সে অনেককালের গহীন অরণ্য, আমার পাঠশালা।
কোথায় হারালে এখনো জেনে উঠতে পারিনি,
গায়ে গায়ে লেগে থাকা কাজল কাজল রং,
আমি মুছিনি গো আজো সে রং আমার গহীন অরণ্যের।
যেন অনেকদিন পর দেখা কোন পাঠশালার বন্ধুর সাথে,
আরো দেখা টিফিনবক্সে চৌকো গ্লুকোজ বিস্কুট;
সাথে বিকেলের ঘুড়ি আর নামতা নামতা খেলা।
প্রাঙ্গণে সদ্য ফোঁটা দোপাটি ফুলের গায়ে মাটি মাটি গন্ধ;
আর সবুজে সবুজ আচ্ছাদন।


মাঠে হারাচ্ছি দিন, বিস্মৃতপ্রায় দেওয়ালের কোনে টুকি।
দ্রুতলয়ে দৌড়বার ঢং পিছনে ফেলে দেয় জীর্ন সুখের ঘাসমাটি,
আমি কি অনেক আগে ফেলে এসেছি আমার গহীন অরণ্যকে?
পিছন ফেরা যায় না;
রমাদা বলেছিল – বাবু, পিছনে তাকাসনি, পিছনটা বড় জঙ্গলময়,
রমাদা, তোমার টর্চটা আমাকে দিও আর ভুল বুঝিও না।
সেই তো যে সদর দরজার পাশেই লজ্জাবতীর ঝাড়;
একটু ছুঁয়ে দিলেই বিনম্র; কোথায়? ছুঁতে পারি না তো আজ।
গোধূলির শেষে এখনো কি সেথায় বসে থাকে চৌকিদার?  


বিবশ হতে যাওয়া শেষ হবার আগেই আমি ফিরে পেতে চাই,
আমার গহীন অরণ্যকে, শেষবারের মত।