শ্যাওলা
          অচিন্ত্য সরকার
    
কেও কি বলতে পারে,ভূমিকম্প হবেনা
আজ,আট থেকে নয় মানের তীব্রতায়?
তুমি কি বলতে পারো,কত কষ্টে তৈরী,
আমাদের সাধের কংক্রিটের বাড়িগুলো,
যাদের ই.এম.আই.কাটছে প্রতি মাসে,
ভেঙে পড়বে না আমাদের মাথার উপর
অকস্মাৎ প্রত্যাশিত আনায়াসে?
তুমি,আমি কেও বলতে পারি না।
মিস্টার ট্রাম্ফও বলতে পরেন না,
দাউদ ইব্রাহিমও বলতে পারে না।


মাইকেন জ্যাকসনও ঠেকাতে পারিনি
অকাল মৃত্যু,এক ডজন সেরা ডাক্তার
চব্বিশ ঘন্টা ধরে পুষেও।আবার দেখোনা,
নিরানব্বই বছরেও করোনা কে কেমন
বোল্ড আউট করে ড্যাং ড্যাং করে
সেঞ্চুরি হাকাচ্ছে পান্তা খেগো কোন বুড়ো।
সুরম্য ফ্লাটে স্টার সুশান্তকে মরতে হলো।
অথচ দেখো,খোড়ো চালে ভিজে পুড়ে,
বাউল গেয়ে আশিতে পড়লো পাচু খুড়ো।
গলায় তুলশির মালা পরে,ভুতি দিয়ে
এখনও তারিয়ে খায় মাছের মুড়ো।


আসলে,আমরা কেও কিচ্ছু বলতে পারিনা।
স্রোতের মুখে শ্যাওলা ভেসে যায়।
তার মধ্যে দু'একটা,তীরে ঘুরঘুর করে
জানান দেয় যে,তারা স্রোতকে
জয় করেছে।বোঝে না কিংবা স্বীকার
করেনা,তাদের সেখানে থাকার কারণও
স্রোতের খেয়ালি গতি।কে জানে,
হয়তো একটু ঘুরে যেতে তখন ছিল মতি।
সব তত্ত্ব,সব জ্ঞান,সব বিশেষ প্রযুক্তি,
সন্মান,লোকবল,কিংবা প্রবল রাজশক্তি
একই ইচ্ছায় মেলে চলা একমুখি গতি।


মহাশক্তি প্রবাহে ভেসে চলেছি আমরা,
কেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি মহাকালসমুদ্র
অভিমুখে,কেওবা একটু ধীরে,
কেও একটু বেশী দূষণ বাড়িয়ে তীরে,
ঘটা করে নাম দেই প্রগতি।
কেও আবার অতিরিক্ত চতুর হয়ে,
মোহের ঘোরে ভাবি হোমরা চোমরা,
কেও জানিনা,কখন কিভাবে,সব বাঁধা,
লাগিয়ে ধাঁধা,ফ্রুৎ করবে প্রাণ ভোমরা।