(আমার প্রিয় সাহিত্যিক প্রয়াত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি আঞ্চলিক ভাষায় শ্রদ্ধার্ঘ্য)


ইটো কী সমাচার শুনালি মাষ্টর ! সুনীলবাবু নাই !
সিবার ধরণের দিনে তুঁহেই ত লিয়ে আলি উনাকে,
বললি ক’লকাতাল্যে আস্যেছেন, গপ্ফ পইদ্দ লিখেন
হামদের গাঁওয়ালী ভাষায় সুখ-দুখের কহানি শুনবেন ।


চশমা চোখ্যা কঁকড়া চুলের লকটোকে বেড়ে লাগ্যেছিল
হামদের জবানিগুল্যান কোরা কাগজে টুক্যে লিতেছিলেন ।
তর ঠ্যাঁরে টাঁড়-বাদের ভাষাটো বঙালে সমঝ্যে লিলেন
রাতে মাদ্যোলার সঙে ঝুমুর শুনে মন সরসরা করলেন ।


বছরটো ঘুরত্যেই তুঁই দুগ্গা ঠাকুরের মলাট দিয়া পুঁথিল্যে
একটো শুলুক পড়্যে শুনালি । বললি সুনীলবাবু লিখেছ্যে ।
ই যে আগুন্যা পইদ্দ রে ! ছুটুলকগুল্যানকে মাঁতাই দিহে
উঁদের বুকের ধকধক্যা আগুনটোকে উসকাঁই দিহে গেল ।


হামদের খরায় পূঢ়া খঁকরাপেট্যা জীবনটোয় হুঁই পইদ্দটো
যেমন গবর গাঢ়ায় পদ্মফুল, হামদের টেঁড়া-বেঁকা ভাষায়
খুনচুষা বড়লকদের লসরপসর গতরে দিল কঁষাট্যে গঁহাড় ।
সুনীলবাবু মরব্যেক কেনে হে মাষ্টর ? উনি’ত মরনজিতা ।


কিছু শব্দার্থ -
ঠ্যাঁরে (নিকটে); সরসরা (সতেজ); শুলুক (কবিতা); খঁকরাপেট্যা (খালিপেটের); গাঢ়ায় (গর্তে); লসরপসর (নাদুস-নুদুস); কঁষাট্যে (জোরে); গঁহাড় (লাথি); মরনজিতা (মৃত্যুঞ্জয়)