আমি একজন বানভাসী ॥
হতভাগ্য এমন,
নাই মাথা গোঁজার ঠাই কোন বিত্তবেসাত ধন,
জোয়ার ভাটার টানে,
কখন কেজানে কোন সুদূরে ভাটিতে উজানে,
ভেসে ভেসে কত অচিন দেশে আমি যাই আর আসি ॥
দোষ কি তবু,
পেতাম যদি কোন দরদী বন্ধু হবু,
ভালো মানূষ একজন, আর আমরা দুজন, সব মাথা পেতে লয় হতাম নাহয় নিয়তির দাসদাসী ॥
কত মানূষ আছে কত দুঃখে,
একটু সুখের দারুন তৃষা তাদের বুকে,
পড়ে বিষম ফাঁদে গুমরে কাঁদে, অনেক সাধের বাসনাগুলি ছিটকে পড়ে বাঁধন খুলি ধুকে ধুকে,
উঠানভরা গড়াগড়ি করা উপচে পড়া জোছনা কেন গভীর রাতে ঘূম কেড়ে নেয় আর জ্বালা দেয় আমার চুখে,
দুহাত বাড়ায় আমার গলায় ঝাপটে ধরে কে যেন হায় পড়াতে চায় মরন ফাঁসী ॥
আমার সাধনার সামে,
নদীর ধারে গহীন রাতে বসে ভিন গেরামে,
পিতৃ ধামে মধ্যরাতে কোন তাড়নায় শিয়রের বালিশখানা ভিজে ঘামে,
আদরের নামে হায়, বাঁশীর শুরে ঘুরেঘুরে কি যেন বলিতে চায়, আপন মনে বাজায় করুন বিষাদ বাঁশী ॥
ঐ সে যাদুর বাঁশরী,
মরমে আঘাত হানে যদিও জানে দুহাতে টানে কলিজার বটূ ধরি,
বুঝিনা আমি কি করি, ছটফট গড়াগড়ি, আহা বারবার তন্দ্রা আমার দেয়যে নিমেশে নাশি ॥
কেমনে আহারে,
আমি বলি, বুঝাই তাহারে,
মজেনা ভূলেনা মম মন সাতরঙ বাহারে,
কোথাও পায়ের দাগ ছায়া কিবা ছবি চিহ্ন কিছু নাই,
তবু ঘাটে ঘাটে অচিন বাটে বারবার কোন মায়ায় টানে আমায় পিছন ফিরে চাই,  
প্রাণবন্ধুর মত, না দেখিলে হয় এ হৃদয় মর্মাহত, আমিযে তারে কত প্রতিনিয়ত ভালবাসি ॥
উঁচূ জাত প্রাচীরে,
সারাক্ষণ আমারে রেখেছে ধরে ঘিরে,
মন বলে সুখ নেই প্রাসাদে, আছে ছোট্ট পাতার নীড়ে,
চার দেয়ালে বন্দি হয়ে, দন্দ আর এলোমেলো কত মন্দ ভাবনার ভিড়ে,
বলিতে পারিনা কি যেন বলিতে চাই,
কেন ঘূম আসেনা জানিনা কি বেদনা এ বুক চিরে তা কেমনে দেখাই,
মন মন্দিরে বসে পূঁজার আসরে আমি ঘরে ও বাহিরে তার তরে হই উদাসী ॥
মোর যত স্বপ্ন আশা,
কলি ঝড়া এক বুক ভালবাসা,
নাবলা সুখবেদনার অপার কান্নাহাসা,
শীত বরষায় এ পঞ্চ পরাণ যারে পেতে চায়, আপদে নিদানে আসি দাড়াবে পাশাপাশি ॥
বীজ নেই হাল নেই,
কাস্তে নেই কেমনে নিড়ানি দেই,
বারমাসি ফসল ফলাই এই এক ফালি জমিতেই,
নাহি হারি নাহি ধারি তবু আশা আমি কভূ নাহি ছাড়ি কিছুতেই,
আশা আর কল্পনার শূন্যে প্রাসাদ বাড়ী,
বেলা কম মেলা দূর তাই এত পেরেশানি আর তড়িঘড়ি,
কেমনে হেথা যাবো দেবো পারি ধনজন সব ছাড়ি তরীহীন ঘাটে বসে ভাবনা কাতর এক বোঁকা চাষী ॥