আমি কভু কোন রাজনৈতিক নেতার শরণাপন্ন হই না
আজ অগত্যা যত বিশ্বনেতাদের কাছে হচ্ছি বিশেষ আবেদন প্রার্থী ।  
আমরা যে যাই করি, কর জোর মিনতি করি কভু আর  
যেন ঐ পাশবিক কর্ম না করি যাতে কেউ হয় ভিনদেশে শরণার্থী ।


ওরে তোরা আর কেউ হইও না নেতা, যারা পাপাচারী
দুরাচারী, সকল মানুষের প্রতি যারা দেখাতে পারো না সমমর্মীতা ।    
কেন তোরা চাস জনতা শাসন করার ক্ষমতা ? কোন
পবিত্র হৃদয় ছাড়া এমন গুরুভার নেবার কেন দেখাস রে সক্ষমতা ?  


দেশনেতা হবার যোগ্যতা কেমন তা ? ঐ দেশের যত
জনতা তাদের মাঝে সব দিক বিবেচনায় সে হবে সর্বাধিক যোগ্য ।
নচেৎ সে হবে জনতার কিংবা জনতা হবে তার দ্বারা
কারো না কারো ভোগ্য, ফলে জনতা বরণ করে শরণার্থীর দুর্ভাগ্য !  


তোরা হয়েছ কি কভু শরণার্থী ? হয়েছ কি কভু পিতৃভিটা
ছাড়া কারো আশ্রয় প্রার্থী ? আগে হও শরণার্থী শিবিরের শিক্ষার্থী ।
দেখো ওদের মানবেতর জীবন যাত্রা, দেখ কষ্টের মাত্রা,
দিল দিয়ে আগে ঝরাও রক্ত, তবে না হয় হও সমাজে ভোট প্রার্থী ।


তোরা দেখছ কি কভু হঠাৎ স্বপ্নের মৃত্যু ঘটে বিভীষিকাময়
সময় দ্বারে এসে দাঁড়ালে মমতাময়ী অসুস্থ মাতাকে ফেলে যাওয়া ?
তোরা দেখেছ কি পলায়নকালে কলিজার টুকরো সন্তানের
ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে অকাতরে মাবাবার কোলেই অক্কা পাওয়া ?


ধর্ম বর্ণের এমনি হয়না সংঘাত, নেপথ্যে যদি না থাকে
তোদের নষ্ট রাজানীতির হাত স্বার্থ চরিতার্থে ভেদ না কর জাতপাত ।
ঐ বিলাসী আগ্রাসন অভিলাষে আজও দেশে দেশে কত
পরিবার পরিজনে হতবিহবল মনে হচ্ছে শরণার্থী, করছে প্রাণপাত ।  


স্বীয় জাতিকে যদি ঋণী করতে না চাও, তবে প্রকৃতির
আইনে শিক্ষা নাও, ইতিহাসে তাকাও, বংশকে না বানাতে ভিক্ষার্থী ।
তবে বর্ণ বিভেদ নয়, অভিশাপ কর না ক্রয়, কারো এত
স্বপ্নভঙ্গ করাও নয়, কর প্রত্যয় আর কাউকেই না হতে হয় শরণার্থী ।  


রচনাকালঃ- রাত ১১.৫৫টা, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪২৭,
৮ শাওয়াল ১৪৪১, ৩০ জুন ২০২০, মিরপুর, ঢাকা ।


স্মর্তব্য-আসরের সবার প্রিয়কবি শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান স্যারের “স্বদেশ ছেড়ে যাওয়া কোলকাতার বন্ধুরা” কবিতাটি সকাল বেলা প্রথম পাঠ করেই হৃদয়ে বড় ধাক্কা খেয়ে সারা দিন আর কোন কবিতা না পড়ে শুধু তার অনুরণন বয়ে বেড়াতে গিয়ে আমার এই কবিতার আবির্ভাব । তাই কবিতাটি প্রিয়কবিকেই উৎসর্গ করলাম ।