সোনার হরিণ
               অচিন্ত্য সরকার


তোমার প্রবাল দ্বীপে নোঙর ফেলে
বাণিজ্য করতে চাইনা আমি।
কত বণিক,ব্যবসায়ী,লুটেরা সেখানে  
খনন করে তুলেছে রত্ন ভারে ভারে।
লভ্যাংশে তার ভরেছে সংসার,
সাজিয়েছে ঘর ভবিষ্যতের স্বপ্নে।


জানি ঐ প্রবাল দ্বীপে আমারই
সর্বাগ্রে ছিল অধিকার...
যে নিখাদ রত্নের ছোঁয়ায়
হেমন্ত ভোরের শিরশিরে বাতাস
বইতো ত্বকের জানালা জুড়ে....
তাতে খাদ মিশিয়ে গয়না বানিয়ে
বাড়াবো শরীরের ভার....
এমন পরিণত ব্যবসায়িক বুদ্ধি
সেদিন কেন,আজও নেই আমার।


আমার হদ্দ বোকা নাবিক সময়ে পালে
অনুকূল হাওয়া বাঁধাতে পারিনি।
সোনার হরিণ চেয়ে খেয়েছে ধোঁকা।
পথ ভুলে ডুবিয়েছে জাহাজ গভীর অতলে
অমূল্যের খোঁজে,
লাভ লোকসানের ধার ধারিনি।


সেই থেকে সোনার হরিণের পিছনে
ছুটতে ছুটতে সব পুঁজিবাটা শেষ...
শরীরও ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত।
পিছন ফিরে নিজের বোকামির দিকে তাকিয়ে
নিজেকে গাল দিতে দিতে,মোটা চালের ভাত
কষ্টে গিলে ঘুম খোঁজে....


হঠাৎ স্বপ্নে দেখে,প্রবাল দ্বীপের অন্তঃগহ্বর থেকে
সেই সোনার হরিণ ছুটে আসছে,
চোখ দুটো তার জলে ছলছল।
কেঁদে কেঁদে বলছে,
"কবি,তুমি সত্যি বোকা...
না হলে বুঝতে আমিও ঐ প্রবাল দ্বীপের
অভ্যন্তরেই লুকিয়ে আছি এতকাল।  
বণিকরা যতই ওদের খনন যন্ত্র দিয়ে
খুড়ে খুড়ে রক্তাক্ত করেছে দ্বীপের শরীর
আমি ততই তোমাকে খুঁজে হয়েছি অস্থির
হাত বাড়িয়ে দেখ,আমি নিজেই এসেছি
তোমাকে ধরা দেব,করেছি মনস্থির।


চোখ খুলতেই দেখে,রথে বসে গাণ্ডীব ধরে
সোনার হরিণকে তাক করে আছে
অর্জুন মহারথী,
আর একমনে রথ চালনা করছে পার্থসারথি...