বয়সের ভারে ক্রমশ আটকে যাচ্ছি
        হারিয়ে ফেলছি মুক্ত জীবন,
দুষ্টামি গাছের আনন্দ ফুলে
        সাজে না আর মনের কানন।


গ্রীষ্মের তপ্ত রোদের বুকে
        রাখাল হওয়ার শখ হারিয়ে গেল,
গরমের জ্বালায় গোধূলি লগ্নে
        গা ধোয়ার আনন্দ অতীতেই রইল।


বর্ষার থৈ থৈ জলে নৌকায় চড়ে
        শাপলা-ঢ্যাপ-শালুক হয় না আর
বন্ধুজনে একসাথে কুড়ানো,
        কাদা মাখা হাটু জলে
        'কইয়া লো পুঁটি লো
        গাত্তা আইয়া ভর লো'
ছন্দ বলে মাছ ধরা চিরতরে হারালো।


শরতের নীলাভ আকাশের শুভ্র মেঘের দিনে
        কাশফুল ছোঁয়া হয় না বিকেল সাঝে,
লুকোচুরি খেলা কোথায় যেন গেল
        আসে না আর এখন দুষ্টুদের খোঁজে।


হেমন্তের নব ধানের ক্ষেতে ক্ষেতে
        ছুটে চলার মহানন্দ আসে না মুক্ত মনে,
বাড়ি-বাড়ি, মাঠে-মাঠে গরু দিয়ে
       ধান মাড়াইয়ের ধুম দেখব কি আর কে জানে।


শীতের মধ্য মাঠে খেসারি ডাল
        সিদ্ধ করে খাওয়া কেবলি মনে পড়া,
সকাল-সন্ধ্যায় আগুন পোহানোর ছলে
        চুরি করা হয় না মাঠের নাড়া।


বসন্তের দক্ষিণা বাতাসের স্পর্শে
        স্নিগ্ধতা ভিড় করে না ক্লান্ত প্রাণে,
খোলা মাঠে উড়ু উড়ু চলা
        হয় না আর গানে গানে।