পর্ব - ০১


এ আকিদা ও আখলাক যেন সবে পান,
লভে যেন হয় হেন লাভবান, কথায় ও কাজে নিত্য মহান,
ভরপুর করে দিতে ভরে এসেছে আবার ফিরে পূতপবিত্র মাহে রামাদান,
এ জমিন ও আসমান যাচে শান্তি-সুখ ও মরণে মুক্তি যত জ্বীন ও ইনসান ॥
রহমত ও বরকত যে যত চান,
যারা হবে বিশ্বাসী বিনয়ী কাতর মহারাজার মেহমান,
যার যত ইচ্ছে করে, বুক মন ও দুহাত ভরে, লভিতে তার সে দান,
মনের জানালা দুয়ার খুলে,
তৃতীয় নয়নের দেখা যেথা সকল জানার মূলে,
আকাশের ঐ দীপ্ত আলোয় সকল ভালোয় আলোকিত করে তুলে,
অসীম অফুরান নেয়ামত আর যার যত প্রয়োজন দরকার মংগল ও কল্যাণ ॥
এলো আবার ঘুরে,
শান্তি দিতে এক অশান্তপুরে,
আসে প্রতি আরবী বাংলা ইংরাজী বছরে,
বিশ্বাস বিনয় আর আস্থা ভক্তি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার ভুরে,
নতুন বারতা বয়ে, এসেছে ডালা ভরে লয়ে অন্তরের অন্তপুরে হে মাহে রমজান ॥
আমি করিতে চাই,
যদি থেমে যায় আর নাহি সুযোগ পাই,
গড়িতে নতুন জীবন ও করিতে ওরে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই,
চাহিলে মাগফেরাত, দয়াল খোদা করেনা মাহরুম ঐ দুটিহাত কখনও দেয়না ফিরাই,
তোমার খাস গোলাম আর আখেরী নবীর উম্মাত হবার যেজন লভে ঐ সে মহাসম্মান ॥
নতজানু হয়ে নতশিরে,
যত মিথ্যা মন্দ আর গুনার ভিরে,
দিও মোরে দমেদমে করিতে তব সেই গুণগান,
পাখীরা যেমন গাহে তব জয়গান সারাক্ষণ ধরে সারা নিশি দিনমান,
তাই হে প্রভু মহিম ও মহান, প্রকাশে গোপনে দিও করিতে পূঁজা ভরিয়া মম দেহ-মন ও পঞ্চ পরাণ ॥
এর নাম সিয়াম সাধনা,
আগামীতে কে পাবো আর কে পাবোনা,
নেই জানা, ঘর ভরা কত খাবার রয়েছে তবে আমি তা খাবনা,
দেহটা খেতে নাহি চায়,
যতই সে কষ্ট পায় ওরে নিদারুণ ক্ষুধায়,
তবু কেন মন করেছে এমন পণ, আমি খাবনা যাক প্রাণ যদি যায়,
মনের নাম মহাশয় যাহা সহায় তাহাই সয়, যা বলে যাহা চায় তা যেন কভু না হয় নাহি পায়,
মনেরে শাসন করা, নতুন আদলে নিজেরে গড়া, লৌহ কঠিন অটল অবিচল পাষাণ সে এক সফল মহাঅভিযান ॥


পর্ব - ০২


পাওয়া না পাওয়ার সুখেদুঃখে,
দুদিনের এই রঙ মাখানো ছবি আঁকা ধরনীর বুকে,
বারুদে ভরা শত লোভ ও মোহের তোপের মোখে,
বিনয়ী সংযমী হিসেবী ও বিশ্বাসী হয়ে,
সবকিছু সয়ে, মেনে লয়ে কাঁধে বুকে পিঠে ও শিরে বয়ে,
দিয়ে দাসখত করে অংগীকার,
করে স্বীকার বশ্যতা ও গোলামী এক খোদা ও এক বিধাতার,
রিপুর শাসন দমন, সে এক কঠোর প্রশিক্ষণ অধ্যায় দুষ্ট মন ও যত তার মন্দ বাসনার,
দিয়ে হরেক বিসর্জন করে অনেক কোরবান হয়েছি মুসলমান, না দেখে তারে এনে তার প্রতি ঈমান ॥    
ফ্রিজে ও টেবিলে কিবা রান্না ঘরে,
হরেক মজার কত খাবার আহা থরে থরে সাজানো রয়েছে পড়ে,
দেখেও দেখিনা চোখ ফিরাই,
পেট বলে অনেক ক্ষুধা কিছু খাবার খেতে চাই,
আমি তারে করি মানা, সেহরী খেয়েছি উঠে শেষ রাতে তাই,
ইচ্ছে করেনা মনেও ধরেনা এত খাবার যত মজাদার হোক যাই, কিছু্ই আমি তার নাহি খাই,
রোজার নিয়ত করেছি বলে, নিশ্চয় রয়েছি আমি তাদেরই দলে, যারা খোদার বিধান মেনে চলে হয়েছে সাচ্চা মুসলমান ॥
বিধাতার আযাবের ভয়,
জানা প্রভুর খাস গোলামের যেটুকু পরিচয়,
তার সন্তুষ্টি আর বিগলিত করুনার আশা ছাড়া আর কিছুতো নয়,
নিরাপদ নির্ভরতা ও ভালোবাসা করেছি যারে সমর্পন, এ জীবন ধনজন দেহমন আমার সবকিছু যার সবখান ॥
কাজে ও কথায়,
চলনে আচরণে ও অন্তরের বলায়,
চাঁদ দেখে তা একমাস সিয়ামের এ নিয়ম পালন করায়,
ঘুম হতে উঠা প্রভাত,
আর সে থেকে নিদ্রা গমনের রাত,
জন্ম থেকে মরণ, যখন হঠাৎ এসে যারে ধরে নিয়ে যায়,
জীবন চলায় ভালো হতে শিখায়,
সবাই যেন দেখেদেখে শিখে আর শত পরিখেও মানুষ হবার সুযোগ পায়,
না যেন কেউ ওরে শেষে,
পাশ না করে ফেরে পড়ে যায়রে ফেসে,
সবর, সংযম ও ত্যাগের এই মহান শিক্ষা, আজীবন দীক্ষা, আরজি, আকুতি ও হৃদয়ের আহবান ॥


পর্ব - ০৩


এ নহে জীবন শুধু ধন আর বিনোদন ভোগ সম্ভোগ,
সবকিছু বেশী বেশী পেতে, হবে সবার আগে বেশী করে খেতে সেও এক রোগ,
ঘরেঘরে সবাই আমরা পরের তরে,এই বাণী ও পাঠ করিতেই হবে এনে যোগ,
লোক দেখিয়ে নয়, গোপনেই সব করিতে হয়, বহুগুন পুণ্য নিদানে দীনজনে যত বেশী দান ॥
কমকম কথা বলা,
হোকনা একাই সোজা পথে চলা,
কম আহার ও কম নিদ্রা যাপন সে চেতনে সুফলা,
কে দিলো তারে হেন দীক্ষা,
কোথা পেলো মন যেথা বিজয় ও পূর্ণ সাধন হেন মহান শিক্ষা,
সুবোধ সুজন বেশী গবেষণ, নতুন সাঁচে ঢেলে গড়ে মানুষেরে করে উদার মহৎ ও মহান ॥
বেঁচে যাওয়া ঐ বাকীটা সময়,
ভালো কথা ভালো কাজ সেতো মন্দ কিছু নয়,
দোষ কি যদিরে তাতে ভালো ফলন হয় সামাণ্য কিছু টাকাও সাশ্রয়,
পেতে বিধাতার সবটুকু পরিচয় কিছুক্ষণ নাহয়, সে গভীর মগন চিন্তা ও গবেষণ ভাবনায় কাটান ॥
মজাদার মোগলাই খানা,
ঝলমল শাহী মহল ও নরম বিছানা,
দরদী হওয়া সামান্য ভাগ লওয়া কষ্ট বেদনা,
আপদে নিদানে যারা তাদের অনেক কিছু রয়েছে পাওনা,
যত অসহায় নিরুপায় কে কোথায় কেমন আছে বড়দের দায় সে খবর জানা,
এ ভুবন জীবন নহে শুধু আপনার তরে, দুদিনের এই ঘরে তাই ওরে রঙ মাখাতে মানা,
কেন করিব সবকিছু রঙীন, এমনতো নয় সৌখীন মসৃন চিকন কাপড় ওরে করিতেই হবে পরিধান ॥
কব্জি চূবিয়ে নাক ডুবিয়ে খাওয়া,
অনেক পেয়েও যেন কারো কারো হয়না পাওয়া,
কেন লোভ মোহ আর ভোগের নেশার জগতে হারিয়ে যাওয়া,
তারচে ভালো তার করুনার রোশনীর ঝিলের অতল তলে ডুবিয়ে নাওয়া,
সে কি বেশী ভালো নয় যদিরে এমন হয় হোকনা জীবন কমে, সকল দমে তারে কাছে পাওয়া,
খুঁজে লও কথা কও ক্ষণিকের হলেও তাদের সংগী আপন হও যারা অসহায় ও সর্বহারা বিধাতার মেহমান ॥
রলেও অন্তরালে হলেও সে নিরব,
আল্লাহ আমার সৃজন পালনকারী মহান দাতা ও রব,
ধনজন জীবন মরণ সুখশান্তি হারজিত জয়পরাজয় ও লাভক্ষতি সব,
মিটায় যার যা প্রয়োজন যে যাহা চায় তৃঞ্চা ও ক্ষুধা,
যতই গুনাহগার গোলামেরে তার করেনা পর ডোর হতে কভু করেনা জুদা,
ডাকিবে হৃদয়ে যখন ঈমান ও তার প্রেমের বান, দেখিবে জানিবে সে খোদ খোদা কতযে মেহেরবান ॥


পর্ব - ০৪


ঘরেতে রয়েছে যার,
এত টাকা ও অঢেল খাবার,
তবু সারাদিন কেন সে রহে অনাহার,
রয়েছে খোলা তার করুণার কতনা সহস্র দুয়ার,
একটাই পথ হতে হলে দরিয়া পার, হুকুম মানা জরুরী তার,
যাই হোক প্রথা ও বিধান, যেজন তা করেছে পালন হয়েছে প্রিয় তাবেদার,
মাটির মানুষ হুকুম মেনে বিধাতার, হয়েছে সৃষ্টির সেরা ও দরবারে তার অতিব মূল্যবান ॥
নহে রিয়া,
মানিতে হবে শর’ইয়া,
মহাজন চুপকরে রয়েছে অন্তরে বসিয়া,
দেখিয়া জানিয়া শুনিয়া বুঝিয়া রাখিছে সব বালামে লেখিয়া,
করছে আমল করিছে তালীম ও তামিল তার ভয়ে তারে না দেখিয়া শুধু ভালোবাসিয়া,  
এ শুধু উপবাস থাকা নয়,
না যেন হয় তার নেয়ামতের কোন অপচয়,
কেউ বেশী খায় কেউ সামাণ্য নাহি পায় কেউ দেখি অনাহারি রয়,
কারোকারো ঢের উপচে পড়া পূরো একসের, বারমাসে তেরোমজা কেনযে এমন হয়,
হতে আসল মানুষ খাটি মুসলমান, করে তার মন জয় পেতে মহা প্রতিদান এ রমযান বিধাতার ফরমান ॥
দোষ নেই কোন মানা রাতভর করো পানাহার,
হয়তো ভেবেছেন খোদা ধনীদের সবারে তার,
দিবেন ক্ষুধার কষ্ট অন্ততঃ বছরে শুধু একবার,
তারা যেন টের পায়, মনে রাখে ভুলে নাহি যায়, গরীবের দুঃক্ষটা একটু বুঝানো দরকার,
অনাহারের ক্ষুধার জ্বালাযে কত,
অনুভবে চেতনায় যেন তারা বুঝে তা ঠিক তাদেরই মত,
এই সিয়াম পালনে সবার,
খুলিবে সবার হয়তো মনের সকল বন্ধ জানালা দুয়ার,
কাজ নেই হাতে জানেনা তারা কি খাবে রাতে, মাথায় ঋন কদিন ঘরে অন্ন ছিলনা যার,
আলো আর ভালোয় করিবে জয় ভরিবে ঘর দূর হবে অন্ধকার, হবে অনেক গলদ ও গুনার ক্ষমা ও অবসান ॥


পর্ব - ০৫


কবুল হবে মুনাজাত,
পাবেই পাবে মাগফিরাত ও পাবে নাজাত,
পাবে মহা শান্তি সুখের অবাধ আরাম ও বিনোদনের ঐ মহা জান্নাত,
বিপরীত লিংগ ভরপুর যৌবন,
আকুল করা রুপ আর রসে ভরা হবে ঐ দুইজন,
সারা দেহ সব অংগ মাখানো রবে নানা রংগ করিবে তারা নাঁচন ও মাতন,
হবেনা কভু ঐ সে মদির নেশা ভংগ, নেই বাধা কিবা মানা সে মিলন করিবে না কভু কেউ দরশন,
ভোগবিলাস হর্ষ ও বিনোদন,
শোভা ও সৌরভে আশপাশ হয়ে রবে মাত পাখীদের মধুর কুজন,
বিধাতার অংগীকার,
দিবেন তার মহা পুরস্কার,
আখেরাতে আপন হাতে তার, করিবেন শত সংগী সমেত বিশাল ঐ বেহেস্ত প্রদান ॥
যারা অতি সাধারন স্বচ্ছল ও ধনবান,
এই মাসেই নাযিল করেছিলেন কুরআন,
সিয়াম পালন করো জগতের যত মুসলমান,
মানুষের বিজয় ও মুক্তির লাগি বিধাতার করুনার দান,
আবু হকে বলে, পেতে হলে আমার ঐ সকল কথার প্রমাণ,
পাবে শুধু ঐ ভাগ্যবান রয়েছে যাদের অটল অবিচল সাচ্চা ঈমান,
মাফ নাই করিতেই হবে নাহলে নিদানে পড়বে সবে, ফিৎরা যাকাত ঠিকমত প্রদান,
দেখোনা তাতে ভাই,
কোন ভুল কি মিথ্যামন্দ নাই,
যাদের চক্ষু নাই তবু করে শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই,
মুক্তির বাণী চির শান্তিসুখের ঠাই বিশ্বজোড়া যার কোন তুলনা নাই,
আপনি জানিতে ও সবারে দিতে জানান, হতে আসল মানুষ ও খাটি মুসলমান খুলে পাঠ করো কুরআন ॥
এ সেই মহান বাণী,
এনেছে ধরে দূর হতে সবারে টানি,
মহানবীর সোহাগ দরদী সংগ পায়,
চিরসত্য বাণীর ঐ সে যাদুর মধুর পরশ ছোয়ায়,
নূরানী বদন ও মধুর বচন একবার লেগেছে যার চোখ কান বক্ষ ও দেমাগে গায়,
শুনেছি যেকথা তাহা মিথ্যে নয়,
ইতিহাসে ঐ বিজয় গাঁথা সরবে গৌরবে আজও ধ্বনিত হয়,
মানুষ নামের কত অমানুষ পশু হয়েছে মুসলমান,
হয়েছে আসল মানুষ দিয়েছে যারা জিন্দা কবর নিজ সন্তান, এমন সব নিষ্ঠুর বর্বর ও পাষাণ ॥