চক্রবুহ্যে পারদর্শী অর্জুন অন্যথায়
ময়দানে অভিমন্যু বাকি যোদ্ধা অসহায়
দ্রোণাচার্যের রণকৌশলে ছিন্ন, বিচ্ছিন্ন সততা
আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ মনোবল, সাহসিকতা।


স্রষ্টার সৃষ্ট রণক্ষেত্র
রক্তাক্ত আলপনা আঁকতে চায়
প্রতি দ্রোহে, প্রতি বিজয় দামামায়।


রক্ত পিপাসু ভাগ্য
রক্তের স্রোতে ভাসা গুমোট হাওয়ার গন্ধ
প্রিয়জন হারানোর বেদনা হাহাকার
কবজ পোড়ানো চিতা , আত্মা পোড়ানো মন
সব সৎকার!  সব সৎকার!


নতুন সূর্যোদয়! নতুন উপাসনা!
আজ জয় নিয়ে ফেরার প্রত্যয়
মাতৃ আর্শীবাদ বুকে সততার চেতনা
উগ্র দাম্ভিক সব পাষাণকে
একযোগে প্রতিহত করার বাসনা।


শঙ্খধ্বনি  বেজে উঠলো
স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল এক সুর শোনা গেল
যেন সততার সংকীর্তন!
হাত তুলে বলছে সব দেব
হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ
কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠ, কৃষ্ণ বলো।


দৈববাণী শুনলো   সব সততার কর্ণধার
এগিয়ে গেলো অভিমন্যু!
বুঝলো দায়িত্ব, কাঁধে নিলে তা
হয় যাবে প্রাণ নয়তো বিজেতা!


প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অভিমন্যু প্রবেশ করলো চক্রবুহ্যে
পাষাণের প্রাচীর ভেঙ্গে দিলো
রক্তপিপাসু ময়দানের পিপাসা মেটাতে।
ভীষ্ম, দ্রোণাচার্য হলো বিস্মিত!
জানতে চায় তাঁর পরিচয়,
অভিমন্যু জানালো অর্জুনের পুত্র সে হয়!
ক্ষিপ্ত কৌরবদল হলো বিরক্ত
চোখে তীক্ষ্ণতা, কপালে চিন্তার ছাপ
দূর্যোধন বললো, "কী ধূর্ত এ বালক! বধ করো শীঘ্রই "
শকুনি বলে," সূর্যপুত্র কর্ণ!  করো বান নিক্ষেপণ।
যত তাড়াতাড়ি করিবে বিদায়
তবেই প্রসন্ন হবে আমার বাছাধন। "


সূর্যপুত্র কর্ণ তাকালো মহারাজের পানে
বলিল," বালক করবে নাহ কোনো ক্ষতি,
ছেড়ে দাও আরও আছে কত মহারথী! "
অভিমন্যু বলিল," ভীত তোমারা সব যোদ্ধা!  
এসো যুদ্ধ করে দাও পরীক্ষা । "
অশ্বথামা বললি ক্রুদ্ধ স্বরে, "করো পরাস্ত আমাকে আগে!
তারপর নাহ হয় বাকিদের চিন্তা!"


প্রচন্ড যুদ্ধ হলো শুরু
কেউ পরাস্ত করতে পারে না একলা!
শকুনি বুঝিলো এমন করে হবে না,
জোট বেধে করো সব বাণ নিক্ষেপণ
তবেই শয্যাশায়ী হবে, বুঝলো বাছাধন।


কর্ণ তাজ্জব এই মানসিকতায়
কি অনিয়ম যুদ্ধের ময়দানে হায়!
কর্ণ করুণ বিষাদে চায় বন্ধুর পানে
বন্ধু! সে তো যুদ্ধের অসততার মূলহোতায়।
আজ্ঞা দিলো সূর্যপুত্র কর্ণকে
কর্ণ নিলো ধনুক  হাতে বাণ
নিয়ো নিলো অভিমন্যুের প্রাণ।


লুটিয়ে  পড়লো অভিমন্যু
রক্তগঙ্গায় ভাসিয়ে দিলো ময়দান
সততার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে
হলো অভিমন্যু মহান।