রুকু তখন মেঘের মতন দরজা খোলা হাট
রুকু তখন শাড়ির কুচি, নিবিড় পাটপাট
শেষ বিকেলে ফিরল রুকু, পুড়িয়ে এল মা’কে
রুকু তখন ভীষণ নীরব, একা একাই থাকে
পলাশ-লালে ধরল ফিকে, রাত বিরেতে চুপ
পলাশ আজো আসল নাকো, আশা জমে স্তূপ
আলখাল্লার সেই বুড়োটা হাতে বেজায় রাখি
রুকু তখন বেশ অস্থির, নীরব বুকের পাখি
রুকুর দারুন কান্না আসে, চোখ ছাপিয়ে গালে
ছোট্টবেলা থাকছে জমা বনপিয়ালের ডালে
যখন তখন পায়ের আওয়াজ, চমকে ওঠে রুকু
পথের ধুলা পথেই ওড়ে, ছিন্নপাতাটুকু
ছুট ছুট ছুট এক দুপুরে ঝড়পুকুরের ঘাটে
ডুবিয়ে পা জল ছিটিয়ে সুয্যি তখন পাটে
হিজলগাছে পাখির দাপট সন্ধ্যে সবে নামে
রুকুর পিঠে হাল্কা হাওয়া, পদশব্দ থামে
ঘুরেই দেখে এই সেই চোখ, রং পুড়ে তামাটে
গভীর চোখে হাতের ছোঁয়া গহিনে দাগ কাটে
হঠাৎ প্রবল ঝড়ের আভাস, বৃষ্টিধারা বুঝি!
বাতাস আনে জলের সুবাস, ভরাট হৃদয় খুঁজি
পরক্ষনেই মাঠ উজিয়ে খ্যাপা জলের ধারা
ভিজিয়ে দিল রুকুর বুকের ছোট্ট শিমুলচারা
বাংলা তখন দুই ভাগে ভাগ, গঙ্গা-পদ্মা-পার
কে ক’খানি প্রদেশ পেলো, চুলচেরা বিচার
ভিজছে রুকু, ভিজছে মাটি, কাঁদরে রুকু কাঁদ,
বৃষ্টিজলে যাক মিশে যাক, চোখের জলের স্বাদ।


                     (সমাপ্ত)



এই কবিতাটি ইউটিউবে দেখতে এবং শুনতে হলে -
https://www.youtube.com/watch?v=GouCb4Tv2C4&feature=youtu.be


কেমন লাগল জানাতে ভুলো না কিন্তু।