ইখন আর পৈলা বইল্যে কুছু হয়না রে গগনা !
সাহেবী পিঠা খাঁয়ে ইংরাজীর পৈলাকেও মানাবি
আবার মালপুয়্যা খাঁয়ে বাংলাকেও ছাড়বি নাই
ই রকম দোগলা গিরি আর কদ্দিন চইলবেক  ?
তরা গাছেরটাও ছাড়বি নাই তলেরটাও কুড়াবি
ইটো মামাঘর পালি ন’কি ? দুটা দিন বরবাদ ?
উসব পৈলা টৈলা ছাইড়্যে দেশের দশের লাগ্যে
কুছু কাম-কাজ কর, বছরটা গড়গড়াই চলবেক ।
যা’ন বাদার খটখট্যা জমিনে টুকু জল ছিচ কর –
ডিংলা ঝিঙা কাল্লার লতগুল্যান লকলকাবেক,
বুটঝাড়ে শুঁটিগুল্যান পুয়াতির পারা ফুইলবেক
ফুটিফাটা শুখনা মাটিটোয় জান ফিরে আইসবেক ।


ইখন আর পৈলা বইল্যে কুছু হয়না রে গগনা !
সিটা মাস বছর যাই হোক । ইখন দেখছিস’ন
কত জান কুরবানি দিয়ে মুট্যা মজদুরদের হক
ছিনাই আনা পৈলা মে’তেও ভট পরবের দুমদুমি ।
তবে ঠিকেই করেছ্যে – পুরানটা লিয়ে কদ্দিন আর
ভাঙাই খাবি – হে বাজারের পুরানা গপফ আর
কেউ খাবেক নাই । তাল্লে গরম্যা গরম ভটের
হাওয়ায় গাঁ-গেরামে কত রক্তের লহর ছুটবেক –
টাঙি বল্লম গুলি বোমায় কত লকের ভবলীলা
চুইকবেক, কেউ ল্যাংড়া ঠুঁট্যা গঙা কালা হয়ে
জিয়েও মইরবেক । ল্যে কত শহীদ লিবি ল্যে ।
ভিন দেশের লয় - টাটকা দেশী বাঙালি শহীদ ।
আগলা সালল্যে লতুন কইরে পৈলা মে মানা’ন ।


ইখন আর পৈলা বইল্যে কুছু হয়না রে গগনা !
ভুরবেলায় সুয্যি উঠলেই জানবি লতুন একটো
দিনের শুরু, মাসের শুরু, লতুন বছরের শুরু ।
আর তুদের পৈলা বোশ্যাখ মানেই ত সকাল থাক্যে
দুগ্গামেলায় পইদ্দ গানের আসর, প্যানপ্যানা বক্তিমা
দুফর বেলায় বৌয়ের হাতে কলাপাতায় বিরিরডাল,
আলুপোস্ত আর সর্ষা দিয়া মাছের ঝাল দিয়ে ভাত ।
সঞ্ঝ্যাবেলায় ভটভটিতে বৌ বেটা বিটিকে চাঁপাই
শহুরের কন হোটেলে খুঁখড়ির ঠ্যাং চিবাই আসা ।
ইসব করলেই কি তুই সাচ্চা বাঙালি হতে পারবি ?


দেখ বাপ, ই চারকুড়ি পাহিরাই যাওয়া জীবনটোয়
বঙালি একটোয় দেখেছি - সি হামদের রবিঠাকুর
বোশ্যাখে জম্মায় চত্তি তক্ক রঙরঙাই দিয়ে গেছেন ।
তাই পৈলা লয় রে পঁচিশাতেই হামদের বছর শুরু ।
পারলে উদিন কবি ঠাকুরের ছিচরণে দুটা ফুল দিয়ে
আশীব্বাদ চা জীবনে যদি কভু বাঙালি হতে পারিস ।
সিটাতেও ত ইবার লাফড়া – চব্বিশাতেই ভটগুন্তি
ঘরপুড়্যা গরু হামরা, সিঁদুরা মেঘ দেখলেই ডরাই
কে জানে বাপ সিদিন আবার কন বৌ বিধবা হবেক
কন মা বেটা হারায় বুক চাপড়াবেক । বাঙালির
আর গরব করার মতন কুছুই নাই, রবিঠাকুর ছাড়া ।
বুকটা দুরদুরাই উনিও না কনদিন লাশ হয়ে যান ।