আমার অন্তিম শয়ানে
আমার ওপরে বেনারসী শাড়ী বা মখমলি চাদর নয়
আমার বুকের ওপরে বিছিয়ে দিও সেই চরম
অপ্রাপ্তির চাদর, যা আমি বয়ে বেড়িয়েছি আমার
সারাটা জীবন ধরে।


যে অপ্রাপ্তির চাদরে লেগে আছে ধর্ষিতার
মায়ের চোখের জল, যা সে চাদর কে কোনদিন শুকোতে
দেয়নি, যে চাদরে লেগে আছে ছোট ছোট ছেলে মেয়ের
কচি হাতের চাপ চাপ রক্ত, যা ঝরিয়ে শেষ হয়ে গেছে
তাদের অগুন্তি শৈশব।


যাতে মিশে আছে  আধপোড়া মোমের ধোঁয়া, যেগুলো আমি তুমি
জ্বেলে বেড়িয়েছি মহানগরের পথে পথে,
সুবিচারের আশায়। আগুন ও লেগে আছে কোথাও কোথাও তার
খুঁজে দেখো , একবার খুঁজে দেখো তুমি অন্ধকারে, সে আগুগের শিখায়
আজও দেখতে পাবে তুমি ধর্ষিতা মেয়ের জ্বলন্ত লাশ!!


তবু সে চাদর পুড়ে শেষ হয়নি, কেন জানো?
কারন সে অপ্রাপ্তি আজও পূরণ হয়নি।  
আজও সিক্ত হচ্ছে সে চাদর বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যাওয়া
মায়েদের চোখের জলে!
আজও লাল হচ্ছে সে চাদর অপরিণত কন্যা ভ্রুন এর রক্তে।
রাজনৈতিক রেষারেষির আগুনে বার বার বিধস্ত সে চাদর!!
প্রতিটা ব্যর্থ প্রেম তাতে এসে মুছে দিয়ে গেছে তার অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা।


তবু দেখো তাতে আজও চন্দনের সুবাস, আবাহনের ছন্দ
কেন জানো, প্রতি মুহূর্তে আমার ভালোবাসার প্রতিটা ফোঁটা
আমি জমিয়ে রেখেছিলাম তাতে, তুমি যা বোঝনি কোনদিন !
তোমার প্রতিটা প্রত্যাখ্যান জমিয়ে রেখেছিলাম তাতে,
প্রতি মুহূর্ত তোমার আসার আশায় সিক্ত করেছি তাকে,
সে আশা তো আজও শেষ হয় নি !!
তাই সব কলঙ্ক ছাপিয়েও, সে আজও নির্মল।
আবার সে আগত জন্মের দিকে তাকিয়ে,
দিন গোনে তোমার ভালোবাসার, তোমার আসার !!


বিছিয়ে দিও  তাকে
আমার বুকের ওপরে কেবল নয়
আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত এক আপাদমস্তক আমাকে
আমার অন্তিম শয়ানে।