ভাল কি হবে তাহলে,  
রেয়াত, পক্ষপাত ও অন্যায়ের লম্বা হাত রাজত্ব ছারখার, মজলুমের নিরব হাহাকার দেশটা রসাতলে,  
খুশীতে নাঁচে রাজ করুণায়, এই করেই তারা বাঁচে ও খায়, যত নষ্ট ও মন্দের পাল সব জুটেছে রাজার দলে ।
ক্ষমতা ও অস্ত্র রয়েছে রাজার হাতে,
যত বারোমজা সবই পড়ে তাদের সোনার থালার পাতে,
কিছু বললে চোখ বেধে ওরে, নিয়ে যাবে এসে ধরে কোন এক গভীর আঁধার রাতে,
সেইতো অনেক ওরে হাতকড়া পড়েনিযে এখনও হাতে ও এইযে বেঁচে আছো যথা মানে ও পেটেভাতে ।  
নিশ্চয় নশ্বর এ জীবন,
রাজা ও প্রজা সবারই জানি হয় হবে মরণ,
যতই দুহাতে কুড়ায় ও কামায়,
করে আহরণ বা হরণ, একটা সময় সবাই সব হারায়,
উদ্ধত বাহাদুরি ফুরায়,
আচমকা বাজ পড়ে রাজ ক্ষমতায়,
হতভাগ্য রাজা ও তার উত্তরাধিকারীগণ, তার সব ধন-জন ভোগ-বিনোদন রাজ্য প্রাসাদ ও সিংহাসন ॥  
বছর ঘুরে এলো ঐ ভদ্রলোক,
ইহলোক ছেড়ে গেছেন চলে অচেনার ঐ পরলোক,
একটি মাত্র বোন ও তার সন্তানদের নেই যেন তাতে কেনরে কোনই কষ্ট কিবা শোক,
কেমনে কেন ঘটেছিল ঐ অঘটন ।
মনে প্রশ্ন জাগে, কিছু কষ্টও লাগে, বারবার তা জানিতে চাহে মন,
আসলে কষ্ট তাদের অন্যখানে, বলে একমাত্র মামায় কেমনে কেন করিল মা এর সামাণ্য ধনটুকু হরণ,  
নেই, তাদের ছিলনা দেখিনিতো কভু কোন অনটন,
কষ্ট-বেদন কিবা দায়, তবু কেন হায় অনেক দাবী ও অপবাদ লয়ে মাথায়, হলো তার এমন এক মরণ ॥  
কেন দেওয়া হয় নাই বা সে দিয়ে যায় নাই,
এই প্রশ্ন মাথায় সবার, ঘুরেঘুরে আসে বারবার তা জানিতে চাহে সবাই,
বিদ্যা ও ধন হোকরে যার যাই,
আসলে ভাই, আসল কথাতো ঐ মানুষ হওয়াটাই,
আহা ঐ মানুষগুলি, নিজের মুখোশটা না খুলি, কেমনে আবার তারা করে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই ।


পর্ব - ০৮


পায়নি বলে অধিকার ও তা করিতে ভোগ,
তার পৈত্রিক হক কেন এই অন্যায় ঠক, কত আক্ষেপ ও অভিযোগ,
এই বুঝি ভাল মানুষের গুণাবলী ও বাহার,
কোথা পেলো সে এ সাহস আর কে দিলো তারে ঐ অধিকার,
আপন ভগ্নিকে তার বঞ্চিত করিবার, নায্য খাটি ঐ পাওনা পৈত্রিক হকটুকু থেকে তার ।
এ প্রশ্ন তার, যে বোন ছিল পাওনাদার,
সমাজের সব শুদ্ধ-সচেতন কন্ঠ, বিবেক ও আত্মার,
জুলুমের কাছে ফের নিরীহ সরল এক মজলুমের দৃশ্যমান আপাত হার,
বাতাসে ভাসমান অভিযোগ আবেদন, একমাত্র ছোট বোনটির নিরব ঐ আহাজারি ও অশ্রুহীন ক্রন্দন ॥
এত বিদ্যা ও এত বিত্ত-ধন,
জীবনে বলো আহা চাহি তা কার লাগি, কি তার প্রয়োজন,
বোনকে ঠকিয়ে, তার হক বউ আর সন্তানেরে দিয়ে, ভরিল কি ঐ সুজন সাহেবের মন,
যদি নাইবা মানুষ হলাম, সে ধন ও জীবনের কিবা দাম, দেখাশেখা ও চেনাজানা না হলে সমাপন ॥
নেই বা ছিলনা যার,
ছাড়া শুধু ভোগ বিনোদন আপনার,
লোকের মংগল কিবা কোন কল্যাণ ও সেবা-উপকার,
আপদে নিদানে ওরে, উথাল ঢেউয়ের সাগরে যারা প্রাণপণ কাটছিল সাঁতার ।
কভু ফিরেও চায়নি, এই ভয়ে আমি জানি, যদিরে শেষে আবার নিতে হয় কিছু তার দায়ভার,
স্বজন কিবা পর, নেই কোন বাড়ীঘর, হাত পেতে চায়না ও পায়নি কোন সাহায্য ও কর্জ কিবা ধার,
যদিরে তা সংগে করে না নেওয়া যায় কিবা আর, ঐ ধন না’ই ঠেকাতে বা ফিরাতে পারে তোমার ধ্বস ও মরণ ॥
চাই মানবতা, করুণা ও ইনসানিয়াত,
নাহলে মনে রেখো একবার জীবনে তোমার নামিলে তিমির রাত,
চির সত্য সে বাণী ও বচন, সে রাত আর কোনদিন, শোধ হবেনাতো ঋন ও হবেনা প্রভাত ।
জানিবে মিথ্যে তব ঐ লম্বা হাত,
অসার তোমার এ দুনিয়ার যত সব চমকের বাজিমাত,
না হলে ওরে আপন হিসাবে বড় জমা,
সুচিন্তন, ভালকথা, ভালকাজ ও কিছু দানের পুণ্য ছাড়া নাইরে ক্ষমা ।
সমাজের মাথা ও সেরা,
সহস্র প্রহরী-পেয়াদার নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা,
লয়ে মাথায় উহুদ পাহাড় ঋন, দিনকে রাত আর রাতকে দিন, করিছ সদাই যা খুশী তোমার ইচ্ছে মতন ॥
বাহিরে যতই সুন্দর,
বলা কি যায়না তারে স্বার্থপর,
ছিল যেজন ওরে অতি পরশ্রিকাতর,
কালিমায় মাখা ছিল ভিতরে ঢাকা ঐ অন্তর,
স্বজন আপন কেউ ছিলনা তেমন যেন সবে তার পর,
শুধু আমি আর আমার, বিবি-বাচ্চাগণই মোর জীবন-ভুবন ঘর,
স্মৃতিতে ভাসমান রয়েছে তার, নানা দীনতা ও হীনমন্যতার অনেক কথা ও খবর ।
আবারও পেয়েছি সে প্রমাণ, যত বেশী হয় ধন, তত ছোট হয়ে আসে লোকের মন,
ছিলনা তার মহৎ ও উদার একটু সহানুভুতি ও সহযোগিতার দরদী মন, দেখেছি যেমন ছিল সে অতিশয় কৃপণ,    
হয়েও সে কাছের মানুষ ও আপনজন,
দীনতায় ভরা ছিল মোর সাধ্য ও সম্বল আর, সারা দেহ বুক ও মগজ জুরে তার ছোট মন ॥


পর্ব - ০৯
  
কেনযে ঐ ব্যবধান রচেছিল সে অকারণ,
নাহলে কি ছিল আর হয়নি জানা আজ অবধি তার কারণ,
ক্রোধ ক্ষোভ হিংসা কেউইতো আমরা ছিলেমনা কারো পর কিবা দুশমন ।
হয়েও বড় ধন, বয়স ও বিদ্যায়,
দেখিনি কখনো তার অনুভবে ও চেতনায়,
সামাণ্য বিবেচনা একটু করুণা কিবা দায়,
যার বেশী ধন ঐ আপনইতো আগে এগিয়ে আসে পাশে দাড়ায়,
সোহাগে ডেকে বলে কেন মোখ কালো মনভার শুনি কাছে আয় ।
দরদ ও মমতায়,
একটু সহযোগিতায় হয় সহায়,
হাতদুটি বাড়ায়, লয়ে কিছুটা দায় সাহস যোগায় ও পথ দেখায়,
সুখদুঃখ করে বিনিময় বড়রাইতো বন্ধু হয়, সুবুদ্ধি আশা উৎসাহ ও প্রেরণা কেনযে সে দেয়নি কখন ॥
কেউকি ওরে মরেছে ভাতে,
তারইবা কি লাভ বলো আর হয়েছে তাতে,
সে কি উঠে গিয়েছে সুখ-সাফল্যের সর্ব্বোচ্য তলাতে,
বরং শেষটায় ছাই পড়েছে হায় তারইতো সোনার থালার পাতে,
ঘুণে ধরেছে, লোহাকাঠ ভেংগে পড়েছে, তার দীনতা আর অহমিকার জাতে ।
শেষে মরণ এসে সব হরেছে একদা আঁধার রাতে,
ফেলে দিয়ে তার সব ধনের পাহাড়, চলে গেছে সে ওরে একেবারে শূন্য হাতে,
এমনইতো হয় এইতো জীবন, সোনার সিড়িতে না করিতে তার বাসনার শিখরে আরোহণ ॥  
নিত্য আজীবন বারোমাস,
হতে হলে মহারাজার ভক্ত প্রিয় গোলাম দাস,
কেবল শুধুই তারা, বারবার তার পরীক্ষায় যারা করেছ ভাল পাশ,
রাজার ঝিল-বাগানের কুটুম-বাড়ী বিনাদামে কেনা ও চিরস্থায়ী মালিকানার ঐ বসবাস,
চাই তার জমিনে, আলো ও ভালোর বানিজ্য বসতির সযতন ক্ষেতি চাষ,
ছায়াবৃক্ষ হয়ে একদিন, শোধিবে যা তোমার ঋন, দিবে শীতল ও নির্মল প্রাণ-বায়ুর সুস্থ্য সবল নিঃশ্বাস ।
ভাল মানুষ গড়ার,
একটা বীজতলা আর বিশাল খামার,
ঝড়বে যেথা অবিরাম,
মেধা ও শ্রমের পবিত্র একফোটা ঘাম,
পেতে শ্রেষ্ঠ হবার দাম, পরজীবনের সুখশান্তি ও আরাম, করিতে ঐ বীজ বপন আর অগনিত তার চারা রোপন ॥  
মানুষ কারে কয়, কে কেমন মানুষ হতে চান,
খুটিহীন আকাশের মতও হওয়া যায় বিশাল অসীম ও মহান,
গহীন ও অতল, ঐ সাগরের বুকভরা জল, যে কভু তা নিজে করেনা পান ।
বৃক্ষ তরুলতা ও গুল্ম তৃণ-দল,
তার যত সকল বাহারি রঙীন মিঠা ফুল-ফল,
পত্র পাপড়ি দল, গুল্ম লতা শিকড় ও বাকল,
সবটুকু তার সদা ওরে, দেয় সবারে উজার করে বিলিয়ে দান ।
কভু তা সে নিজে খায়না,
সেদিক পানে ফিরেও কভু চায়না,
দেখিনি কভু তাহারে এ জীবনে আহারে, হাতে লয়ে নিতে তার একটু ঘ্রাণ,
মম এ নগন্য সৃজন কবিতাখানি করে পঠন,
যদি গাছের মতন এমন এক চিরধন্য জীবন হয় গঠন, শুধু নিজের জন্য নয় যেথা পরের তরে হয় একটু বিসর্জন ॥


পর্ব - ১০


ওরে রাখিও স্বরণ,
তব সব ধন শুধু হরণই শেষ নয় মহাজন,
তার সমুদয় দাদনের বকেয়া পানার হিসাবটাও করিবেন গ্রহণ,
কোন পথে কেমনে করেছ ব্যয় আর কেমনে ঐ ধন তুমি করেছিলে আয়-উপার্জন,
জাগ্রত মানবতা বোধ, বকেয়া সব দায়গুলি করে পরিশোধ, ওরে সাধনের লাগি হওয়া চাই শুদ্ধ-শোধন,
তাই মূর্খ মানুষগণ, থাকিতে মাটিতে জীবন, মানুষ হবার তরে কিছু প্রশিক্ষণ ও দরশন অতি প্রয়োজন ॥
যত হারামের ধন,
কিবা ঐ বখিলের সঞ্চিত মানিক রতন,
ওয়ারিশ বা পাওনাদারের হক না দেওয়া কিবা না করা বন্টন,
সেওতো এক জুলুম, গিলেছে যাদেরে মোহ ও ভোগের ধুম, দূর্বলের ধন করা হরণ ।
শুধু ঐ তারাই পারে,
কুজো হয়েছে ঘার ও কাঁধ অদেখা ঋনের বোঝার ভারে,
কুটকৌশল ও বাহুবলই সম্বল দেখেনা মরণ রয়েছে দাড়ায়ে দুয়ারে, হয়েছে যাদের বিবেক ভোতা ও অন্ধ সবকটি নয়ন ॥    
চির অমোঘ বিধাতার বিধান,
তাই হয়, সেতো ঠেকাবার মত নয়, তিনি যাহা চান,
হারাম ও বেহকের ধন হয়,
হবেই হবে তিন পুরুষেই তা নিধন ও লয়,
আবু হকে কয় যে বচন, মিথ্যে নয় তা চির সত্য সুনিশ্চয়,
মহাজন তার দান তার ধন যদি সমুদয় করে হরণ, বলো তবে কে ঠেকাবে সে অবক্ষয় ।
পারবে কি তা রুখতে জগতের সকলে মিলে,
কিসের বিদ্যান ও বিচক্ষণ তার লীলা না বুঝিলে কিবা আমলে না নিলে,
কি নাহি পারে কিবা কি নাহি হয় সে চাহিলে,
তারকা মাটিতে খসে পড়তেও পারে একজন শিশুর একটি মাত্র ছোট্ট মাটির ঢিলে,
তার করুণায় তাল হয়ে যায় তিলে, সাগর শুকিয়ে যেতেও পারে যায় আঘাত লাগিলে তার দিলে,
মোতি পাওয়া যায় শালুক বিলে,
যখন তব সব ধন, অদৃশ্যমান রাহুতে গিলে নিমেষে নাহোক তিলে তিলে করিবে ভক্ষণ ॥
কত ঝলমলে প্রাসাদ,
ছিল হয়ে মজলুমের ত্রাস ও মরণ ফাঁদ,
ইতিহাস করেছে সব সত্য ফাঁস দিয়েছে তার অগনিত প্রমাণ,
ভোগবিলাসের চিন জলেতে বিলীন আর শত গুলসান হয়েছে মরু বালুকায় বিরান,
তবু ঐ আমানতদার যে ছিল জিম্মাদার ও ইজারাদার হয়েছে কি তার পরিশোধ ঋন ও দায়গুলি অবসান ।
একবার নাম উঠে গেলে, বিধাতার কালো তালিকায়,
লোকে বলে কারো কারো ধন নাকি কাকে বকে খায়,
লভে পরের ধন দেখেছি কতজন আবার এমন কারোবা কপাল খুলে যায়,
আসে সুদিন, বাড়ে বাড়ুক খোদার ঋন,
জীবনের রঙ বদলায় ও শেষে একদিন, মোহ ও ভোগেতে বিলীন হয়ে নিজেরে হারায় ।
সবে ওরে হও সাবধান,
সেতো সব হারানোর অশনি বাণী, জীবনের ষোলআনা লোকসান,
রাখিও স্বরণ, হওয়া চাই সংশোধন, মরণের পরে আখেরাতে সবাই আবার ফিরে পেলেও প্রাণ,
নেই তোমার হারানো ধনজন আর কভু ফিরে পাবার কোন বিধান, তাই নাই কোন সুযোগ, সে আশা ও লক্ষণ ॥      
ঝি এর কাজ করে বাসায় বাসায়,
হাটে পথে ও ঘাটে নিত্য যারা দিনভর ঠেলাগাড়ী ও রিক্সা চালায়,
নিরন্তর সারাটা বছর, নিদান আর অনটন ক্লিষ্ট অন্তর, ভার বহে নিরবে সহে অতি কষ্টে জীবন যায় ।


পর্ব - ১১


শুধু তারাই যারা শিখতে চায়,  
তাদের কাছেও অনেক শিখার আছে ও ঢের শিখা যায়,
যেজন নিজেরে ভাবেনা এমন,
বরং উল্টো যার, হয়েছে তার সব দেখা-শেখা ও চেনা-জানাগুলি সমাপন,
মাখেনা রঙ সারা গায়, আকাশের নীলে হারায়, বরং অনুভবে চেতনায় রয়েছে শেখানোরও কিছু দায় ।
কতজনে কতভাবে শেখে,
এ মহাজগত ও বিশাল জীবনটা থেকে,
কেউ পড়ে, কেউ শোনে, কেউবা আবার দেখে দেখে,
চেয়ে আছে বিধাতায়, বিশ্বজোরা তার ঐ খোলা পাঠশালাটা সবার তরে অবারিত রেখে,
ওরে শেষে সব হারিয়ে, আঁধার বিজনে শূন্য হাতে একা দাড়িয়ে, না হয় যেন এমন বৃথা রোদন সারাক্ষণ ॥
কেবা রলো মূর্খ কানা,
কে মানুষ হলো আর কে হলোনা,
শিখিবার রয়েছে সেতো অনেক সহজ বাহন,
বলন, চলন, শ্রবণ, লিখন, পঠন, মনন, গবেষণ ও দরশন ।
রয়েছে যার আকুল ঐ তেষ্টা,
আর ইচ্ছা ও প্রাণপণ কিছুক্ষণ করা সে চেষ্টা,
নহে পরাজয় হার, হয়ে যায়ই তার, যখনই হোক হবে একবার ঐ মহারাজার খুশী, তুষ্টি ও কৃপা সাধন ॥
এ জীবন জুড়ে,
দেখেছি দুনিয়াটা ঘুরেঘুরে,
জীবনে মরণে জনেজনে পর কিবা আপনে ঘরে ও বাহিরে,
রয়েছে দেনাপানা, কজনের তা জানা ও রয়েছে স্বরণ কিবা করিছে লেনদেন করে তার সঠিক মূল্যায়ন ॥  
কেউ পাওনা রয়ে যায়,
কেউ যুগযুগ আজীবন রহে দেনায়,
যারা বঞ্চিত মজলুম ক্ষতিগ্রস্ত দুর্বল ও অসহায় ।
ওরে জায় জায়,
সব লেখা রয়েছে খাতায়,
অনাদায় সব ঐ দায়গুলি করা হবে আদায়, কড়ায় গন্ডায় ষোলাানা করে দাড়িপাল্লায় করে ওজন ॥
আবু হকে কয়,
তা কেমন এক মজার বিষয়,
ঠকে গিয়েও তারাই নাকি লাভবান, মিথ্যে নয়,
বাকীরা সবাই খাছারায়,
যারা অবিশ্বাসী জড়িয়ে নিজের গলায়,
মরণ নামের ঐ ফাঁসির রশি বিধাতায়,
আরশে বসি রেখেছে ধরে কষি, দিবে এক হেঁচকা টান যখন তার মনে চায়,
বিধাতার ক্যামেরায় রয়েছে অডিও-ভিডিও করা মূর্খ বিদ্যান ও ধনবান ও দীনজন সবার  জীবন ॥  
চির সত্য জানা,
দিতেই হবে তারে যার যা রয়েছে পানা,
হক এর হাকিম হলেও তার করুণা অসীম, মহান ঐ আদালতখানা,
হিসাবে পাকা বড়ই নিখূঁত ও কঠিন, মেনে লয়না বকেয়া দাদনের ঋন দুজাহানের মালিক মহাজন ॥
কোন পাওনা বা হকদার,
মাটির দুনিয়ায় যেন কভু না ঠকে আর,
ভাংগে ভুল খুলে যায় যেন আলো ও ভালোয় ভরা জ্ঞানের সকল দুয়ার,
না করিতে হয় যেন কোন আহাজারি ও হাহাকার,
মরণের পরে মহাকাল ধরে, যেন ওরে কারেও না হয় বহিতে আর ঐ কঠিন দায়ভার ।


পর্ব - ১২


একটু ভুলে অদেখায় তুলে মাথায় লয়,
জনম জনম আহা পারেনা তবু তারে ছাড়েনা ছাড়বেনা, তা চিরকাল বহিতেই হবে হয়,
যদিও মহাযাতনা ও বিড়ম্বনাময়,
ঐ ভুলের খেসারত আর মাসুল দিতেই হবে হয় তাকে নিশ্চয় ।
লোকের পাওনা দিয়ে সামাণ্য ঐ পুণ্যটুকুই হতে তার,
হলে এমনই নিরুপায় দশা, কি উপায় তা হতে বাঁচার,
কে চাহে বলো দুই দুনিয়ার, অবজ্ঞা অপবাদ অপমান আর, লানত লজ্জা ও লাঞ্ছনার ঐ ঘৃন্য জীবন ॥  
তাই যার যা পাওনাগুলি পরিশোধ করে দেবার,
এমনই একটা মন ও প্রবল মানষিকতা যেন অন্তরের ভিতরে গড়ে উঠে সবার,  
মেনে না নিতে হয়,
অনেক বেশী ক্ষতি, লজ্জা, শাস্তি ও পরাজয়,  
একেবারে শূন্য হাতে,
আর কোন নেই ছাড় ও কোন ক্ষমা যে আখেরাতে ।
কেউ কারো দরদী নয়,
কারো সনে ছিলনা যেন, নেই হেন সামাণ্য কোন জানা-পরিচয়,
এমনইতো হয় ও হবে,
যখন অতিশয় অসহায় হয়ে রবে নিজেরাই সবে,
বলো আর হবে কার একটু করুণা কবে,
করিবে কল্যাণ ও সেবা উপকার পরজনে কে কেমনে তবে,
শুধু আপনারে লয়ে যারা সবে,
বিভোর মত্ত রয়ে জীবন যাদের কেটেছে এ রঙের ভবে,
দেনার দায় লয়ে মাথায় হবে আচমকা জাগরণ,
জগতের যত পাপী-তাপী অপরাধী অন্যায় অবিচার ও জুলুমকারীগণ,
হিসাবের খাতা লয়ে হাতে,
অন্ধকার ঐ সে মহাকঠিন নিদানের রাতে,
বেশী অস্থীর ও টানটান, বেচুইন ও বেশী পেরেশান, এমনইতো হয়ে রবে জগতের যত ঐ ধনীরা তখন ॥  
প্রদীপের তলে যে অন্ধকার,
না রহে যেন তার ঐ কালিমা আর,
হলেও ক্ষুদ্র প্রদীপ রয়েছে বুকেতে যার,
দীপ্ত রোশনী আঁধারে একটুখানি আলোক বিলাবার,
যে শিখা বিলাবে আলো তার কেনরে দেখি হেন কালো অন্ধকার,
কেন তার এ অবক্ষয় ও পরাজয়, তবেকি হলো হার আলোর পিয়াসী লোকের প্রত্যাশার ।
বিদ্যা ও ধনের ঐ সে ঢের গড়িমা ও বাহার,
জীবনে বলো আর, তবে তার কি প্রয়োজন বা দরকার,
তা যদি শুধু তার কাছেই রয়, কাজে লাগে আর হয় শুধু তারই একার ।
ক্ষীণ ঐ দীপ শিখাটা,
যতই হোক মলিন আর ঐ আলোতে পড়ুক ভাটা,
অনেক আশায় যার সংগে থাকা কিবা নাহলে কেনরে তার পিছু পিছু আর হাটা,
নিভু নিভু করে তবু নাহি নিভে যায়,
আর সাহসী কাফেলার ঐ দিশারীগণ যেন কখনও থেমে না যায় ও পথ না হারায় ।
ছোট্ট পোকা জোনাকি আর,
ঐ অসীম দূর আকাশের যত সব ক্ষুদ্র তারকার,
দিকহারা নাবিক ও পথহারা দিগন্তের পথিকেরে পথ দেখাবার দায় কার,
জীবনের জগতে সংগী হতে তাদের ঐ ক্ষীণ আলোটারও রয়েছে অনেক প্রয়োজন দরকার,
মোর যাচনা এমন ওরে মোর যাচনা এমন,
তোমার কাছে হে প্রভু এ মিনতি আমার, আঁধারের কাছে তার না যেন হয় হার কিবা কভু ঐ কোলেতে মরণ ॥
হে খোদা মেহেরবান,
এ জীবন ধনজন ও মরণ সবইতো তোমার দান,
সব জেনেও কেন নেই তার, একটু অনুদান, বিনিময় ও প্রতিদান,
মানুষ না হয়ে ঐ মানুষগুলি, কেন হয় পশুবৎ নিষ্ঠর, বর্বর, অমানুষ ও পাষাণ,
এমন অবিবেচক, প্রতারক, কৃপণ, ঠক ও নাদান,
লভে এত ধন নেয়ামত দান ক্ষমা ও করুণা অফুরান, কেমনে হয় তারা বেঈমান ও নাফরমান ।
ইনসাফ নেই যার সে কেমন ইনসান,
দামী হয়েও কেন হলোনা দামী, রাখলোনা নিজের শ্রেষ্ঠ হবার মান,
জানি তাতে কোন কষ্ট নেই, হয়নাতোরে সামাণ্য ব্যয় বা কোন ক্ষতি হতে মহৎ, উদার ও মহান ।
দেখেদেখে কষ্ট পাই ও ভেবে অবাক হয়ে যাই হে প্রভু আমি,
মানুষ না হয়েও মানুষ নামের মানুষগুলি কেমনে এ সমাজে হয়রে ক্ষমতাবান ও দামী,
মাটির তৈয়ার ইনসান,
হতে পারে শ্রেষ্ঠ ও মহান ঐ বিশাল আকাশ সমান,
করে দেহমনে সমর্পণ, একটু করুণা সামাণ্য দান বিসর্জন ও তার গুণগান,
আগুনের ইবলিশের কাছে কভু না যেন হারে, লড়তে ও রাখিতে পারে মহাসৃষ্টির এক স্রষ্টার সম্মান ।
দাও ঐ সবারে,
তব মহান কুদরতে ও করুণায়ভরে,
নব ছাঁচে নতুনে গড়ে, যেন না যায় গহীন কুয়ায় পড়ে, দাও করে হেন শুদ্ধ শোধন, করো দান এমন শক্তি ও পণ ॥