স্নিগ্ধা ঘুমিয়ে পড়েছো?


দীর্ঘ অবলুপ্তির পর এবার ওঠো, ওঠা দরকার --
কারণ তোমাকে যে শেষের গল্প শোনাতেই হবে,
জানো সেই লোকটার সাথে দেখা হয়েছিলো,  আজই --
উলঙ্গ রাজপথে ওর দেহটা লোলচর্মে ঢেকে গেছে।


স্নিগ্ধা, সেই মুহুর্তে জানো
ওকে দেখার সেই মুহুর্তেই --
প্রচন্ড সুর্যবৃষ্টি ঝমঝমিয়ে কোষে, প্রতিকোষে, অনু, পরমাণু, নিউক্লিয়াসে,
ওর ভয়ার্ত দুচোখের দৃষ্টিকে একঝাপটায় সরিয়ে ফেলে,
বিভৎস উল্লাসে থরথরো
                গলিত মাংসের পুরে ঢাকা দেহখানা।
লোলচর্ম খসে যায় একে একে, চকিতে মনে পড়ে তোমার ক্ষতবিক্ষত,
আধুনিক নারকীয় সমাজের আদর্শ মডেল করে দেওয়া,
                                           তোমার অলস মৃতদেহখানি --
শতচেস্টায় সঙ্গোপনে রাখা ওর দুহাত...প্রতিটি আঙ্গূলের রেখা...
আমার নজর এড়ায় নি।


স্নিগ্ধা শুনছ তোমার মনে আছে নিস্চয়ই, দৃপ্ত প্রতিবাদে জ্বলে উঠেছিলাম বলেই
ছলাত্ ছলাত্ --
ওরা আমার রক্তের নদীতে ঢেউ তুলেছিলো, অহংকারের ছোরায়।


স্নিগ্ধা শুনছ, সেই লোকটার সাথে আজ দেখা হয়েছিল ... আজই ...
উশুল করেছি --
দুযুগব্যাপি পুষে রাখা ধর্শিত ইচ্ছার সুদ ও আসল। তারপর ...
ওকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি একগাদা সমাজের মাঝখানে।
ওরা দেখুক, জানুক,চিনুক .. একে একে .. সক্কলে ..
নারকীয় কুৎসিত কুকুরগুলো লুকোক বিবরে।


স্নিগ্ধা চোখ খোলো, আমি যে এসেছি,
ঘিনঘিনে রাজপথ ছেড়ে, শান্তির ধুঁয়নো কবরখানায়।
ওকী! তুমি আতঙ্কে শিউরে উঠলে, এখনও ভয়? হবেও বা।
আমার দুহাতে .. নোখে নোখে জড়ানো যে .. ওই জল্লাদটার রক্তমাংস


স্নিগ্ধা এবার আমি শোবো পাশাপাশি গহীন শান্তিতে,
কিন্তু, তোমার দেহটা যে ছুঁতে পারছিনা,
একটু জল দেবে ...


হাতদুটো ধুয়ে ফেলার মতো অন্তত কিছু জল।