সরল শ্রমিক বলে তোমরা আমায় কি ভাব?
সবি বুঝি আমি তোমাদের কারসাজি,
অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে অমানুষদের সোজা রাখি
বেকুব ভেবো না, আমি সকল কাজের কাজি।


ন্যায্য আদায়ে দুর্ভেদ্য আন্দোলন আমি যুগে যুগে করি
আমার পায়ে নতজানু হয় সুখে মরা বাবুজি,
অলংকার থেকে জুতা সেলাই সবি আমার হাতে হয়
অসহ্য পীড়ায় থেকেও কাজ করি রেখে জীবন বাজি।


আমার সুখে আমি মরি না, আমি নির্দ্বিধায় মরি
মাঝে মাঝে পরের ভীষণ শখের সুখ সাজাতে,
আমি আমার জন্য বাঁচিনা, পরের তরে বাঁচি
জীবন বাজি রেখে ডুবুরি সাজি, পরের জীবন বাঁচাতে।


সাধুজি দেখাইতে পার কোথায় আমার হাত নেই?
আপনার ঘরে-বাহিরে,চটি চটি মনুষত্বের বইয়ে,
চকচকে পোষাকে-আষাকে, আচার-অনুষ্ঠানে
ধার্মিকতার ভারে জোড়া খরম যে চেপে ধর পায়ে।


বড় বড় অট্রালিকা আমি তৈরি করি খুব যত্নে
আমি  থাকি মাটির সাথে মিশে ভঙ্গুর কুঁড়েঘরে,
আমার হাতে গড়া বহুরূপী বহু খাট-পালঙ্ক
হাতে আদর করি কেবল পাঠাতে হয় অন্য ঘরে।


নিমগরমে গা ভিজে যায় আমার জটিল কাজে
অসহ্য কটুক্তি-অবমাননা তবু ও শুনিতে হয় মুখে,
শীতের কবলে পড়ে সবাই থাকে চাদর মুড়িয়ে
কনকনে শীতে আমি থাকি মানুষের কাজে
তবুও অমানুষের দল আমায় দেখে বাঁকা চোখে।


আমি সাহসী-নির্ভীক, কাজে অক্লান্ত গর্বিত শ্রমিক
আমার শ্রমেই পৃথিবীর সব কাজ চলে,
সভ্যতা বদলের ইতিহাস আমার শ্রমের কাছেই ঋণী
শত-সহস্র পুরনো নিদর্শন এ কথাই বলে।