বোশ্যাখ মাস’ট ট্যানেটুনে, জষ্ঠি মাসের ধরণ
ধুপসী রোদে ভাত বেগরে গেরন লাগা জীবন ।
মাঝ আষাঢ়ে ঘরের চাল’ট না ছাওয়ালেই লয়
নাইল্যে বাদলাদিনে বাল্টি পাত্যে রাত জাগা হয় ।
শরাভণ মাসে চাষীর মনে, বারিশের লাগ্যে আশ
এক ফসলী ডাং জমি’টয় যদি করা যায় চাষ ।
ভাদর মাসে ভাদু পরব, আক্যাল বল্যেই মানি
পেট ভরাত্যে লাপসিঘাটা, পরনে ছ্যাঁড়া কানি ।
আশ্বিন মাস’ট লিড়ান বাদে, দুগ্গাপূজাও বটে
ঘটি বাটি বাঁধা দিয়েই লত্যন কাপড় জুট্যে ।
কাত্তিক-অঘ্যান মাসে শুধু ধান কাটার দিন
মনিবের ঘরে গোলা ভরে, হামরা শুধু ম’শিন ।
পুষ মাস’ট মকর পরব, মহুল্যা মদের লেশা
পিঠার বাসে বৈলক্যে উঠে, মন’ট লাগে খাশা ।
মাঘ’ট আলেই পটলা-পুটলি বগলদাবা করে
বাসে চাঁপ্যে চললি সিধা পূব দেশের ধারে ।
মাটি কাটার মজুর খাট্যে যেতনা পৈসা পাই
ফাগুন-চৈত্যে পেটখুরাকীর টান পড়বেক নাই ।
গাঁ-গেরামের ক্ষেতমজ্যুরা, মুনিশ কামিন মুরা
এমনি করেই বার মাসের দিন গুজরান করা ।


(কবিতাটি ছোটনাগপুর অঞ্চলের কথ্য ভাষায় রচিত)


কিছু আঞ্চলিক শব্দের অর্থ :
ধুপসী (তীব্র); ভাত বেগরে (ভাত ছাড়া); গেরন (গ্রহণ); নাইল্যে (না হলে); বাদলাদিনে (বর্ষাকালে); বাল্টি (বালতি): শরাভণ (শ্রাবণ); আশ (আশা); ডাং জমি (উঁচু জমি); লাপসিঘাটা (খুদচাল সিদ্ধ); কানি (কাপড়);  লিড়ান (জমির আগাছা পরিস্কার করা); বাঁধা (বন্ধক); লত্যন (নতুন); ম’শিন (মেশিন); মহুল্যা (মহুয়া গাছের ফল); বাসে (গন্ধে); বৈলক্যে (টগবগিয়ে ওঠা); পটলা-পুটলি (বোঝা)