বহুকাল ধরে এই এক তর্ক চলছে যে, কবিদের কি গান লেখা উচিত? তার পিঠোপিঠি এ প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক যে, গীতিকাররা কেন কবিতা লেখেন না৷‌ দুটোরই জবাব আছে এবং এ কথাও সত্যি যে, আমাদের শ্রেষ্ঠ কবি রবীন্দ্রনাথ নিঃসন্দেহে বাংলা গানের সবচেয়ে সেরা গীতিকার৷‌ একই কথা বলা চলে দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকাম্ত, দিলীপকুমার রায় আর নজরুল ইসলাম সম্পর্কেক্ট কেননা কবিতা আর গানের আকাশে তাঁরা সমান স্বচ্ছন্দ৷‌ আধুনিক বাংলা গানের তিনজন বহুপ্রসবী গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন, শ্যামল গুপ্ত বা পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কোনও কবিতা কেউ দেখেননি৷‌ যেমন অনেক খুঁজে এখনও অতুলপ্রসাদের লেখা একটাও কবিতা আমি পাইনি৷‌ অবশ্য তথ্য হিসেবে মনে পড়ে যে, বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় গীতিকার প্রণব রায়ের কবিতা বেরিয়েছিল কিন্তু পরে তাঁর কবিখ্যাতি রটেনি৷‌ এদিকে প্রতিষ্ঠিত কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র এককালে প্রচুর ভাল গান (অবশ্য সিনেমার জন্য) লিখলেও, গীতিকার হতে চাননি৷‌ প্রসঙ্গত সবাইয়ের মনে পড়বে দুই কবির দুটি কবিতা অন্যের দেওয়া সুরে ‘সুপার ডুপার হিট’ যাকে বলে, তাই হয়েছে৷‌ তার প্রথমটি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর মনকেমনিয়া কবিতা ‘বাঁশবাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ওই’ গেয়েছিলেন প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় আর একটি জয় গোস্বামীর ‘বেণীমাধব’ গেয়েছেন লোপামুদ্রা মিত্র৷‌।