হিরণ্যকশিপুর মুক্তি
অচিন্ত্য সরকার


বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তি ভাঙা হয়েছে
এ বড় লজ্জার কথা,তবে বিষ্ময়ের কি বড়?
না ভাই,অন্তত পক্ষে আমার তা মনে হয় না,
কেননা এমন ঘটনা,এমন কি এর চেয়ে আরও
অনেক গর্হিত ঘটনা এখানে ঘটে চলেছে
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণে-প্রয়োজনে,অপ্রয়োজনে।

না ভাই,আমি ছোট করে দেখছিনা,তবে
একবার সমাজের আরশিতে মুখ রাখো;
দেখবে প্রতিবিম্বিত হয়ে চলেছে কত বিচিত্র
ঘটনা,প্রতিদিন একের পর এক বিরামহীন।
সম্পত্তির লোভে গর্ভধারিণী মা কে হত্যা
করছে ছেলে মেয়ে,চাকরির আশায় বাবাকে
মারার জন্য সুপারি দেওয়া হচ্ছে,স্বামী-স্ত্রী
একে অপর কে হত্যা করছে,লালসা মত্ত
হয়ে, শিশু যোনি ছিন্ন করছে মানুষ রূপী
  উন্মত্ত হায়না-কত বলবো,কারো কি অজানা?


তাই এই মূর্তি ভাঙা নিয়ে তোমাদের এত
বিষ্ময় আর আবেগ দেখে,আমার কেমন
সন্দেহ হয়,এটা তোমাদের ভোট ভিক্ষার
কুমিরের কান্না নয় তো?আচ্ছা,ছাড়ো ওসব,
রাগ করোনা,আমাকে আবার বিরোধী বলে
উল্টে মেরোনা।তোমরা তো জানো,তোমারা
শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বলে যাদের বোঝাও,
আমিও সেই দলেই পড়ি,রেগে যাব না সে
যতই তোমারা মাথার উপর ঘোরাও ছড়ি।


তবে কি জানো,ক্ষমতা,লোভ,ঈর্ষা,লালসা
আর প্রতিহিংসায় মত্ত হয়ে তোমারা তো
ইতিহাস ভুলতে বসেছো।আচ্ছা বলতো,
জ্যান্ত বিদ্যাসাগরকেও কি সবাই মাথায়
করে রেখেছিল?প্রেম বিলি করতে এসে
নিতাই গৌরের মাথা থেকে কি রক্ত ঝরেনি?
আঘাত সহ্য করতে করতেই তো এঁরা
তৈরী; ও রকম এক হাজার মূর্তি ভাঙলেও
বিদ্যাসাগর বিদ্যাহীন মরুভূমি হবেন না।


হ্যাঁ,প্রতিবাদ নিশ্চয় করছি,করো,কিন্তু তা যেন
উদ্দ্যেশের বাধ্যবাধকতায় কলঙ্কিত না হয়।
আর ওদের দিকটাও তো একটু ভাববে,
আচ্ছা,ওরা যদি না ভাঙে মূর্তি, তবে
কি কিরে হবে,হিরণ্যকশিপুর মুক্তি?