লফরা ন’কি ? কেনেরে তুই হড়বড়ায়ে যাছিস ?
ল্যাতড়াল্য কি কাল ষাঁড়ে, ন’কি দুধ্যা খরিশ !
হ্যাঁরে বেটা, আজ বোশ্যাখের কত তারিখ হল্য ?
পঁচিশাতে গোপাল মড়ল পূজার দাওত দিল্য ।
ভাবলি হামি মাঝ বোশ্যাখে কিসের পূজা হছে,
বিটি ছেল্যার পুণ্যিপুখুর জল ঢালে সব গাছে !
শুধালি তাই মড়ল খুঁড়ায়, "কিসের পূজা বটে"?
গোপাল খুঁড়া বলল্য হাঁসে, "দেখবি উদিন মাঠে
তারল্যে বরং শুনা একটো রবি ঠাকুরের ছড়া",
শুনাই দিলি সহজ পাঠের সেই যে কুমার পাড়া ।
বলল্য খুঁড়া, "রবি ঠাকুরের উদিন জনম দিন,
ছেল্যা-পুল্যার লাচা গানায় দিনটো হয় রঙিন ।
সঞ্ঝ্যাবেলায় বসবে আসর, আসবে কত কবি
শুনবি উঁদের, পাকা হাতের কথা দিয়ে ছবি ।
উঁদের সঙে তুদের মতন গাঁয়ের কবি আছে
তুই বলবি ই ছড়াটোই, সব কবিদের মাঝে" ।
সকালল্যে তাই গুয়াল ঘরে পড়ছি সহজ পাঠ
ঠাকুরের লেখা সবার লাগ্যে আশি থেকে আট ।
লফরা তুকে শুনাই দিব, গরুর গাড়ির ছড়া
বলবি শুনে কেমন হল্য হাঁসবে নাই’ত পাড়া ?
ঠাকুর রবি বিরাট কবি পিথীমির লকে মানে
পড়্যেছিলি, কিলাস ফোরে, সবটা আছে মনে ।
লফরারে তুই, হামার সঙে, যাবি মড়ল ঘরে
দেখবি ঠাকুর জনম দিনে ফটোয় মালা পরে ।
ছেল্যা-মেয়্যা লাচবে কত গাইবে কবির গান
আনপঢ় নাম ঘুঁচবে তুদের পূণ্য হবে পরান ।


শব্দার্থ
হড়বড়ায়ে (ব্যাস্ত হয়ে); ল্যাতড়াল্য (তাড়া করল); দাওত (নিমন্ত্রণ); পুণ্যিপুখুর (কুমারী মেয়েদের এক প্রকার লোকাচার); পিথীমির (পৃথিবীর); আনপঢ় (নিরক্ষর)