মা তো মা-ই, যার তুলনা নাই ।
আর পাঁচজন মায়ের মত
এই হতভাগিনীও ছেলেমেয়ে করেছে লালিত ।
ফতুর হয়েছেন বিয়ের দেওয়া গহনা বেঁচে
ছেলেকে উচ্চশিক্ষার তরে বিদেশ পাঠাতে  
আর মেয়েকে ঘটা করে বিয়ে দিতে ।
স্বামীর পেনশনের টাকায় দেয়া উপহার
দুটি স্বর্ণবালাই ছিল শেষ সম্বল তার ।
অর্ধাহারে অনাহারে অনাদিকাল কাটা  
সেই মায়ের সইল না আর সুখের দিন ক’টা ।
হতভাগিনীর করোনার লক্ষণ দেখা দিলে
সাথে সাথে তাকে ফেলে আসে হাসপাতালে ।
সেথায় কষ্ট অবহেলা উৎকণ্ঠায় কাটে রোজ    
এত সন্তান-সন্ততি একটু কেউ নেয় নি খোঁজ ।  
স্বজনের আশায় চেয়ে থেকে থেকে অবশেষে
মৃত্যুই চেয়ে নিয়ে মা ত্যাগ করল ভবমায়া ।
হাসপাতালের রক্তাক্ত মেঝেতে সেই বালাদুটি
সমেত নিথর পড়ে থাকে তার মৃতকায়া ।
স্বেচ্ছাসেবীরা তার সৎকারে স্বজনদের ডাকলে
কেউ আসে না বরং বালা দুটি দিয়ে যেতে বলে ।
হতভাগিনী মৃতদেহের ফোলা হাতের বালা
পরমমমতায় কাটতে তাদের কাটে সারা বেলা ।
তারা বলে হায় ! এমনও নিষ্ঠুর স্বজন হয়
যাদের কাছে মায়ের চেয়ে বালাদুটি দামী !  
মৃতআত্মা বলে হে প্রভু ঐ স্বেচ্ছাসেবীদের
কবুল কর যারা মানুষের এমনই কল্যাণকামী ।  

( একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে এ রচনা )  


রচনাকালঃ- দুপুর ১.৩২টা শনিবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭,
২০ শাওয়াল ১৪৪১, ১৩ জুন ২০২০, মিরপুর, ঢাকা ।