আমি সুখী, ভীষণ সুখী; অন্ততঃ লোকে তাই বলে
বাড়ী গাড়ি, জমা টাকা; সে সুখের উপাদান হলে ।
বিজ্ঞানী ছেলে কানাডায়; ছোটটা বিলেতে ডাক্তার
বুড়ো-বুড়ি থাকি এদেশে; ওরা দেশে আসেনা আর ।
ইমেলেই রাখে যোগাযোগ, পাউন্ড ডলার নিয়মিত
এলবামে রাখা ছবিগুলো, বেদনা ভুলতে পরিমিত ।
হঠাৎ জীবনে এল তুফান; গ্রাম থেকে আসে ভাগ্নে
সঙ্গে বৌমা ছেলে মেয়ে; কোলকাতা দেখার স্বপ্নে ।
ভাগ্নেটা করে ধান চাষ, তবু মায়ের জন্য অন্ত প্রাণ
মা বলেছেন আসতে, তাতে মামামামী পাবে সম্মান ।
ছেলে-মেয়ে গুলো বিচ্ছু,  দিন-রাত করে উৎপাত
কখনো সোফায় লাফঝাঁপ, বাঁকুড়ার ঘোড়া চিৎপাত ।
চাপি বিরক্তি মনে মনে,  মুখে হাসি রেখে সইছি
বৌমা যদিও রাঁধেবাড়ে,  বিদায়ের লগন  গুনছি ।
রোজ ফোন করে মা’কে, সাবুর বৌ কি খাওয়াল !
খাওয়ার পরের ট্যাবলেট, আর আছে নাকি ফুরাল ?
তিনদিন পর নিল বিদায়, কি যেন একটা হারালো
ফিরে এল সেই নিরবতা নিঃসঙ্গতার মেঘ ঘনালো ।
একজনও যদি ছেলেরা, হতো ভাগ্নের মতো ঘরমুখী
ডলার পাউন্ড ছুঁড়ে ফেলে, হতাম আমি  পরম সুখী ।