পর্ব-০১


এসো লিখি কার কি আছে আর, কার কি নাই কি প্রয়োজন ।
নাই বলে কোন কষ্ট নাই,
আজ যাহা নাই নিশ্চয় কাল হবে তাই,
যাদের হাত নাই, পা নাই, চোখ নাই সেদিকে তাকাই,
যা পেয়েছ যেটুকু আছে তোমার কাছে তার লাগিইতো ধন্য তব এ জীবন ।
ভাত নাই কাপড় নাই,
শীতে-বর্ষায় মাথা গোঁজার ঠাই,
থাকার মত একটা ঘর কিবা ভিটাটাও নাই,
আহা কত মানুষ,
হরষে উড়ায় রঙের ফানুস,
হতে পারে আফসোস কষ্ট তাই,
পাইবা নাপাই ওরে তাতে কারো কোন দোষ নাই,
নাই বলে যদি রাজার কাছে বারবার মম দুহাত পেতে কাতরে চাই,
নিজেও আকাশে উড়ে, বেড়ায় বিশ্বটা ঘুরে আর অজানা কত ঘরে মানুষ মরে চিকিৎসা না পাই,
আর তা না’ও যদি হয়, মন খারাপের নেই কোন কারণ ।
রয়েছে যেটুকু তোমার,
যদি দাতা বিধাতায় কভু ওরে মূল্য চাহে তার,
যা আছে তোমার তার একটা হিসাব কর,
দরবারে তার একটু শোকর করে হও তুমি আরও বড়,
যার সম্পদ দান সে যদিরে ফিরিয়ে নিতে চান, বলো কে তবে তা রাখিবে ঠেকায়, করবে কি তখন ।
আহারে আজও বাসনা চাহিদা কত,
কভু ভরেনা লোকের মন এ জগতে যত,
ওরে ভাই হয়নাতো জীবন কভু কারো মনের মত,
দৌড় ঝাপ লম্ফ কত,
পেরেশানি তাড়না ও রণ আর রণ অবিরাম অবিরত,
এমনি করে, হঠাৎ ওরে একদিন লয়ে মাথাভারী দায়-ঋন আর শত আশা অপূরণ ।
অ মানুষ, চেনাজানা ও শিখার নাই শেষ,
সকল আলো ও ভালোর বাণী ও পাঠের সবটুকু মংগল ও কল্যাণ রেশ,
বিত্তশালী ক্ষমতাবান পন্ডিত ও বিদ্যান জানোকি এ জীবন কিছুক্ষণ যেন এক নিমেষ,
কিসের মানুষ কেমনে হবে সৃষ্টির সেরা, মন্দ আর ভুলেতে ঘেরা অজ্ঞতা লয়ে হলে নিরুদ্দেশ,
খুঁজে নাও বিশ্বজোড়া পাঠশালাটার খোলা যার সব জানালা দুয়ার, কে বলেছে তোমার এ বাড়ীঘর এই দেশ,
এসো তাকিয়ে ভালো করে একবার,
তৃতীয় নয়নটা যার অন্তরালে সারাক্ষণ ছটফট হাহাকার,
না থেকে আর ভোগেতে ভুলে, সুখ আরামের দোলনায় দুলে, দেখিরে খুলে রয়েছে যার অচেতন ।


পর্ব-০২


কেউ চাহে শিখরে উঠার সাফল্যের সিড়ি,
কেউ চাহে কেউ চাহেনা শীতল পাটি ও চন্দন কাঠের পিড়ি,
সুন্দরী বউ, হ্যান্ডসাম স্বামী,
কেউ বাড়ীগাড়ী সাজানো ফ্লাট ও ফার্নিচার দামী,
আরও সুখ-আরাম ঝরাতে না হয় ঘাম, এমন একটা সোনালী জীবন পেতে চাই আমি,
সে কি আছে ধারণায়,
কি দিয়েছি আমি কবে কারে কিবা আমার দায়,
চেয়ে আছে কেবা আমার পানে, কেজানে কোন সে গোপন আশায়,
কেবলই বসে হিসাব কষে আর পেতে চায়, নেই প্রয়োজন তবু কেউ চাহে আরও অর্থ-বিত্ত ধন ।
হরেক স্বপ্ন আশা, মেঘের দেশে বানায় সুখের বাসা রঙীন,
কেউ পায় কেউ পায়না, জীবন তবু থেমে যায়না, কোনমতে কেটে যায় দিন,
কজনে হায় সে খবর রাখে আর পায়, দিনেদিনে অজানায় কার বাড়িছে রাজার মাথাভারী ঋন,
অনেক টাকা অনেক সুখ, সেতো এক মনের রোগ তবু চাই আরও বেশী ভোগবিলাস ও বিনোদন ।
কেউ খুঁজে শুধু রুপ,
কারো সুখদুঃখের নেই কোন বালাই বিকার একেবারে চুপ,
এত টাকা ধন সুখ ও ভোগবিনোদন, কারো কাছে সম যেন আপদ ও গুনাহের গহীন আঁধার কূপ,
কেউ করে টাকা টাকা আর টাকা,
এই টাকাই নাকি ফিরাবে দিন আনিবে সুখ ঘুরাবে ভাগ্যের চাঁকা,
কেউ বিদ্যা কেউ ধন, কেউ তা নহে চাহে শুধু চোখ রাঙিয়ে ও বাহুবলে পেয়ে যাবে পার, এমন একটা ক্ষমতার উচ্চ আসন ।  
এ জীবনটারে ভালো করে জানতে,
তৃতীয় নয়নটা খুলে গিয়েছিলাম তাই ঘুরে বেড়াতে,
কাছে ও দূরে লোকালয় ছেড়ে চোখ যায় এ দেশ ও মনটার সীমানার প্রান্তে,
দূর্গন্ধময় বস্তি ও ঝলমলে প্রাসাদে,
কার জীবন ফাঁকি সোনার খাঁচায় নাকি বিষাদময় কোন ফাঁদে,
দিবালোকে দেখতে মন ভরে মনের চোখে, জনেজনে কত রঙে কেমনে বিধাতায় সাজালো জীবন ।
হন্নে হয়ে কেউ খুঁজে ফিরে সুখ,
নিরব হাহাকার তার লাগি যার শূন্য যেন বুক,
সুখ তা থাকে কোথায় বা কোথা পাওয়া যায়, দাম কত তার কিবা আর দেখতে কেমন ।
সুখ-শান্তি আনন্দ খুশী কিছু নেই,
কারো বিরস জীবন, থেকেও অঢেল ধন যেন সেই,
একটু হাসি সামাণ্য ভালোবাসা, সোনালী স্বপ্ন আশা নেই যেন কোন কিছুতেই,
টানাপোড়নের সংসার তবেকি কেড়ে নিয়েছে সব তার, দারুণ ঐ অভাব আর অনটন ।


পর্ব-০৩


শুধু গোজামিল আর অভিনয়,
সব দেখে সব জানে সব বুঝে, তবু কম কথা কয়,
দেখি নিরবে চুপিসারে, বলেনা কিছুই কারে, শুধু হজম করে ও সব সয়,
ফুটেছে ফুল একটা দারুণ ঐ মহাগুন ও পরিচয়, এ কোন সাধনার সাধন, কেমনে সে করেছে অর্জন ।
কেউ চায় শুধু সুনাম,
কেউ এ সমাজ ও মানুষের কাছে বেশী দাম,
ওরে বোকা মন,
জীবন মানেতো হঠাৎ মরণ,
কেউ জানেনা করিতে প্রাণ হরণ আসিবে কখন,
সে এক অলিখিত অদেখা সমন, আসিতে পারে হাওয়ায় ভাসিতে ভাসিতে যখন তখন ।
স্বামী ও স্ত্রী কেউ যেন কারো নয়,
এ কেমন জীবন ওরে তা কেমন করে হয়,
আসল নকল কেমনে তারা ঐ জীবনটারে করেছে জয়,
এক বিছানায় শোয়, প্রাতে স্নান করিতে হয়, প্রায়ই হয় তাদের দেহটার মিলন ।
মনের মত মন না হলে,
আবু হকে বারবার সে কথাই বলে,
তুষের অনলের মতন অদেখা দহণ জ্বালাতন, জীবন বিফলে,
থেমে নেই, তবু চলছে জীবন,
কেউ পায়নি খুঁজে, আজও কারো মন,
কারেও নাহি কহে, দুজনেই সহে, কেউ কারো নহে প্রিয়জন হয়নি বন্ধু আপন ।  
নিরব নিথর ও অসার,
সশ্রম কয়েদী তারা এক বোবা জেলখানার,
ছিলযে দায় হয়নি আদায়, বানানো একটা মহাবীজতলা ও খামার,
লাগি এ মাটির জগতটার,
সকলের সব মংগল কল্যাণ ও ভালো আর,
ক্ষেতি চাষ লাভের বেঁচাকেনার বসবাস, আকাশের ঐ আলোটার,
একজন রাজার,
বিশাল পরিবার, আর হাজার,
লক্ষকোটি গোলাম দাস রয়েছে তার,
কি লয়ে আহারে, কোন সে হরষে বাহারে, সারাক্ষণ আজীবন করিছে তারা মাতন ।
ঠেলাগাড়ীটা যেন অতি বোঝাই মালের ভার,
বুঝি পারেনা তাই, চলতে চাহেনা কিছুতেই যেন আর,
দিনভর প্রাণপণ শুধু ঠেলা আর ঠেলা,
ঠেলতে ঠেলতে যেন প্রাণ যায় যায়, তা নাহলেও ঘাম ঝরায় ফুরায়যে বেলা,
খেয়ে একটা রুটি আর চা এক পেয়ালা,
কেউ বেঁচে ও কেউবা কিনে, কেউ লাভে কেউবা ঋনে, কেউ করে দিনভর শুধু চরকি খেলা,
কারো বোঝা মাথে কেউ খালি হাতে, কেউ দিনে দিনে কেউবা রাতে ফিরে আসে হতে মেলা,
বাহিরে যার কোন কষ্ট নাই, ওরে মন তুই,
কাটালি বেশ সুখের জীবন, নিজেরে গহীনে লুকিয়ে থুই,  
প্রকাশে অতি অল্প, অজানায় গোপনে যার সহস্র নাবলা গল্প, উজানে-ভাটিতে চলছে এমন কত জীবন ।


পর্ব-০৪


এইতো জীবন ওরে এইতো জীবন,
কাঁচা বয়স, যেন রসে ঠাসা টসটস, টানটান যৌবন,
কেউ বলে ওরে না, নাম যশ বিদ্যা ও ধন নেই মোর তার কিছু প্রয়োজন,
এমন বন্ধু একজন,
জীবনে বড় বেশী হয় প্রয়োজন,
হরষে বিষাদে গল্পে, হয় হোক সবকিছু অল্পে ঢের যেন পূরো একসের ঐ বিনোদন,  
ছেড়ে যাবেনা, পাশে থেকে দিবে বুদ্ধি সাহস-সান্তনা, আপদ ও নিদান আসিবে যখন,
শুধু চাহে ও খুঁজে বেড়ায় নাম পরিচয় আর, ঠিকানা তার আহা রয়েছে যার একটা পরম সোহাগী দরদী মন ।
সবাই পড়ে রয়েছে মুখোশ,
চাপা আক্রোশ কত অভিযোগ রোশ,
বিভ্রান্ত ও বিব্রত, কে বলিবে ওরে কার দোষ,
সবকিছু ঢের আছে কোনকিছু নহে কম,
সব থেকেও যেন নিতে পারেনা আহারে স্বস্তি ও শান্তির দম,
কহিতে পারেনা কারে যদিরে কষ্ট বাড়ে, শেষে লুচিটা হারায় পেতে চেয়ে চমচম,
বাহিরে সবকিছু ঠকঠাক, উপরে দেওয়া বাহারি ঢাক, অসহায় নির্বাক সাধক সুধীজন এ সমাজে অগনন ।
এমন এক সদা খোলা দুয়ার,
কে আছে এমন, বলো কিবা আর সে সাধ্য আছে কার,
এ সমাজে গেলে পাবে ঠাই, কোন পক্ষপাত নাই, করিবে সত্য-সঠিক ন্যায় বিচার,
একেবারে ঝামেলাহীন,
নতুন একটা অন্য জীবন স্বাধীন,
নাই কোন অপবাদ দূর্ব্যবহার কিবা কোন দায়-ঋন,
মনে মনে মনভুবনে গোপনে খুঁজে বেড়াই, কোথা পাই ঐ ভালোমানুষ একজন,
যে কোলে মাথা রেখে চুপটি করে চোখ বুজে থেকে সুখের দোলনায় দোলে সুখ পাই দেহমনে নিজেরে করে সমর্পন,
আছেকি এ জগতে এমন, ধন পেলে মন মিলেনা মন পেলে ধন, বন্ধু কিবা ভাই আশ্রম ও ঠাই নিরাপদ আবাসন ।
এমন একটা কঠিন সময়,
কারো কারো জীবনে আসে হেন পরাজয়,
মন বলে যখন, আর যায়না সহন, এবার কিছু করিতে হয়,
এ জীবন যেমনই আনন্দ ও বিষাদ তেমনই নাপাওয়া ঠাই ও ঠিকানা দারুণ রহস্যময়,
দস্যু হয়ে লাঠি দিয়ে ভাংবে পা,
কত মানুষ পশুর রয়েছে ধারালো বর্শা কুড়াল ও দা,
ঘটাবে রক্তপাত, যার লম্বাহাত তারই বাজিমাত শিরে মেরে এক প্রচন্ড ঘা,
বলবে ভর্ৎসনা করে যা এবার যেখানে খুশী যা, তাই বলেকি ঐ অপরাধীরা ওরে পেয়ে যাবে ছাড়া,
সময় হবে যখন, এসে সাগরের বাধভাংগা জলোচ্ছাস ও প্লাবণ, সব অপরাধের করিবে মান ধন ও প্রাণ হরণ ।  


পর্ব-০৫


সে ই সেরা ও উত্তম,
যার স্বপ্ন আশা আর চাওয়া কম,
অভিযোগ অভিমান কলরব যেন তার হয় সরম,
দেখেছি কোন কাজে, পড়ে ধনীদের মাঝে, বন্ধ হয়ে আসে কেন দম,
আমারে সে বলে, ওরে বেশী ধন হলে, কারো কারো তা হয় নাকি কাল আপদ আর যম,
নির্বিকার হরদম, জগতের শ্রেষ্ঠ সুখী জন, উদার ও মহত মন, সম কেহ আর নাই তার মতন ।
নাই, নাই, কতকিছু নাই,
একথা ভেবে কেউ যেন ওরে কষ্ট না পাই,
হতাশায় হাতপা গুটায়, আশা আর চেষ্টা হতে সরেও না যাই,
ভরপূর আছে যার হয়ে যায় শূন্য, বিজন বিরান ভূম ধনে হয় পরিপূর্ণ, আজীবন দেখেছি কত তাই,
সবকিছু নাইযে সবার,
তা হয়না থাকেনা, এ বিধান বিধাতার,
দৌড়ে কেউ জেতে আবার কারোবা হয়যে হার,
সবাই সবকিছু পায়না তাতে কি খোলা আছেতো দুয়ার,
মহারাজা মহান দাতার, সেতো বলেনি এমন যে দেবেনা আর,
ওরে শেষ নাই চেষ্টা আশা ও সম্ভাবনার, অসীম অপার তার ঐ ভান্ডার,
এসো তার কাছে সব আছে যাই আবার,
না দিলেও চাহিলে খুশী হয়, তাই ঐ রাজার কাছে চাই বারবার,
এইতো ওরে এ জীবন ও ভুবন,
কারো কাছে কম কারো বেশী তার নেয়ামত ও সুখ-ধন,
তাই বলে দেবেনা হবেনা নেই সে কারণ, প্রভুতো কারেও তার কাছে আর চাহিতে কভু করেনি বারণ ।
বাহিরে সাজানো নানা বাহারে,
বন্দি হয়ে মনে গোপন কষ্ট লয়ে সোনালী এক কারাগারে,
তবে এসো সব ফেলে তাই,
এত বড় দুনিয়া যার সুখের অভাব নাই,
অভাগী ও অভাজন যত পোড়ামন দুঃখী বোনভাই,
যার সব আছে তবে শুধু সুখ নাই,
মিলে এমন শত দুঃখীজন আমরা সবাই,
বহু দূর বিজনে আমাজান বনে পাতার কুটিরে একটু সুখের নতুন জীবন গড়াই,
নীল আর সবুজে মিলে,
সবার সব কষ্টগুলিরে ঝাপটে ধরে খাবে গিলে,
সবে যেন বুকভরে পাই দম, এমন একখান আশ্রম ও নিরাপদ সুখের ঠাই গড়ে তুলি করি উদ্ভোধন ।