একটি গেলাস হবো বলে আমি চেয়ে চেয়ে ঈর্ষা করে যাই,
ঝকঝকে স্যুকেসের কাঁচে সাজানো রঙিন গেলাসের পানে;
তৃপ্তি দানের তৃষ্ণায় খা-খা করে বুক তীব্র চুমো খেতে চাই,
অমিয়ের স্বাদ ঢেলে দিয়ে তৃষ্ণার্তের- পথিকের ক্লান্ত প্রানে।


চৈত্রের দুপুরে ছাতিফাটা রোদের ভেতর শ্রান্ত মেঠোযাত্রী,
রৌদ্রের মরিচিকায় স্বপ্নে দেখে যে
শীতল মধুর বিলাস;
মাটি কাটা শ্রমিকের চোখে-মরুযাত্রীর তাঁবুতে প্রানদাত্রী
চৈত্রিক মাসের দিনে হতে চেয়েছি কাঁচের রঙিন গেলাস।


তখন প্রচন্ড খরা চলে গেছে-বালিকা শরীরে-স্বচ্ছ জামা
আলগোছে ঢলে পড়ে গেছে যেন  পৃথিবীর পরতে পরতে;
সুপ্রাচীন রাজকুমারীর মতো  শ্রাবনের নেমেছে পূর্ণিমা
কালোত্তীর্ণ বালিকারা ধীরে নেমে এসেছে গেলাস নিয়ে হাতে।


তাদের হলুদ শরীরের মতো জোছনায় ভরা রাঙা মদ,
ফিস ফিসে গুঞ্জন,তাদের পুরনো আহ্লাদ ভাঙা ভাঙা কথা;
পুরনো প্রনয়-মাঠের থেকে নগরে.. আমাদের জনপদ
জোছনার অতীত পুরীতে মিশে ভুলেছে তৃষ্ণার ব্যাকুলতা।


সেদিন মৌয়ালী বুনো রাত কৃষ্ণপক্ষের বাঁকানো ঝোলা চাঁদ,
চারপাশ হয়ে আছে নিস্থব্দতা-নীশিতের তেপান্তরি হীম;
কিশোরীর উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শের মতো পৃথিবীর অবসাদ,
ছেড়েছে আকাশে; আমাকে ডেকেছে মাঠের সে অভুক্ত পিদিম-
ঘুমন্ত তারার মাঠে-ঝরা পাতার শব্দের মতো-"ঘুম যাবি?
তাহলে আমার পাশে শুয়ে যা এ ঘাসে শুকতারা রকতিম-
প্রেম দেবে ভোরে,সেই প্রেমে আজন্ম স্ফটিক ঘাসমুক্তা হবি।"
তারপর থেকে শুধু গেলাস ভাঙার শব্দ শুনি- আর্তনাদ,
রাতভর কত ধূর্ত বিতৃষ্ণের ঘুমঘোরে গেলাসের তৃষ্ণা;
নিশাচর হয়েছি এখন ছিল যার গেলাস হবার সাধ,
ভোরে মরে যাই রাত্রে জাগি আমি এক ব্যর্থ  দ্বাদশীর কৃষ্ণা।