চাঁদের কণা            
             অচিন্ত্য সরকার


প্রিয়তমাষু.....,  


                        কেমন আছো তোমরা ?হোয়াটস অ্যাপের ডিপিতে তোমার ছেলে কে দেখলাম।ছেলে তো নয়,যেন পূর্ণিমার চাঁদ থেকে সৃষ্ট ষষ্ঠির চন্দ্রকলা, দু'চোখে বিষ্ময় আর স্বপ্নের চলাফেরা। দূর আকাশে থাকা,চাঁদের আকর্ষণ তো প্রতিক্ষণ অনুভব করি। ইচ্ছা থাকলো একবার তার কণা কে আদর করে দেখবো চাঁদের ছোঁয়ায় কি যাদু আছে! তোমার অনুমতি না নিয়ে,ছবি টা ডিপি থেকে গ্যালারি তে রেখেছি,বারে বারে দেখি কবিতার প্ররণা পেতে। ও এক দিন আকাশের বিশালতা নিয়ে অগণ্য তারকা কে বুকে ধারণ করবে। ওকে খেয়াল রেখো,বুকের অমৃতে পরিপূর্ণ পুষ্টি দিও,ওটা ও ভাগ্যবানের একান্ত অধিকার। ও কিন্তু তোমার অনেকটা সময়ের দাবিদার।দেখো, কাজের অজুহাতে ওকেও যেন না বলোনা আবার।

শোনো,তুমি যদি আপত্তি না করো,তোমায় দু'টো বই পাঠাবো।হ্যাঁ,আমারই লেখা-একটা ছড়ার বই তোমার ছেলের জন্য,আর একটা তোমার তোমার জন্য কবিতার বই। পরিপূর্ণতার একঘেঁয়েমিপণায় যদি কখনও একটু সময় পাও, কিংবা সাংসারিক অপিহার্যতায় কখনও মনটা একটু উদাস হয়-কবিতা পোড়, বোঝার চেষ্টা করো বিরহের স্বরূপ- আর কিছু না হোক, তোমার সাহিত্যের ক্লাসে কাজে আসবে।জানি, হয়ত তুমি বলবে,তুমি মেঘদূত পড়েছো, বিরহী যক্ষের রক্তাক্ত হৃদয়ের পরিচয় পেয়েছো, তাই বিরহের স্বরূপ তোমার বিলক্ষণ জানা। সে কথা একশ ভাগ ঠিক,আমি অস্বীকার করছি না। তবু আমার কবিতাও পড়ো। মাটির ঘরের বিরহ কে পাবে, রাগ পাবে, অভিমান পাবে,পাবে ব্যর্থতার যন্ত্রণা, পড়শিদের ঈর্ষা আর কুমন্ত্রণা। একটা ক্লাসে তো নানা ধরণের ছাত্র ছাত্রী থাকে, কোরো না কারো চাহিদা মেটাতে তোমাকে নিশ্চয় সাহার্য্য করবে।কোনো কাজেও যদি না লাগে,তবুও বই এর তাকে কোথাও এক কোণে ফেলে রেখো।ধুলো জমে জমুক, সে তো আমার ভবিতব্য-তবু নিতে অস্বীকার করো না।


অসুবিধা আছে? বুঝেছি, তবে অন্তত তোমার চাঁদের কণার জন্য ছড়ার বই টা নিও। আমার প্রানের ছন্দে ওর প্রথম আধো আধো বোল, খুশিতে তোমারও হৃদয় মনে লাগাবে দোল। দূর আকাশের চাঁদ, তুমি ভালো থেকো, আমায় কবিতা দিও,আর চাঁদের কণাকেও ভালো রেখো।
                                        ইতি তোমার.....