পর্ব - ০১


সুখ সুখ করে কান্দে, অবুঝ বোঁকা মন ॥
পড়েছে কেজানে কোন ঘেরে বা ফেরের ফান্দে,
কোন সে ঘোর আরকি হবেনা ভোর বাধা পড়েছে চান্দে,
ক্ষনে ফিরে যায়, ক্ষনে আসে ফের চায়, সে সুন্দর একটা ঘর বান্ধে,
এই ঘরে এই বাহিরে, কি যেন সারাক্ষণ খুঁজে ফিরে, ছটফট চঞ্চল পেরেশান এক আন্ধে,
কোন বেদনে সে, কোন কারণে নিমেষে অচিন দেশে করে পলায়ন ॥
ওরে সুখ কাহারে বলে,
কে সুখী কে সফল আর কে বিফলে,
অজানায় কার বুক ভেসে যায় গোপন চুখের জলে,
আপন ঘরে মাটির ভিটায়, অনাদরে হায় গড়াগড়ি যায়, চরণ তলে,
আহা কোন সে অভাগায়, তা দেখতে নাহি পায়, সেকি নাইকিরে বলে তার সে নয়ন ॥
ঘর ফেলে আহা এসে বাহিরে,
হন্নে হয়ে খুঁজে ফিরে, দেখে নাহিরে,
লোকালয়ে বন্দরে ব্যস্ত লাখো মানুষের ভিরে,
গহীন বনে প্রান্তহীন বিজন বালুচর এমন মরা নদীর তীরে,
ঘুরেঘুরে হায় বেলা বয়ে যায়, করে সারাক্ষণ ঐ মোহ বাসনার অন্বেষণ ॥
কোন দেশে কোথায়,
কোন বাজারে তা পাওয়া যায়,
দাম কত আর কিবা তার ঐ বাহার মন চায়,
একবার ধরতে পারলে শিকল দিতাম তার রাঙা দুটি পায়,
ছটফট আনচান হাহুতাষ,
প্রতিদিনই বাড়ে ঋন যেন বারোমাস,
ওরে কোথায় তর বসত ঘর কোথায়ইবা করিস বসবাস,
কার সনে তোর হয় পিরিতী,
ওরে কিবা তোর সে রীতিনীতি,
কেনরে তোর এত দাম, এত অহংকার,
কারো সংগে নেই কোন আলাপ পরিচয় আবার,
হোস কেমনে দেখি যেন কারোবা দোসর ও কারো গোলাম দাস,
অ সুখরে, আমার বড় জানতে আর দেখতে ইচ্ছে করে, নাজানি তুই ওরে দেখতে কেমন ॥
আমার মাটির অন্তরের ভিতর,
তোরে বাইন্ধা দেবো একটা সোনার খাঁচাঘর,
মোর সকল কষ্ট আর দুঃক্ষ শোকের সংগী হইয়া থাকবি জনম ভর,
যুগযুগ মহাকাল তুই ও আমি এই দু্ইজন, দরদী আপন বন্ধু হবো মোরা কাছে কাছে রবো আজীবন ॥


পর্ব - ০২


কেউ বলে তারে সুখ পাখী,
দুধকলা সাজিয়ে আহা যেন তারে কত ডাকাডাকি,
চোখে কত সোনালী স্বপন ভুবন রঙীন,
অজানায় অদেখায় চাপিছে মাথায় এক বিশাল বড় ঋন,
পরম সোহাগ ভরে তার, কেউবা তার নাম দিয়েছে আবার সোনার হরিণ,
দেখেছে কি আসলে কেউ কোনদিন, করেছে তার ঐ চাঁদমোখখানা দরশন ॥
আসে যায় কত দূরন্ত বৈশাখ শীত বরষা,
রেখো ঝাপটে ধরে যেন না যায় মরে ঐটুকু আশা,
আর কিছু নাহি চাই, শুধু একটু সুখ আর একবিন্দু ভালবাসা,
করে মাল্যদান করিব বরণ, তারে আমি দিয়ে চরণে তার শত ফুলদল চন্দন ॥
দেখেছি এমন কত জন অগনন পরিবার,
সুখ সুখ করে বুকের ভিতরে অস্ফুট হাহাকার,
সুখের লাগি সহস্র রজনী জাগি গড়েছে ধনের পাহাড়,
বিদ্যান পন্ডিতগণ অনেক ধন ও লম্বা হাত শুধু চক্ষু নাই যার,
জল নেই চোখে দেখেনা বুঝেনা লোকে কত রাজপ্রাসাদ ছারখার,
শুধু বুক ভেসে যায়, তবু কারেও তা বলা দায়, এমন নিরব অসহায় ক্রন্দন ॥
সাগরে বিলীন হেন সহস্র খানা,
আলো ঝলমল ঐ সে প্রাসাদ লোকের না জানা,
ছিল বিষাদে ভরা ফাঁদ রঙ মাখা ছবি আঁকা সাজানো এক জেলখানা,
বিধাতার রোশে ভরা আসমানী বাজ যেথা একদা আচমকা দিয়েছিল প্রবল র্নিমম হানা ।
অপচয় একরাশ,
বিনোদন আর ভোগবিলাস,
ছিলনা বিধাতার ভয় নির্ভরতা ও বিশ্বাস,
দাস হয়েও কত রাজাগিরি মজলুম অসহায় জনতার ত্রাস,
জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সুখশান্তি ও প্রাণ হনন রাজ্য ও প্রজার সর্বনাশ,
ওরে মানুষ, মোটেও ভাল নয় যাদের আছে তারা করেনা পাশ ঐ নাই নাই আর হাহাকার ও হাহুতাশ,
ওরে মন সেইতো সুখ অমূল্য ধন, যেটুকু আর যা আছে তোমার কাছে আজিকে এখন ॥  
এক ছাদের তলে বসবাস স্ত্রী ও সন্তান,
ঔরস ও গর্ভজাত একে অপরের দেহটার নাকি অর্ধখান,
বলিতে পারেনা কেহ, কেন এ মাটির দেহ লভেছে হেন কঠিন পাষান পরান ।
কেন এমন, এত প্রিয় এত আপন তবু যেন হায় কেউ কারোনা,
সব মিথ্যে ভূল, নিশ্চয় দিতে হয় তার মাসুল তাই সে পথটা এবার ছাড়োনা,
করে সুখ সুখ যেন খাক হয়ে আছে বুক, সে এক মনের দারুণ অসুখ তুমি কি তারে সারাতে পারোনা,
সেইতো সুখ ওরে যেমন যেটুক আছে তোমার কাছে, তা নিয়ে তাই বেশী ভাবনা বাসনা করিতে মানা,  
সেও কি কম কষ্ট, ছোট্ট এ জীবনটা নষ্ট, গাড়ীটাও পথভ্রষ্ট তাই বুঝিরে এত যাতনা পরাজয় ও তাড়না,
থেকেও এত বিত্তধন কেন এ ঘর এ সংসার এ জীবন মনেহয় যেন আজ এক পোড়াবন ॥


পর্ব - ০৩


অফুরন অভাব আর অনটন,
বিদ্যা নাই, ছিল বাবার অতি সামান্য ধন,
কামাই শুধু ডানহাত অনেকগুলো পাত আর আমি একজন,
দেখে চারপাশে আলো ঝলমল শত সুখ আর আয়েসের ঢেউ ও আলোড়ন,
কি আছে মোর আর কি নাই,
ঐ নাইটুকু বলো আমি কেমনে কোথা পাই,
তা কেমনে হয় সেকি মানুষের পরিচয় তার লাগি শুধু ঘূরে বেড়াই,
আমি পাগল হই আর সুখসুখ করে অসুখী রই, লোকের কাছে যাই তবে কি সাজে ঐ শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই,
করে দেখো ভাবনা ওরে অসুখী মন আসলে কি আমি চাই,
সেকি সঠিক প্রয়োজন নাকি পাগল মন ও লোভী নয়নের অকারণ তাড়না ও মোহ আকর্ষণ ॥  
আমারও চাহিত মন,
শাহী পোষাক ও মজার শাহী ভোজন,
ছিলনা বলে তাই কেউ করে নাই কভু জেয়াফতে নিমন্ত্রণ,
সবাই কি তা পারে, করে সে লুট চুরি ডাকাতি কিবা আত্বসাৎ ও হরণ,
আজীবন ছিল শত প্রয়োজন তথা ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম তার আয় উর্পাজন,
মোখ ঢাকিলে নাহি পেতো পায়, টেনে আনতে ছিড়ে যায়, সে চাদরখানা যেন ছিল ঠিক এমন,
পায়ের উপরে পা তুলে বসে তা ঝুলিয়ে করিবে ভোগ পরের ধন সবার কি হয় এমন সরস কপাল সয় ঐ অনল সিংহাসন ॥  
চোখ থেকেও যেজন আজও রয়েছে কানা,
বেশী ধন বেশী ভোগবিনোদন ই বুঝি জীবন এ ভুল ধারনা,
সব হয়েছে তবু হয়নি যার এ জীবনটারে আর বিধাতারে সামান্য চেনাজানা,
আলোর মেলা চার দিগন্ত খোলা কোন সে নেশায় ভোলা, জানিনা কেন তবু পথ খুঁজে তারা পায়না,
কেজানে কার কাছে সুখ কেমন বা কোন ধরন, কার হয়েছে ভাই কার হয় নাই তার ঐ সাধনার সাধন ॥
ওরে মন সুখ সেতো মনের ব্যপার,
এ জগতে তার শত রঙ, কত রুপ ও কতনা বাহার,
কারো কাছে শুধু পেটভরে খানা ও নিদ্রা যাপন, নেই কোন হাহাকার,
কারো কাছে বেশী টাকা-ধন, কারো কাছে ভোগ বিনোদন, আরও চাই আরও দরকার,
মনটারে প্রশ্ন করে জেনে লও দেখো কি বলে মন,খুলে তার বন্ধ সকল জানালা দুয়ার,
এই মন যার দেহটার কাছে মেনেছে হার, মেনেছে শৃংখল প্রশান্ত বাঁধন, সেইতো সেরা সুখীজন আর ধন্য তার জীবন ॥