কথায় আছে, ক্যাঁকলাশের দৌড় বাদাড় গড়া ।
গাঁয়ের জইড়তলে থাপসি গাদ্যে বসে
গামছা পরা আধলেংটা নেউল্যা, বুধনাদের পইদ্দ শুনানো,
আর শহুরের পইদ্দ পরবে ধবধব্যা ধুতি পঞ্জাবী পরা
পাকা মাথা পইদ্দবাবুদের পইদ্দ শুনানো এক লয়, ইটোও জানি ।
তবু আসেছি যখুন, ভাবলি তুরা শুন আর নাই শুন
বুঝ আর নাই বুঝ, দুটা পেরানের কথা শুনায়েই যাই ।


বুধনার বড় বেটা ই শহুরেই কন কলিজে পড়ে,
উঁয়েই খপর দিল – অ খুঁড়া শহুরে পইদ্দ পরব লাগ্যেছে ।
হামি ভাবলি - হামদের ভাদু টুসু পরব ত দেখছিয়েই,
চাকোলতোড়ের ছাতা, বুধপুরের গাজনও দেখা,
ই তবে কিমন পরব ? পইদ্দ লিয়ে কি পরব হয় বাপ ?
আবার ভাবলি – হবেক নাই কেনে ? ইখন ত গটা বছরেই পরব ।
গরমেন্টের পৈসায় আজ পিঠা, কাল ইলিশ, পরশু পুলিশ ।
খপরটা শুনারল্যে আইসবার লাগ্যে মনটো আটুপাটু কচ্ছিল ।


পকিটে দুটা পইদ্দ লিখা কাগজ গুঁজে কন সকালে বাহিরাঞ্ছি,
ভাবেছিলি নাই কুছু হক ডিংলার ঝাল, মাছের ঝোল
দিয়ে গরম গরম ভাতটো ত পরবের বাবুরা দিবেক !
হামি কি জানতি হে বিহা ঘরে মাড় ভাত !
আগে জানল্যে কাঁচা নঙ্কা দিয়ে বেঁত্যে দুটা বাসি ভাত
পুরেই বাহিরাথি । কমসে কম পাইটাক মুড়ি লিয়ে আসথি ।
ভঁখে মরথি নাইখ । ই বাবু তুদের বিচারটো ঠিক লয় ।


তবে বাবু ইখন বুঝছি আইসে ঠকি নাই ।
কত বড় বড় পইদ্দবাবুদের দেখলি, উঁদের পইদ্দ শুনলি ।
পইদ্দগুল্যান যিমন ডবকা মহুলের পারা মিঠা বাস ছড়াছে
চাদ্দিক মহকাঁই দিছে, ছলছল্যা ঢেওয়ের লহর তুলছ্যে ।
হামার ভুঁখা পেটটো যিমন গরম ভাতে ভরে গেল গ !
মনটো খেজুর রসে ভিজে টুসটুইসা হয়ে গেলেক  ।


না বাবু, তুদের মিঠা ভাষায় পীরিতের গপফ হামার নাই আসে,
মদনার দুকানের আড়াই প্যাঁচের জিলাবির মতন
কথার মারপ্যাঁচও হামার পইদ্দে তরা নাই পাবিস ।
পেরাইমারির বিদ্যা লিয়ে অত ছন্দ ফন্দও কভু শিখি নাই ।
সিধা কথায় সিধাসাদা গাঁয়ের লকের সুখদুখের কহানিগুল্যা দিয়ে
পইদ্দ হয় কিনা জানা নাই, তবে বলল্যে মনটো ফরফইরা লাগে ।


চইখ থাকত্যে কানা হয়ে থাকার বড় দুঃখু বাবু
নিখা পড়াই আসলি চইখ, আঁধার ফাঁড়া সুজ্জি ।
তুদের এই পইদ্দ পরব হামার একটো চইখকে ফুঁটাই দিছে ।
আজ হামার মালুম হচ্ছে গরীবের দুখের কথায় চিঁড়া ভিজবেক নাই
গেরন লাগা আঁধার ডুবে থাকা গাঁয়ের চাষাভুষাদের জাগাতে
উঁদেরও চইখ খুলতে হবেক, লিজের হক বুঝত্যে হবেক ।
তুরা খাওয়া আর না খাওয়া, হামি আবার আসব্য
চইখ ফুটান পইদ্দ লিয়ে ।  টুকুন বলার চানসটো মিলবেক ?