দেখিলাম সেদিন জোম্মার নামাজে সামনের সারিতে,
বসিয়া সকল ধনীরা মাথা ঝাকিতেছে আপনও চিত্তে।
কেউ পরিয়াছে বিলাতি পাঞ্জাবি কেউ সৌদির আলখেল্লা,
আতরের সুভাসে মাতিয়া রাখিছে তারা মসজিদ মহল্লা।
হইলো আজান পরে সব দাড়াইলেন সুন্নতে,
লক্ষ করিলাম পায়ের কাপড়গুলো তাহাদের টাকনোর নিচেতে।
হাসিলাম মনে মনে বলিলাম হায় ওরে ঈমানদার,
কপালে জুটিলো তোমাদের টাকা,জুটিলোনা শুধু দ্বীন শিক্ষা করিবার।
মেহরাবে উঠিলেন ঈমাম সাহেব করিলেন কতো দ্বীনের বয়ান,
সবাই শুনিলো চক্ষু মুদিয়া খুব করিয়া পাতিয়া দুই কান।
ঠিক সময়ে উঠিলেন মোয়াজ্জিন দান বাক্স নিয়া হাতে,
একে একে সবার সামনে লাগিলেন বাক্স হাতে হাটিতে।
হায় একি দেখিলাম ধনিরা সব রহিলো চক্ষু মুদিয়া দিলোনা একটি পয়সা,
কাহাদের প্রভু করিলেন দৌলত দান ওরা এমনি সর্বনাশা!
বাড়িতে তো ঠিক গতানুগতিক বানাইয়া খায় খুর্মা রুটি,
আজ খোদার রাস্তায় উঠিলোনা হাতে তাহাদের খুচরো পয়সা দুটি।
হঠাৎ দেখিলাম পিছন ফিরিয়া বসা এক ভিক্ষুক পাশে রাখিয়া থলে,
দেখিলাম চাহিয়া দুলিতেছে মাথা তাহার জিকিরের মশগুলে।
আরও দেখিলাম পরনে তাহার ছেড়া ময়লা একখানা কোট,
ছেড়া পকেট থাকিয়া বাহির করিলো একখানা দুই টাকার নোট।
কাপানো হাতে রাখিলো টাকাটি মসজিদের দানবাক্সে,
আহা ঠের পাইলাম এই বুঝি কাপিয়া উঠিলো আল্লার কুদরতি আরশে।
মনের অজানায় চক্ষু হইতে মোর জরিলো এক ফোটা পানি,
বলিলাম মাথা উঠাইয়া হে মহাণ প্রভু তুমিই মহাজ্ঞানী।
বুঝিলাম পরে হায়রে শুধো চলেনা থাকিলে অঢেল সম্পদ আর ধন,
যদি নাহি থাকে তোমার ধনের মতোই বড় একখানা মন।
হায় কেনোরে আমি টাকা টাকা করিয়া কাদিতেছি দিন ও রাত,
সচক্ষে প্রত্যক্ষ করিয়া আজই ভিক্ষুক আর বিত্তের তফাৎ!