স্বদেশের উপসাগরে অবগাহন কালে
পায়ে বাঁধল এক ছোট্ট ঝিনুক।বার বার
ঝাকুনি দিলাম,তবু পায়ে জড়িয়ে এল।
এল তো থাক,ভাঙা কুলো,ছেড়া জুতো
ফেলা আদাড় কোনে।


নিশীথ রাতে ছিন্ন শষ্যায় আধ ঘুম ঘোরে
আমি আবাক হতাম;আমাকে ও বলছে
‘জীবনে কর্ম করিও,মরণে রাখিও কীর্তি’
বলছে ‘দেখ,এই ক্ষুদ্র শরীরের স্নেহ রস
কেমন মুক্তো সৃষ্টি করে,তুমিও পারবে
আমার হাত ধরো’।


আমি তো ভয় পেতাম।ওর আচরণ দেখে
মনে হত আমায় ভালোবাসে।আমাতেও
পরিবর্তন অনুভব করলাম;তবু নিথীত
রাতের স্বপ্ন ভেঙে, হতভাগ্য আমি এক
এলাম সাগর স্নানে পরবাসে।


জমকালো শঙ্ক এক টান দিল জোরালো
পা দু’টো ঝাকা দিলাম,একবার নয় বহুবার
মন যে গোপনে ঝিনুক চাইছিল আরবার,
কিন্তু,বাধ্য হলাম নাছোর টানে,গোপনে এনে
রাখলাম ঠাকুর ঘরের কোনে।


সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর,লোকে বলে মঙ্গলধ্বনি;
আকর্ষণী শক্তি প্রবল কিন্তু ভেতরটা
এক্কেবারে ধু ধু,শব্দের জন্য হয়ত তা
প্রয়োজন ছিল,কিন্তু আমি বদ্ধ হলাম
অন্তঃসার শূণ্য গহ্বরে।


গভীর রাতে হা-হা-কার করলাম,ঝিনুক,
ঝিনুক বলে।শঙ্ক ধ্বনীর উচ্চ নিনাদে
চাপা পড়ল সব।ওর শুষ্ক খোলকে বদ্ধ
আমার সুক্তির মুক্তো আদর্শ।হয়ত বা
আজও কাঁদে সুক্তি, কিন্তু শঙ্কের শুষ্ক
বেষ্টনিতে আজ পরাহত আমার মুক্তি।